প্রিয় দেশ, তুমি কি দেবে না আমাদের

নীল কালি, তবু হঠাৎ কলম নিস্তব্ধ হয়ে যায়

জীবন আসে না প্রভু, লাল বর্ণ নীল হয়ে যায়

কালো আর নীল বাক্য আরও সাদা হয়ে যায়!

মাঝে মাঝে চিবুকের ভাঁজ রক্ত ভেজে অনর্গল

অলীক বেগুনি হৃৎপিণ্ড ঢের মহাশূন্য হয়ে যায়

ভোররাতে দুচোখের রেটিনায় ভরে অন্ধকার

আর জাগবার স্বপ্ন উধাও হয়ে নরকে পালায়!

আমরা মৃত্যুর কাছে পৌঁছে গেছি দিন শেষে

যেন অসহায় হয়ে ডাকছেই কবরের মাটি

আমরা হাঁটছি সন্ত্রস্ত শহরে বেহিসাবি একা

অথচ শহর কত নিকটের অনাত্মীয়—বেশি!

হায় ছদ্মবেশী প্রেম, না প্রেমিক না প্রেমিকা

না সন্তান না পিতা, না কন্যা না জন্মদাত্রী মা

না স্বামী না তার সরল স্ত্রীকে বলছে প্রতারক?

এমনকি মালিকও চিনছে না আমলি দাসকে!

সবকিছু ভুলে গিয়ে আমরা কেবল যাচ্ছি, যাচ্ছি

আর যাচ্ছি ঘোরময় এক অসমাপ্ত কবরের দিকে!

মাঝে মাঝে ছয় পরগনা ভেবে যা খুশি তা করি

ভাগ্যাকাশে দুপা ছুঁড়ে মারি নিজ কপালের কাঠে

আজ তো মাজুল শিশুর কপালে চুমু খেতে ভয় হয়

যদি রক্তাক্ত ঠোঁটের দাগ কপালের ভাঁজে লাগে

যদি মুছতে না পারি সেই ভয়ার্ত ভবিষ্যতের চিহ্ন!

তোমার ধূসর মাটি লাল হলে একদিন, মা গো 

কেউ কি বলবে আমাদের দেশান্তরি? গণতন্ত্রী?

কবে যে ঘুমিয়ে ছিলাম তবে স্বপ্নের ইতিহাসে

নকশিকাঁথায় পিঠ লাগাতে পারিনি কখনোই

তবু গুম হয়েছিল ঘুম, চোখ, হাত, মাথা ও পা।

অশান্ত বাতাসে আজ—স্বপ্ন দেখবার স্বাধীনতা

প্রিয় দেশ, তুমি কি দেবে না আমাদের কভু?