আগুন লাগার আগের রাতে এমন হয়

নদীর ওপারে দাঁড়িয়ে ছিলাম আমরা

এপারে আগুন লেগেছে।

দাউ দাউ দৃশ্যের পূর্বের কথা বলতে পারি—

এবড়োখেবড়ো রাস্তার পাশেই যে ছোট গির্জা,

তার দরজায় খড়িমাটি দিয়ে একটা চাঁদ এঁকে রেখেছে মাদারপুরের শিশুরা।

তবে মাঝরাতে গির্জার ওপরও বড্ড চাঁদ উঠেছিল গেল মাসে, কয়েক দিন।

মেয়েগুলো সেই চাঁদের আলোয় গল্প জুড়ে দিত—পৌষে গইঞ্জা ধান উঠলে কী কী করবে।

ধানের রং পাল্টায় প্রতিদিন, গল্প আর শেষ হয় না মেয়েদের।

উঠানের এপাশ-ওপাশ ঘর—

বেটাছেলেগুলো সব শোনে, আর খিদে ভুলে পাশ ফিরে শোয়;

শিকারের কৌশল নিয়ে ভাবে; মাঘে ওরা গোদাগাড়ী যাবে শিকারে।

আর, চাঁদ যত একদিকে হেলে পড়ে—পাশের চক্রবর্তীদের বাড়ির

ইউক্যালিপটাসের ছায়া ততই দীর্ঘ হতে থাকে মাদারপুরের খড়ের চালাগুলোতে।

চক্রবর্তীদের বাড়ি পেরোলেই জয়পুর; কালোদের শেষগ্রাম।

তারপর শহর, রাজধানী, পার্লামেন্ট, একালের সব বাতিঘর...।

আমি ও ঈশ্বরী তখন নদীর ওপারে থাকি।

এত যৌবনমত্ত পূর্ণিমা আর দেখিনি আমরা।

চাঁদের আলোয় আমাদের পুকুরের জল কাঁপছিল;

আমরা জানতাম না, আগুন লাগার আগের রাতে এমন হয়।