জাহিদের প্রশ্ন:
‘ভালো ছিলে গত মাস?’
বললুম, নটবাবুর বিজয়মন্ত্রে
মন্দ চাষবাস
থেমে গেছে জলের উৎস,
মন্বন্তরের আভাস
ভূমিকা: জাহিদ হায়দার
দাউদ হায়দার—আমার খোকন ভাই চিন্তায় ছিলেন গোছানো, আড্ডায় অনেক রকম কথা বলাতে সুখী, আনন্দ-সংগ্রাহক এবং কারও কথা ভালো না লাগলে সরাসরি মুখের ওপর জবাব দিতে উৎসাহী। ফলে তাঁর বন্ধুসংখ্যা হয়ে যাচ্ছিল আঙুলে গোনা। বান্ধবীর সংখ্যা ও সঙ্গ ছিল ঈর্ষা করার মতো। শ্রমজীবী ও সচ্ছল মানুষেরা ছিলেন বন্ধু। মধ্যবিত্ত থেকে দূরে থাকতেন। ‘কবিতা ছাড়া জীবন নয়’, ‘কবিতার জন্য সবকিছু ত্যাগ করতে হবে’, তাঁর বলা দ্বিতীয় বাক্যটি জীবনের যাপন দিয়ে রক্ষা করে গেছেন। ‘আভাস’ নামে লেখা এই কবিতা তিনি লিখেছিলেন ১১ ডিসেম্বর ২০২৪–এ। লিখেই বার্লিন থেকে আমাকে পাঠালেন। তখনো জানতাম না, এটি হবে তাঁর শেষ কবিতা। ১২ ডিসেম্বর সকালে খোকন ভাইয়ের জার্মানির বন্ধু মাইন চৌধুরী আর সুমনা রহমান ফোন করে তাঁকে যখন পাচ্ছিলেন না, তাঁরা পুলিশকে ফোন দিলেন। পুলিশ এসে তাঁর অ্যাপার্টমেন্টের দরজা ভেঙেও পেল না। তখন তারা খানিকটা রসিকতার সুরেই বলেছিল, ‘বুড়ো মানুষ, বান্ধবী নিয়ে হয়তো কোথাও গেছে। আপনাদের না জানিয়ে। দুই দিন অপেক্ষা করুন। ফিরে আসবে।’ কিন্তু না। তিনি আর ফিরে আসেননি। কবিতা লিখলেই আমাকে পাঠাতেন খোকন ভাই। এ কবিতাটিও পাঠিয়েছিলেন। তবে ছয় পঙ্ক্তির এই কবিতায় যে তাঁর মৃত্যুর আভাস লেখা থাকবে, তা ছিল কল্পনারও বাইরে।