হামটি ডামটি ডাইনোসর

অলংকরণ: তুলি
অলংকরণ: তুলি

একদিন বনে দেখা গেল ইয়া বড় দুটো প্রাণী। হাতি ভাবল, ‘এরা তো দেখি আমাদের চেয়েও অনেক বড়!’ বানরের চেঁচামেচি বন্ধ। বনের রাজা সিংহের মাথায় হাত! পানি খাচ্ছিল হরিণ; ধুপ ধুপ শব্দ কানে যেতেই সামনে তাকিয়ে চোখ ছানাবড়া! একি! দৌড়ে সে গেল সিংহের কাছে। সিংহ বলল, ‘আমি আগেই দেখেছি।’ জরুরি সভা ডাকা হলো। সিংহ খোঁজ করল শিয়াল পণ্ডিতকে। কুমির বলল, ‘পণ্ডিত মশাই আমার বাসায় বাচ্চাদের প্রাইভেট পড়াচ্ছে।’ হরিণকে পাঠানো হলো খবর দিতে।
অদ্ভুত বিশাল প্রাণীর খবর শুনে দ্রুত ল্যাপটপটা ব্যাগে ভরে হরিণের পেছন পেছন শিয়ালও দৌড় দেয় জরুরি সভায়। দৌড়াতে দৌড়াতে হরিণ শিয়ালকে সব খুলে বলে। শিয়াল গুগলে সার্চ দিয়ে প্রাণীটা সম্পর্কে খবর নিয়ে জানায়, ‘এরা হলো ডাইনোসর! কোটি কোটি বছর আগে এরা পৃথিবীতে বাস করত। টাইম মেশিনে এরা এখনকার জঙ্গল দেখতে এসেছে। আপাতত কয়েক দিন লুকিয়ে লুকিয়ে ওদের অবজার্ভ করতে হবে। পরে ভেবে দেখব কী করা যায়।’
সিংহ সবাইকে সাবধানে থাকার আদেশ দিয়ে সভা শেষ করে।
এদিকে ডাইনোসর দুটি বনে ঘুরতে ঘুরতে অবাক হয়। কোথাও কাউকে দেখা যাচ্ছে না। তবে কি পশু-পাখি হারিয়ে গেল? তবে কি মানুষ সব পশু-পাখি খেয়েই ফেলেছে? কয়েক দিন পর স্ত্রী ডাইনোসর দুটো ডিম পাড়ল। ডিম ফুটে বাচ্চা হলো। বাচ্চা দুটো নিয়ে তারা বনে ঘুরে বেড়াতে লাগল।
কদিন পর নববর্ষ। তারা ভাবল শপিংয়ে যাওয়া দরকার। বাচ্চা ডাইনোসর দুটো বলল, ‘বাবা, আমরা শপিংয়ে যাচ্ছি। তোমাদের কিছু লাগবে? নববর্ষ উপলক্ষে কিছু ড্রেস কিনতে পারো। কিন্তু তোমাদের যে সাইজ! এই সাইজের জামা পাওয়া কি চাট্টিখানি কথা! তবে তোমাদের জন্য খাবার আনা যায়। কী খাবে? বার্গার, স্যুপ, চাওমিন, সসেজ...নিয়ে আসি?’
বাচ্চা ডাইনোসর দুটো শপিং মল থেকে সব পশু-পাখির জন্য একটা করে জামা কিনল। খাবারদাবার কিনল অনেক।
নববর্ষের আগের দিন বাবা-মা ডাইনোসর বনের রাজা সিংহকে বলে বনের সব পশু-পাখিকে দাওয়াত করল। ডাইনোসরের দেওয়া নতুন কাপড় পরে পুরো জঙ্গল ঘুরে এল সবাই। সামনে থাকল ডাইনোসরের বাচ্চারা আর সবার পেছনে বাবা-মা ডাইনোসর। ফিরে এসে সবাই পেট ভরে খাওয়াদাওয়া করল। সবার ভীতি কেটে গেল। বহুদিন পর পশু-পাখির চেঁচামেচিতে ভরে উঠল জঙ্গল।
ডাইনোসরের বাচ্চা দুটি ভর্তি হলো শিয়াল পণ্ডিতের পাঠশালায়। সন্তানদের পাঠশালায় যেতে দেখে বাবা-মা ডাইনোসরের খুব ভালো লাগে। কারণ, তাদের সময় পড়াশোনার সুযোগ ছিল না। সহপাঠী বন্ধুরা ডাইনোসরের বাচ্চা দুটিকে বন্ধু করে নেয়। আদর করে তাদের নাম দেয় হামটি ডামটি ডাইনোসর।
নবম শ্রেণি, শেরেবাংলা নগর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়