বিচার

শরতে মৃত্যু হলো অরুণ বসুর।

বললেন তিনি—কাশফুল দেখার বরাদ্দ সময়টুকু মনে হচ্ছে শেষ, আমি যাই।

‘তো পৃথিবীতে এলেনই–বা কেন? কে আসতে বলেছিল?’

শরতে মৃত্যুর মাঝে কাব্যিক ভাব কিছু আছে,

যেমন থাকে নার্সের সালোয়ারে আর হাসপাতালে যারা ব্লেড নিয়ে নাচে

ব্লাউজ ও সালোয়ার কাটার অভিসন্ধি থেকে,

তাদেরও নাচবার ঢঙে কবিতাই থাকে—যেহেতু শরৎ।

অরুণ বসু তাই নার্সের কাছে ক্রিমপাফ চেয়েছিলেন খেতে।

সেটা ছিল সাংকেতিক কথা—পাফ, বোঝা গেল?

ঠিক যে রকম পাঠককে লেখার ফাঁকে ফাঁকে

কিছু ভাদ্র ও আশ্বিন হালকা শিশির দিয়ে মুড়ে বিছিয়ে দিতে হয় দুর্বা ঘাসে ঘাসে।

নার্স বলেছিল—চিতা রেডি হাসপাতালের পাশে,

মানুষেরা আসলেই রোগী, তারা যে রকম বেপরোয়া লোভী

তারা আমাদের ব্লাউজের দিকে দ্যাখে, যদিও চিতা পাশে রেডি...

তাতে স্পষ্ট এই যে আপনার রোগী পাফ নিতে চাইলেন মাঠজুড়ে

কুয়াশামতো পড়া হাওয়া ও শিশিরের কথা ভেবে।

বাস্তবে ওই সব নেই, দাদা, বাস্তবে পৃথিবীতে ডাক্তার ব্লেডের বস্তা খোলে

শক্তির সাথে,

এবং এভাবেই যা কিছু মরমুখী ও পার্থিব, তা হয় একসাথে—

শিমুল তুলোর মতো সাদা মেঘের খেয়া

আমন ধান ছুঁয়ে যাওয়া উদাসীন হাওয়া

তাতে দুলছে মিনজিরি, শিউলি, কলিয়েন্ড্রা ইত্যাদি ছাতিম ও জগডুমুরসহ,

আর বিলের জলে সাদা ও লাল শাপলা যত আছে নক্ষত্রের আবহ,

তারা সব তারা—মুছে যায় শরতের অশ্লীল ফল ডেউয়া থেকে আসা

ভ্যাপসা পচা গন্ধের চাপে, অরুণ বসু যাকে নাকে হাত চিপে

ব্রুটাল ম্যাডনেস বলেছিল কোভিডে পুজোয় কলকাতা যেতে চাওয়ার ট্রিপে।