রসায়নের হাতেখড়ি

হোয়াট ইজ কেমিস্ট্রি: রসায়ন সহজ পাঠ—পিটার অ্যাটকিনসের লেখা বইটির বাংলা অনুবাদ এটি। অনেকের কাছেই রসায়নকে রসকসহীন বিষয় মনে হয়। পদার্থবিজ্ঞান বা জীববিজ্ঞানের মতো রসায়ন এতটা জনপ্রিয় না আমাদের কাছে। কারণ, রসায়নের সঙ্গে আমাদের পরিচয় হয় নতুন কিছু সংকেত আর জটিল সব বিক্রিয়া দিয়ে। বোঝার থেকে মুখস্থ করার দিকে ঝোঁক বেশি থাকে। রসায়নবিদ পিটার অ্যাটকিনস তাই গতানুগতিক পাঠ্যবইয়ের ধারা থেকে বেরিয়ে এসেছেন। বিদঘুটে কোনো সমীকরণ বোঝানোর চেষ্টা না করে তিনি দেখিয়েছেন, একজন রসায়নবিদ কীভাবে রসায়নকে দেখেন। বোঝাতে চেয়েছেন, রসায়নবিদেরা কী দেখে আনন্দ পান। পরিচয় করিয়ে দিতে চেয়েছেন রসায়নের সুন্দর জগৎকে।

বইটি মোট সাতটি অধ্যায়ে লেখক ভাগ করেছেন। শুরু করেছেন রসায়নচর্চার শুরুর গল্প থেকে। এরপর আলোচনা করেছেন অণু-পরমাণুর গঠন নিয়ে। কীভাবে ক্ষুদ্র অণু দিয়ে আমাদের চারপাশের সবকিছু তৈরি হলো। লেখক খুবই সহজভাবে ব্যাখ্যা করেছেন আমাদের চারপাশের ঘটে যাওয়া জটিল রাসায়নিক বিক্রিয়াগুলো। লেখক দেখিয়েছেন রসায়ন কীভাবে পদার্থবিজ্ঞান ও জীববিজ্ঞানের মধ্যে সেতুর মতো কাজ করে। পদার্থবিজ্ঞানের সূত্র ব্যবহার করে অণু-পরমাণু গঠনের ব্যাখ্যা দিয়েছেন। সেই সঙ্গে দেখিয়েছেন জীবদেহের ঘটে যাওয়া জটিল বিক্রিয়াগুলো।

বইটিতে লেখক কোনো জটিল সূত্র বা সমীকরণ ব্যবহার করেননি। বরং রসায়নের সুন্দর জগতের সঙ্গে পাঠককে পরিচয় করিয়ে দিতে চেয়েছেন। শুধু রসায়নের শিক্ষার্থীই নন, রসায়নে আগ্রহী যে কেউ পড়ে যাতে বুঝতে পারেন, বইটি সেভাবে লেখা হয়েছে।

হোয়াট ইজ কেমিস্ট্রি: রসায়ন সহজ পাঠ

পিটার অ্যাটকিনস

অনুবাদ: উচ্ছ্বাস তৌসিফ

প্রকাশকাল : ফেব্রুয়ারি ২০২৩

প্রকাশক: প্রথমা প্রকাশন, প্রচ্ছদ: মাহবুব রহমান, ১৫৯ পৃষ্ঠা, দাম: ৪০০ টাকা।

বইটি পাওয়া যাচ্ছে

prothoma.com এবং মানসম্মত বইয়ের দোকানে।

সাধারণত অন্য ভাষা থেকে অনুবাদের সময় মূলভাবটা ধরে রাখা কঠিন। আর বিজ্ঞানের বই হলে তো আরও কঠিন। লেখকের মূল কথা যেন ঠিক থাকে, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হয়। অনুবাদক উচ্ছ্বাস তৌসিফ ব্যাপারটা খুব ভালোভাবে খেয়াল রেখেছেন। কিছু জায়গায় পাঠকের সুবিধার জন্য সুন্দর করে মূল লেখকের কথার ব্যাখ্যা দিয়েছেন নিজের মতো। কিছু জায়গায় ছবিও যুক্ত করেছেন পাঠকদের বোঝার সুবিধার জন্য।

সাধারণত একাডেমিক বইয়ের বাইরে রসায়ন নিয়ে বাংলায় মৌলিক অথবা অনুবাদ লেখা খুব একটা হয় না। এতে মানুষের রসায়নের প্রতি যে ভীতি, সেটা রয়েই যায়। বইটি সেই ভয় দূর করার জন্য ভালো একটি উপায় হতে পারে।