রূপান্তর

অগ্রহায়ণ মাস শেষের দিকে। বেশ জাঁকিয়ে ঠান্ডা পড়েছে। কুয়াশায় কুড়ি হাত দূরের নদীটাও অস্পষ্ট হয়ে গেছে। ফুল মিয়ার দোকানের টিনের চালে ঠং ঠং করে একটানা শিশির পড়ছে। রাত খুব বেশি হয়নি। দশটা কি সাড়ে দশটা। এরই মধ্যে গ্রামের মানুষ কাঁথা টেনে শুয়ে পড়েছে। দূরের জঙ্গল থেকে ভেসে আসছে শিয়ালের ডাক। তার উত্তরে একটানা ভুকছে গোপাল মাস্টারের বাড়ির লাল কুকুরটা। একটা বিড়ি ধরিয়ে শরীরের চাদর টেনেটুনে ঠিক করল মাকড়া মিয়া। গল গল করে ধোঁয়া উগরে দিয়ে বলল, ‘মরণের জাড়।’

মাকড়া মিয়ার সামনে একটা ছোট্ট টেবিল। এক পা ভাঙা বলে ইট দিয়ে ঠেস দেওয়া। টেবিলের ওপরে একটা মস্ত কাঠের বাক্স। কিছু খুচরো টাকাপয়সা আছে বাক্সের ভেতরে। সারা দিনের কালেকশন। কিছুক্ষণ আগে টর্চ জ্বালিয়ে কয়েকবার টাকা গুনেছে মাকড়া। হিসাবের গরমিল কাটেনি। আলো জ্বালিয়ে আরেকবার গোনার কথা ভাবছে। টাকা এমন জিনিস, বারবার গুনলেও ক্লান্তি আসে না। তবে সারা রাত বসে গুনলেও টাকা বাড়ে না। এটাই টাকার বৈশিষ্ট্য।

বিড়িটা ফেলে দিয়ে রাস্তার দিকে তাকাল মাকড়া। নদীর দিক থেকে কে যেন আসছে। কুয়াশার মধ্যে ছায়ামূর্তিকে ভীষণ রহস্যময় দেখাচ্ছে। ছায়া থেকে সে রূপ নিল মানবমূর্তিতে। লোকটার দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য মাকড়া কয়েকবার কাশে। মানুষের শব্দ শুনে লোকটা থমকে দাঁড়ায়। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে মাকড়ার উপস্থিতি বুঝতে পেরে আস্তে আস্তে এগিয়ে আসে সামনে। ফুল মিয়ার দোকানের সামনে এসে আবার থমকে দাঁড়ায়। মাকড়াকে উদ্দেশ করে বলে, ‘কে ওখানে?’

মাকড়া লোকটার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকাল। কথা শুনেই বুঝেছে বিদেশি লোক। নইলে এত রাতে ত্রিমোহনী ঘাটে কে টাকা তোলার জন্য বসে থাকে, গ্রামের মানুষের তা অজানা নয়।

লোকটার পরনে গলাবন্ধ হলুদ উলের সোয়েটার ও কালো প্যান্ট। পায়ে চামড়ার জুতা না স্যান্ডেল ভালো বোঝা যাচ্ছে না। কাঁধে একটা ট্রাভেল ব্যাগ। তাকে অভয় দেওয়ার জন্য মাকড়া বলল, ‘হামরা।’

লোকটা কণ্ঠে অবিশ্বাস নিয়ে বলল, ‘হামরা? হামরা কেডা?’

মাকড়া কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বলল, ‘দূরত থাকলে ক্যামন করি চেনমেন? আউগি আইসো। চেহারাকোনা দেখমেন।’

লোকটা বিভ্রান্ত পায়ে এসে মাকড়ার সামনে দাঁড়াল। মাকড়া বলল, ‘এই তো ভদ্রলোকের মতন কাম করনেন। হামরা এই ঘাটের ঘাটিয়াল। ট্যাকাপাইসা তুলি।’

লোকটা বলল, ‘পয়সা? পয়সাটয়সা আবার কিয়ের? এত রাইতে ঘাট পার হইলে পয়সা লাগে বাপের জন্মে হুনি নাই।’

মাকড়া ঠান্ডা চোখে লোকটার দিকে তাকিয়ে বলল, ‘নদী পার হওয়ার সময় চরাটত ওটছেন না? বাঁশের চরাট? সাঁকো? ওটা হামরায় বানে দিছি। তোমরাগুলা পয়সা না দেলে খরচ ওটপে কেমন করি। বেশি না, দশটা ট্যাকা হামার তবিলত দিয়া যান।’

লোকটা ভালো করে মাকড়াকে লক্ষ করে। ছোটখাটো মানুষ। বসে যাওয়া চোয়াল, লিকলিকে হাত-পা। মুখে কাঁচা-পাকা দাড়ি। চাদর মুড়ি দিয়ে আছে বলে আরও ছোট দেখাচ্ছে। সে ডান কাঁধের ব্যাগটা বাঁ কাঁধে নিয়ে বলল, ‘টাহাপয়সা দিবার পারুম না। আমগো এলাকায় এইরাম কত সাঁকোয় উঠলে টাহা দেওয়া লাগে না। হগগলে ফ্রি পার হইয়া যায়। পয়সা লাগে না।’

মুচকি হেসে মাকড়া একটা বিড়ি বের করে ধরাল। ধোঁয়া ছেড়ে বলল, ‘কার বাড়ি যাইমেন?’

লোকটা সন্দেহের গলায় বলল, ‘তা দিয়া আপনের কাম কী? চামারের মতো এত রাইতে বইছেন পয়সা কামানির লাইগা। লজ্জাশরম নাই আপনাগো।’

মাকড়া বোঝানোর ভঙ্গিতে বলল, ‘শোনেন ভাই, তোমরা গ্রামের কারও বাড়িত আসলে কন। গ্রামের মাইনষেরটে হামরা পাইসা নেই না।’

মাকড়া লোকটাকে ছাড়ল না। ধারালো ছুরির ফলা লোকটার গলায় আধা ইঞ্চি ঢুকিয়ে দিয়ে বলল, ‘জারুয়ার ব্যাটা জারুয়া ন্যাকো! মাকড়া ডাকাইতক আইজ পর্যন্ত কাঁইও ধরইবার পারে নাই, অয় জানে না?’

মাকড়ার কথা লোকটার পছন্দ হলো না। সে তাগড়া জওয়ান। আধবুড়ো মাকড়াকে বাজিয়ে দেখার জন্য বলল, ‘খালি টাকা টাকা করতাছেন। কত কামাইলেন সারা দিন? দেখি, এট্টু আমারেও দেখতে দেন।’

বলে সে কাঁধের ব্যাগটা ধপাস করে ফেলল টেবিলে। বহুদিনের পুরোনো টেবিল। একটা পায়া ইটের ওপর ঠেস দেওয়া ছিল। ভারী ব্যাগের ওজন সামলাতে না পেরে টেবিলটা মাটিতে কাত হয়ে পড়ল। বাক্স খুলে খুচরা টাকাগুলো এদিক-ওদিক ছিটকে পড়ল।

লোকটা লোভী গলায় বলল, ‘মাল তো ভালোই কামাইছস। একলা খাইলে চলব?’ সে উবু হয়ে টাকা কুড়াতে শুরু করল।

মাকড়া এতক্ষণ শান্ত ছিল। এবারে তার ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেল। লাফিয়ে উঠে লোকটার টুঁটি চেপে ধরল। দাঁতে দাঁত চেপে বলল, ‘ভালোয় ভালোয় কনু তাক শুনলু না। এলা জবো করি নদীত ভাসে দেঁও? নল্লির ওপর পাড়া দিয়া জিউ বাইর করি দেইম। তখন চিনবু মাকড়া ডাকাইতক।’

মাকড়ার শরীরে প্রচণ্ড শক্তি। শীর্ণ-অপুষ্ট শরীরে কী করে এত বল এল, লোকটা বুঝে পেল না। সে হাত জড়ো করে অনুনয় করে বলল, ‘আমারে মাফ কইরা দেন। আমারে ছাইড়া দেন। আমি ওসমান হাজির মেয়ের জামাই। ঢাকাত্তে আইছি। আল্লাহর কসম, আমারে ছাইড়া দেন। আপনের দুই পায়ে পড়ি।’

শোরগোল শুনে ফুল মিয়া দোকানের দরজা খুলে বাইরে বেরিয়ে এসেছে। তার শরীরে কেরোসিনের গন্ধ। দোকানে থাকা তেলের ড্রামের কারণে বোধ হয়। লোকটার মুখে টর্চ মেরে ফুল মিয়া বলল, ‘উয়ার কথা শুনছেন ওস্তাদ? ওসমান হাজির বেটির বিয়া হইছে সাধনপুরত। এই শালা তো চরুয়া। কতা শুনি বোঝেন নাই?’

মাকড়া গম্ভীর কণ্ঠে আদেশ করল, ‘ফুলু, হাতিয়ার বাইর কর তো।’

ফুল মিয়া দৌড়ে দোকানের ভেতর থেকে একটা এক হাত লম্বা ছুরি নিয়ে এল। ছোঁ মেরে ছোরাটা নিয়ে লোকটার গলায় ঠেকাল মাকড়া। চিবিয়ে চিবিয়ে বলল, ‘তোক আইজ জবো করিম। তার আগে সত্য করি ক, কোন্টে থাকি আলছিস?’

শীতের রাতেও লোকটা কুলকুল করে ঘামছে। সে আমতা আমতা করে বলল, ‘ওস্তাদ, আমিও আপনের লাইনের লোক। ন্যাকো ভাইয়ের দলে কাম করি। ন্যাকো ভাই পুলিশের কাছে সারেন্ডার করছে। হ্যায় লোক নিয়া উত্তর দিকে খাড়ায় রইছে। দক্ষিণে আছে ওসি সাব। আপনেরে ধরার লাইগা থানার সব পুলিশ লইয়া আইছে। এতক্ষণে চাইর দিকে ঘিরা ফালাইছে। আমারে ছাইড়া দেন। মাফ করেন।’

মাকড়া লোকটাকে ছাড়ল না। ধারালো ছুরির ফলা লোকটার গলায় আধা ইঞ্চি ঢুকিয়ে দিয়ে বলল, ‘জারুয়ার ব্যাটা জারুয়া ন্যাকো! মাকড়া ডাকাইতক আইজ পর্যন্ত কাঁইও ধরইবার পারে নাই, অয় জানে না?’

মাকড়া ডাকাত নামটা গ্রামের মানুষের দেওয়া। তার আসল নাম অন্যকিছু ছিল। মাকড়া নামের আড়ালে সেটা হারিয়ে গেছে। লোকের বিশ্বাস, বিপদে পড়লে মাকড়া মিয়া মাকড়সার রূপ ধরতে পারে। তখন জল-স্থল-অন্তরিক্ষ—কোনো কিছুই তার কাছে বাধা নয়। সংক্ষুব্ধ গেরস্ত, দলবদ্ধ গ্রামবাসী, অস্ত্রধারী পুলিশ—সবার নাগালের বাইরে চলে যায়।

এই কিংবদন্তির জন্ম কীভাবে হলো, তা কেউ জানে না। আজ পর্যন্ত কেউই নিজ চোখে মাকড়াকে ছয় চোখ ও আট পায়ের অমেরুদণ্ডী কীটে রূপান্তরিত হতে দেখেনি। তবে সবাই বিশ্বাস করে, বিপদে পড়লে মাকড়া এভাবে পালাতে পারে। সবচেয়ে বিশ্বাস করে ফুল মিয়ার মতো শাগরেদেরা।

ন্যাকো ওরফে লিয়াকত একসময় মাকড়ার দলে কাজ করত। চণ্ডীপুরের এক কামলার ব্যাটা ছিল ন্যাকো। গায়ে-গতরে ছিল বিরাট। যেমন মিশকালো চেহারা, তেমনি কিলবিলে পেশিবহুল শরীর। অল্প বয়সে মাকড়ার দলে ভিড়ে যায়। বছর দশেক তার সঙ্গে কাজ করেছে। যোগ্য উত্তরসূরির মতো তাকে সাজিয়ে-পড়িয়ে প্রস্তুত করেছিল মাকড়া। ডাকাতির অ আ ক খ নিজের হাতে শিখিয়েছিল। ন্যাকোর ছিল শেখার ক্ষুধা আর অসীম সাহস। দলের পুরোনো লোকদের ঈর্ষায় পুড়িয়ে সে অচিরেই দলনেতা মাকড়ার প্রিয়পাত্র হয়ে উঠেছিল। মাকড়া ভেবেছিল, বয়স আরেকটু বাড়লে শরীর যখন সাড়া দেবে না, তখন দলের দায়িত্ব ন্যাকোর কাঁধে তুলে দেবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটা হতে হতেও হয়নি। বেয়াড়াপনার কারণে ন্যাকো চিরতরে মাকড়ার স্নেহধন্য হওয়ার সুযোগ হারিয়েছে।

মাকড়া হয়তো লোকটাকে ওখানেই নিকেশ করে ফেলত। তবে ফুল মিয়া বাধা দিল। ন্যাকো যদি সত্যি সত্যি পুলিশ এনে চারপাশ ঘিরে ফেলে, তাহলে দলের অন্যদের খবর দেওয়া দরকার। ওরা আশপাশের বাড়িগুলোতে ঘুমিয়ে আছে। বিশেষ কায়দায় ডাক দিলেই চলে আসবে। সে মাকড়াকে বলল, ‘সবাইকে সাবধান করি দেওয়া দরকার ওস্তাদ। মুই এই শালাক বান্ধো। তোমরা সিগনাল দেন।’

লোকটাকে ফুল মিয়ার হাতে দিয়ে মাকড়া প্রচণ্ড শব্দে সিঁটি দিয়ে উঠল। খানিক বাদে জবাব এল উত্তর দিক থেকে। ওদিকে ঘন জঙ্গল। দলের কারও থাকার কথা নয়। মাকড়া বলল, ‘ওই যে, ন্যাকো সিগন্যাল দেতোছে।’

রাগে-ক্ষোভে বন্দী লোকটাকে কষে থাপ্পড় মারল ফুল মিয়া। লোকটা আর্তনাদ করে উঠতেই নদীর দিকে অনেকগুলো ছায়ামূর্তি চঞ্চল হয়ে উঠল। কারা যেন দৌড়ে এদিকে আসছে। মাকড়া চঞ্চল হয়ে বলল, ‘পুলিশ আসতোছে, তুই পালা ফুলু।’

ফুল মিয়া কিছুক্ষণ ইতস্তত করে গ্রামের দিকে দৌড় দিল। বাঁশঝাড়ের ভেতর দিয়ে একবার নদীতে গিয়ে পৌঁছাতে পারলে কারও বাপের সাধ্য নেই তাকে ধরে।

মাকড়া দোকানের ভেতর থেকে দুটো রামদা বের করে দুই কাঁধে নিল। রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে লাগল। বিনা যুদ্ধে সে ধরা দেবে না। সেটা পুলিশের কাছেই হোক আর বিশ্বাসঘাতক ন্যাকোর কাছেই হোক।

মাকড়াকে প্রস্তুত হতে দেখে লোকটা গলা খাঁকারি দিল। অবাক হয়ে বলল, ‘ওই মিয়া, ফাইটিংয়ের লাইগা রেডি হইতাছেন কিল্লাইগা? আপনে না মাকড়সার রূপ ধরতে পারেন! ধরেন রূপ।’

মাকড়া কোনো জবাব দিল না। লাঠিখেলার মতো করে দুই হাতের দুই ধারালো অস্ত্র বাতাসে কুপিয়ে শক্তি পরীক্ষা করে নিল।

ছায়ামূর্তিগুলো কাছে চলে আসতেই সে তাদের স্পষ্ট দেখতে পেল। পুলিশ নয়, একদল মহিলা! প্রিন্টের ছাপা শাড়ি পরা কতগুলো মহিলা মাকড়ার দিকে দৌড়ে আসছে। সে হতভম্ব হয়ে লোকটার দিকে তাকিয়ে থাকল।

লোকটা, যাকে ফুল মিয়া নিজ হাতে দোকানের খুঁটির সঙ্গে বেঁধেছে, রহস্যময় গলায় বলল, ‘আপনি মাকড়া মিয়া না?’

মাকড়া দ্বিধাপূর্ণ গলায় বলল, ‘মাকড়া ডাকাইত মোর নাম।’

‘তাহলে ওদের চিনতে পারছেন না?’

‘না!’ মাকড়ার কণ্ঠস্বর শুনে মনে হলো এই উত্তেজনা সে আর নিতে পারছে না।

মহিলারা দৃষ্টিসীমার মধ্যে চলে এসেছে। সুগঠিত শরীরের সাত-আটজন মহিলা। এমন রূপ আর স্বাস্থ্য গ্রামে সচরাচর দেখা যায় না। প্রশ্ন করার জন্য লোকটার দিকে তাকিয়ে মাকড়ার মাথা ঘুরে উঠল। হাতের মুঠো আলগা হয়ে রামদা দুটো পড়ে গেল। লোকটার জায়গায় এটা কী বসে আছে!

কুয়াশার অস্বচ্ছ আবরণের মধ্যে মাকড়া দেখল একটা প্রকাণ্ড মাকড়সা লোকটার জায়গায় বসে আছে। আট হাতের দুটি দড়ি দিয়ে বাঁধা। মাকড়া জানে সামান্য কসরতে ওই বাঁধন খুলে যাবে। জীবনে যে ব্যাপারটি তার সঙ্গে ঘটেনি, আজ সেটাই ঘটল। ভয়ে-আতঙ্কে গোঙাতে শুরু করল মাকড়া ডাকাত।

মাকড়সারূপী লোকটি বলল, ‘ধুর মিয়া, শুধু শুধু সময় নষ্ট করাইলেন। আমাগো জাতে পুরুষের বড় অভাব। তাই মাদিগুলারে আনছিলাম একটু মিল-মহব্বতের লাইগা। আপনে তো জাল মাকড়সা মিয়া!’

মাকড়ার গলা দিয়ে কোনো শব্দ বেরোল না। তার বাহ্যজ্ঞান সম্পূর্ণরূপে লোপ পেয়েছে। ওদিকে মহিলারাও আর শাড়ি পরা সরলা বধূর রূপে নেই। তারা বিশালকার মাকড়সার রূপ নিয়েছে। তার সামনে দাঁড়িয়ে কিলবিল করে পা নাচাচ্ছে। ছয় চোখের নিকষ অন্ধকারে যাচাই করছে মাকড়াকে। বহুদিনের তৃষ্ণা তাদের কীট শরীরে। হৃদয় বলে কিছু থাকলে তৃষ্ণা সেখানেও।

মাকড়া হাত জোড় করে ভূমিশয্যা নেওয়ার আগে বলল, ‘মুই মানুষের বাচ্চা। মোক মাফ করি দেন।’