কেমন আছেন?
হাশিম মাহমুদ: ভালো।
কী করেন?
হাশিম মাহমুদ: খেলা দেখি।
আজ সকালে রেওয়াজে বসেছিলেন?
হাশিম মাহমুদ: বসেছিলাম সকাল নয়টায়।
প্রতিদিনই কি রেওয়াজ করেন?
হাশিম মাহমুদ: হুম। চেষ্টা করি।
কী রেওয়াজ করলেন?
হাশিম মাহমুদ: সারগাম করলাম।
আপনার জীবনের প্রথম গান কোনটি, সে গানের ভাবনা কোথা থেকে এসেছিল মনে আছে?
হাশিম মাহমুদ: মনে নেই খুব একটা। খুব ছোট থেকে গুনগুন করি। ১৩–১৪ বছর বয়স থেকেই গানের সুর আসে। ১৯৮৭ সালে এইচএসসি পরীক্ষার পর ছায়ানটে যাতায়াত শুরু করি। কিছুদিন সন্জীদা খাতুনের সাহচার্য পেয়েছিলাম। ছায়ানটের নজরুলসংগীতের কোর্সেও ভর্তি হয়েছিলাম।
গান লেখার পরিকল্পনা কীভাবে করেন?
হাশিম মাহমুদ: আগে সুর আসে। পরে কথা বসাই। কোনো কোনো গান তৈরি করতে এক বছরের বেশি সময় লাগে। ধরেন, একটা অন্তরা মাথায় এল। ছয় মাস পর আরেকটা অন্তরা।
আমি খুব গৃহী মানুষ নই। বাংলাদেশের আনাচকানাচে ঘুরে বেড়িয়েছি চিরকাল। পাহাড়ি গান, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর গান, বাউলগানই আমার সংগীত নির্মাণের অনুপ্রেরণা। তা ছাড়া রেডিওর কল্যাণে আফ্রিকান লোকসংগীতও আমার কানে আসে।হাশিম মাহমুদ
আপনার ‘বাজি’ গানটি এখন ট্রেন্ড। অনুভূতি কেমন?
হাশিম মাহমুদ: খুব আনন্দ হচ্ছে। যাঁরা আমাকে মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন, তাঁদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। পরিচালক মেজবাউর রহমান সুমন, ইমন চৌধুরীসহ কোক স্টুডিওর সঙ্গে সম্পৃক্ত সবার প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।
আপনার ‘সাদা সাদা কালা কালা’ গানটিও তো বিখ্যাত হয়েছিল। প্রচার বিমুখ মানুষ আপনি। গান যেভাবে হিট হয়ে চলেছে—জনপ্রিয়তার স্বাদ প্রচার বিমুখ মানুষের জন্য কেমন বলবেন?
হাশিম মাহমুদ: গান তৈরি করার সময় শুধু গানটাই ভাবি। প্রচার নিয়ে ভাবিনি। গান তৈরি হওয়ার পর মনে হতো, সবার কাছে আমার গান পৌঁছে যাক। সেটা সবাই চায়। আমিও চেয়েছি। কিন্তু কোনো দিন প্রচারের জন্য নিজ থেকে চেষ্টা করিনি। পরিচালক মেজবাউর রহমান সুমন চারুকলার প্রথম বর্ষে ভর্তি হওয়ার পর থেকে আমার গান খুব ভালোবাসত। ২০০৪ সালের পর চারুকলায় খুব একটা যেতাম না। সে আমাকে খুঁজে বের করে সবার সামনে নিয়ে আসে।
সুর কি মনে রাখার জন্য রেকর্ড করে রাখেন?
হাশিম মাহমুদ: গাইতে গাইতে মগজেই থেকে যায়। সুর, বাণী—দুটিই।
আপনার গানের অনুপ্রেরণা কী?
হাশিম মাহমুদ: এ দেশের মাটির গান মূল অনুপ্রেরণা। তা ছাড়া কাজী নজরুল ইসলামের গান, আলতাফ মাহমুদের গান, ভারতের রাহুল দেববর্মন, কবীর সুমন, চৌরাসিয়ার বাঁশিও শুনতাম।
আপনার গানে লোকজ সুরকে প্রাধান্য দিতে দেখা যায়, কারণটা যদি বলতেন।
হাশিম মাহমুদ: আমি খুব গৃহী মানুষ নই। বাংলাদেশের আনাচকানাচে ঘুরে বেড়িয়েছি চিরকাল। পাহাড়ি গান, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর গান, বাউলগানই আমার সংগীত নির্মাণের অনুপ্রেরণা। তা ছাড়া রেডিওর কল্যাণে আফ্রিকান লোকসংগীতও আমার কানে আসে। সেইখান থেকেও অনুপ্রেরণা পাই।
এখনকার তরুণরাও আপনার সংগীতকে গ্রহণ করছেন, কীভাবে দেখছেন?
হাশিম মাহমুদ: খুব ভালো লাগে। মানুষের কাছে পৌঁছানোর ক্ষুধা সবার থাকে। তবে আমি কিছুতেই খুব বেশি উচ্ছ্বসিত হই না। আমার আরও অনেক গান আছে। আমি জানি, সেগুলো মানুষের কাছে পৌঁছালে মানুষ সে গানগুলোও নিশ্চিতভাবে ভালোবাসবে।
দেশ, সমাজ নিয়ে শিল্পীর ভাবনা থাকে। ১০ বছর পর নিজের দেশটাকে কোথায় দেখতে চান?
হাশিম মাহমুদ: আমি চাই, সবাই সমান অধিকার পাবে। নির্দিষ্ট একটা গোষ্ঠীর হাতে টাকা আটকে থাকবে না। দেশে টাকার সমবণ্টন থাকবে। কোনো গরিব থাকবে না।
আপনি কি একজন মার্ক্সবাদী?
হাশিম মাহমুদ: আমি মার্ক্সবাদী নই। সেসব এত বুঝিও না। যেটা ন্যায়সংগত মনে করি, সেটাই বলি।
বিশেষ কোনো স্বপ্ন আছে আপনার?
হাশিম মাহমুদ: আমার দৃঢ় বিশ্বাস ছিল, একদিন মানুষ ঠিক আমার গান শুনবে, গ্রহণ করবে। গান নির্মাণ করে যেতে চাই। আমার যেসব গান মানুষের সামনে এখনো আসেনি, আমার বিশ্বাস, সেসব গানও জনপ্রিয় হয়ে উঠবে।