বিজয়ের ফুল ফুটেছে

অলংকরণ: আরাফাত করিম

বিজয়ের ফুল ফুটেছে

আনজীর লিটন

লাল-সবুজের পতাকা আনতে

মুক্তিযুদ্ধ শিখেছি

স্মৃতির স্তম্ভ শহীদ মিনারে

বীরদের নাম লিখেছি।

এই যে আমরা জেগে আছি দেখো

হৃদয়ে স্বদেশ এঁকেছি

বুকের ভেতরে সবার জন্য

সুখের স্বপ্ন রেখেছি।

আমরা আনব নতুন সকাল

গড়ব শান্তি-সমতা

হৃদয়জুড়ে সম্প্রীতি–সুর

দেশের প্রতি মমতা।

এক মাটি জলে থাকব সবাই

নতুন সূর্য উঠেছে

একাত্তরের শপথ থেকেই

বিজয়ের ফুল ফুটেছে।

ওঁদের ঠিকানা

রোমেন রায়হান

এমনি এমনি বিজয় আসেনি

আসেনি নতুন উষা

বিজয় আনতে জীবন দিয়েছে

বাংলার চাষাভুষা।

অস্ত্র ধরেছে খেটেখাওয়া লোক

কামার-কুমোর-জেলে

মাতৃভূমিকে স্বাধীন করতে

রক্ত দিয়েছে ঢেলে।

বুকের রক্তে বিজয় এসেছে

ওঁদের হয়নি ফেরা

ওঁদের নামটি লিখতে ভুলেছে

শিক্ষিত মানুষেরা।

ওঁদের ছুঁয়েছে পবিত্র মাটি

পদক পারেনি ছুঁতে

ওঁদের ঠিকানা ইতিহাসে নয়,

বজ্রতে, বিদ্যুতে।

সালাম সালাম হাজার

ওয়াসিফ-এ-খোদা

স্বাধীন বাংলা বেতার

নাম শোনে নাই কে তার—

অগ্নিঝরা গানে

যুদ্ধের ময়দানে

‘চরমপত্র’ হানে

শত্রুর সন্ধানে

জয় বাংলার জয়ে

মুক্তিরা নির্ভয়ে

লক্ষ্যে অটল থাকে

শক্তির বান ডাকে

তুলনা হয় রে তার!

স্বাধীন বাংলা বেতার।

উহ্ যা ঝাল যা টক

কথিকা আর নাটক

গায়ক–যন্ত্রী–পাঠক

ওঁরাও যোদ্ধা, রণে

ভয় শত্রুর মনে

পরাজয়ের, সাজার;

সালাম সালাম হাজার

স্বাধীন বাংলা বেতার

তুলনা নাই রে তার।

মুক্তিসেনার দল

আহমেদ সাব্বির

ইশকুলে আজ যুদ্ধ হলো, কী যে ভয়ংকর

স্যার বললেন, দেশ বাঁচাতে অস্ত্র তুলে ধর।

‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে তাক করে বন্দুক

বুলেট ছুড়ে গুঁড়িয়ে দিলাম শত্রুসেনার বুক।

দখল করে অস্ত্র–গোলা, গানবোট, ট্যাংক আর

গ্রেনেড ছুড়ে উড়িয়ে দিলাম তাবু ও বাংকার।

খানসেনারা করল ভয়ে আত্মসমর্পণ

রাজাকাররা বনবাদাড়ে করল পলায়ন।

আমরা পেলাম স্বাধীনতা লাল–সবুজের ভোর

স্যারের লেখা যুদ্ধনাটক ‘মহান একাত্তর’।

আমরা পেলাম বিজয়মুকুট, স্যারের চোখে জল

স্যার বললেন, তোরাই আমার মুক্তিসেনার দল।