সাক্ষাৎকারে কিরণ দেশাই

‘লেখকের কাজ ভিন্ন মানুষের গল্প দেখার চেষ্টা করা’

ভারতীয় লেখক কিরণ দেশাই ২০০৬ সালে বুকার জিতেছিলেন। এরপর প্রায় দুই দশক তাঁর কোনো নতুন উপন্যাস প্রকাশিত হয়নি। অবশেষে তাঁর দীর্ঘ প্রতীক্ষিত ‘দ্য লোনলিনেস অব সোনিয়া অ্যান্ড সানি’ আবার বুকারের দীর্ঘ তালিকায় জায়গা পেয়েছে। গত ১৪ আগস্ট বুকার প্রাইজের ওয়েবসাইটে কিরণ দেশাইয়ের একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়। বাংলায় অনুবাদ করেছেন রবিউল কমল

প্রশ্ন:

বুকার লংলিস্ট হওয়া বইয়ের পেছনে অনুপ্রেরণা

কিরণ দেশাই: আমি চেয়েছিলাম আধুনিক পৃথিবীতে ভালোবাসা ও একাকিত্ব নিয়ে একটি গল্প লিখতে। এটি বর্তমান সময়ের প্রেমের কাহিনি হলেও, থাকবে পুরোনো দিনের সৌন্দর্য। আমার বাবা-মায়ের সময়ে, বিশেষ করে আমার দাদা-দাদির সময়ে, ভারতীয় প্রেমের গল্প সাধারণত কিছু বিষয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকত। যেমন একই সম্প্রদায়, একই শ্রেণি, একই ধর্ম এবং প্রায়ই একই এলাকার মধ্যে আবদ্ধ থাকত। কিন্তু আজকের বৈশ্বিক পৃথিবীতে প্রেমের গল্পের অনেক দিকে ব্যাপ্তি হতে পারে।

আমার বইয়ের চরিত্র সোনিয়া ও সানি বারবার ভাবতে থাকে, ‘কেন একই মানুষ? অন্য কেউ কেন নয়? কেন এখানে, অন্য কোথাও নয়?’, অথচ আগের দিনে মানুষ একটি গণ্ডির মধ্যে থাকত। কিন্তু আমার এই দ্বিধাগ্রস্ত প্রেমিক-প্রেমিকা ইউরোপ, ভারত ও আমেরিকার নানা জায়গায় মিলছে, আবার আলাদা হয়ে যাচ্ছে। তাদের আত্মপরিচয়ও বদলে যাচ্ছে, হয়ে উঠছে আরও সাবলীল ও পরিবর্তনশীল।

আমি যখন ভৌগোলিক সীমা ও প্রজন্ম পেরিয়ে লিখছিলাম, তখন বুঝলাম গল্পটিকে আরও বড় পরিসরে নিতে পারি। শুধু প্রেমের একাকিত্ব নয়, বরং একাকিত্বের বিস্তৃত অর্থ নিয়েও লিখতে পারি। যেমন শ্রেণি ও বর্ণের গভীর বিভাজন, জাতিগত অবিশ্বাস, দ্রুত হারিয়ে যাওয়া অতীত—এগুলোকেও একধরনের একাকিত্ব হিসেবে দেখা যায়।

বুকারের দীর্ঘ তালিকায় কিরণ দেশাইয়ের নতুন উপন্যাস ‘দ্য লোনলিনেস অব সোনিয়া অ্যান্ড সানি’
ছবি: দ্যবুকারপ্রাইজ
প্রশ্ন:

যে বই পড়ে পড়ার প্রতি ভালোবাসা তৈরি হয়

কিরণ দেশাই: আমাকে পড়ার প্রেমে ফেলেছিল কেনেথ গ্রাহামের দ্য উইন্ড ইন দ্য উইলোস বইটা। আমার শৈশব কেটেছে ভারতে। তখন আমার বুকশেলফ ভরা ছিল ইংরেজি গল্পের বই। এর মধ্যে কিছু বই ছিল আমার বাবা-মায়ের সময়ের। আমার কাছে এখনো ১৯৫৪ সালের কাপড়ে বাঁধানো দ্য উইন্ড ইন দ্য উইলোস–এর একটা কপি আছে। পাতাগুলো পুরোনো হয়ে তামাটে রঙের হয়ে গেছে, কিন্তু ভেতরের ছবিগুলো এখনো স্পষ্ট।

গল্পটা আমি খুব ভালোবাসতাম। কারণ, এতে ছিল খুব সাদামাটা আনন্দ ও অ্যাডভেঞ্চারের টান। কোনটা বেছে নেব, ঘর না অভিযান? গল্পটা আমাকে প্রকৃতিকে ভালোবাসতেও শিখিয়েছে। আজও গল্পটা নিয়ে ভাবলে আমি হেসে ফেলি।

এরপর আমি পড়ি এমিলি ব্রন্টের উদারিং হাইটস এবং আর কে নারায়ণের মালগুড়ি শহর নিয়ে লেখা গল্পগুলো। নারায়ণের সহজ-সরল হাস্যরস আমার খুব ভালো লেগেছিল। ‘দ্য ভেন্ডর অব সুইটস’ গল্পে জগন নামে একটি চরিত্র বলে, ‘রুচিকে নিয়ন্ত্রণ করো, তাহলেই নিজেকেও নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে।’ তখন তাকে জিজ্ঞেস করা হয়, ‘নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করার দরকার কী?’ জগন বলে, ‘আমি জানি না, তবে সব সাধুই তো এ কথাই বলে গেছেন।’

প্রশ্ন:

যে বই পড়ে লেখক হওয়ার আগ্রহ তৈরি হয়

কিরণ দেশাই: কালভিনো নামের এক লেখক আছেন। তিনি শিশুদের স্বভাবসুলভ আনন্দকে বড়দের বইয়েও নিয়ে আসেন। তাঁর ‘দ্য ব্যারন ইন দ্য ট্রিস’ বইটা আমি বিশ বছর বয়সে পড়েছিলাম। তখনই আমার মাথায় প্রথম উপন্যাস লেখার আইডিয়া আসে। গল্পে আছে কোসিমো নামে এক ছেলে। যে শামুক খাওয়া নিয়ে পরিবারের সঙ্গে ঝগড়া করে। তারপর রাগ করে গাছে ওঠার জন্য পাগলামো করে। এই চরিত্রটা আমার খুব ভালো লেগেছিল। তাই আমিও লিখেছিলাম গাছে থাকা এক ভারতীয় ছেলের গল্প।

পরে আমি কালভিনোর আরেকটা বই পড়ি ‘সিক্স মেমোস ফর দ্য নেক্সট মিলেনিয়াম’। এখানে তিনি লেখার কিছু নান্দনিকতা তুলে ধরেন। যেগুলো হলো—সহজ ভাষা, গতি, বৈচিত্র্য ও দৃশ্যমানতা। আরেকটা বিষয় ছিল ধারাবাহিকতা, যেটা তিনি লিখে যেতে পারেননি। তবে এগুলোর মানে হলো, অনেক রংবেরঙের কল্পনার ভেতরেও একধরনের মিল থাকে। আমি অবাক হলাম, এগুলো হিন্দু ও বৌদ্ধ দর্শনের সঙ্গেও মিলে যায়। তখন ভাবতে শুরু করি, এই ধারণাগুলো শুধু লেখালেখি নয়, জীবনের জন্যও খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই ধারণা থেকে ধর্মনিরপেক্ষতা, শৈল্পিক, আধ্যাত্মিক বিষয়গুলোর প্রতি আমার আগ্রহ তৈরি হয়েছিল।

প্রশ্ন:

বারবার পড়তে ইচ্ছা হয় যে বই

কিরণ দেশাই: হুয়ান রুলফোর ‘পেদ্রো পারামো’। আমি এই বইটা পড়েছিলাম, কারণ গার্সিয়া মার্কেস বলেছিলেন, এটা তাঁর সবচেয়ে প্রিয় বইগুলোর একটি। এটি অনুবাদ করেছেন মার্গারেট সেয়ার্স পিডেন। এটি এমন একটি গল্প, যা শেষ হয় না। একটি নিষ্ঠুর ইতিহাসের গল্প, যেখানে একজন দয়ামায়াহীন ব্যক্তি থাকেন। তার কারণে আত্মারাও শান্তি পায় না। এই বইয়ের প্রথম লাইন এখনো আমাকে শিহরিত করে, ‘আমি কমালা এসেছি, কারণ আমাকে বলা হয়েছিল, আমার পিতার নাম পেদ্রো পারামো, সে এখানে থাকে।’

একজন মানুষ তার মৃত্যুর মুখে থাকা মায়ের প্রতিশ্রুতি পালন করতে কমালার মৃতভূমিতে যায়। সেখানে সে ন্যায্য বিচার খুঁজতে যায়, যা তার মা কখনো পায়নি।

বছরের পর বছর বইটি বারবার পড়ার পর আমি বুঝেছি, মেক্সিকো কেবল যুক্তরাষ্ট্র নয়, ভারতের জন্যও অনেক কথা বলতে চায়। মেক্সিকো আমার জন্যও কিছু বলতে চায়। আসলে অভিবাসীর গল্প মানেই অস্থিরতা, ভয়ের গল্প, না পাওয়া ন্যায্যতার গল্প। তখন আমার মনে হলো, আমিও এমন কিছু লিখতে পারি, অন্যভাবে হলেও। আমার কাছে যে বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ মনে হয় তা হলো, যেসব দেশের শিল্পীরা আগে কেবল সাবেক ঔপনিবেশিক শক্তির মাধ্যমে যোগাযোগ করতেন, এখন তাদের সরাসরি যোগাযোগ করা উচিত। যেমন মেক্সিকোর কবি অক্টাভিও পাজ ও আলোকচিত্রী গ্রাসিয়েলা ইতুরবিদে ভারতকে নতুনভাবে চিনিয়েছেন।

প্রশ্ন:

ভাবনা বদলে দিয়েছে যে বই

কিরণ দেশাই: সালমান রুশদি একবার ‘দ্য মুর’স লাস্ট সাই’ বইটি লেখা নিয়ে একটি কথা বলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ভারতের সংখ্যালঘুরা হিন্দুদের মতো ‘পুরো ভারতীয়’ নয়। এই কথাটা তিনি বারবার শুনতে শুনতে বিরক্ত ছিলেন। তাই প্রমাণ করতে চেয়েছিলেন, এটা ভুল। এ জন্য ভারতের দুই ছোট সম্প্রদায়, পর্তুগিজ ক্যাথলিক ও কোচির ব্ল্যাক ইহুদিদের গল্প লিখেছেন। গল্পে অরোরা দা গামা ও আব্রাহাম জোগইবি দেখা করে বিয়ে করে। তাদের সন্তান হলো মোরায়েস জোগইবি। রুশদির ভাষায়, সে হলো ‘একজনের সংখ্যালঘু’, একজন ভিন্ন মানুষের গল্প, যা আমাদের অন্য দৃষ্টিকোণ দেখায়।

আমি এই বই পড়ে বুঝতে পারলাম, একজন মানুষ বা লেখকের কাজ হলো সেই ভিন্ন মানুষের গল্প দেখার চেষ্টা করা, বোঝা। যখন আমরা মানবাধিকার বা সংখ্যালঘুর অধিকার নিয়ে লড়াই করি, তখন আমরা সাহিত্যিক দৃশ্যপটের জন্যও লড়াই করছি। আমরা অন্য মানুষের গল্প জানি, আর তাদের কাছ থেকে কিছু শিখি।

দা গামা ও জোগইবি পরিবারের গল্প পড়তে পড়তে মনে হলো, হ্যাঁ, এরা ভারতীয় ইহুদি ও ভারতীয় ক্যাথলিক। তারা অন্য জায়গার হতে পারে না। তারা ভারতের অংশ।

একজন মানুষ বা লেখকের কাজ হলো ভিন্ন মানুষের গল্প দেখার চেষ্টা করা, বোঝা। যখন আমরা মানবাধিকার বা সংখ্যালঘুর অধিকার নিয়ে লড়াই করি, তখন আমরা সাহিত্যিক দৃশ্যপটের জন্যও লড়াই করছি। আমরা অন্য মানুষের গল্প জানি, আর তাদের কাছ থেকে কিছু শিখি।
কিরণ দেশাই
প্রশ্ন:

যে বই উপন্যাস নিয়ে ভাবনা পাল্টে দিয়েছে

কিরণ দেশাই: যখন আমি স্প্যানিশ থেকে নাতাশা উইমারের অনুবাদ করা রবার্তো বোলানোর ‘দ্য স্যাভেজ ডিটেকটিভস’ পড়ি, তখন আমার নিশ্বাস বন্ধ হয়ে যায়। বইটা পড়তে গিয়ে আমি সত্যিই মুগ্ধ হয়েছিলাম। এই বইয়ে অজানা কবিরা দেশের সীমা পেরিয়ে ঘুরে বেড়ায় ইউরোপ, আফ্রিকা, আমেরিকায়। প্রায় সব জায়গার মানুষদের সঙ্গে দেখা করে। গল্পের গঠন একটু অদ্ভুত, কথোপকথন ও চিন্তাভাবনা মাঝে মাঝে মজার ও ফ্যান্টাসির মতো।

বোলানো এক অসম্ভব কাজ করেছেন। এই বইটি উপন্যাসের প্রচলিত নিয়মের বিপরীত কাজ করে। এই বই কোনো একক গল্পকেন্দ্রিক নয়, বরং গল্প ভেঙে অনেক ছোট ছোট অংশে ছড়িয়ে আছে। কোনো নির্দিষ্ট জায়গার সঙ্গে এটি বাঁধা নেই, বইটিকে যেন ‘বাড়িছাড়া’ করে দিয়েছেন তিনি। সব বিবরণ খুব স্পষ্ট। গল্প দ্রুত এগোয়, অনেক চরিত্রের দৃষ্টিকোণ আছে, তবে সবকিছুর মধ্যে একটা মূল ভাব রয়েছে; চলমানতা, অদৃশ্যতা, অচেনা মানুষদের জীবন। যাদের জন্য কোনো পতাকা বা দেশ গুরুত্বপূর্ণ নয়। এটি আজকের বিশ্বের জন্য খুব প্রাসঙ্গিক। পাশাপাশি এটি মেক্সিকো সিটিতে কফিশপে কিশোর বয়স কাটানোর একধরনের ভালোবাসার গল্পও। যারা সেখানে কখনো থাকেনি, তাদেরও সেই স্মৃতির অনুভূতি দেয়।

আরেকটি বই হলো ইয়াসুনারি কাওয়াবাতার ‘স্নো কান্ট্রি’। এই বইটিও আমাকে রহস্যময় ও মুগ্ধ করেছে। গল্পে একটি ট্রেন রাতের অন্ধকারে দীর্ঘ সুড়ঙ্গ পেরিয়ে বরফের দেশে পৌঁছায়। বইটিতে দূরত্বের ভাব প্রকাশ করা হয়েছে, গ্রামের জীবন ও টোকিওর শহুরে জীবন। চরিত্রগুলোর মধ্যে সম্পর্কের দূরত্ব, বাস্তব ও কল্পনার মধ্যে ফারাক আছে।

যদিও কাওয়াবাতা পশ্চিমা সাহিত্য জানতেন, কিন্তু এটি একেবারে এশীয় বই। এতে জেন বৌদ্ধ দর্শন আর হাইকু কবিতার প্রভাব আছে। গল্পের অনেক রহস্য কখনো প্রকাশ পায় না। কিন্তু আমরা ছবির মতো ভাব, প্রতিফলন এবং ঋতুর পরিবর্তনের সঙ্গে তা বুঝতে পারি। এটি বাস্তব জগৎকে একটু ভেঙে দিয়ে একটি প্রতীকী জগৎ তৈরি করে।

প্রশ্ন:

যে বইটা এখন পড়ছেন

কিরণ দেশাই: আমি এখন পড়ছি পেরুমুল মুরুগানের লেখা ‘পাইর’। তামিল থেকে এটি অনুবাদ করেছেন অনিরুদ্ধ বসুদেবন। মুরুগান গ্রামের মানুষের জীবনের কঠিন বাস্তবতার গল্প বলেন। তবে এই বইটা একই সঙ্গে একটি ভালোবাসার গল্পও। এটি আমাকে এমন একটি গ্রামের জীবন দেখায়, যা আমি নিজে আগে জানতাম না। আমি বিশেষভাবে অনেকগুলো অংশ উপভোগ করছি। যেমন একজন নারী এতটাই চমকে যায় যে, তার কাছে থাকা গাছের পিঁপড়াগুলোও তার ওপর উঠে আসে।

প্রশ্ন:

বুকারের তালিকায় থাকা যে বইটা সবার পড়া উচিত

কিরণ দেশাই: ১৯৭১ সালে এলিজাবেথ টেলরের লেখা ‘মিসেস প্যালফ্রে অ্যাট দ্য ক্ল্যারমন্ট’। সম্প্রতি এনওয়াইআরবি ক্ল্যাসিকস এটি পুনঃপ্রকাশ করেছে। আমি এটি স্থানীয় বইয়ের দোকানে দেখলাম। এটি বুকার তালিকায় থাকার বিষয়টি আমাকে অবাক করেছিল। সম্ভবত এর কারণ বইটি পড়তে খুব মজার, কিন্তু এতে কিছু দুঃখও আছে। গল্পে দেখা যায় বৃদ্ধদের হোটেলে বসবাসের বর্ণনা, যাদের যাওয়ার কোনো জায়গা নেই। তবে তারা মর্যাদা ধরে রাখার চেষ্টা করছে, কিন্তু প্রতিদিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়। গল্পে মিসেস প্যালফ্রের কৌশল আমাকে খুব স্পর্শ করেছে।

আমি ১৯৭০ সালে প্রকাশিত জে জি ফ্যারেলের উপন্যাস ‘ট্রাবলস’ বইটিও পড়েছি, কোভিডের এক শীতের সময়। দীর্ঘ সময় ধরে পড়েছিলাম। গল্পের পটভূমি ছিল ধ্বংসপ্রায় ম্যাজেস্টিক হোটেল। যেখানে অনেক বৃদ্ধ নারী ও বিড়াল থাকে। সেখানের পরিবেশ নষ্ট ও নিস্তেজ। গল্পে প্রেমের সম্পর্ক আছে, কিন্তু সবকিছুই সহজ প্রেম নয়। গল্পে ইংল্যান্ড-আয়ারল্যান্ড যুদ্ধের প্রভাব থাকায় ভীতি ও উদ্বেগের অনুভূতি আসে। ফ্যারেল এরপর ‘দ্য সিজ অব কৃষ্ণপুর’ ও ‘দ্য সিঙ্গাপুর গ্রিপ’ লিখেছিলেন।

আমি প্রশংসা করি এমন লেখকদের, যাঁরা দেশের সীমা পেরিয়ে গল্প বলার চেষ্টা করেছেন, যাতে ঔপনিবেশিকতার ফলাফল বোঝা যায়। যেমন নায়পল।

প্রশ্ন:

সবচেয়ে প্রিয় লেখার জায়গা

কিরণ দেশাই: লেখার জন্য আমার প্রিয় জায়গা হলো বারান্দা ও রান্নাঘর। মনে পড়ে, বর্ষার সময় বা গরমে বারান্দায় বসে লিখতাম। কখনো মশা তাড়াতাম, আবার কখনো বারান্দা দখল করে রাখা রাস্তার কুকুরগুলোর সঙ্গে খেলতাম।

যখন বারান্দায় কুকুর থাকে না, তখন আমি রান্নাঘরে বসে লিখি। যেমন আমার নিউইয়র্ক সিটির বাসা। রান্নাঘরের পরিবেশ আমাকে মনে করায়, লেখার কাজও জীবনের একটি স্বাভাবিক অংশ। পাশে কেটলি ফুটছে, লেটুস ধোয়া হচ্ছে, আর আমি লিখছি। সবকিছু মিলিয়ে যেন প্রতিদিনের জীবনের ছন্দের সঙ্গে লেখা চলছে।