শামীম আজাদের কবিতা

শামীম আজাদের কবিতাগুলো লৌকিকতার সৌরভে ভরা, যেখানে আকুল হৃদয়ে কবি বলেন, ‘কইলজাত আছলায় বন্দু আমার, অনকু কাপড়র মাজে, শাড়ি ছাড়া শামীম আজাদ, তোমারে পায় না যে!’ পড়ুন হৃদয় মথিত করা তিনটি কবিতা।

আমার আতর

হে আমার লগ লয়
শাড়ির বাইঞ্জে বাইঞ্জে
তন্তু তারে তালিম দেয়
আমার কোমরর মাইঞ্জে।

আমি তারে না পুছলেও
হে আমারে পুছে
আমারে বানাইয়া মুরশিদ
আমার কয়লা মুছে।

কইলজাত আছলায় বন্দু আমার
অনকু কাপড়র মাজে
শাড়ি ছাড়া শামীম আজাদ
তোমারে পায় না যে!

কিতা গো শামীম কিতা
তোর মুরিদে কিতা কয়?
আমার জান ও যত দুক
তাহার নাহি সয়।।

চুজ ইয়োর মেনু

আমার কিছু কবিতা যেন
বৃষ্টিজলে ভেজা
দু–এক খানা সিরাপ-ডোবা
মচমচে গজা।

দু–তিনজন বড়ই লাজুক
বসে থাকেন একা
ঘামে কামে মাখামাখি
দেন না তবু দেখা।

বিশ্বস্ত আছেন কজন
যেন বিয়ে করা স্বামী
ভিন্ন ভাষার জামা পরেন
বিশ্বলোকে দামী।

মাত্র কজন স্পর্শ করি
থাকি তাদের লইয়া
বাড়ির স্বামী ঘুমাই গেলে
করি পরকীয়া।

ক্ষিপ্ত হইয়া লেখা কিছু
আছে আজেবাজে বার্তা
ভাইরাল হওয়া আজাদীয়
তারা, শামীম-পিষ্ট ভর্তা।।

বিশ্রাম

এই যে দ্রাবিড় বাতাস
চারিদিকে যে অনার্য সাঁতার
তারই পাশে তোমাদের করমচা বাগান।

বাগানে বাহাত্তর বছর ধরে
জল শুষে নেওয়া হতভাগ্য
আকাশিয়ার ওপর
পড়ে আছে পতঙ্গের পাখাপোড়া দেহ
কিন্তু সেখানেই কামাক্ষ্যার দীর্ঘ ছায়া।

সবকিছু পার হয়ে সেখানেই
একফোঁটা বিশ্রাম রেখে যেতে চাই
রাখা যাবে কি?

সড়কের নিশানা জানি না—
কোথায় যে যাব জানি না
শুধু জানি, যেতে হবে
কোথাও তো নূপুর খুলে
কাচের নিক্কণসমেত
পায়ের বিশ্রাম তুলে রাখতে হবে।

ইত্যকার এই সব কোথাও না কোথাও
রাখিতে হয়।

মাটির ফণায় বসা
ঘোমটাপরা তোমাদের সেই ঘনঘোর গ্রাম
কুটুমের সরপড়া নিথর বাড়ি ও উঠান
কামাক্ষ্যার ছায়া রায়া রায়া
সেইখানে রাখা যাবে কি!

বলো, ‘যাবে’।।

অন্যআলো ডটকমে লেখা পাঠানোর ঠিকানা: [email protected]