তানহাকে নিয়ে তৃতীয় কবিতা
তানহার সকল প্রেমিকই ঘটনাচক্রে কবি। এ কথা জানার পর কবিতা লিখতে গেলে আমার আর হাত চলে না। মনে হয়, যে কবিতাটি লিখব, সেটাও হয়তো আমার আগে লিখে ফেলেছে কোনো কবি। যথারীতি তানহার ঠিকানাতেও চলে গেছে। কবিতাটি পড়ে মুহূর্তের জন্য বিকেলের রোদের দিকে একবার তাকিয়েই দিনের ব্যস্ত রুটিনে ফিরে গেছে তানহা। অথবা গভীর রাতে অন্য কোনো কবির কবিতা পড়ে হাই তুলে নিভিয়ে দিয়েছে ঘরের আলো। কিংবা তানহা হয়তো তখন পালন করছে সেই বিখ্যাত ডিপ্রেশন ফোর্টনাইট। কবিতা, গান তার কাছে তখন আর কিছুই না। স্রেফ শূন্যের দিকে তাকিয়ে সে পার করছে দিনগুলো, রাতগুলো। ফলে এই কবিতাটি লিখতে গিয়ে মূলত যে কথাটা আমার মাথায় ঘুরছে তা হলো, পরপর সাতজন কবি যে নারীর প্রেমে পড়েছে, কবিতা তার কাছে আর বিশেষ আবেদন রাখে না। কবিতার চাঁদ, কবিতার নদী, কবিতার বকুল, কবিতার জবা—সবই তার চেনা। ফুলখেকো কবিদের কথাও তার জানা আছে ঢের। ফলে, তানহাকে নিয়ে আরেকটা কবিতা মানে স্রেফ আরেকটা কবিতাই। এর সঙ্গে তানহার কোনো যোগ নেই। সে কবিতা তাকে পাঠাবারও কোনো মানে নেই।
এইটুকু লিখে আমি তানহার কথা ভাবি। এই অল্প অবজ্ঞার ভাব, সামান্য অভিমান, অনুযোগের কথা—এটুকু কি নতুন হতে পারে? এইটুকুও তো তার হৃদয়ে তুলতে পারে তীব্র দ্যোতনা। কেননা তানহা কবিতা পছন্দ করে। কবিদেরও ভালো লাগে তার। শত শত কবিতার প্রেরণা হতে হতে হয়তো সে এত দিনে একটা খরস্রোতা নদী হয়ে গেছে। বইছে সজোরে দূরে কোনো গহিন গ্রামবাংলার টিলা থেকে নেমে চিরায়ত বাংলা সাহিত্যে।