দেখতে পারো
বাবাকে নিয়ে চার সিনেমা
ছোট্টবেলায় আমি বাবাকে ভাবতাম ম্যাজিশিয়ান। কেমন জাদু করে আমার মন ভালো করে দিচ্ছে। জটিল সব অঙ্ক করে ফেলছে চোখের পলকে। বাবাকে ম্যাজিশিয়ান না ভেবে উপায় কী, বলো? বাস্তবের মতো এ রকম ম্যাজিশিয়ান বাবার দেখা মেলে বেশ কিছু সিনেমায়। বাবা দিবসে তেমন কিছু সিনেমা দেখে ফেললে কেমন হয়? আর সিনেমাগুলো দেখে ফেলতে পারো তোমার ম্যাজিশিয়ানকে সঙ্গে নিয়ে...
দ্য বাইসাইকেল থিফ
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বিধ্বস্ত রোম শহরে তখন ঘোর অভাব, কেউ কাজ পাচ্ছে না, কারও ঘরে খাবার নেই। দারিদ্র্যের কাছে ভীষণ অসহায় অ্যান্টনিও রিকি ও তার পরিবার। ভাগ্যগুণে অবশ্য একটি চাকরি জুটে যায়। শর্ত হলো, অ্যান্টনিওর থাকতে হবে একটি নিজস্ব সাইকেল। উপায় না পেয়ে বিয়েতে পাওয়া দামি চাদরগুলো বিক্রি করে সাইকেল কিনলেন তিনি। সেই সাইকেল নিয়ে অ্যান্টনিও আর তার ছোট্ট ছেলে ব্রুনোর সে কী আনন্দ! কিন্তু বিধি বাম। কাজে যাওয়ার প্রথম দিনেই চুরি গেল এত কষ্ট করে কেনা সাইকেলটি! এদিকে সাইকেল না থাকলে চাকরিও থাকবে না, জুটবে না খাবার। তাই বাপ-ছেলে মিলে ছুটলেন হারিয়ে যাওয়া সাইকেলের খোঁজে। রোমের অলিগলিতে সাইকেলের সন্ধানে তাদের এ অভিযান নিয়েই এগিয়ে চলে ১৯৪৮ সালে মুক্তি পাওয়া কালজয়ী এ সিনেমার গল্প।
ফ্লাই অ্যাওয়ে হোম
বাবার সঙ্গে নতুন বাড়িতে কিছুতেই মন বসছিল না অ্যামির। একদিন সে বাড়ির এক কোণে রাজহাঁসের কিছু ডিম খুঁজে পায়। লুকিয়ে লুকিয়ে যত্ন করে। ডিম ফুটে বেরিয়ে আসে রাজহাঁসের ১৬টি ছানা। বাবাও কিন্তু জানতে পেরে দারুণ উৎসাহ দেয় তাকে। কিন্তু চোখ ফোটার পর ছোট্ট রাজহাঁসগুলো প্রথম দেখেছে অ্যামিকে, তাকেই মনে করছে মা! সে যা করছে, তা-ই করছে ওরা। তাহলে ওদের উড়তে শেখাবে কে? কেমন করেই-বা তারা শীতকালে উড়ে যাবে গরমের দেশে? অ্যামি আর তার বাবা মিলে কীভাবে এত সব সমস্যার সমাধান করল? সত্যি ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত ফ্লাই অ্যাওয়ে হোম মুক্তি পায় ১৯৯৬ সালে।
দীপু নাম্বার টু
এক্কেবারে আমাদের গল্প থেকে বানানো বাংলাদেশের সিনেমা এটি। কিশোর দীপু দারুণ সাহসী। নতুন স্কুলে গিয়ে অসাধারণ আর অদ্ভুত কিছু বন্ধু পায় ও। আর ওদের নিয়েই দীপু জড়ায় দুর্ধর্ষ এক অ্যাডভেঞ্চারে। গল্পের মূল কাহিনি এটাই। তবে খেয়াল করলে দেখবে, দীপুর বাবাই ওর জীবনের সবচেয়ে বড় শক্তি। তাদের সম্পর্কটা বন্ধুর মতো। বাবা দীপুকে কেমন করে সাহসী, দৃঢ়, স্বাধীন আর উদার মনের মানুষ হিসেবে গড়ে তুলছেন, তা-ও খেয়াল করার মতো। তাই বন্ধুদের সঙ্গে নানান কাণ্ডকীর্তি, অ্যাডভেঞ্চারের পাশাপাশি দীপু আর ওর বাবার সম্পর্কটা সত্যিই দারুণ এক ব্যাপার। দীপু নাম্বার টু মুক্তি পায় ১৯৯৬ সালে।
ফাইন্ডিং নিমো
কমলা-সাদা রঙের ছোট্ট মাছ নিমো। নিমোকে সারাক্ষণ আগলে রাখে বাবা মারলিন। কিছুতেই তাকে চোখের আড়াল হতে দেয় না। কিন্তু বাবার এত বিধিনিষেধে নিমোর বিরক্তির শেষ নেই। সে পুরো পৃথিবী ঘুরে দেখতে চায়। এই ঘুরে দেখার ইচ্ছা থেকেই একদিন ঘটে যায় বিরাট দুর্ঘটনা। ছোট্ট নিমো ধরা পড়ে এক ডুবুরির হাতে! যে গভীর সমুদ্রকে সারা জীবন এত ভয় পেয়েছে মারলিন, ছেলেকে বাঁচাতে সেখানেই শুরু হয় তার এক দুর্দান্ত অভিযান। শেষ পর্যন্ত মারলিন ছোট্ট নিমোকে উদ্ধার করতে পেরেছিল কি না, তা জানতে দেখে ফেলো ফাইন্ডিং নিমো (২০০৩) নামের অসাধারণ অ্যানিমেশন সিনেমাটি।
(গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় বাবা আছেন, এমন আরও কিছু সিনেমার মধ্যে দেখতে পারো—দ্য লায়ন কিং, টু কিল আ মকিংবার্ড, পারস্যুট অব হ্যাপিনেস, মিসেস ডাউটফায়ার, রেইনবো জেলি, ট্রেন টু বুসান, অনওয়ার্ড, মোয়ানা, মিনারি।)