কবিতা
খালেদ হোসাইন
এখন খুব মৃত্যুসংবাদ শুনি
এখন খুব মৃত্যুসংবাদ শুনি।
বয়সের অবদান। অথবা, আগে মৃত্যুসংবাদ
তেমন স্পর্শ করতে পারত না। এখন বিদ্ধ করে।
চেতনাকে আচ্ছন্ন করে ফেলে।
এখন রাতভর শুয়ে থাকি। চোখ বুজে থাকি।
ঘুম নেই। স্বপ্ন নেই। শরীরটা নিঃসাড় হয়ে পড়লে ভাবি,
মরে গেছি। ডান পায়ের বুড়ো আঙুল নাড়িয়ে দেখি
বেঁচে আছি কি না। বুড়ো আঙুল, কেননা, সে-ই সবচেয়ে প্রাজ্ঞ।
মরতে শুরু করলে সে-ই আগে মরবে।
অন্তত মৃত্যুযাত্রা সেখান থেকেই শুরু হওয়া উচিত।
আমার বাবা মৃত্যুর আগে আমাকে বলেছিলেন,
‘দেখো তো পা ঠান্ডা হয়ে গেছে কি না!’
আমি হাত বাড়িয়ে নিজের পায়ের উষ্ণতা পরীক্ষা করি।
হৃদয়ের কথা আমি জানি, অনেক আগেই উষ্ণতা হারিয়েছে।
শেলী নাজ
গোরখোদকের সাথে
সবাই ফিরেছে কুঞ্জে তুমি একা ফিরছ শ্মশানে
দুর্মর চিতায় তুলে দিতে দেহ, চন্দনচর্চিত
মনের ময়ূরশোভা, ব্যর্থ প্রেম ও অপত্যস্নেহ
ভস্ম উদ্যান ডাকছে, ধু ধু বায়ু বসন্তপীড়িত
দেহজুড়ে লুকিয়েছ অশ্বখুর, রক্ত-উৎসব
কত না প্রেমের শব, তার হাড়গোড়, খুলি
যেন তুমি মৃত্যু আংরাখা ঢাকা উজ্জ্বল গুলবাহার
শর্বরী উপচে ওঠা বেদনার কনকাঞ্জলি
ঘরপলাতকা বসে আছ গোরখোদকের সাথে,
তোমার কবর খোঁড়া হচ্ছে জানো, তবু গাচ্ছ গান
প্রকৃত ঘুমের আগে, কেবলই ঘুম পেয়ে যাচ্ছে
চিতাগ্নিতে মাথা, দাহ শেষ, শান্ত তোমার কামান
প্রেমের শ্মশান যেন, পোড়ামুখি, জরিদার রাতে
ফের তুমি প্রেমে পড়ো ধূর্ত গোরখোদকের সাথে!