রাতের পৃষ্ঠাগুলো

পৃষ্ঠাগুলো উড়ছে। একেকটি পৃষ্ঠা ওড়ে আর জেগে ওঠে অধিকতর রাত। শেষাংশ লেখা হয়নি এখনো। কিন্তু আমরা জানি, এর মন এক গায়ক পাখি এবং সেখানে, অন্ধকারের ঢেউয়ে, আঁধার নৌযানগুলোর মতো আমরা বয়ে যাই।

খিলানে শরৎ ও বসন্ত ঋতু। আমরা যেদিকে যাই, ধীরে ধীরে এই অন্ধকার মেঘলা ও উষ্ণ হয়ে ওঠে। কোথাও কোনো অবকাশ নেই আলাদা করে, তাই সব দিকে ছুটি হয়ে গেছে, আর আমরা সারাক্ষণ জ্বলছি, কেননা ট্রিগার হ্যাপি আঙুলগুলো রাষ্ট্রব্যাপার ভুলে কেমন আলাভোলা, সবাই এখানে কলকা ফুলের মতো উদাসীন।

রহস্য বিক্রেতারা ফিরে গেছে অ্যাপ্রন গুটিয়ে, কিছুই করার নেই, রাত যেখানে নিজেই এক রহস্যজননী। যার অসীম জরায়ু থেকে আমরা এসেছি, যেভাবে আসে বিস্ময়, ক্রোধ আর দ্ব্যর্থকতা। অথচ সবকিছুর ঊর্ধ্বে তার অধিষ্ঠান কী মহিমাময়! আমরা বসে আছি তার পরাক্রমের নিচে—উন্মুখ, যারা ভুলে গেছে কোথা থেকে এসেছে এবং কোথায় যাবে, সেই সব অতিজীবিতের মতো।

যারা কাদায় নেমে যুদ্ধ করে, এখন তারা এই রাত্রির খিলানের নিচে; মূক এবং স্তব্ধ। ঈষদ্দুরে, অর্থাৎ হৃদয়পথের খুব কাছে, বাক্য দিয়ে বানানো ঘর, এবং হৃদয়ের মতো ভাঙা পথ। শুধু রাত্রি দেখছেন, চারদিকে তিমিরভেদী কালো কালো চোখ।

যারা বাসনাবিগত নয়, অথচ সহজ, রাত্রি তাদেরকে দিয়েছে একটা সোনার বল। জলমৃদঙ্গ বাজছে কোথাও; যে উন্মাদ অন্ধকারকে বাজিয়ে যাচ্ছে দুহাতে, তাকে ভর করেছে চাঁদ। অন্যরা নিশিগন্ধার মতো আগ্রহী ও বিনিদ্র, কারণ ঘুমকেই জেগে আছে তারা এবং জানে, এই রাত কেমন সহজ, ফলের স্বাদ কিংবা অনন্য ব্যথার মতো।