রবীন্দ্রনাথের বিদ্যাসাগর

আগামীকাল ২৬ সেপ্টেম্বর বাঙালির রেনেসাঁর অন্যতম কান্ডারি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ২০০তম জন্মদিন। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর লেখা ও বক্তৃতায় সার্বিকভাবে মূল্যায়ন করেছেন এই মনীষীকে। সেই মূল্যায়নের আলোকে বর্তমানে এই লেখায় খোঁজা হয়েছে বিদ্যাসাগরের প্রাসঙ্গিকতা।

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (২৬ সেপ্টেম্বর ১৮২০—২৯ জুলাই ১৮৯১)
ছবি: সংগৃহীত

‘হে নূতন,

দেখা দিক আর-বার জন্মের প্রথম শুভক্ষণ

তোমার প্রকাশ হোক কুহেলিকা করি উদঘাটন

সূর্যের মতন।’

শুরুতেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘আনুষ্ঠানিক সংগীত’-এর তিনটি লাইন লিখলাম ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ২০০তম জন্মদিন স্মরণে। গানের এই কথাগুলো রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন নিজের জন্মদিন উপলক্ষে।

আজ এই লেখায় রবীন্দ্রনাথের শৈশব-কৈশোরের স্মৃতিচারণায় মূর্ত হয়ে ওঠা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর প্রসঙ্গ আলোচনা করব। ‘রবীন্দ্রনাথের বিদ্যাসাগর’ শিরোনামাঙ্কিত এ লেখায় ঈশ্বর ও রবি ভাস্বর হয়েছেন স্মৃতিকথা ও স্মরণ-বক্তৃতার আলোকে। সে জন্য ১২ আশ্বিন; ২৬ সেপ্টেম্বর ১৮২০ এবং ২৫ বৈশাখ; ৭ মে ১৮৬১-এর ছেদ ঘুচিয়ে প্রবেশ করছি রবীন্দ্রচেতনার আয়নায় উদ্ভাসিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর—প্রসঙ্গ-জগতে।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনস্মৃতি বইটিতে ‘শিক্ষারম্ভ’ ও ‘ঘরের পড়া’ অধ্যায় দুটিতে শিশু-বালক রবীন্দ্রনাথের স্মৃতিতে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর উদ্ভাসিত হয়েছেন শিশু-মন আবিষ্ট করা, শিশু-পাঠ রচয়িতা একজন অনন্যসাধারণ ব্যক্তিত্বরূপেএ

রবীন্দ্রনাথের পাঠশিক্ষা হয়েছিল গৃহশিক্ষক গুরুমহাশয়ের কাছে—অতি শৈশবে। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের বর্ণপরিচয় বইটি পড়ার স্মৃতিচারণায় তিনি বলেছেন, ‘কেবল মনে পড়ে; “জল পড়ে পাতা নড়ে।” তখন “কর, খল” প্রভৃতি বানানের তুফান কাটাইয়া সবেমাত্র কূল পাইয়াছি। সেদিন পড়িতেছি, “জল পড়ে পাতা নড়ে।” আমার জীবনে এইটেই আদিকবির প্রথম কবিতা।’

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে আদিকবির সম্মানে ভূষিত করেছেন বিদ্যাসাগরের জীবন অবসানের (২৯ জুলাই ১৮৯১) ২১ বছর পর প্রকাশিত বই জীবনস্মৃতিতে। আরও পরে বাংলা ১৩০২ সালের ১৩ শ্রাবণ বিদ্যাসাগরের স্মরণ সভায় সাংবাৎসরিক অধিবেশনে এমারল্ড থিয়েটার রঙ্গমঞ্চে পাঠ করেছিলেন ‘বিদ্যাসাগরচরিত’ শিরোনামে প্রবন্ধটি। এটি গ্রন্থিত আছে চারিত্রপূজা গ্রন্থে।

আলোচ্য দুটি বইয়ের সূত্রে ‘রবীন্দ্রনাথের বিদ্যাসাগর’ আমার মনে গুঞ্জরিত হতে শুরু করে। সাহিত্যসাধক, শিক্ষাবিদ, সমাজসংস্কারক, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর তাঁর সময়েও দুর্ভিক্ষ, দারিদ্র্য, সামাজিক-পারিবারিক অধঃপতন, আর্থিক কৃচ্ছ্র সাধনের মধ্য দিয়ে অসীম কষ্ট ও ধৈর্যসাধনার পথে বিরুদ্ধ স্রোতে সাঁতার কেটেছেন। এসব তথ্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিদ্যাসাগর-স্মৃতিচারণায় লিপিবদ্ধ আছে।

সামাজিক-পারিবারিক প্রতিকূলতার মধ্যেও বিদ্যাসাগর ব্যাপিত ছিলেন সমাজ সংস্কার ও সাহিত্যচর্চায়। এ ছাড়া শিশুর পাঠচর্চা, বাংলা অভিধানের প্রাথমিক গবেষণা, আইনি প্রক্রিয়ায় নারীর ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের সূচনাও করে গেছেন তিনি। রবীন্দ্রনাথের বিদ্যাসাগরবিষয়ক চর্চায়, লেখায়, বক্তৃতায় সেসব তথ্য নিপুণ বিন্যাস-বিশ্লেষণে—উপরন্তু তাঁর কথোপকথনে, গল্পে-উপন্যাস-প্রবন্ধেও এর সাক্ষ্য পাওয়া যায়। এমনকি বিদ্যাসাগরের আত্মকথা বিদ্যাসাগরচরিত (স্বরচিত)-এর প্রসঙ্গ টেনেও কথা বলেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

শিশু রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন, তাঁর গৃহশিক্ষক রামসর্বস্ব ভট্টাচার্য ইংরেজি বই বাংলা করে বলে যেতেন এবং শিশু-ছাত্র রবীন্দ্রনাথকে সেই সব মৌখিক গদ্য অনুবাদ থেকে কবিতা-কাব্য লেখার জন্য তাগাদা দিতেন। আর শিক্ষক সেসব অনুবাদের ভাষা, বানান পরীক্ষা করতেন। এই পদ্ধতিতে শিশু রবীন্দ্রনাথকে শেক্​সপিয়ারের ম্যাকবেথ চর্চা করতে হয়েছিল। সেখানেই ঘটনার সমাপ্তি ঘটেনি। রামসর্বস্ব ভট্টাচার্য ছিলেন মেট্রোপলিটান ইনস্টিটিউশনের হেডপণ্ডিত। তিনি ছাত্র রবীন্দ্রনাথকে ম্যাকবেথ বাংলায় অনুবাদ করে বলতেন বাংলা ছন্দে তার তরজমা করতে। সেই তরজমা শেষ না হওয়া পর্যন্ত রবিকে ঘরে বন্ধ করে রাখতেন তিনি।

ম্যাকবেথ তরজমা শেষে শিক্ষক রামসর্বস্ব ভট্টাচার্য ছাত্র রবীন্দ্রথাকে নিয়ে গেলেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের কাছে। সেখানে বাংলা ছন্দে লেখা ম্যাকবেথ পড়ে শোনানোর দায়িত্ব পালন করলেন রবীন্দ্রনাথ। জীবনস্মৃতির ‘ঘরের পড়া’ অধ্যায়ে তিনি লিখেছেন:

‘তখন তাঁহার কাছে রাজকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় বসিয়াছিলেন। পুস্তকে-ভরা তাঁহার ঘরের মধ্যে ঢুকিতে আমার বুক দুরু দুরু করিতেছিল—তাঁহার মুখচ্ছবি দেখিয়া যে আমার সাহস বৃদ্ধি হইল, তা বলিতে পারি না। ইহার পূর্বে বিদ্যাসাগরের মতো শ্রোতা তো আমি তো পাই নাই—অতএব, এখান হইতে খ্যাতি পাইবার লোভটা মনের মধ্যে খুব প্রবল ছিল। বোধকরি কিছু উৎসাহ সঞ্চয় করিয়া ফিরিয়াছিলাম।’

শৈশব-কৈশোর পেরিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনযাত্রা দেশে-বিদেশে এবং বহুদিকে বিস্তৃত হয়েছিল। শান্তিনিকেতন গড়ে তোলা, অকাতরে অব্যাহতভাবে কাব্যচর্চা, নাট্য অনুশীলন, ইত্যকার নানা সৃজনশীল কর্মধারায় প্রবাহিত হয়ে চলেছিল তাঁর জীবন। দীর্ঘ জীবনে কর্মব্যস্ত রবীন্দ্রনাথ বিভিন্ন মনীষীর জীবন, সাহিত্য ও কর্মসাধনা নিয়ে বক্তৃতা দিয়েছেন। চারিত্রপূজা তাঁর সেই সব বক্তৃতার সংকলন।

চারিত্রপূজায় মুদ্রিত ‘বিদ্যাসাগরচরিত’ নামের বক্তৃতায় রবীন্দ্রনাথ সম্পূর্ণভাবে বিদ্যাসাগরকে পরিচিত করিয়েছেন ‘যথার্থ সম্পূর্ণ মানুষ’ বলে। তাঁর ভাষায়:

‘বিদ্যাসাগরের জীবনবৃত্তান্ত আলোচনা করিয়া দেখিলে এই কথাটি বারবার মনে উদয় হয় যে, তিনি যে বাঙালি বড়লোক ছিলেন তাহা নহে, তিনি যে রীতিমত হিন্দু ছিলেন তাহাও নহে—তিনি তাহা অপেক্ষাও অনেক বেশি বড়ো ছিলেন, তিনি যথার্থ মানুষ ছিলেন।’

রবীন্দ্রনাথ যা বলেছেন এখানে শব্দচয়নে তা উল্লেখ করছি: ‘তাহার প্রধান কীর্তি বঙ্গভাষা’; ‘বাংলা ভাষার বিকাশে বিদ্যাসাগরের প্রভাব’; ‘বিদ্যাসাগর বাংলা ভাষার প্রথম যথার্থ শিল্পী ছিলেন’; ‘তিনি বাংলা গদ্যে কলা নৈপুণ্যের অবতারণা করেন’; ‘বিদ্যাসাগর বাংলা গদ্যকে সৌন্দর্য ও পরিপূর্ণতা দান করিয়াছেন’; ‘বিদ্যাসাগর...বঙ্গসমাজের মধ্যে নিজের চরিত্রকে মনুষ্যত্বের আদর্শরূপে প্রস্ফুট করিয়া যে এক অসামান্য অনন্যতন্ত্রত্ব প্রকাশ করিয়াছেন তাহা ইতিহাসে অতিশয় বিরল।’

রবীন্দ্রনাথ আলোচ্য এই বক্তৃতায় বিদ্যাসাগরের পারিবারিক, ঠাকুরদা, ঠাকুরমা, ভ্রাতৃজায়াসহ অনেকের মিলিত একান্নবর্তী পরিবারের সূত্রে বলেছেন:

‘বিদ্যাসাগরের জীবনে তাঁহার মাতার জীবনচরিত কেমন করিয়া লিখিত হইয়াছে তাহা ভালোরূপ আলোচনা না করিলে উভয়েরই জীবনী অসম্পূর্ণ থাকে।’

আবার বিস্তারিত আলোচনায় বলেছেন বিদ্যাসাগর তাঁর শিশু চরিত্র সুবোধ গোপালের দৃষ্টান্ত দিয়েছেন, কিন্তু তিনি শিশুকালে তেমন ছিলেন না। তাঁর লেখা ‘দুষ্টু ছেলে রাখাল’-এর সঙ্গেই বিদ্যাসাগরের নিজের মিল ছিল। তিনি কীভাবে পড়তেন, গৃহকর্ম করতেন সেসবও লিখেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

বিদ্যাসাগরের শিক্ষা আন্দোলন, অধ্যাপনা, বেথুন কলেজের দায়িত্ব পালন, সংস্কৃত কলেজের সাহিত্য অধ্যাপকের দায়িত্ব—সবকিছুর বিস্তারিত বিবরণের মধ্যে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মতান্তর হলেই কাজ ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টিকে রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন, ‘বিদ্যাসাগর স্বভাবতই সম্পূর্ণ স্বাধীনতন্ত্রের লোক ছিলেন।’

স্ত্রী জাতির প্রতি বিশেষ স্নেহ ও ভক্তির প্রসঙ্গে বিদ্যাসাগর তাঁর স্বরচিত জীবনবৃত্তান্তে লিখেছেন: ‘নারীদের কৃত সেবা কেবল আমরা আমাদের সাংসারিক স্বার্থসুখের সহিত জড়িত করিয়া দেখি, তাহা আমাদের হৃদয়ের মধ্যে প্রবেশ করিয়া কৃতজ্ঞতা উদ্রেক করিবার অবকাশ পায় না।’ উল্লেখ্য, স্ত্রীশিক্ষার সূচনা ও বিস্তার ঈশ্বরচন্দ্রের মহৎ কাজ।

‘একান্নবর্তী পরিবারের বহু ভারাক্রান্ত যন্ত্রেও তাঁহার কঠিন চরিত্রস্বাতন্ত্র্য পোষণ করিয়া দিতে পারে নাই।’—রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর উল্লিখিত এই বক্তৃতায় বিদ্যাসাগরের মা ভগবতীদেবী সম্পর্কে তাঁর অন্যতম ছেলে শম্ভুচন্দ্রের লেখার উদ্ধৃতিও দিয়েছেন: ‘জননী দেবী প্রবীণা হিন্দু স্ত্রীলোক, তথাপি তাঁহার স্বভাব অতি উদার, মন অতিশয় উন্নত এবং মনে কিছুমাত্র কুসংস্কার নাই। কি ধনশালী, কি দরিদ্র, কি বিদ্বান, কি মূর্খ, কি উচ্চজাতীয়, কি নীচজাতীয়, কি পুরুষ, কি স্ত্রী, কি হিন্দু ধর্মাবলম্বী, কি অন্য ধর্মাবলম্বী—সকলেরই প্রতি সমদৃষ্টি।’

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন: ‘বিদ্যাসাগর সম্বন্ধীয় ক্ষুদ্র প্রবন্ধে তাঁহার জননী সম্বন্ধে এতখানি আলোচনা কিছু পরিমাণ বহির্ভূত হইয়া পড়িতেছে। কিন্তু একথা তাঁহারা স্থির জানিবেন—এখানে জননীর চরিতে এবং পুত্রের চরিতে প্রভেদ নাই, তাঁহারা যেন পরস্পরের পুনরাবৃত্তি। তাহা ছাড়া, মহাপুরুষের ইতিহাস বাহিরের নানা কার্যে এবং জীবনবৃত্তান্তে স্থায়ী হয়, আর মহৎ নারীর ইতিহাস তাঁহার পুত্রের চরিত্রে, তাঁহার স্বামীর কার্যে রচিত হইতে থাকে, এবং সে লেখায় তাঁহার নমোল্লেখ থাকে না। অতএব বিদ্যাসাগরের জীবনে তাঁহার মাতার জীবনচরিত কেমন করিয়া লিখিত হইয়াছে তাহা ভালোরূপ আলোচনা না করিলে উভয়েরই জীবনী অসম্পূর্ণ থাকে।’

বিদ্যাসাগরের জীবনী-বর্ণনায়, তাঁর শিক্ষা ও সমাজকর্মের বিবরণে রবীন্দ্রনাথ বিশদভাবে জানিয়েছেন নারীপ্রগতির আন্দোলনের প্রধান ভূমিকা তিনি কীভাবে বাস্তবায়িত করেছেন।

রবীন্দ্রনাথ বলেছেন: ‘বিদ্যাসাগর এই বঙ্গদেশে একক ছিলেন।’ দুঃখ ভারাক্রান্তভাবে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ মন্তব্য করেছেন: ‘তাঁর সমযোগ্য সহযোগীর অভাবে আমৃত্যুকাল নির্বাসন ভোগ করিয়া গিয়াছেন। তিনি সুখী ছিলেন না।...প্রতিদিন দেখিয়াছেন—আমরা আরম্ভ করি, শেষ করি না; আড়ম্বর করি, কাজ করি না। যাহা অনুষ্ঠান করি তাহা বিশ্বাস করি না ও যাহা বিশ্বাস করি তাহা পালন করি না।...এই দুর্বল, ক্ষুদ্র, হৃদয়হীন, কর্মহীন, দাম্ভিক ও তার্কিক জাতির প্রতি বিদ্যাসাগরের এক সুগভীর ধিক্কার ছিল।’

রবীন্দ্রনাথের প্রত্যয়ভরা লেখনীতে আরও জানা যায়, বিদ্যাসাগরকে কেবল বিদ্যা ও দয়ার আধার বলে আমরা প্রচার করি। কিন্তু সেটা ঠিক না। তাঁর প্রধান গৌরব তাঁর অজেয় পৌরুষ ও মনুষ্যত্ব।

রবীন্দ্রনাথ বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বলেছেন, ঈশ্বরচন্দ্রের বিধবা বিবাহ আন্দোলন, বাল্যবিবাহ বন্ধ, পণপ্রথা রোধের সংগ্রাম ছড়িয়ে পড়েছিল সাহিত্যে, সামাজিক ও শিক্ষা আন্দোলনে। পাশাপাশি এটি গুরুত্ব পেয়েছিল রামমোহন-পরবর্তী সমাজ-অগ্রগতির জন্য নারী আন্দোলনেও।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যে দৃষ্টিতে, যে গভীর প্রত্যয়ে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জীবন, তাঁর কর্ম ও সাহিত্যসাধনা নিজের লেখা ও বক্তৃতায় আলোকপাত করেছেন, সেই প্রত্যয়সমূহ বিদ্যাসাগরের ২০০তম জন্মদিনে আমাদের দৃষ্টি ও মননচর্চাকে এগিয়ে নিতে সহায়ক হবে বলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মানবপ্রেমী, নারীপ্রগতির ধ্বজাধারী, বাল্যবিবাহ বন্ধে নারী আন্দোলনের পথপ্রদর্শক, দৃঢ়চিত্তেই এ কথা বলা যায়।