উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান ও মুক্তিযুদ্ধ কেন ষাটের দশকের বৈশ্বিক ঘটনার ফল

ম্যাকগিল ইউনিভার্সিটির ইতিহাসের অধ্যাপক শুভ বসু ‘ইন্টিমেশন অব রেভল্যুশন: গ্লোবাল সিক্সটিজ অ্যান্ড মেইকিং অব বাংলাদেশ’ নামে একটি বই লিখেছেন। এখানে তিনি দেখিয়েছেন ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থান ও মুক্তিযুদ্ধ কীভাবে সেই সময়ের বৈশ্বিক ঘটনাপ্রবাহের ফল।

গণ-অভ্যুত্থান ১৯৬৯
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ষাটের দশকের বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে সংঘটিত বিপ্লবেরই ইঙ্গিতবহ—এই গুরুত্বপূর্ণ হাইপোথিসিস তথা প্রতর্ক ঘিরে ক্যামব্রিজ ইউনিভার্সিটির গ্র্যাজুয়েট, ম্যাকগিল ইউনিভার্সিটির ইতিহাসের অধ্যাপক শুভ বসু তাঁর গবেষণা পরিচালনা করেন এবং ‘ইন্টিমেশন অব রেভল্যুশন: গ্লোবাল সিক্সটিজ অ্যান্ড মেইকিং অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক গ্রন্থটি পাঠকের সামনে হাজির করেন। বাংলাদেশের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা ছাড়া সাত বছরের নিরবচ্ছিন্ন পড়াশোনা, গবেষণা, ১০ মাসের ফিল্ডওয়ার্ক যে সম্ভব নয়, তা সহজেই অনুমেয়। ইলিনয় ইউনিভার্সিটির বাংলাদেশি অধ্যাপক, আলী রীয়াজ যথার্থই বলেন, ‘ষাটের দশকের বৈশ্বিক পরিপ্রেক্ষিতে তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানে সংঘটিত অভ্যুত্থান, যা বাংলাদেশ সৃষ্টির ভিত্তি রচনা করেছে, এখন পর্যন্ত বিশ্লেষণ করা হয়নি। শুভ বসুর ‘ইন্টিমেশন অব রেভল্যুশন: গ্লোবাল সিক্সটিজ অ্যান্ড মেইকিং অব বাংলাদেশ’ শুধু এই শূন্যতাই পূর্ণ করেনি, বাংলাদেশের ইতিহাসের প্রধান যে আখ্যান গড়ে উঠেছে, তার জন্য এই বই একটি সংশোধনীও বটে। সেই সময়ের যে ঘটনাবলি ও প্রবণতাগুলো বাঙালিকে একটি নতুন রাষ্ট্রের অভ্যুদয়ের দিকে নিয়ে গেছে, তার একটা নতুন আখ্যান নির্মাণ করেন শুভ বসু এই বইয়ে সিদ্ধহস্তে। দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাস বুঝতে হলে এই বইটি পড়তেই হবে।’

অধ্যাপক শুভ বসু ‘ইন্টিমেশন অব রেভল্যুশন: গ্লোবাল সিক্সটিজ অ্যান্ড মেইকিং অব বাংলাদেশ’ বইয়ের প্রচ্ছদ

তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানে পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে বাঙালি জাতীয়তাবাদ আন্তর্জাতিক রাজনীতির সঙ্গে স্থানীয় আর্থসামাজিক অনুষঙ্গের মিথস্ক্রিয়ায় কীভাবে গড়ে উঠেছে, এই বইয়ে প্রফেসর শুভ বসু তা ব্যাখ্যা করেন। মূল যে যুক্তিটা এই গবেষণাকর্মে তুলে ধরা হয়েছে, তা হলো, ১৯৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান ও ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ, ষাটের দশকের বৈশ্বিক ঘটনাপ্রবাহেরই ফল, যা পাকিস্তানের রাজনীতি পুরোপুরি পাল্টে দেয় এবং স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম হয়। যুক্তির সমর্থনে, আলজেরিয়ার মুক্তিসংগ্রাম, ফিলিস্তিনের স্বাধীন ভূমির আন্দোলন, বেলজিয়ান ও মার্কিন মদদপুষ্ট রাজনৈতিক দলের হাতে বেলজিয়ান উপনিবেশ থেকে সদ্য মুক্ত কঙ্গোর স্বাধীনচেতা নেতা প্যাট্রিস লুলুম্বার মৃত্যু, ভিয়েতনাম যুদ্ধ ইত্যাদি ঘটনার উদাহরণ টানেন অধ্যাপক বসু।

ভারত-পাকিস্তান কূটনৈতিক ও সামরিক প্রতিদ্বন্দ্বিতাই বাংলাদেশের জন্ম দিয়েছে—এই বই এমন ভ্রান্ত ধারণা ভেঙে দেয় এবং বিপরীতে যে সত্য বের করে আনে, তা হলো, বাঙালি জাতীয়তাবাদীরা বাঙালির ওপর পাকিস্তানি শাসকদের অভ্যন্তরীণ উপনিবেশ স্থাপনের প্রক্রিয়া নস্যাৎ করে দিয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্র-সোভিয়েত ইউনিয়ন-চীন ঠান্ডা যুদ্ধ, জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনের তোড়জোড় আর ষাটের দশকজুড়ে এশিয়া, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকায় উপনিবেশ ভাঙার আন্দোলন কীভাবে বাঙালির এ প্রতিরোধ ও নতুন রাষ্ট্র নির্মাণ প্রভাবিত করেছে, তার একটা চমৎকার বয়ান শুভ বসু আমাদের সামনে উপস্থাপন করেন।  

বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পেছনে আরও বেশ কিছু অনুঘটকের কথা অধ্যাপক বসু উল্লেখ করেন। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পুঁজিবাদী ব্লক বিশ্বে সমাজতন্ত্র ঠেকাতে এবং উপনিবেশোত্তর নতুন রাষ্ট্রে পুঁজিবাদের বিকাশ ঘটাতে পঞ্চাশ ও ষাটের দশকজুড়ে বা তার আগে থেকেই মরিয়া ছিল। এরই অংশ হিসেবে তাঁরা এবং তাঁদের তৈরি দাতা সংস্থাগুলো অর্থ প্রদান করেছে পূর্ব পাকিস্তানের উন্নতির ঘটিয়ে দুই অংশের ব্যবধান ঘোচাতে। কিন্তু শাসকগোষ্ঠী তা খরচ করছে সামরিক বাহিনীর জন্য। এতে ব্যবধান আরও বেড়ে যায়, কারণ সামরিক বাহিনীর সুবিধাভোগী ছিল পশ্চিম পাকিস্তানিরাই। পূর্ব পাকিস্তানের ভয়াবহ বন্যায় সীমাহীন ক্ষতি ও দুর্ভিক্ষ, পশ্চিম পাকিস্তানিদের সঙ্গে থাকা যাবে না—বাঙালির মধ্যে এমন ধারণা প্রবল হতে শুরু করে। মুসলিম লীগের প্রতি বাড়তে থাকে ক্ষোভ ও ঘৃণা।    

অধ্যাপক শুভ বসু
ছবি: সংগৃহীত

ধর্মীয় জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে পাকিস্তান সৃষ্টি হলেও বাংলাদেশ সৃষ্টি হয় ভাষাভিত্তিক জাতীয়তার ওপর এবং দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশই প্রথম ভাষাভিত্তিক রাষ্ট্র। আবার উপনিবেশোত্তর রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বশেষ। শুভ বসু বাংলাদেশ সৃষ্টির ধারণাকে দেখেন একটি উত্তর–ঔপনিবেশিক বিপ্লবের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে। এ বিপ্লবের চেতনাই ছিল মুক্তিযুদ্ধের চালিকাশক্তি, যা বাঙালিকে বিজয়ী হতে সাহায্য করেছে। ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বাঙালি একটি নতুন পরিচিতি বোধ পরিগ্রহ করে, যা পাকিস্তান সৃষ্টির আন্দোলনের বিপ্রতীপে—ধর্মনিরপেক্ষ, আধুনিক, ইহজাগতিক সংস্কৃতির। নতুন এ পরিচিতি বোধ স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সংবিধানে বিধৃত। জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা—রাষ্ট্রের এই চার মূলনীতির স্পষ্ট উচ্চারণ সে কথাই ঘোষণা করে।  

জাতীয়তাবাদী এই আন্দোলন ও তার সফল পরিসমাপ্তির জন্য অধ্যাপক বসু অনুঘটক হিসেবে সাহিত্যের ভূমিকার কথা বলেন। কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত হয় ‘মোসলেম ভারত’, ‘নবযুগ’, ‘লাঙল’ ইত্যাদি পত্রিকা।

বাঙালি মুসলমানের সাহিত্যচর্চার দুটি ধারার কথা তিনি উল্লেখ করেন। মুজফ্‌ফর আহ্‌মদের সান্নিধ্যে নজরুল ইসলাম শ্রেণিসংগ্রামের ইতিহাস পাঠ করেন, সাম্যবাদের মন্ত্রে দীক্ষিত হন এবং একটি শোষণমুক্ত সমাজ গঠনের লক্ষ্যে উদার সমন্বয়বাদী সাহিত্য রচনা করেন। সাধারণ মানুষের জীবনকে উপজীব্য করে সাহিত্যচর্চায় নজরুল অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন। অধ্যাপক বসু এটাকে বাংলা সাহিত্যের গণতন্ত্রীকরণ হিসেবে অভিহিত করছেন। সাহিত্যের এই গণতন্ত্রীকরণ হিন্দু, মুসলিম—উভয় সম্প্রদায়ের মানুষই এগিয়ে নিয়ে গেছেন। সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর ‘লালসালু’ ,‘চাঁদের অমাবস্যা’, আবু ইসহাকের ‘সূর্য–দীঘল বাড়ী’, শহীদুল্লাহ কায়সারের ‘সারেং বৌ’ ইত্যাদির উল্লেখ আছে ‘বিপ্লবের পদধ্বনি’তে। উল্লেখ আছে জয়নুল আবেদিনের আঁকা ছবির কথা। তাঁর ফিলিস্তিনের উদ্বাস্তুদের জীবনের স্কেচ বা ১৯৭০ সালের বিধ্বংসী ঝড়ের কবলে পড়া মানুষের ছবি, দুর্ভিক্ষের ছবি বাঙালিকে তাঁর স্বাধিকার সম্পর্কে সচেতন করে তোলে।

বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পেছনে আরও বেশ কিছু অনুঘটকের কথা অধ্যাপক বসু উল্লেখ করেন। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পুঁজিবাদী ব্লক বিশ্বে সমাজতন্ত্র ঠেকাতে এবং উপনিবেশোত্তর নতুন রাষ্ট্রে পুঁজিবাদের বিকাশ ঘটাতে পঞ্চাশ ও ষাটের দশকজুড়ে বা তার আগে থেকেই মরিয়া ছিল। এরই অংশ হিসেবে তাঁরা এবং তাঁদের তৈরি দাতা সংস্থাগুলো অর্থ প্রদান করেছে পূর্ব পাকিস্তানের উন্নতির ঘটিয়ে দুই অংশের ব্যবধান ঘোচাতে। কিন্তু শাসকগোষ্ঠী তা খরচ করছে সামরিক বাহিনীর জন্য। এতে ব্যবধান আরও বেড়ে যায়, কারণ সামরিক বাহিনীর সুবিধাভোগী ছিল পশ্চিম পাকিস্তানিরাই।

শুধু সাহিত্য নয়, পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে সৃজনশীলতার অন্যান্য মাধ্যমেও বিরাট এক সৃষ্টির জোয়ার আসে। বিশেষ করে উর্দুর পরিবর্তে বাংলায় চলচ্চিত্রের আবির্ভাবের মধ্য দিয়ে, যাতে বাঙালির স্বকীয়তার ও জাতীয়তার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ পায়। বাঙালি জাতীয়তাবাদের চেতনায় পৃথক রাষ্ট্র গঠনের প্রক্রিয়া বেগবান হয়। এ বিষয়ে অধ্যাপক বসু বেশ কিছু মাইলফলকের একটি নাতিদীর্ঘ বর্ণনা পেশ করেন।

নাজির আহমদ জিন্নাহর পূর্ব পাকিস্তান সফর উপলক্ষে ‘পূর্ব পাকিস্তানে দশ দিন’ নামে একটি তথ্যচিত্র নির্মাণ করেন। সম্ভবত এটিই প্রথম বাংলা চলচিত্র। এরপর নাজির আহমদ ‘সালামত’ নামে ১৯৫৭ সালে বাংলায় আরেকটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। পরিচালক এখানে রাজমিস্ত্রির চোখ দিয়ে ঢাকার ভবিষ্যতের ইঙ্গিত করেন। এর পরে একে একে আসে আব্দুল জব্বার খানের ‘মুখ ও মুখোশ’, যা ১৯৫৬ সালে নির্মিত এবং তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানের প্রথম স্থানীয়ভাবে নির্মিত পূর্ণদৈর্ঘ্য সবাক চলচ্চিত্র। এটা একটা বিরাট বাঁকপরিবর্তনও বটে, কারণ এভাবেই বাংলাদেশের গ্রামীণ জীবনের ছবি আসতে শুরু করে চলচ্চিত্রে। যেমন জব্বার খানের  ‘জোয়ার এল’, সালাউদ্দিনের ‘রূপবান’,  জহির রায়হানের ‘বেহুলা’, আর উনসত্তরের গণ–অভ্যুত্থানের ভিত্তিতে নির্মিত জহির রায়হানের ‘জীবন থেকে নেয়া’।

একই সঙ্গে, চিত্রকলার, নাটকের ও গানের বিষয়বস্তুর নতুন সংযোজন ধীরে ধীরে পরিবর্তন করে ফেলে বাঙালির মনোজগৎ, যা ভাষাভিত্তিক জাতীয়তা নির্মাণের সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়ে গেছে বহুদূর।  

আবার ‘শিখা গোষ্ঠী’, ‘রেনেসাঁস সোসাইটি’ প্রতিষ্ঠা করে পূর্ব পাকিস্তানের মুক্তমনা মুসলমান বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলন গড়ে তোলেন। বাঙালি সংস্কৃতির আধুনিকায়নের মধ্যে মুসলমান সমাজ নিজেকে সম্পৃক্ত করে। ইউরোপীয় রেনেসাঁর আলোকে আধুনিকতা, ইহজাগতিকতা, জীবনবাদ, সেক্যুলারিজম ইত্যাদি অনুষঙ্গ সাহিত্যে স্থান দেন। এভাবেই একদিকে সাহিত্যের গণতন্ত্রীকরণের আর অন্যদিকে আধুনিকতার প্রভাবে বঙ্গের মুসলমান মানস ধীরে ধীরে অভ্যন্তরীণ ঔপনিবেশিকতাবাদের বিরুদ্ধে তৈরি হয়, বাঙালির কৃষ্টিচর্চার আগ্রহ প্রকাশ করে, বাঙালি জাতীয়তাবাদের পক্ষে শক্ত অবস্থান নেয়। বস্তুত স্বাধিকার, কৃষকের মুক্তি, পশ্চিম পাকিস্তানিদের কাছ থেকে ন্যায্য পাওনা ইত্যাদির জন্য রাজনৈতিক আন্দোলনের ভিত্তি রচনা করেন শিল্পী-সাহিত্যিকেরাই। এমনকি বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা শেখ মুজিবের মনোজগৎও ধীরে ধীরে পরিবর্তিত হয়ে যায় কারাগারের নির্জন প্রকোষ্ঠে প্রগতিশীল সাহিত্যিকদের লেখা পড়ে পড়ে।

মুক্তিযুদ্ধ ছিল সর্বাত্মক জনযুদ্ধ। যুদ্ধের অবকাশে ঢাকার দোহারে মুক্তিযোদ্ধারা, ১৯৭১
ছবি: আনোয়ার েহাসেন

লেখক আবার ফিরে যান ষাটের দশকের বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে। আবার ব্যাখ্যা করেন ঠান্ডা যুদ্ধ, জোটনিরপেক্ষ আন্দোলন, চীনের সাংস্কৃতিক আন্দোলন কীভাবে শেখ মুজিব, মাওলানা ভাসানীসহ তাবৎ নেতাদের মনন পরিবর্তন করে ফেলে। কীভাবে চীন-সোভিয়েতের দ্বন্দ্ব বাংলার বামপন্থী নেতাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে এবং নেতৃত্ব চলে যায় প্রত্যুপন্নমতি শেখ মুজিবের হাতে। কীভাবে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে উপনিবেশের দেয়াল ভাঙার শব্দ, একের পর এক সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্ম, বিশ্বজুড়ে বিপ্লবের ছায়া রচনা করে বাঙালির মুক্তির সনদ ’৬৬-এর ৬ দফা ও ’৬৯-এর ১১ দফা। পশ্চিম পাকিস্তানিদের পক্ষে দাঁড়ায় যুক্তরাষ্ট্র ও চীন আর বাঙালির পক্ষে দাঁড়ায় সোভিয়েত ইউনিয়ন, ভারত ও বিশ্বের প্রায় সব শান্তিকামী মানুষ ও রাষ্ট্র এবং তাদের সমর্থন, সহযোগিতা, সাহায্য নিয়ে এ দেশের শ্রমিক, কৃষক, সৈনিক, ছাত্র মুক্তিযুদ্ধে জয়লাভ করে, সৃষ্টি করে নতুন মানচিত্র।