লাসলো ক্রাসনাহোরকাইয়ের সঙ্গে শেষবার দেখা হয়েছিল একটা আর্ট গ্যালারিতে। তাঁর অনন্য গদ্যভঙ্গি নিয়ে আমাদের কথা হয়েছিল, আর বেশ ভালোও লেগেছিল। ক্রাসনাহোরকাই এক অসাধারণ সাহিত্যভুবনের স্রষ্টা, যা তাঁকে হাঙ্গেরির অন্যতম প্রধান লেখক এবং নোবেল পুরস্কারের দীর্ঘদিনের প্রার্থী করে তুলেছিল। তাঁর গল্পগুলো গঠিত হয় একক এবং অবিচ্ছিন্ন বাক্যে—যা কখনো নমনীয়ভাবে জটিল দার্শনিক চিন্তার দিকে মোড় নেয়, আবার কখনো রসিকতায় ভরে ওঠে। তাঁর বিশ্বাস, ভালোবাসার মতো অভিজ্ঞতা—যা প্রকাশ করতে সময় ও সাহস লাগে তা সংক্ষিপ্ত বাক্যে ধরা যায় না।
লাসলো ক্রাসনাহোরকাইয়ের গল্পগুলো গঠিত হয় একক এবং অবিচ্ছিন্ন বাক্যে—যা কখনো নমনীয়ভাবে জটিল দার্শনিক চিন্তার দিকে মোড় নেয়, আবার কখনো রসিকতায় ভরে ওঠে। তাঁর বিশ্বাস, ভালোবাসার মতো অভিজ্ঞতা—যা প্রকাশ করতে সময় ও সাহস লাগে তা সংক্ষিপ্ত বাক্যে ধরা যায় না।
১৯৫৪ সালে হাঙ্গেরিতে জন্ম নেওয়া ক্রাসনাহোরকাইয়ের প্রারম্ভিক জীবন কেটেছে ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে। পুলিশ তাঁর পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করেছিল। তাঁর প্রথম দিকের উপন্যাসগুলো, যেমন ‘সাটানটাঙ্গো’ ও ‘দ্য মেলানকোলি অব রেজিস্ট্যান্স’, সেই দমবন্ধ করা আবহই তুলে ধরে। ইউরোপের আইরন কার্টেনের পতনের পর তাঁর লেখায় আসতে থাকে একধরনের হালকা স্বচ্ছতা, যা স্পষ্টভাবে প্রকাশ পায় ‘সেইবো দেয়ার বিলো’ উপন্যাসে—যেখানে তিনি গভীরভাবে যুক্ত হয়েছেন এশীয় শিল্প ও দর্শনের সঙ্গে, বিশেষ করে বৌদ্ধ ভাবনায়। তাঁর সাম্প্রতিক উপন্যাস ‘হারশট০৭৭৬৯’-এ তিনি একদিকে জোহান সেবাস্টিয়ান বাখকে, আরেক দিকে জার্মান নব্য নাৎসিবাদকে পাশাপাশি স্থাপন করেছেন। আর দ্য ইয়েল রিভিউ এ তাঁর এ সদ্য প্রকাশিত গল্প ‘এন অ্যাঞ্জেল পাসড অ্যাবভ আস’-কে তুলনা করেছে ইউক্রেন যুদ্ধের কাদামাখা ট্রেঞ্চের বাস্তবতার সঙ্গে প্রযুক্তিনির্ভর বৈশ্বিকীকরণের মায়াময় প্রতিশ্রুতিগুলোর।
— হারি কুঞ্জরু
আপনার গল্প ‘এন অ্যাঞ্জেল পাসড অ্যাবভ আস’-এর পটভূমি ইউক্রেনে। ইউক্রেনের এই যুদ্ধ আপনার কাছে কী অর্থ বহন করে? একজন ইউরোপীয়, একজন হাঙ্গেরিয়ান এবং দীর্ঘদিন জার্মানিতে বসবাসকারী হিসেবে—এই সংঘাতকে আপনি কীভাবে দেখেন, তা জানতে আগ্রহী হব।
লাসলো ক্রাসনাহোরকাই: আমি আর কী-ইবা ভাবতে পারি! প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কি আবার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে? যুদ্ধের ভাবনাই তো আমাকে আতঙ্কিত করে তোলে। হাঙ্গেরি ইউক্রেনের প্রতিবেশী দেশ, আর অরবান সরকারের এমন অবস্থান অভূতপূর্ব, হাঙ্গেরির ইতিহাসে এমন ঘটনা প্রায় নজিরবিহীন। আমার আতঙ্কের একটা কারণ এই যে ইতিহাসে সব সময় আমাদের ওপরেই আক্রমণ চালানো হয়েছে আর আমরা সব সময়ই হেরেছি। আবার অন্যদিকে আমি বেশি আতঙ্কিত এ কারণে যে আমি কখনোই ভাবিনি হাঙ্গেরির রাজনৈতিক নেতৃত্ব এ বিষয়ে এ রকম তথাকথিত নিরপেক্ষতার কথা বলতে পারে! রুশরা যখন পাশের একটি দেশে এভাবে হামলা চালাচ্ছে, তখন কোনো দেশ কীভাবে নিরপেক্ষ থাকতে পারে? প্রায় তিন বছর ধরেই তো তারা ইউক্রেনীয়দের হত্যা করে চলেছে, তাই না? হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী বলেন এটা নাকি ‘স্লাভিকদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার’! এর মানে কী? যখন এত এত মানুষ এভাবে মারা যাচ্ছে, তখন এটা কীভাবে কেবল ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়’ হতে পারে? একটা দেশের নেতা কীভাবে এই কথা বলতে পারেন? তা-ও আবার এমন একটি দেশের নেতা, যারা কিনা নিজেরাই ইতিহাসজুড়ে বারবার বহিঃশক্তির আক্রমণের শিকার হয়েছে? অন্যদের দ্বারা তো বটেই, রুশদের দ্বারাও। আর এই রুশরাও সেই একই রুশ, যারা ইউক্রেনে হামলা চালাচ্ছে। এই হাঙ্গেরীয় শাসনব্যবস্থাকে আমার কাছে মনে হয় উদ্ভ্রান্ত, বদ্ধ উন্মাদ! হাঙ্গেরির এ অবস্থানের পেছনের কারণ হয়তো কিছু অমানবিক হিসাব-নিকাশ। ওদের যুক্তিটা এমন যে ‘হয়তো তারা ইতিমধ্যেই আমার মেয়েকে মেরে ফেলেছে, কিন্তু আমি সেটা মেনে নেব, যেন তারা আমার মায়ের ক্ষতি না করে।’ অথচ এ যুক্তির গলদটা বোঝা কি এতই কঠিন? যারা মেয়ের ক্ষতি করেছে, তারা অবশ্যই মায়েরও ক্ষতি করবে, দুজনকেই মেরে ফেলবে। কিন্তু এই মূর্খ প্রশাসন পরে আছে নিরপেক্ষতার ঠুলি।
আমার চোখের সামনে এক নোংরা, পচা যুদ্ধ চলছে। দুনিয়া ধীরে ধীরে এর সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে। এত কিছু আমি আর নিতে পারছি না। মানুষ মানুষকে হত্যা করবে, হত্যাযজ্ঞ চালাবে, এসব আমি মেনে নিতে অক্ষম। হয়তো এটা আমারই মানসিক সমস্যা, কিন্তু আমি এটা কিছুতেই মেনে নিতে পারি না।লাসলো ক্রাসনাহোরকাই
‘এন অ্যাঞ্জেল পাসড অ্যাবভ আস’-এ আমরা দেখি একটা গর্তের ভেতরে মৃত্যুপথযাত্রী দুজন মানুষকে; তাদের একজন অন্যজনকে বৈশ্বিকীকরণের বিস্ময় নিয়ে রূপকথার মতো গল্প শোনাচ্ছে। এই রূপকথা আর তাদের বাস্তব মৃত্যুযন্ত্রণার মধ্যে তীব্র বৈপরীত্য রয়েছে। এই বৈপরীত্য যেন দ্রুতগামী প্রযুক্তিনির্ভর দুনিয়ার আশাবাদী সুরটাকে ভেঙে দেয়। কেন আপনি এই দুটি উপাদান পাশাপাশি রেখেছেন—এ বিষয়ে কিছু বলবেন?
লাসলো ক্রাসনাহোরকাই: আমার চোখের সামনে এক নোংরা, পচা যুদ্ধ চলছে। দুনিয়া ধীরে ধীরে এর সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে। এত কিছু আমি আর নিতে পারছি না। মানুষ মানুষকে হত্যা করবে, হত্যাযজ্ঞ চালাবে, এসব আমি মেনে নিতে অক্ষম। হয়তো এটা আমারই মানসিক সমস্যা, কিন্তু আমি এটা কিছুতেই মেনে নিতে পারি না।
আমার চারপাশের এই সবকিছু ঘটছে এমন এক সময়ে, যখন ডিজিটাল জগতে ভবিষ্যতের স্বপ্ন আঁকা হচ্ছে—যেখানে বলা হচ্ছে, প্রযুক্তির অভূতপূর্ব অগ্রগতি শিগগিরই এক সুন্দর নতুন দুনিয়া এনে দেবে। এসব ভাবনা থেকেই গল্পটি লেখা। আমার কাছে পুরো ব্যাপারটিকে মনে হয় উন্মাদনা। যখন বিশ শতকের মতো করে একটা ভয়াবহ যুদ্ধ চলছে পৃথিবীতে, কেউ কেউ বলছে কীভাবে খুব শিগগিরই আমরা মঙ্গল গ্রহে চলে যেতে পারব। পুতিন ও তার সমর্থকেরাই যদি প্রথম যাত্রী হিসেবে মঙ্গল গ্রহে চলে যেত পৃথিবী ছেড়ে, তাহলে বরং ভালো হতো।
আপনার গল্পের বক্তা বলে, ‘আমি ভবিষ্যৎ-বিশ্লেষক নই; আমি কেবল প্রবণতা, তথ্য ও উপাত্ত বিশ্লেষণ করি।’ তিনি ‘ব্রহ্মাণ্ডীয়’ বা ব্যক্তিগত ‘মনস্তাত্ত্বিক’ স্তরে স্বচ্ছন্দ বোধ করেন না, বরং সামাজিক স্তরেই থাকতে চান। আপনার কি মনে হয় আমাদের ‘ভবিষ্যৎ-জ্ঞান’ তাহলে বাস্তব, তথ্যভিত্তিক জ্ঞানের চেয়ে বেশি আধ্যাত্মিক বা মেটাফিজিক্যাল?
লাসলো ক্রাসনাহোরকাই: প্রশ্নটা আমার জন্য বেশ অস্বস্তিকর। গল্পটির ঘটনা তো কোনো সাধারণ পটভূমিতে ঘটছে না। ঘটছে একটা বিশেষ অবস্থায়। সেখানে একজন আহত সৈনিক অন্য এক মারাত্মকভাবে আহত সৈনিককে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করছে আশার কথা বলে—এক সুন্দর নতুন দুনিয়ার কথা বলে, যেখানে সবকিছু বদলে যাবে, সবকিছু হবে দারুণ। মানুষের মৌলিক প্রবৃত্তিই তাকে অন্যকে সান্ত্বনা দিতে প্ররোচিত করে। এটা ছাড়া তো তাদের আর কোনো আশা নেই। যে সৈনিক ভবিষ্যতের ডিজিটাল স্বপ্নের গল্প বলছে, এমনকি সে নিজেও জানে যে সে কেবল সময় কাটানোর জন্য সে এসব বলছে, আর মনে মনে আশা করছে যেন তাদের সহযোদ্ধারা ফিরে এসে তাদের উদ্ধার করে নিয়ে যায়। কিন্তু যে শুনছে আর যে বলছে, তারা দুজনেই জানে যে এটা অসম্ভব।
তাই আপনার প্রশ্নের উত্তরে আমাকে বলতে হবে যে—না, এই বক্তব্যে কোনো আধ্যাত্মিক বা মেটাফিজিক্যাল দিক নেই, বরং এটি গভীরভাবে বাস্তব—অকারণ আশার কথা বলে গুরুতর আহত মানুষটিকে কিছুটা সময় জীবিত রাখার চেষ্টা। প্রশ্নটা আমার জন্য বেশ অস্বস্তিকর। গল্পটির ঘটনা তো কোনো সাধারণ পটভূমিতে ঘটছে না। ঘটছে একটা বিশেষ অবস্থায়। সেখানে একজন আহত সৈনিক অন্য এক মারাত্মকভাবে আহত সৈনিককে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করছে আশার কথা বলে—এক সুন্দর নতুন দুনিয়ার কথা বলে, যেখানে সবকিছু বদলে যাবে, সবকিছু হবে দারুণ। মানুষের মৌলিক প্রবৃত্তিই তাকে অন্যকে সান্ত্বনা দিতে প্ররোচিত করে। এটা ছাড়া তো তাদের আর কোনো আশা নেই। যে সৈনিক ভবিষ্যতের ডিজিটাল স্বপ্নের গল্প বলছে, এমনকি সে নিজেও জানে যে সে কেবল সময় কাটানোর জন্য এসব বলছে, আর মনে মনে আশা করছে যেন তাদের সহযোদ্ধারা ফিরে এসে তাদের উদ্ধার করে নিয়ে যায়। কিন্তু যে শুনছে আর যে বলছে, তারা দুজনেই জানে যে এটা অসম্ভব।
তাই আপনার প্রশ্নের উত্তরে আমাকে বলতে হবে যে—না, এই বক্তব্যে কোনো আধ্যাত্মিক বা মেটাফিজিক্যাল দিক নেই, বরং এটি গভীরভাবে বাস্তব—অকারণ আশার কথা বলে গুরুতর আহত মানুষটিকে কিছুটা সময় জীবিত রাখার চেষ্টা।
আমরা কেবল ভবিষ্যতের কথা বলে নিজেদের কল্পনায় ডুবিয়ে রাখতে পারি। আমাদের সব আশা ভবিষ্যৎকে ঘিরে। এমন এক ভবিষ্যৎ, যা কখনো বর্তমানে এসে পৌঁছায় না। সব সময়ই কেবল আসি-আসি করতে থাকে। কিন্তু বাস্তবতা হলো যে কেবল বর্তমানটাই সত্য। বর্তমান ছাড়া আর কোনো কিছুর আসলে অস্তিত্ব নেই।লাসলো ক্রাসনাহোরকাই
এই যে পটভূমি—এক নির্মম ট্রেঞ্চ যুদ্ধের ফ্রন্টলাইন!—আপনার লেখায় খুব পরিচিত এক দৃশ্য। সুসান সনট্যাগ আপনার কথা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেছিলেন যে আপনি নাকি—‘মাস্টার অব দ্য অ্যাপোক্যালিপস’। কিন্তু যদি আপনার লেখাগুলো আসলেই প্রলয়ের অভিজ্ঞতা নিয়ে হয়, তাহলে বলতে হবে প্রলয় আপনার কাছে কোনো আকস্মিক ঘটনা নয়। বরং এমন একটা ধীর পচনশীল প্রক্রিয়া যা আস্তে আস্তে সময় নিয়ে ঘটে। সে ক্ষেত্রে আপনার মতে ভবিষ্যতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কটা কী? আমরা কি শেষ সময়ে বসবাস করছি, নাকি কোনো এক প্রলয়-পরবর্তী সময়ে?
লাসলো ক্রাসনাহোরকাই: অ্যাপোক্যালিপস বা প্রলয় কোনো একক ঘটনা নয়। নিউ টেস্টামেন্টের শেষ বিচারের ভবিষ্যদ্বাণীতে যেমনটা বলা হয়েছে, প্রলয় হয়তো তেমন। এক সুদীর্ঘ প্রক্রিয়া, যা বহু আগেই শুরু হয়ে গেছে এবং আরও বহুদিন ধরে চলবে। প্রলয় এ মুহূর্তেও ঘটছে। প্রলয় এক চলমান বিচারপ্রক্রিয়া।
আমরা কেবল ভবিষ্যতের কথা বলে নিজেদের কল্পনায় ডুবিয়ে রাখতে পারি। আমাদের সব আশা ভবিষ্যৎকে ঘিরে। এমন এক ভবিষ্যৎ, যা কখনো বর্তমানে এসে পৌঁছায় না। সব সময়ই কেবল আসি-আসি করতে থাকে। কিন্তু বাস্তবতা হলো যে কেবল বর্তমানটাই সত্য। বর্তমান ছাড়া আর কোনো কিছুর আসলে অস্তিত্ব নেই।
আমরা আসলে অতীত সম্পর্কে কিছুই জানি না, কারণ যাকে আমরা অতীত বলে ভাবি, সেটা আসলে অতীত নিয়ে বানানো একটা গল্প কেবল। আসলে বর্তমানটাও একই ধরনের গল্প। এই গল্পের ভেতর মিশে থাকে অতীতের গল্প, আর সেই ভবিষ্যতের গল্প—যা কখনো আসবে না। তবু যেটাকে আমরা বর্তমান বলি, আমরা অন্তত বেঁচে থাকি তার ভেতরেই। এ মুহূর্তটুকু অন্তত বাস্তব। এর বাইরে আর কোনো কিছুর অস্তিত্ব নেই। নরক আর স্বর্গ—দুটিই আসলে পৃথিবীর ভেতরেই আছে। এ মুহূর্তের ভেতরেই আছে। আমাদের স্বর্গ-নরকের জন্য অপেক্ষা করতে হয় না। তবু আমরা অপেক্ষা করি। নিজেদের আশা দিই, সান্ত্বনা দিই—যে অপেক্ষা করার মতো কিছু একটা আছে।
আপনি আর্ট নিয়ে প্রচুর লিখেছেন—বিশেষত ‘সেইবো দেয়ার বিলো’তে অনেক কিছু লিখেছেন শিল্প নিয়ে। ভবিষ্যৎকে কল্পনা করা বা সেটাকে বাস্তব করে তোলার ক্ষেত্রে শিল্পের ভূমিকা কী? শিল্পের মধ্যে কি কোনো মুক্তির বা উদ্ধারকরণের সম্ভাবনা লুক্কায়িত আছে?
লাসলো ক্রাসনাহোরকাই: শিল্প হলো হারিয়ে যাওয়ার অনুভূতি, তথা নিয়তির প্রতি মানবজাতির এক অসাধারণ প্রতিক্রিয়া। সৌন্দর্যের দিকের এক যাত্রা। ‘সৌন্দর্য’ ব্যাপারটা বাস্তব। কিন্তু সেটা একটা বিশেষ সীমার ওপরে অবস্থান করে, যেখানে আমরা একটা পর্যায়ের পর আর তার নাগাল পাই না। আমাদের থেমে যেতে হয়, আমরা তাকে ছুঁতে পারি না। আমরা শুধু দূর থেকে তাকিয়ে দেখে স্বীকার করতে পারি যে—হ্যাঁ, ওখানে সত্যিই কিছু একটা আছে। সৌন্দর্য ব্যাপারটা এভাবেই তৈরি হয়ে ওঠে। সৌন্দর্য হলো আশা ও উচ্চতর সুশৃঙ্খলতার সম্মিলনে গড়ে ওঠা এক জটিল সৃষ্টি।
হারি কুঞ্জরু সাতটি উপন্যাসের লেখক; তাঁর সাম্প্রতিকতম বই হলো ব্লু রুইন। তিনি নিয়মিত লেখেন হারপার্স, দ্য নিউইয়র্ক রিভিউ অব বুকস এবং দ্য নিউইয়র্ক টাইমস বুক রিভিউতে।