মৌ মৌ মৌমাছি...

‘মৌমাছি মৌমাছি কোথা যাও নাচি নাচি’ কবিতাটার কথা মনে আছে তোমাদের? একটু দাঁড়াতে বলার পরও কবিতার সেই মৌমাছি থামায়নি তার নাচানাচি। থামলে কি আর চলে? খাবার সংগ্রহ করতে যেতেই হয় মৌমাছিদের। আর শীতকালের জন্য মৌমাছিদের যে আগে থেকেই মধু সঞ্চয় করে রাখতে হয়, তা নিশ্চয়ই জানো।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, মৌমাছিরা নাকি নাচতে নাচতেই পায় খাবার, নতুন বাসস্থান আর প্রকৃতির নানান রহস্যের সন্ধান। এক বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে, একদল মৌমাছিকে যদি একটা পাহাড়ের একপাশে রাখা হয় আর তাদের জন্য খাবারের একমাত্র উৎসটি রাখা হয় পাহাড়ের অন্য পাশে, তাহলেও নাকি বিভিন্ন কোণ বরাবর যেতে যেতে ওরা ঠিকই পৌঁছে যাবে খাবারের কাছে।

একবার খাবার সংগ্রহ করতে গেলে ৫০ থেকে ১০০টি ফুলে ঘুরে বেড়ায় ওরা। আচ্ছা, একটা মৌমাছি খাবারের সন্ধানে নিজের বাসস্থান থেকে কতটা দূরে যেতে পারে জানো? প্রায় পাঁচ মাইল! অবাক হচ্ছ তো? কীভাবে মৌমাছিরা মধু তৈরি করে, তা জানলেও অবাক হতে পারো তোমরা। ফুলের নির্যাস সংগ্রহ করে এর সঙ্গে নিজেদের মুখের এক বিশেষ ধরনের রস মিশিয়ে নেয় ওরা। এরপর মৌচাকের মধ্যে ছোট্ট ছয়কোনা খোপে এগুলো জমা করে রাখে। ধীরে ধীরে এই রসের পানি শুকিয়ে যেতে থাকে। নির্দিষ্ট মাত্রায় পানি শুকানোর পর মৌমাছিরা মোমের সাহায্যে খোপের মুখ বন্ধ করে দেয়। ছোট্ট মাথায় কত বুদ্ধি ওদের!
মৌমাছিদের বুদ্ধিমত্তা আর পরিশ্রমের কথা তো জানলে; এবার শোনো একই মৌচাকের বিভিন্ন মৌমাছির কাজের ভিন্নতার কথা। এক থেকে দুদিন বয়সের মৌমাছিরা ব্যস্ত থাকে মৌচাকের বিভিন্ন অংশ পরিষ্কার করতে। ছয় থেকে এগারো দিন বয়সীদের দায়িত্ব ছোটদের খাওয়ানো। বারো থেকে সতেরো দিন বয়সের মৌমাছিরা মোম তৈরি করে আর মৌচাক তৈরিতে সাহায্য করে। আঠারো থেকে একুশ দিন বয়সীদের কাজ মৌচাক পাহারা দেওয়া।
আচ্ছা, তোমরা কেউ বি মুভি নামের অ্যানিমেটেড চলচ্চিত্রটি দেখেছ? সেখানে দেখানো হয়েছে মৌমাছিরাও পড়াশোনা করে, কথা বলতে পারে মানুষের মতোই। একটা মেয়ে একটা মৌমাছির জীবন বাঁচানোর পর মৌমাছিটা কীভাবে তার বন্ধু হয়ে উঠল, সেই গল্প জানতে দেখতে পারো এই চলচ্চিত্র। ছবিতে মৌমাছিরা নিজেদের হুলকে একে অন্যের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করতে জানে। এমনকি একপর্যায়ে নিজেদের অধিকার আদায়ের জন্য ওরা মানুষের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দেয়! চমৎকার এই ছবিটা না দেখে থাকলে ভীষণ মিস করেছ!
রাফিয়া আলম
সূত্র: টুডেআইফাউন্ডআউট ডট কম