ঘাসফড়িংয়ের কথা

ঘাসের আড়াল থেকে হুট করে একটা ঘাসফড়িং বেরিয়ে এলে চমকে উঠো না যেন!
ঘাসের আড়াল থেকে হুট করে একটা ঘাসফড়িং বেরিয়ে এলে চমকে উঠো না যেন!

ইশপের গল্প তো তোমরা পড়েছ। সেই যে পরিশ্রমী পিঁপড়া আর অলস ঘাসফড়িংয়ের কাহিনি? গ্রীষ্মের দিনগুলো আরামে-আনন্দে কাটিয়ে দেওয়া ঘাসফড়িং শীতের সময় যে খাবারের অভাবে পড়ে গিয়েছিল, তা নিশ্চয়ই ভুলে যাওনি? আজ তোমাদের জানাব ঘাসফড়িংয়ের কথা।
হয়তো খেলার মাঠের পাশে কিছু ঘাস-লতা-পাতা গজিয়েছে আর তুমি ওপাশ দিয়ে আসার সময় তোমার পায়ে লেগে ঘাস-পাতাগুলো নড়ে উঠেছে। ঠিক সেই সময় ঘাসের আড়াল থেকে হুট করে একটা ঘাসফড়িং বেরিয়ে এলে চমকে উঠো না যেন। ঘাসের মতো গায়ের রং বলে খুব সহজেই ঘাসের আড়ালে লুকিয়ে থাকতে পারে ওরা। আর ঘাস-পাতাই ওদের খাবার।
কখনো কোথাও ধূসর বা বাদামি রঙের ঘাসফড়িংয়ের দেখাও পেতে পারো। বালুর আশপাশে থাকে যেসব ঘাসফড়িং, তাদের রংটা একটু ধূসরই হয় বৈকি! এসব রঙের মধ্যে লাল বা হলুদ রঙের একটু ছিটে থাকলেও ঘাসফড়িংদের চিনতে তোমাদের অসুবিধা হবে না। পৃথিবীজুড়ে ১৮ হাজারেরও বেশি প্রজাতির ঘাসফড়িং আছে।
দারুণ লাফাতে পারে বলে সুনাম আছে ঘাসফড়িংয়ের। ওদের শরীরের পেছনের দিকের পাগুলো একটু লম্বা হয় বলেই এমন লাফিয়ে চলতে পারে ওরা। একটা ঘাসফড়িং নাকি নিজের আকারের ২০ গুণ পর্যন্ত দূরত্বে লাফিয়ে যেতে পারে! ওদের পাখা আছে, তাই উড়তেও পারে। মজার ব্যাপার কী জানো? শব্দ শোনার জন্য ওর কানের পর্দা থাকে পেটে! তবে ওদের শোনার ক্ষমতা খুব একটা ভালো নয়।
শুনতে না পেলে কী হবে, গান গাইতে কিন্তু ওরা ঠিকই জানে। অবশ্য তোমরা যেমন কথা আর সুর দিয়ে গান গাও, ওদের ব্যাপারটা সে রকম নয়। তবে ওদের করা বিশেষ আওয়াজটা পোকামাকড়দের গানের জগতেরই একটা অংশ বটে! রাতের বেলা হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেলে ঘাসবন থেকে ভেসে আসা কোন পোকার গান শুনতে পারো তোমরা। তবে তোমাদের শোনাতেই গান গাইছে ঘাসফড়িং, তা আবার ভেবো না যেন!
ইঁদুর আর পাখিসহ আরও কিছু প্রাণী ঘাসফড়িংদের খেয়ে ফেলে। জেনে অবাক হবে, পৃথিবীর কোনো কোনো অংশে মানুষও ঘাসফড়িং খায়। শত্রু আছে অনেক, তবু পৃথিবীর বুকে দীর্ঘদিন ধরে টিকে আছে এই সুন্দর প্রাণীটা।
সূত্র: ইনসেক্টস অ্যাবাউট ডট কম