বোনকেও ময়লার সঙ্গে কেন রেখে এলেন সুকুমার রায়!

‘হুঁকোমুখো হ্যাংলা/ বাড়ি তার বাংলা/ মুখে তার হাসি নেই দেখেছ?’ ছড়ায় যিনি এমন কথা লিখেছেন, সেই সুকুমার রায় ছোটবেলা থেকেই ছিলেন খুব দুষ্টু আর রসিক। বিখ্যাত শিশুসাহিত্যিক উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর এই ছেলে ভাইবোন আর সহপাঠীদের বানিয়ে বানিয়ে গল্প শোনাতেন। এমন আজব সব প্রাণীর নাম বলতেন, যার কথা জীবনেও কেউ শোনেনি। তাঁর ছবি আঁকার হাতও ছিল দারুণ। দেখা গেল, একটা প্রাণীর ছবি এঁকে নাম দিতেন তার ‘ভবন্দোলা’। আরেকটার নাম দিয়ে দিলেন—‘মন্তুপাইন’।

সুকুমার রায়ের সঙ্গে তাঁর দুই বোনও পড়তে বসতেন। একবার সুকুমার রায়ের সঙ্গে তাঁর ছোট বোন শান্তিলতাও বসে আঁকিবুঁকি করছিলেন। তখন সুকুমার রায়ের মাস্টারমশাই তাঁকে বললেন, ‘নিজের জিনিসপত্র সব গুছিয়ে রাখবে। ভাইবোনেরা যদি কিছু ছড়িয়ে ফেলে রাখে, তা-ও তুলে ফেলে দেবে।’

পড়াশোনা আর আঁকাআঁকি শেষে শিশু সুকুমার দেখলেন, ঘরময় কাগজ আর নানা রকম ময়লা। মাস্টার মশাইয়ের কথামতো সব ময়লা নির্দিষ্ট জায়গায় নিয়ে ফেললেন। ময়লা ফেলা শেষ করে দেখলেন, তাঁর ছোট বোন শান্তিলতা পা ছড়িয়ে মাটিতে বসে কী যেন করছে। এবার সুকুমার রায় তাঁকেও ময়লা ভেবে রেখে এলেন ময়লা রাখার স্থানে।

সূত্র: কল্যাণী কার্লেকর সম্পাদিত সুকুমার রায় সমগ্র রচনাবলী, ১ম খণ্ড, পৃষ্ঠা: ৪-৫
l গ্রন্থনা: বাশিরুল আমিন