আশ্বিন মাসের শেষ দিকে সন্ধ্যা হলেই যেকোনো কৌশলে নীলাদি আমাকে গেটের মুখে এনে ছেড়ে দেয়। তখন শহরজুড়ে দুর্গাপূজার আয়োজন। আলোর মালায় পথঘাট সাজানো। ঢাকের আওয়াজে আকাশ–বাতাস জমজমাট।
গোলপুকুরপাড় মোড়ে যাইয়া একটা রিকশা নিবি। তারপর সোজা কাচিঝুলি। রিকশা ছাইড়া দিয়া নদীর দিকে হাঁটতে থাকবি, ডাইন দিক খেয়াল কইরা।
আচ্ছা, কিন্তু আমি দেইখা আসলে তোমার লাভ কী? ক্যামেরা নিয়া ছবি তুইলা আনলে তা–ও একটা কিছু হইত।
দরকার নাই! ক্যামেরা দিয়া কি সুগন্ধের ছবি তোলা যায়, বলদ? দুইটা ছাতিমগাছ দেখবি কয়েক মিটার দূরে দূরে। দুইটার সামনেই কমপক্ষে মিনিট দশেক দাঁড়ায়া থাকবি। আত্মা ভইরা ঘ্রাণ নিবি।
নীলাদির পাগলামিপ্রায় আগ্রহ আমাকে অবাক, নির্বাক করে ঠেলে এনে দাঁড় করিয়ে দেয় উগ্র গন্ধওয়ালা গাছের পাতা ছাপিয়ে ফুটে থাকা থোকা থোকা সাদা ফুলের সামনে। প্রথম নিশ্বাসে প্রবল একটা ধাক্কা লাগে। এরপর নেশা ধরে যায়। ১০ মিনিটের বদলে আধা ঘণ্টা আমি চোখ বন্ধ করে ঘ্রাণ মুখস্থ করি। কিন্তু ঘরে ফিরে যে এলোমেলো, ক্ষুদ্র বিবরণ দিই, দিদির তাতে মন ভরে না।
বিসর্জনের দিন সন্ধ্যার পর শহর প্রায় জনশূন্য হয়ে যায়। তার ওপর সেদিন ছিল শুক্রবার। রাত আটটায় গলির মাথায় উঁকি দিয়ে দেখি মধ্যরাতের নির্জনতা। বাড়ির কাউকে কিছু বুঝতে দিলাম না। বড় একটা ওড়না জড়ানো নীলাদিকে নিয়ে চুপচাপ বের হয়ে ছড়িয়ে পড়লাম পথে। হাঁটতে হাঁটতে রাজবাড়ি পর্যন্ত গিয়ে একটা রিকশায় উঠে একটানে সাহেব কোয়ার্টার মেহগনি রোড।
নদীমুখী সরল পথ। হাতের ডানে দিদির পরম আকাঙ্ক্ষার ছাতিম, দুই গাছের মধ্যে দূরত্ব প্রায় ২০ কদম। ঘুরেফিরে কয়েকবার দুই জায়গার ঘ্রাণ পর্ব শেষ করে মুগ্ধ মন নিয়ে এগিয়ে চললাম নদীর দিকে। অস্পষ্ট আলোয় বিশাল রেইনট্রিগুলোকে মনে হচ্ছে দানবীয় ছায়ামূর্তি। হেলে পড়া একটা গাছের পাশে বসতেই অন্ধকার এসে আমাদের মিলিয়ে দিল। সামনে যেন নদী নয়, এক অনন্ত মহাকাশ। অতীত, বর্তমানের ভেদ নেই। দেশ, মহাদেশের সীমারেখা বিলুপ্ত।
যেন দুই জোড়া পাখনা মেলে আমরা ব্রহ্মপুত্রের জন্মলগ্নে পৌঁছে গেছি। হিমালয়ের বাতাসে জমে বরফ। তবু আমাদের চোখের সামনে আগুন, রক্তের স্রোত। অভিশপ্ত পরশুরামের হাত থেকে সবে কুঠার খসে পড়ল।
আসামের বনে হাতির পাল ধীর কদমে এগিয়ে যাচ্ছে নিরুদ্দেশ। একটা প্রকাণ্ড দ্বীপ দেখলাম, সবুজ কচুরিপানার ফাঁকে নীল জল। সূর্যাস্ত পেছনে ফেলে পুরো গুয়াহাটি শহর ঘুমিয়ে যাচ্ছে। ঢেউয়ের শব্দ বাতাসে বাতাসে ছড়িয়ে দিচ্ছে দিনের আলো, বাজার-পথ-স্কুল-কলেজের স্মৃতি। হঠাৎ পাহাড়, জঙ্গল, সমতল পুরো কেঁপে উঠল। ব্রহ্মপুত্র আহাজারি অথবা আহ্লাদে নিজের শরীর ভেঙে তৈরি করল আরেক নদী। প্রমত্ত সেই নতুন ধারায় যৌবন ঢেলে দিয়ে বৃদ্ধ, ক্লান্ত শরীর নিয়ে যুগের পর যুগ, শতাব্দী ধরে আরও একবার ভূমিকম্পের আশা নিয়ে আরও একবার চলতে শুরু করল।
আমাদের অবশ্য দ্রুতই ফিরে আসতে হলো। দুটি চাপা কণ্ঠের আবছা আলাপ এসে কানে বিঁধছে। কোন দিক থেকে আসছে, বুঝতে বুঝতেই কয়েক মিনিট পার হয়ে গেল। কিছুক্ষণ পর দেখলাম, বোরকা পরা দুজন অন্তত ৪০ বছর বয়সী নারী ঘাটে নামার সিঁড়ি বেয়ে উঠে আসছে। আমাদের দুজনকে খেয়াল করার মতো মনোযোগ তাদের নেই। উদ্বেগে অথবা ভয়ে দুই মহিলার শরীরের সব ভাষাই বদলে গেছে। হাঁটা, তাকানো, এমনকি নড়াচড়ার ধরন পর্যন্ত সন্দেহজনক।
নতুন এক নেশার সমুদ্রে আমার ডান হাত চেপে ধরে ডুব দিল নীলাদি। সেই সমুদ্রের ঢেউয়ে ঢেউয়ে রহস্যের ফেনা, কৌতূহলে লোনা হয়ে ওঠা জল।
পার্কের গেট পার হয়ে দুজন ঢুকে গেল ল্যাবরেটরি স্কুলের মাঠে। লোহার কুঠির বারান্দায় পা ছড়িয়ে বসে পড়ল। এইবার তাদের মুখে স্পষ্ট আলো। বালা পরা হাত ঠেকে আছে মাথায়। ভালোমতো মুখ চিনে রেখে আমরা ফিরে এলাম ঘরে। বারবার বলা একটা ঠিকানা এরই মধ্যে দিদি মুখস্থ করে ফেলেছে। সবচেয়ে ভয়াবহ যে তথ্য উদ্ঘাটন করা গেছে, তা হলো এই দুই মহিলা আসলে নতুন কাজে নামা এক জোড়া ছেলে ধরা। জীবনের প্রথম অপহরণ তারা করেছে মাত্র এক দিন আগে।
নীলাদি অবশ্য এত অল্প জেনে থেমে যেতে রাজি নয়। বাতিরকল পার হতে হতে সে এই দুই অপহরণকারীর নাম রাখল, সাজেদা আর মাজেদা। যেন স্কুলের বইয়ে লেখা অপরিবর্তনীয় সত্য। দিদির দৃঢ় বিশ্বাস, এরা আসলে যমজ বোন এবং যেই ছেলেকে ধরে এনেছে, সে কোনো এক সার ব্যবসায়ীর একমাত্র সন্তান। বয়স বড়জোর ১০।
পরের শুক্রবার ভোরে বিপিন পার্কের কাছে যার লাশ পাওয়া গেল, তার বয়সও বলা হচ্ছে প্রায় ১০। ধারণা করা হচ্ছে, শম্ভুগঞ্জের এক স্কুলমাস্টারের সন্তান।
দিদি খবর শুনে মুখ কালো করে পুরো দুপুর নির্বাক বসে থাকল। তার নতুন ঘোরের জগৎ যেন শিসমহল, পাহাড় থেকে গড়িয়ে আসা প্রমত্ত পাথরের ধাক্কায় চূর্ণবিচূর্ণ। ভেজা গলায় আমাকে ডেকে এনে বসিয়ে রাখল হেলে পড়া রোদের নিচে। বিকেলের বাগানে পাতার ওপর খোলা পা রেখে নীলাদি ঘণ্টাখানেক পর আমাকে একেবারে শুরু থেকে শেষ, রহস্যের জটখোলা কাহিনি বলতে শুরু করল। সন্ধ্যা নামছে। এইবার ঝানু গোয়েন্দার মতো সত্য উদ্ঘাটনের আত্মবিশ্বাসী আলো তার চোখে। তাই এত তথ্য, এই সব নাম-ঠিকানা, কয়েকটা মনের খবর, কবে কখন কী উপায়ে তার কাছে পৌঁছাল—এই রকম প্রশ্ন করার কোনো সুযোগ পাওয়া গেল না।
কাহিনির শুরু যমজ ছেলে ধরার হাতে অপহৃত, নির্যাতিত বালকের একেবারে জন্মের সময় থেকে। সময়টা ১৯৯৪ সালের রমজান মাসের দ্বিতীয় সাহ্রি।
ফাল্গুন মাস শুরু হতে আরও দুই দিন বাকি। শেষ রাতে মাঘের শীতের তেজ তখনো খুব একটা কমেনি। মুনতাসির মাস্টার উৎকণ্ঠায় পায়চারি করছেন বাড়ির উঠানে। বারান্দার চেয়ারে খাদি চাদর গায়ে তাঁর অর্ধেক অন্ধ বাবা। নিভে যাওয়া দৃষ্টিতে কী দেখছেন কে জানে, হাসির রেখা ফুটে আছে মুখে। কপালভর্তি বলিরেখার সঙ্গে সমান্তরাল ভুরুর ধনুক কুঁচকে গেছে। ভোরের অপেক্ষায় দুনিয়া মগ্ন যখন, পিতা–পুত্রের অন্তরে ফুটে আছে পরবর্তী প্রজন্মের প্রতীক্ষা।
প্রথম সন্তানের জন্মের পর মাস্টারের জীবনে সৌভাগ্য উপচে পড়তে শুরু করল। ধান, গম, মসলা ভাঙানোর মিল থেকে আয় বেড়ে গেল কয়েক গুণ। বেসরকারি হলেও তাঁর স্কুলে নতুন দালান করে দিল সরকার। বহুকাল ধরে ঝামেলায় থাকা বিলের ওপারের কয়েক খণ্ড জমিও রাতারাতি নিষ্কণ্টক হয়ে গেল। স্বয়ং ভাগ্যদাতার সুনজরে জন্ম নেওয়া ছেলের প্রতি যত্ন, ভালোবাসাও তাই প্রতি সপ্তাহ, মাসে বাড়তে লাগল।
বছর যায় পানির বেগে। পাঁচ বছর পার হলে ছেলেকে ভর্তি করা হয় শহরের নামকরা স্কুলে। ছয় মাইল দূর থেকে সন্তানকে মোটরসাইকেলের সামনে বসিয়ে নিয়ে আসেন আটটার আগে। সাড়ে ১২টায় স্কুল থেকে দুই পিরিয়ডের ছুটি নিয়ে আবার ছুটতে হয় ছেলেকে আনতে। তিন বছর বহু ঝামেলা সহ্য করে আনা–নেওয়ার পর, ২০০১ সালের প্রথম সপ্তাহে নিজ গ্রামের পরিচিত এক রিকশাওয়ালার সঙ্গে মাসওয়ারি চুক্তি করলেন।
অপহরণের ঘটনা ঘটে এর কিছুদিন পর, বৃহস্পতিবার সকালে। মুনতাসির মাস্টারের ছেলেকে নিয়ে প্রতিদিনের মতোই রিকশা রওনা হয় সাড়ে সাতটায়। ব্রিজের মাথায় পৌঁছে যায় আটটা বাজার দুই মিনিট আগে। হঠাৎ ওপরে না উঠে রিকশা নেমে যায় নদীর পাড় ঘেঁষে বিরান এক চরে। ছেলেটা চিৎকার করে উঠলে রিকশাওয়ালা নেমে এসে মুখ, চোখ, হাত, পা বেঁধে ফেলে। এরপর অন্ধকারে আওয়াজহীন আর্তনাদ এগিয়ে চলে জনমানবহীন বালুপথে। দূরে পাওয়ার স্টেশনের মাথা দেখা যায়। পেছনে ব্রিজের পিলারগুলো আবছা হয়ে আসতে থাকতে।
রিকশাওয়ালার সঙ্গে ছেলে ধরা দুই বোনের পরিচয় কবে কখন কীভাবে, নীলাদি বলতে পারে না। বেশি জানতে চাইলে চোখে বিরক্তির আগুন জ্বলে। আমি বরং তার বাকি গল্পে ঢুকে যাই, বিনা প্রতিবাদে।
চরের মধ্যখানে একটা নীল পলিথিনের তাঁবু। মাসের পর মাস অব্যবহৃত, বোঝা যায়। ভেতরের খড় বারবার ভিজে আবার শুকিয়ে গেছে। ছোট ছোট ঘাসের মতো জন্মেছে তাঁবুর চারপাশে। সাজেদা–মাজেদা আগে থেকেই সেখানে প্রস্তুত হয়ে ছিল। বোরকার ভেতর থেকে দুই জোড়া চোখ বেরিয়ে আছে। হাত–পা কাঁপছে, কিন্তু তাদের গলার ঝাঁজ বেড়েছে কয়েক গুণ। বড় বোনের হাতে ৫০টা ৫০০ টাকার নোট।
আফনে এই বান্ডিল লইয়া ভাইগ্যা যাইন। রিকশাডা থুইয়া যাইবাইন গ্যারেজো। ইস্টিশনো যাইয়া যে রেলগাড়িত মন চায়, উইডা পড়বাইন।
পোলাডারে মাইরধর কইরো না, কাইলই ছাইড়া দিয়ো। এক লাখের বেশি দাবি কইরো না যে।
ওইডা লইয়া আফনের টেনশন নাই কুনো। ছ্যাড়ার বাপের ইশকুলে খবর চইলা যাইবো বিহালের আগেই।
লোকটা যাওয়ার সময় রিকশার পেছন পেছন চাকার দাগ মুছতে মুছতে যত দূর সম্ভব মাজেদা এগিয়ে দেয়। সাজেদা ছেলেটাকে তাঁবুর ভেতর বসিয়ে অপেক্ষা করতে থাকে মুক্তিপণের। শহরের গাছগুলো এখান থেকে ছাই রঙের মেঘ। জীবনের প্রথম অপহরণ এখন পর্যন্ত অনায়াসেই এগিয়েছে। পা যদিও কাঁপছে, সর্বশক্তি দিয়ে মুঠ পাকিয়ে বুঝল, হাতে আত্মবিশ্বাস ফিরে এসেছে।
দিন শেষ হয়, রাত ফুরায়। টাকা নিয়ে কেউ আসে না। ব্রিজ থেকে চরে নেমে বিদ্যুতের খুঁটি গুনে গুনে সর্বোচ্চ দুজন নিরস্ত্র মানুষ নিয়ে এগিয়ে আসার কথা মুনতাসির মাস্টারের। ফজরের আজান পড়ছে, তখনো অন্ধকার। দুই বোন রেকি করতে এগিয়ে গেল। ১০ নম্বর খুঁটির কাছে গিয়ে তারা আরও অন্ধকারে ঢুকে গেল। সারা রাতের দুশ্চিন্তা এইবার আরও গাঢ়! যদি মাস্টারের পেছনে পুলিশ চলে আসে, কী করবে দুজন? অথবা যদি গ্রাম থেকে শত শত লোক চলে আসে? দুজনের হাতে দুটি ধারালো ছুরি ছাড়া আর কোনো অস্ত্র নেই। তা ছাড়া ছেলেটাকে খুন করার ইচ্ছা বা সাহস—কোনোটাই এখন পর্যন্ত নেই।
ভোরের আলো স্পষ্ট হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করেও কাউকে দেখতে না পেয়ে দুই আনকোরা ছেলে ধরা বোরকার পর্দা আবারও মুখে নামিয়ে তাঁবুর দিকে চলল। সারা রাত জেগে থেকে ক্লান্ত দুই বোন। মিনিট বিশেকের পথ হাঁটতে লাগল পৌনে এক ঘণ্টা। চরের বালু ততক্ষণে রোদে চকচক করছে।
তাঁবুতে প্রথম উঁকি দিল মাজেদা। ভূত দেখার মতো চমকে ওঠা একটা ভয়ার্ত চিৎকার শুনে সাজেদা এক দৌড়ে ঢুকে পড়ল তাঁবুর ভেতর।
নেই! ভেতরে, চারপাশে যত দূর চোখ যায়, কোথাও নেই চোখ-হাত-পা-মুখ বেঁধে ফেলা রাখা অপহৃত বালক!
এক বোন দিগ্বিদিক দৌড়াতে লাগল। আরেকজন হাতের ছুরি ছুড়ে ফেলে ডান হাত মাথায় দিয়ে বসে পড়ল বালুর ওপর।
সেদিন সারা দিন তারা ছেলেটাকে খুঁজে বেড়ায়। ব্যর্থ, পরিশ্রান্ত হয়ে সন্ধ্যার পর এসে বসে নদীর পাড়ে। আমি আর নীলাদি সেখানেই প্রথম তাদের আবছা আলাপ শুনতে পাই। নীলাদি আরও অনেক তথ্য–উপাত্ত হাজির করে ঘরে বসেই। যেন শহরের মোড়ে মোড়ে, পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগে তার লোকজন ছড়িয়ে–ছিটিয়ে আছে। সেই সব তথ্য কতখানি অলীক, কতখানি বাস্তব, আমার কোনো দিন যাচাই করতে মন চায়নি।
আমি নির্দ্বিধায় বিশ্বাস করতে থাকি, নবীন অপহরণকারীর কাছ থেকে আবার অপহৃত হয়ে যাওয়া ছেলেটির চোখের রং আমারই মতো। যার লাশ পাওয়া গেছে, সে ভিন্ন কেউ। মুনতাসির মাস্টারের ছেলে অন্য কোনো দুনিয়ায় চলে গেছে। সেখানকার কেউ এই শহর, দেশ, মানুষগুলোর নাম জানে না।
তার নাম–পরিচয়, শুরু থেকে শেষ, বদলে যাচ্ছে। অচেনা, অবুঝ একটা পৃথিবীর পথে পথে সে এখন শুকনা পাতা। হাওয়ায় উড়ছে কেবল, নিচে কোনো মাটি নেই।