সুনীল শর্মাচার্যের কবিতা

বাংলাদেশে জন্ম নেওয়া কলকাতার কবি সুনীল শর্মাচার্যের ছন্দবন্ধ এই কবিতার প্রবাহে প্রবাহে রাখিবন্ধন করে আছে সমসময় আর লৌকিক বাংলার ছবি।

এই বাঁচা এই ভাসা
জলের চেয়েও ক্লান্ত বেহুলার দেহ
রাত কেটে ভোর হয়, ভোর হয় রাত,
চারপাশে শুধু জল সাথে নেই কেহ—
ফুরিয়ে গিয়েছে ঘুম কোলে রাখে হাত।

ঘুমের দুয়ারে বাঁধা সিঁথির সিঁদুর
সর্পদষ্ট লখিন্দর ভাসে তাই জলে,
বুকে আশা ভাষা নেই বেদনাবিধুর
কাল-রাত ফিকে হয় মায়াভোলা ছলে।

যেজন গিয়েছে মরে কার অভিশাপে?
তার চিহ্ন বুকে ধরে বেহুলা তো বাঁচে,
ভেসে যায় দিকহীন কাল রূপ সাপে—
দিগন্ত শূন্য চুপে কত রঙে সাজে!

হতভাগী বেহুলা সে যুগ যুগ ধরে—
এখনো নীরব কাঁদে বাংলার ঘরে!

ঝাঁপ
মহাশূন্য শূন্য হয় বস্তুর বিলয়ে
জ্ঞানচক্ষু শুধু তার স্মৃতি-সুধা মাখে,
এই তো নিয়মে থাকা সময়ের বাঁকে,
তর্কে বহুদূর বস্তু, বিশ্বাসে মিলায়।

জীবনে যাপনে সত‍্য, ঘুরন্ত সে ঘানি—
তীব্র ইচ্ছার শক্তি কাছে টেনে আনে
স্মরণের জাদুঘরে খোঁজে তার মানে,
কার চোখে মেঘভার কে বা অভিমানী।

প্রজন্মে প্রত্যয় থাকে মেধা বুদ্ধি স্থির
চঞ্চল এ প্রাণে তাই জাগায় প্রণতি
আভিজাত্য, পুত্রকন্যা, সুনামের প্রতি,
রেশটুকু ধরে রাখে জলধি অথির।

সমস্ত মুগ্ধতা বুঝি মুছে নেয় নদী
কেউ তাকে ডেকে নেয়, ঝাঁপ দেয় যদি!
অন্যআলো ডটকমে লেখা পাঠানোর ঠিকানা: [email protected]