মুক্তিযোদ্ধার মা

রাজধানীতে বিভিন্ন নামে কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতা বেড়েছে। প্রায়ই খবর হচ্ছে, ইয়াবা খাওয়া কিশোরদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়ছে মানুষ। সেই খবরের পাশে ছাপা হচ্ছে—হাতিরঝিল থেকে গার্মেন্টস শ্রমিকের লাশ উদ্ধার। পুলিশ জানাচ্ছে, ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে, হত্যার আগে সেই যুবতী শ্রমিক ধর্ষণের শিকার ছিল কি না! স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উৎসবের দিনে বিবিধ খবরের পাশে কত খবরই ছাপা হচ্ছে রোজ। এমনকি রক্তাক্ত খবরের পাশে ছাপা হচ্ছে কবিতা। কোনো এক মাকে নিয়ে কেউ লিখেছেন, সেই মা মুক্তিযোদ্ধার মা। তার কিশোর ছেলেটি মুক্তিবাহিনীতে নাম লেখাবে বলে একদিন গোপনে চলে যায় সীমান্তের ওপারে। তারপর কবে সে দেশের ভেতরে ঢুকে রণাঙ্গনে চলে যায়, মা এসবের কিছুই জানত না। মা শুধু অপেক্ষা করত। স্বাধীনতার পর সেই মায়ের আকুতি ছিল, আমার ছেলে তো ফিরল না! তোমরা কেউ আমার ছেলেকে দেখেছ? দ্বারে দ্বারে কেঁদে কেঁদে ঘুরতে ঘুরতে মায়ের চোখের পানি শুকিয়ে গেল। সেই কবে, কোথায় মরেছে, সেই খবর আর আমাদের জানা হয়নি। মুক্তিযোদ্ধার মায়ের খবর আমরা রাখতে পারিনি, আমরা উৎসবে ব্যস্ত ছিলাম, উপার্জনে মত্ত ছিলাম।

আমি কি কোনো কবিতায় লিখেছি, স্বাধীনতার জন্য হারিয়ে যাওয়া মুক্তিযোদ্ধার মা নিজেই কতটা দেশ, কতটা কবিতা? আমি কি কোনো শব্দে আজও ধরতে পেরেছি তার আকুতি: আমার ছেলে বাড়ি আসবে কবে? স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উৎসবে আমি কি বলতে পারব, সেই মায়ের কবর কোথায়?