এটাও ভাই-বোনেরই গল্প

আমাদের গল্পটা শুরু হয় শহরের ব্যাটারি-রিকশার চালক শাহাবুদ্দিনের কলেজপড়ুয়া মেয়ে শেফালিকে তুলে নিয়ে সর্ববৃহৎ নেতার পোষ্যপুত্র রকি ও তার বাহিনীর ধর্ষণ করা, থানায় কোনোরকমে বহু কষ্টে একটা মামলা হওয়া এবং গ্রেপ্তারের সাত দিনের মধ্যেই কোনো সাক্ষীর অভাব আর বিপক্ষের উকিলের বিরোধিতা না থাকায় রকির জামিনে বেরিয়ে আসার পর থেকে।

আমাদের শহরটাকে এই লোকালয়ের বাসিন্দারা পুরোনো শহর বলে দাবি করলেও আদৌ তাকে শহর বলে ডাকা যায় কি না, তা নিয়ে অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করে।

রেললাইনের পূর্ব পাশে বিহারি কালোনির পরের চত্বরেই শিকলঘেরা কুড়ি ফুট উঁচু সাদা চুনকাম করা সিমেন্টের গায়ে আলকাতরা কালো কালিতে ‘ঈমান-একতা-শৃঙ্খলা’ লেখা জিন্নাহ স্মারক থেকে শুরু হয়ে মোটামুটি সরলরেখার মতো আইয়ুব খানের উন্নয়ন-দশকে বানানো ষাটফুটি সড়কটিই আমাদের লোকালয়ের রাজপথ। এলোপাতাড়ি গড়ে ওঠা জমাটি রিকশাস্ট্যান্ডের সামনে-পেছনে ভাতের হোটেল, হোলসেল ওষুধের দোকানের সারি, মারোয়াড়িদের ডাল-খোল-ভুসির গুদাম এবং গদি দেখতে দেখতে পূর্ব দিকে এগিয়ে চলে সড়ক। তারপর দুই দালানের একটা কলেজ, টুকটাক কিছু অফিস-দোকান, আর নোয়াখালীপাড়ার কসাইদের গোশতের দোকানের দেখা পাওয়া যায় শহরের প্রাণকেন্দ্রের সিনেমা হলের আগপর্যন্ত। তার ৫০০ গজ আগেই মুসলিম ইনস্টিটিউটের পুরোনো দালান। সেখানে অস্থায়ী আস্তানা গেড়েছে সরকারি পাবলিক লাইব্রেরি। দায়সারাভাবে চাকরি করা একজন লাইব্রেরিয়ান আর এক পিয়ন। কোনো বই চাইতে গেলে আলমারি খুলতে হবে বলে নিতান্তই বিরক্ত বোধ করে। সেখানেই ছাতাপড়া হতচ্ছিরি বইগুলোর মধ্যেই রোদ্দুর খুঁজতে যায় ১৭-১৮ বছরের কয়েকজন তরুণ। এই ছোট্ট জনপদের বাইরে যে বিরাট বিশাল অকল্পনীয় বিস্তারের জগৎ আছে, বই সে কথা জানায় তাদের। আর দিনের পর দিন নিজেদের মধ্যে কথোপকথন থেকে, বইয়ের পর বই পড়ে, আলোচনা করে তারা জেনে যায় কিছু অমোঘ সত্য। তাদের উপলব্ধিতে আসতে থাকে যে এই দেশে মানুষে মানুষে যে বৈষম্য, ধনী-গরিবে যে বৈষম্য, তা সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছায় ঘটেনি। ঘটেছে মানুষের দ্বারাই। আর এই বৈষম্য টিকিয়ে রেখেছে মানুষই। তারা এটাও বুঝতে পারে যে এই ব্যবস্থাকে টিকিয়ে রেখেছে যে প্রতিষ্ঠান, তার নাম রাষ্ট্র। আর পৃথিবীকে শাসন করে যে বস্তু, তার নাম পুঁজি। তরুণেরা প্রচলিত রাজনীতির ওপর আস্থা হারায়। তারা তত দিনে এ কথা স্পষ্ট বুঝতে পেরেছে যে মানুষকে অমানুষ করে রেখেছে এই প্রচলিত রাজনীতি।

তারা বিকেলে বিকেলে হাঁটতে যায় ডোমপাড়া মাঠ পেরিয়ে, জলকল পেরিয়ে, তরমুজের প্লান্টেশন পেরিয়ে পাগলা রাজার ইটবাঁধানো রাস্তা ধরে। গ্রীষ্মের নিদাঘ বিকেলে, যখন কোনো গাছের একটা পাতার মধ্যেও বিন্দুমাত্র কম্পন দেখা যায় না, তখনো দুই পাশের গগনশিরীষগাছ থেকে যেন অলৌকিকভাবে ভেসে আসে না–দেখা ঝিরঝির বাতাস। তারা নিজেদের জামা খুলে রাস্তার পাশে বসে। পড়ে নিকোলাই অস্ত্রভস্কির ইস্পাত, অনিল মুখার্জীর সাম্যবাদের ভূমিকা, নীহার সরকারের ছোটদের রাজনীতি, ছোটদের অর্থনীতি। একদিন হঠাৎ করাতিদের দেখা যায় সেই রাজার আমলের শিরীষগাছগুলোকে কাটার জন্য জমায়েত হতে। তারা তো হতভম্ব। এই সব মহাপ্রাণকে কাটা হবে কেন? কারও কাছে কোনো উত্তর পাওয়া যায় না। কারও কাছ থেকে কোনো প্রতিবাদ আসে না। তারা তখন নিজেরাই প্রতিবাদে উদ্যত হয়। বাড়ি বাড়ি ঘুরে স্বাক্ষর সংগ্রহ করতে থাকে। সেই সময় দেখা যায় একজন শীর্ণকান্তি, দুর্বল, মাঝবয়সী মানুষ এগিয়ে এসেছে কয়েক গন্ডা সঙ্গী নিয়ে। তারা গাছগুলোর সামনে অবস্থান নিয়েছে নিজেদের শরীরকে ব্যারিকেড বানিয়ে। তখন শহরের মধ্যে একধরনের ছোট আলোড়ন বয়ে যায়। কমিউনিস্ট সন্তোষ মৈত্র শহরের গাছ কাটার বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছে। তরুণেরা হকচকিত হয়ে যায়। কমিউনিস্ট বলে কেউ আছে! আছে তাদের এই ছোট্ট শহরেই! সন্তোষ মৈত্রকে দেখে তাদের চোখ কপালে ওঠে। এই লোক কমিউনিস্ট! লোকটাকে না রোজ বিকেলে দেখা যায় গোপাল ডাক্তারের হোমিওপ্যাথির দোকানে বসে বসে দৈনিক সংবাদ পড়তে। ইস্পাত উপন্যাসটি পড়ে, আর মাও সে তুংয়ের লংমার্চের বিবরণ পড়ে তরুণদের ধারণা হয়েছিল যে কমিউনিস্টদের পাশ দিয়ে হেঁটে গেলে গায়ে আগুনের আঁচ টের পাওয়া যায়। কিন্তু এই লোক তো নেহাতই নিরীহদর্শন, চালশে পড়া, বুড়োটে। তরুণ দল বড় বেশি হতাশ হয়ে পড়ে প্রথম কমিউনিস্ট চাক্ষুষ করে।

তো রকি তার ধর্ষক দল নিয়ে জামিনে বেরিয়ে আসে, তখনো শেফালি নিজের পায়ে উঠে দাঁড়ানোর মতো সুস্থ হয়ে ওঠেনি। কাতরায় ঘরের এক কোণে শুয়ে শুয়ে। হাসপাতাল থেকে এক দিন পরেই তাকে রিলিজ দিয়ে বাড়িতে পাঠানো হয়েছে—বাড়ি গিয়ে ওষুধ খাও। ব্যথা বেশি হলে ইনজেকশন। সেই ইনজেকশন দুবেলা ফুটিয়েও তার ব্যথা যায় না। তার বাপ প্রেসক্রিপশন নিয়ে হাসপাতালের সেই ডাক্তারের কাছে গিয়েছিল। ডাক্তার নির্বিকারভাবে বলেছে, ‘সময় লাগবে। রাতারাতি সুস্থ করার ক্ষমতা আমাদের নেই। বারবার এসে জ্বালাতন করো না।’

এর মধ্যে থানার ওসি সাহেবকে এই মামলা গ্রহণ করার ‘অপরাধে’ বদলি করে পাঠানো হয়েছে নাকি পার্বত্য এলাকায়। নতুন ওসি সাহেব আগেরজনের অবস্থা দেখে সতর্ক—রকি যা খুশি করুক।

রকির এক সাঙাত এসে খবর দেয় শেফালির পিঠাপিঠি বড় ভাই রফিকউল্লাহ, যে একই কলেজে বোনের এক ক্লাস ওপরের ছাত্র, তাকে নাকি নিচাবাজারের সরদার মেডিকেলে দেখা গেছে ওষুধ কিনতে। সঙ্গে সঙ্গে রকির হোন্ডাবাহিনী ছোটে মজা লুটতে।

ঠিকই।

ওষুধের প্যাকেট হাতে দোকানের দরজা ঠেলে বেরিয়ে আসছে রফিকউল্লাহ। তাকে ঘিরে ধরে রকির দল। একজন খুব মজার ভঙ্গিতে জিজ্ঞেস করে, ‘ক্যা রে রফিক, তোর বোন আছে ক্যামন?’

রফিকউল্লাহর মুখ পাংশু। কাঁপছে। ভয়ে, মনঃকষ্টে, হয়তো কিছুটা ক্রোধেও। কিন্তু কোনো উত্তর করে না।

রকির সেকেন্ড ইন কমান্ড সাব্বির বলে, ‘কষ্ট পাচ্ছে বেচারি। কিন্তুক আমরা তোর বোনরে খুব যত্নের সাথে করিছি রে। করার সুমায় শেফালিও খুব মজা পাইছে।’

আরেকজন বলে, ‘তোর বোনের ভয় ভাঙ্গায়া দিছি। বিয়ার রাতে বরের ল্যাওড়া দেখে আর ভয় পাবি না। কী কস সাব্বির?’

তারপর একজোটে হো হো হাসি। হাসতেই হাসতেই রকি বলে, ‘আমরা সব সুমায় মাইনষের উপকারই করি।’

আবার হাসির তোড় বেড়ে যায়।

বাজারের মানুষ কেউ কাছে আসছে না। হঠাৎ কাছে এসে পড়লেও রকিকে দেখামাত্র আঁতকে উঠে সরে যাচ্ছে।

রকি জিজ্ঞেস করে, ‘ওষুধ কার জন্যে রে? তোর বোন শেফালির জন্যে? আহা এখনো বোধায় বেদনা আছে মিয়্যাডার ওই জাগাত?’

রফিকউল্লাহর চোখ জ্বলছে। তার চোখের দিকে তাকিয়ে ভেতরের ক্রোধ হয়তো একটু টের পায় রকি। তাচ্ছিল্যের ভঙ্গিতে বলে, ‘ঠিকমতো বইনের চিকিৎসা করা। সুস্থ হলে আবার যাতে আমি তাক লিয়্যা ফুর্তি করতে পারি। ভালো ডাক্তার দেখা। ট্যাকার দরকার হলে আমাক বলিস।’

রফিকউল্লাহ আর সহ্য করতে না পেরে ঝাঁপিয়ে পড়ে রকির ওপর। তারপর বেধড়ক মার খায় রকি বাহিনীর হাতে। বাজারভর্তি লোক নিরাপদ দূরত্বে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখে। রকিও চায় লোকজন দেখুক। যারা দেখবে তারাই তো ছড়াবে তার বীরত্বগাথা।

বিকেলে আজিমের চায়ের দোকানের আড্ডায় বসে আমরা খবরটা বিস্তারিত শুনি। শহরের অন্য মানুষদের মতো আমরাও যে রকি বাহিনীকে ভয় পাই না, তা নয়। আমরাও ভয় পাই। তবে তার চেয়ে বেশি ভয় পাই তার গডফাদারকে। সে না থাকলে রকি তো অন্য একটা ছেলের মতোই রক্তমাংসের পুতুলই। কিন্তু তবু আমরা ভাবি যে এভাবে চলতে পারে না। কিছু একটা করতে হবে। এ ধর্ষণের ঘটনাটা তেমন কোনো মিডিয়াতে আসেনি। রিপোর্টারদেরও তো বেঁচেবর্তে থাকতে হবে।

তাই আমরা ঠিক করি যে প্রেসক্লাবের সামনের রাস্তায় মানববন্ধন করব। সেখানে ধর্ষণের শিকার শেফালির বাবা ও ভাই বিচার চাইবে। বাপ না আসতে পারলেও ভাই রফিকউদ্দিন যে ঠিকই আসবে, তা রকির ওপর একলা ঝাঁপিয়ে পড়ার মতো সাহস দেখে বোঝা যায়।

মানববন্ধন করতে গিয়ে রফিকউদ্দিন আবার পিটুনি খেল। সাথে আমরাও।

এবার?

আমাদের বন্ধু মিলন বলল, ‘চলো সেই সন্তোষ মৈত্র, মানে কমিউনিস্টের কাছে যাওয়া যাক।’

রফিকউদ্দিনকে সাথে নিয়েই গেলাম আমরা।

একলা থাকেন তিনি। বিয়ে করেননি। পার্টি করতে করতে বিয়ের ভাবনা ভাবার সময় পাননি। তা ছাড়া বছরের পর বছর তো কেটে গেছে জেলের ভেতরেই। কখনো ভুয়া অভিযোগে। কখনো অভিযোগ ছাড়াই।

তিনি সব শুনে বললেন, ‘পরিস্থিতি তো তোমরা নিজেরাই বোঝো। আইনের পথে এই অপরাধের কোনো বিচার পাওয়া সম্ভব না। ওরা পয়সা দিয়ে, পেশি দিয়ে, লোভ দেখিয়ে, ভয় দেখিয়ে সব রেকর্ড গায়েব করে দেবে। কেউ সাক্ষ্য দিতে আসবে না। তোমার বোন একা কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে যদি ঘটনা সবিস্তার বর্ণনাও করে, তখন দেখা যাবে ওদের উকিল প্রমাণ করে দিচ্ছে যে ঘটনার দিন ও সময় ওরা সবাই কেউ এই শহরেই ছিল না। হয়তো নেতার সাথে ঢাকায় ছিল, হয়তো কক্সবাজারে ছিল। হোটেলের রসিদ দেখাবে ওরা, নেতার পিএস হয়তো সাক্ষ্য দেবে যে সে ওদের সাথেই ছিল। মামলা টিকবে না।’

কিন্তু যুক্তি মানতে নারাজ রফিকউদ্দিন, ‘আমি আমার বোনের ইজ্জতের প্রতিশোধ চাই। আপনেরা আমার পাশে না থাকলেও একলাই প্রতিশোধ লিব আমি।’

তার এই স্পৃহা খুব স্পর্শ করে আমাদের। কিন্তু সন্তোষ মৈত্র পোড়–খাওয়া মানুষ। তিনি শান্তকণ্ঠে বলেন, ‘কিন্তু প্রতিশোধ নিতে গিয়ে যদি তোমার জীবন বিপন্ন হয়! তোমার কিছু হয়ে গেলে তোমার মা-বাবাকে বৃদ্ধ বয়সে কে দেখবে? কী উপায় হবে তাদের?’

রফিকউদ্দিন গোঁ ধরে থাকে, ‘যা হয় হবি। বাপ-মায়ের কপালে যা লেখা আছে তা-ই ঘটবি। কিন্তু আমি যদি বইনের উপরে ঘটা এই অত্যাচারের প্রতিশোধ না নিতে পারি তাইলে আমি কিসের ভাই!’

সন্তোষ মৈত্র কিছুক্ষণ গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেন রফিকউদ্দিনকে। তারপর কাগজ-কলম নিয়ে খুব ছোট একটা চিরকুট লেখেন। রফিকউদ্দিনকে চিরকুটটা দিয়ে বলেন, ‘সকালে তুমি মাধনগরে যাবে। ওখানে সাইফুল তোমার জন্য অপেক্ষা করবে। ফোনে বলে রাখব আমি। সে যা বলে সেইভাবে কাজ করবে।’

তারপরে এক মাস কাটে দুই মাস কাটে, কিন্তু শহরে আমরা কোনো কিছুই ঘটতে দেখি না। রকি তার দলবল নিয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। আমাদের যে পরে আর মারধর করেনি, তা আমাদের মহল্লার নেতার কারণে। তিনিই আমাদের বড় নেতার কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন। বলেছিলেন, ‘ওরা ভালো ছেলে। লেখাপড়া, গান-নাটক নিয়ে থাকে। না বুঝে হঠাৎ একটা ভুল করে ফেলেছে মানববন্ধনে যেয়ে।’ বড় নেতা সস্নেহে আমাদের বলেছেন, ‘তোমরা যে ভালো ছেলে, তা আমি জানি। আর কোনো ঝামেলার মধ্যে যেয়ো না। এই ব্যাপারটা আমি দেখব। নিশ্চিন্ত থাকো।’

রফিকউদ্দিনকে আমরা মাঝেমধ্যে দেখতে পাই। নিয়মিত কলেজে যায়। শেফালিও নাকি কলেজে যায়। তবে বোরকা পরে।

আমরা নিজেদের সামলাতে না পেরে আবার সন্তোষ মৈত্রের কাছে যাই, ‘কিছুই তো ঘটল না কাকু!’

জানলাম, সাইফুল একটা পিস্তল দিয়েছিল রফিকউদ্দিনকে। চালানো প্র্যাকটিস করিয়েছিল দুই দিন ধরে। প্ল্যান করেছিল কবে কোথায় কীভাবে রকির বুকে পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করবে রফিকউদ্দিন। কিন্তু রফিকউদ্দিন পারেনি। পিস্তল ফেরত দিয়েছে সাইফুলকে। একটু দীর্ঘশ্বাস ফেলে সন্তোষ মৈত্র বলেন, ‘মানুষ খুন সবাই করতে পারে না। তবে রফিক এটা করতে পারলে খুবই ভালো হতো। একটা উদাহরণ সৃষ্টি হতো। তার কথা শুনে দেশের অন্য ভাইরা বোনদের অপমানের প্রতিশোধ নিতে উদ্বুদ্ধ হতো। নারী ধর্ষণকারীরা সাহস পেত না আর। অন্তত ভাইদের প্রতিশোধের ভয়ে।’

আমরা বলি, ‘সাইফুল তো রকিকে গুলি করতে পারত। করল না কেন?’

সন্তোষ মৈত্র ম্লান হাসেন, ‘তা পারত। কিন্তু তাতে তো আর উদাহরণ সৃষ্টি হতো না। সারা দেশের ভাইয়েরা উদ্বুদ্ধ হতো না।’

কিন্তু রফিকউদ্দিনরা পারছে না। ভাইয়েরা পারছে না। অনেক কারণ আছে। একটা হচ্ছে, বাপ-মা বলে, ‘এক সন্তানের জীবন নষ্ট হইছে, আরেক সন্তানের জীবন নষ্ট করা যাবে না। আর সবচেয়ে বড় ব্যাপার হচ্ছে, মানুষের মনে গেঁথে গেছে রাষ্ট্রের প্রচারণা, (বিচার পান আর না পান) “আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না”।’