নদী মরে যাওয়া ভাবনার অতলে গভীর ডুব

অলংকরণ: এস এম রাকিবুর রহমান

খাদ্য

কত দিন ধরে তাকিয়ে আছি

সময় দেবে না সাক্ষ্য

যোগ্যতাহীন, রচিতে পারি না

ক্ষত লুকোবার বাক্য

হাত মনে করে যে হাত ধরেছি

চুল মনে করে চুল

ধরেছি আঙুল

তা হয়তো দীর্ঘশ্বাসের মতো ব্যাকুল

ভালোবাসা

সে কি অপচয়?

এই মনে হওয়া মেনে নিচ্ছি

নিষ্ঠুরতার যে শিকার

নিতান্ত তারই ভুল!

ভুল লুকানোর

জায়গা কোথায়

পালাবার নেই সুড়ঙ্গ

চোখ মনে করে

যে চোখ দেখেছি

অঙ্গ ভেবে অঙ্গ

কত নির্মম কর্কট-রাত

শোনাচ্ছে গান, নিদ্রার

অবজ্ঞাকে কীভাবে ঠেকাব

জানা নেই সেই বিদ্যা

কীভাবে রচিব নতমুখ আমি

নেই আর যথাসাধ্য

মানছি তো আজ আমার জন্যে

গৃহদাহ দেখা বাধ্য

কেননা এমন করেছি কেন যে

অভুক্ত আমি ভালোবাসাকেই

মনে করেছিলাম খাদ্য

টুডু সাঁওতাল

আমার দেহকে তুমি দেখেছ কখনো?

কালো মাটি, চোখ দুটো রক্তজবা, লাল

বাংলা কবিতা, মনোযোগ দিয়ে শোনো

আমার লুণ্ঠিত নাম—টুডু সাঁওতাল

মাটির দেয়ালে গড়া আমাদের ঘর

ঘরে যে আগুন দিল, তারা কারা তবে?

ঘরপোড়া মানুষের পায়ে চরাচর

লেগে যায়

আমাদের ভবিষ্যতের কী হবে?

আরও পড়ুন

মানুষের রক্তের স্যুপ

চুপ চুপ চুপ!

যিনি ছিলেন, চেয়ারে

যিনি এলেন, চেয়ারে

এবং এরও পরে যিনি এসে বসবেন, চেয়ারে—

তাদের পছন্দ খুব

মানুষের রক্তের স্যুপ

শীতরাতে ফুটপাতে ঘুমোচ্ছে উলঙ্গ পাগলি

মাননীয়দের গাড়িতে পতাকা—

পত পত করে উড়ছে

গানটান, দেশপ্রেম-মাখা

এভাবেই আমাদের বেঁচেটেচে থাকা

নদী মরে যাওয়া ভাবনার অতলে গভীর ডুব

দিতে দিতে দেখি—

রাজার পছন্দ খুব

আমাদের রক্তের স্যুপ...

এই যে আপা, এই যে ভাই

পোড়া কপাল—জন্মদাগ

জলে কুমির, ডাঙায় বাঘ

রক্ত দিয়ে স্বপ্ন কিনি

সেই স্বপ্ন চলছে ভাগ

কপাল পোড়া—জন্ম পাপ

খাটের নিচে ঘুমায় সাপ

মন্তাজের বাপ বলতে পারে—

মিলে যাচ্ছে খাপে খাপ

এ অবস্থায় কী করা যায়?

এই যে আপা, এই যে ভাই..