পেঁপের পাতার মতো বহু দিকে

অলংকরণ: এস এম রাকিবুর রহমান

উপভোগ

শুয়ে শুয়ে

সামনের ফ্যাটফ্যাটা

দেয়াল ভাল্লাগে না,

জানলামুখী হই

পরিচিত চাদর

অপরিচিত করি

ছাই ফেলে ফেলে

আর অজগরের মতো

ছুটে যায় দ্রুতযান

শব্দ দিয়ে

দৃশ্য ধরি তার

চোখ ফুঁড়ে

বেরিয়ে যায়

সুদীর্ঘ পিঁপড়ার সারি,

বৃষ্টিরে লাগে

মামুলি তরঙ্গের স্তূপ

একা খুব

কল্পনা করি

ভয় ও ভালোবাসা

ভাবি যাক—

যা কিছু পাখি

প্রেম যতখানি

আঁকা যায়

জানলায়,

শুয়ে শুয়ে।

ফাল্গুনী রুটিন

আকাশ মেঘ মেঘ

ঝরনা ফোন ধরল না

সঙ্গ, সংজ্ঞা, সফর, সম্পর্ক, সড়ক

কিছুই সেলাইহীন হলো না।

আত্মহত্যা নিয়ে এতবার ভেবেছি,

সেখানে আর থ মেরে থাকা যায় না

একঘেয়ে লাগে, মেঘ মেঘ লাগে

ঝরনা ফোনটা ধরবে না

কবিতাটা আগাবে না অভ্যস্ত গতিতে

শুধু একঘেয়ে মেঘ মেঘ

থ মেরে থ বাঁচিয়ে

অথই জলাধার জীবন

জাপটে ওই

থাকাথাকি।

ইন্টারোগেশন

তোমরা—নামহীন, দামহীন

যথেষ্ট কামহীন বেচারারা

বাংলার বিরাট বিস্তীর্ণ

লাশবাহী ফ্রিজিং ভ্যানে

অলীক স্বপ্নের দীর্ঘ ধ্যানে

আজ এবং আগামীকাল

এই গাঢ় সন্দেহের সাগরে

ডুব দাও ডোবানোর আগে

বলো—ইউ আর টায়ার্ড।

বহুমুখী

ওইখানে, সুরে, বারান্দায় আমি

পেঁপের পাতার মতো বহু দিকে

তীক্ষ্ণ আগ্রহে চলে যেতে যেতে

চোখ খুলে যায় অসুখে অথবা

আরও যত প্রতিশব্দ আবিষ্কার

করা গেছে তার, এই ধ্বংস অব্দি।

ওইখানে, দূরে, সারিন্দায় আমি

বেজে চলছি, ফেরারি আগ্রহে...

ভগ্নমন ভৈরবী

আমারে ধরো আমি দুর্বল

হাতে–পায়ে ধরা নয়

এই ধরা তুমি বোঝো।

বোঝার মতো ভারী, হৃদয়;

দেখো সে–ও এক গ্রাম

গ্রাম মানেই কি পাখি?

তেমন জরুরি নয় কিন্তু; তবু

কান পাতা যেতে পারে ভিতরে

এমনকি বাহিরে বোতাম খোলা

অথবা পুরাতন সেলাইয়ের ফোকর

ভরাট রেখেও দেখা যেতে পারে

কোথাও কাকলি লুকিয়ে আছে কি না।

দেখতে চোখ দরকার, আদতে দরকার কী!

এতবার লিখি, আঁকি, দাগাই, জাগাই

মনে মনে; মনে হয় ভালোবাসি বলা হলো না

হয়ে গেলে বিপদ কি না, কে জানে

যারা জানে, খুঁজলে নিশ্চয়ই জানা যেত।

আবার খোঁজ, চিরকাল এই স্বতঃস্ফূর্ত উপাসনা

উপলব্ধির পর ক্লান্ত লাগে, তীব্র আহত

আমারে ধরো, হাতে–পায়ে ধরা নয়

হৃদয়, পাখি-পাথর সবকিছু ছাড়িয়ে

দেখো সে এক প্রবল গ্রাম, শীতকাতর, নরম।