শামসুর রাহমান স্মরণ
মতাদর্শিক আয়নায় খণ্ডিত প্রতিচ্ছবি
বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি শামসুর রাহমান। তাঁর কবিতাকে প্রায়ই নির্দিষ্ট রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক বা মতাদর্শিক দৃষ্টিকোণ থেকে খণ্ডিতভাবে পাঠ করা হয়। এ রচনায় তাঁকে নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে মূল্যায়ন করা হয়েছে।
শামসুর রাহমানকে অনেকে শুধু জাতীয়তাবাদী কবি হিসেবে পড়তে চান। স্বাধীনোত্তরকালে তাঁর সংঘচেতনা, চলাফেরা, সঙ্গসহবত, বিভিন্ন রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক সংকটে অবস্থান ইত্যাদি দেখে রাহমানকে ‘একটি নির্দিষ্ট দলের’ সঙ্গে সেঁটে দিয়ে বিচার করতে চান। এসব হয়তো খুব অমূলক নয়। বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক রাজনীতির মাঠে অন্য অনেকের মতো শামসুর রাহমানেরও একটি পক্ষ ছিল। তাঁর চেতনার একটি বিশেষ ধরন ছিল। কিন্তু সেটিই কবি শামসুর রাহমানের একমাত্র পরিচয় নয়। তাঁকে পাঠ করার ওটা একটা খণ্ডিত পদ্ধতি বলে মনে করি। এর ভেতর তাঁর কাব্যজীবনের জার্নির একটা বিরাট অংশকে ঢেকে রাখা হয়। এভাবে বাংলাদেশের কবিতায় তাঁর অবদানকে খানিকটা খাটো করে দেখা হয়। শামসুর রাহমানের মতো একজন কবি কেন নির্দিষ্ট মতাদর্শের হবেন! তিনি বাংলাদেশের কবি।
বলে রাখা দরকার, বাংলাদেশের আরও নানা কবি এ ধরনের খণ্ডিত পাঠের শিকার হয়েছেন। এ তালিকায় ফররুখ আহমদ ও আল মাহমুদ বোধ করি সবচেয়ে বেশি এগিয়ে থাকবেন। তাঁরা নির্দিষ্ট গোষ্ঠী ও মতাদর্শের দ্বারা বৃত্তাবদ্ধ হয়েছেন। কিন্তু তাঁরা তো বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ কবি। নির্দিষ্ট বৃত্তের বাইরে এসে এসব কবিকে পাঠ ও মূল্যায়ন করা জরুরি।
দুই.
বাংলাদেশের কবিতায় শামসুর রাহমান পঞ্চাশের দশকের কবি হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকেন। তাঁর অভিষেক ঘটেছিল মূলত কলকাতার ত্রিশের দশকের কবিদের কবিতা ও নন্দনরুচির ভোক্তা হিসেবে। তাঁর প্রজন্মের অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ কবি তা-ই ছিলেন। কারণ, তাঁদের অনুভূতি ও নন্দনের বাংলা প্রকাশ তাঁরা খুঁজে পেয়েছিলেন ত্রিশের কবিদের মধ্যে। একই সঙ্গে তাঁদের অধিকাংশের পঠনপাঠন আর কাব্যরুচির সঙ্গে যুক্ত ছিল ইউরোপ-আমেরিকার কবিতা। এ কারণে দেখা যাবে রাহমানের প্রজন্মের, এমনকি পরের প্রজন্মের অধিকাংশ কবিই কোনো না কোনো ইংরেজ বা আমেরিকান কবির কবিতা অনুবাদ না করে পারেননি।
তাঁর চেতনার একটি বিশেষ ধরন ছিল। কিন্তু সেটিই কবি শামসুর রাহমানের একমাত্র পরিচয় নয়। ...বাংলাদেশের আরও নানা কবি এ ধরনের খণ্ডিত পাঠের শিকার হয়েছেন। এ তালিকায় ফররুখ আহমদ ও আল মাহমুদ বোধ করি সবচেয়ে বেশি এগিয়ে থাকবেন। তাঁরা নির্দিষ্ট গোষ্ঠী ও মতাদর্শের দ্বারা বৃত্তাবদ্ধ হয়েছেন।
তৎকালীন পূর্ব বাংলার কবিদের কলকাতার ত্রিশী আধুনিকতাবাদী কবিতার মৌতাতে এত মুগ্ধতার কারণ কী! শামসুর রাহমান ও তাঁর প্রজন্ম যখন বেড়ে উঠছিলেন এবং কবিতার জগতে ঢুকছিলেন, তখন কলকাতা আর শুধু বাস্তব নেই, যথেষ্ট মিথেও পরিণত হয়েছে। বাস্তব আর মিথ মিলেমিশে কলকাতা হয়ে উঠেছিল বিলেত-প্যারিস। আধুনিক শিল্পসাহিত্য-বুদ্ধিবৃত্তির দিক থেকে পূর্ব বাংলার কবি-সাহিত্যিকদের কাছে এই নগরী তখন ছিল যেন ‘কামরূপ-কামাক্ষা’। এর অলিগলিতে হুটোপুটি খায় যেন বাঁকবদল ঘটানো কিংবদন্তিতুল্য সব কবির দল। এই রকম একটি সাংস্কৃতিক নগরী পূর্ব বাংলার মতো একটি প্রান্তিক প্রদেশের উঠতি কবি-সাহিত্যিকদের মন-মনস্তত্ত্ব-কাব্যরুচিকে অধিকার করে নেবে, এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই।
শামসুর রাহমানরা বাংলাদেশের কবিতার দ্বিতীয় প্রজন্ম। প্রথম প্রজন্ম ছিল চল্লিশের দশকের কবিরা। কিন্তু ওই প্রজন্ম পাকিস্তান প্রতিষ্ঠাকেন্দ্রিক জাতীয়তাবাদী ডামাডোলের ভেতরে বেড়ে ওঠে। চল্লিশের জাতীয়তাবাদী আবেগের চাপ ঢাকার শিল্পসাহিত্যকে নৈর্ব্যক্তিক শিল্পসফলতার মুখ খুব একটা দেখতে দেয়নি। ফলে রাহমান ও তাঁর প্রজন্ম তাঁদের বেড়ে ওঠার ধরনের সঙ্গে সাজুয্যপূর্ণ অনুসরণযোগ্য কোনো পূর্বজকে পেল না। তাঁদের আদর্শ হয়ে উঠল কলকাতার আধুনিকতাবাদী কবিকুল। ফলে জীবনানন্দ দাশ, বুদ্ধদেব বসু প্রমুখ কবি হয়ে উঠলেন তাঁদের আইকন। দীর্ঘকাল উপনিবেশের তলে থাকা একটা প্রান্তিক নগরের কবিদের জন্য এটা ছিল নিয়তির মতো।
কিন্তু পঞ্চাশের দশকের কবিরা খুব বেশি দিন উপনিবেশিত থাকলেন না। নানামাত্রিক রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক সংগ্রাম ও জটিলতার আঘাতে আঘাতে এখানকার কবিরা দ্রুত খোলস ভেঙে স্বরূপে আবির্ভূত হলেন। শামসুর রাহমান এই স্বরূপে বের হয়ে আসা কবিকুলের প্রধান ও প্রথম পুরোহিত ছিলেন।
তিন.
বাংলাদেশের কবিতায় রাহমানের সবচেয়ে বড় অবদান ঢাকাকে বাংলা কবিতার দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ রাজধানী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা। তিনি প্রথম কবি, যিনি কলকাতার কবিদের যথেষ্ট সমীহ আদায় করতে সমর্থ হয়েছিলেন। শুধু কবিকুল কেন, কলকাতার সচেতন পাঠকমহলের মধ্যেও রাহমান একটা বিশেষ স্থান করে নিয়েছিলেন। তাঁর ‘কালের ধুলোয় লেখা’ বইয়ের নানা জায়গায় কলকাতায় তাঁর গ্রহণযোগ্যতার কিছু চিত্র পাওয়া যায়। তাঁর সমকালে কলকাতায় এমন বড় কবি পাওয়া যাবে না, যিনি রাহমানের কবিতার প্রশংসা করেননি।
কী দিয়ে রাহমান কলকাতার সমীহ উৎপাদন করেছিলেন? প্রথমত, একটা স্বতন্ত্র কবিভাষা। প্রচণ্ড সংস্কৃতশাসিত দাপুটে কাব্যভাষার বিপরীতে রাহমান যথেষ্ট আরবি-ফারসি শব্দসহ একটা কবিভাষা নির্মাণ করলেন। মৌখিক বাগ্ভঙ্গির সদ্ব্যবহারের ভেতর দিয়েই কাজটি করলেন। এই একই ধারায় আল মাহমুদও যথেষ্ট দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন।
শামসুর রাহমান ও তাঁর প্রজন্ম যখন বেড়ে উঠছিলেন এবং কবিতার জগতে ঢুকছিলেন, তখন কলকাতা আর শুধু বাস্তব নেই, যথেষ্ট মিথেও পরিণত হয়েছে। ...এই রকম একটি সাংস্কৃতিক নগরী পূর্ব বাংলার মতো একটি প্রান্তিক প্রদেশের উঠতি কবি-সাহিত্যিকদের মন-মনস্তত্ত্ব-কাব্যরুচিকে অধিকার করে নেবে, এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই।
শামসুর রাহমানের স্বতন্ত্র কবিভাষার পর এক দশকান্তেই বাংলাদেশের কবিতার ভুবনে আবির্ভূত হলেন নিজস্ব কবিভাষার অধিকারী একগুচ্ছ কবি। শহীদ কাদরী, আবদুল মান্নান সৈয়দ, আসাদ চৌধুরী, নির্মলেন্দু গুণ, আবুল হাসান প্রমুখ কবিদের আবির্ভাবের ফলে ঢাকা যথার্থই বাংলা কবিতার সমৃদ্ধ রাজধানী হয়ে উঠল। শামসুর রাহমান বাংলাদেশের কবিতার আধুনিক স্বতন্ত্র কবিভাষার আদিপুরুষ। ফলে রাহমানকে বাংলাদেশের কবিতার ওই পরম্পরার পটে ফেলে পড়তে হবে। শুধু ‘জাতীয়তাবাদী রাজনীতির কবি’, ‘প্রগতিশীল কবি’, ‘গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামের কবি’ বর্গের মধ্যে ফেলে রাহমানকে পাঠ করা মানে তাঁকে একটি বড় প্রেক্ষাপট থেকে সরিয়ে কিছু কবিতা ও কর্মকাণ্ড দিয়ে খণ্ডিতভাবে বিচার করার শামিল।
একজন কবির বড়ত্ব নানাভাবে নির্ধারণ করা যায়। এর মধ্যে একটা বড় মাপকাঠি হচ্ছে কোনো কবি পরবর্তী প্রজন্মের কবিদের মধ্যে কতটা প্রভাব বিস্তার করতে পেরেছেন। রাহমান এই কাজ নানাভাবে করতে পেরেছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের কবিতার আর্টিকুলেশনের ধরন ও বর্ণনাপদ্ধতি অনেক দূর পর্যন্ত রাহমান দ্বারা গ্রস্ত থেকেছে। রাহমান বাংলা কবিতাকে ফর্ম ও ভাষার দিক থেকে পরিস্রুত করেছেন। ষাটের কবিরা যখন বাংলা কবিতায় আসেন, তখন তাঁরা যে প্রস্তুত ও স্মার্ট কাব্যভাষাটি পেয়েছেন, তার নির্মাণে রাহমানের ভূমিকা অগ্রগণ্য। এখানে শুধু একটি উদাহরণ দিচ্ছি, যা দিয়ে বোঝা যাবে তিনি কী রকম প্রভাব বিস্তার করেছেন। বাংলাদেশের কবিতায় ক্যাটালগধর্মী বা তালিকাপাতি কবিতা শুরু করেন শামসুর রাহমান। এরপর এটি পরম্পরা আকারে বহুদিন বাংলাদেশের কবিতাকে গ্রস্ত করে রেখেছে। ষাটের দশকের কবিদের একটা বড় অংশ এই আঙ্গিকে বিচিত্র কবিতা রচনা করেছেন। এই আঙ্গিকই অধিকাংশ স্লোগানধর্মী কবিতার প্রধান বাহন হয়ে উঠেছিল। আশির দশকে এসে এই ধরনের কবিতার বিরুদ্ধে রীতিমতো একটি আন্দোলন গড়ে ওঠে। কবিতাকে এ ধরনের তালিকাপাত থেকে বাঁচাতে ও একে ‘কবিতার মধ্যে ফেরাতে’ বাংলাদেশের কবিদের একটা বড় অংশ আবার কলকাতার দিকে ঝুঁকে পড়েন। কিন্তু তারপরও কি এই ধরনকে বাংলাদেশের কবিতা থেকে বিদায় করা গেছে? বাংলাদেশের এখনকার তরুণ কবি হয়তো জানেনই না যে তিনি শামসুর রাহমান প্রবর্তিত তালিকাপাতি কবিতার পরম্পরার ভেতরে থেকেইে লিখে যাচ্ছেন কবিতার পর কবিতা। তিনিই তো বড় কবি, যার প্রভাব অজান্তেই কাজ করে উত্তর প্রজন্মের কবিদের মধ্যে।
আগেই বলেছি, শামসুর রাহমানের কবিভাষার মধ্যে একটা স্বাতন্ত্র্য ছিল। সেই স্বাতন্ত্র্যের একদিক মৌখিক বাগ্ভঙ্গির সার্থক ব্যবহার। এটা ত্রিশের কবিদের আকাঙ্ক্ষার মধ্যে ছিল। কিন্তু তাঁরা পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে পারেননি। পেরেছিলেন দুই দশক পরের এক বাংলাদেশি কবি শামসুর রাহমান। রাহমানের কবিভাষা কেবল মৌখিক বাগ্ভঙ্গির কাব্যিক প্রয়োগের সার্থকতার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, আরবি-ফারসি শব্দের সাবলীল ব্যবহারও তাঁর কবিভাষাকে একটা ভিন্ন ব্যক্তিত্ব দান করেছিল। এই শেষোক্ত প্রবণতা রাহমানের কবিতায় আরও স্পষ্ট হয়ে উঠছিল দিন দিন। এটিকে হুমায়ুন আজাদ তাঁর ‘শামসুর রাহমান: নিঃসঙ্গ শেরপা’ গ্রন্থে ‘অধিকতর ক্ষতি’র কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। কিন্তু আমরা বলি, আরবি-ফারসি শব্দবহুলতার ভেতর দিয়ে রাহমান তাঁর কবিভাষাকে আরও স্বাতন্ত্র্যের দিকে, আরও জনমানুষের কোলাহলের দিকে, আরও বাংলাদেশের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলেন।
বাংলাদেশের প্রথম প্রজন্মের কবিরা পাকিস্তান প্রতিষ্ঠাকেন্দ্রিক জাতীয়তাবাদী ডামাডোলের ভেতরে বেড়ে ওঠে। চল্লিশের জাতীয়তাবাদী আবেগের চাপ ঢাকার শিল্পসাহিত্যকে নৈর্ব্যক্তিক শিল্পসফলতার মুখ খুব একটা দেখতে দেয়নি। ফলে রাহমান ও তাঁর প্রজন্ম তাঁদের বেড়ে ওঠার ধরনের সঙ্গে সাজুয্যপূর্ণ অনুসরণযোগ্য কোনো পূর্বজকে পেল না।
ফলে শামসুর রাহমানের কবিতাকে আমরা কোন বিচারে একটি বিশেষ মতাদর্শীদের অধিকারের মধ্যে ছেড়ে দেব! বরং তাঁকে ওই বিশেষ ঘরানা থেকে বের করে একটা উন্মুক্ত পরিসরের মধ্যে এনে বিবেচনা ও পাঠ করা দরকার বলে মনে করি। শামসুর রাহমানের একটা উন্মুক্ত ও এজমালি পাঠ দেওয়া খুবই প্রয়োজন।
এই দৃষ্টিকোণ থেকে রাহমানের রাজনৈতিক সাড়ার কবিতাগুলোকেও পাঠ করা দরকার। বলা দরকার, রাহমান তাঁর জনগোষ্ঠীর বিশেষ বিশেষ সংকটের সময়ে একজন যথার্থ কবির ভূমিকা পালন করেছেন; জাতির আকাঙ্ক্ষার অনুবাদ করেছেন। সময়ের অনুবাদ করেছেন। যে কবি জাতির বিশেষ সময়ে বিশেষভাবে সাড়া দিতে পারেন না, তিনি কমিউনিটির কবি হয়ে উঠতে পারেন না; কতিপয়ের কবি হিসেবেই থাকেন। কিন্তু সব বড় কবিই তাঁর জনগোষ্ঠীর মানুষের অব্যক্ত কথাকে ব্যক্ত করেন; কালের নিঃশব্দ পাখা ঝাপটানিকে শব্দরূপ দেন। এই বিবেচনাতেই তো ফররুখ আহমদ, শামসুর রাহমান, আল মাহমুদ, নির্মলেন্দু গুণ, আবুল হাসান, রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ বড় কবি। তাঁরা কোনো গোষ্ঠীর বা মতাদর্শীদের কবি নন।
তবে হ্যাঁ, এ কথা সত্য যে রাহমান তাঁর কবিতায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে নিজের জনগোষ্ঠীর অধিকাংশ মানুষের যাপিত জীবন, তাদের ভাবভাবনা-সংস্কৃতিকে ধারণ করতে পারেননি। একদিক থেকে এটি তাঁর কবিতার একটা বড় দুর্বলতা বটে। এই দুর্বলতা অনেকটাই কাটিয়ে উঠতে পেরেছিলেন আল মাহমুদ। কাজটা কোনো কবি ইচ্ছে করলেই করতে পারেন না। কারণ, কবিতা শেষ পর্যন্ত কোনো প্রজেক্ট নয়। কবি তাঁর স্বভাবের অনুবর্তী থেকেই কবিতা লেখেন। রাহমানও তা–ই করেছেন। নিজ স্বভাব ও চৈতন্যের অনুকূলে থেকেই শামসুর রাহমান পঞ্চাশ, ষাট, এমনকি সত্তরের দশকেও ‘পূর্ব বাংলায় সাধারণের কাছে এবং কবিপ্রার্থীদের কাছেও’ হয়ে উঠেছিলেন ‘কবি ও কবিতা হয়ে ওঠা না ওঠার গজকাঠি’।