রফিকুন নবীর ৮০তম জন্মবার্ষিক প্রদর্শনী
তাঁর দৃষ্টিসীমায় সর্বদা জাগ্রত বাংলাদেশ
২৮ নভেম্বর ইমেরিটাস অধ্যাপক, শিল্পী রফিকুন নবীর অশীতিতম জন্মদিন উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর ও গ্যালারি চিত্রকে চলছে তাঁর ছবির আনুপূর্বিক প্রদর্শনী। এ নিয়ে বিশেষ আয়োজন।
৮০তম জন্মবর্ষপূর্তিতে একটি রেট্রোস্পেক্টিভ প্রদর্শনীর পাশাপাশি সাম্প্রতিককালের চিত্রমালা নিয়ে আরেকটি স্বতন্ত্র প্রদর্শনী আয়োজনের মাধ্যমে রফিকুন নবী তাঁর বিপুল প্রাণশক্তি ও শিল্পসামর্থ্যেরই প্রকাশ ঘটালেন। তাঁর নিকটজনেরা জানেন, কিছুকাল ধরে তিনি কিছু শারীরিক অসুবিধার অস্বস্তি ভোগ করছেন। কিন্তু বিস্ময়কর ঘটনা হলো, তাঁর সাম্প্রতিককালের চিত্রমালায় সেসবের কোনো প্রভাবই দৃশ্যমান নয়। আমাদের সবারই জানা, তাঁর ছবির আকার সব সময়ই বৃহত্ত্বকে আহ্বান করে পরিতৃপ্তি খোঁজে। এ ছাড়া তাঁর চিত্রতল ভরাট হয়ে ওঠে অবয়বের বহুমাত্রিক বহুত্বের ব্যঞ্জনায়। রফিকুন নবীর সাম্প্রতিক চিত্রগুচ্ছে এর কোনোটিরই ব্যত্যয় ঘটেনি। বরং বৃহৎ সব ক্যানভাসে বিপুলসংখ্যক অবয়বের সামঞ্জস্যপূর্ণ বিন্যাসে এবারও তাঁর চিত্রমালা হয়ে উঠেছে উজ্জ্বল ও সার্থক। এই সার্থকতার আরও নিদান হলো, রেখাঙ্কনে তাঁর মাস্টারলি দক্ষতা, কম্পোজিশনে অতুলনীয় নৈপুণ্য, আলোছায়ার বিন্যাসে মুনশিয়ানা, পরিপ্রেক্ষিতের বোধে বিদগ্ধতা, সর্বোপরি রং ব্যবহারে প্রকৃতিকে মান্য করেও উন্নত অভিরুচির বিচক্ষণতা।
রফিকুন নবীর চিত্রমালা দর্শকদের জন্য সব সময় এক অনির্বচনীয় আনন্দের আকর। এর মূলে আছে তাঁর ছবির দৃশ্যতা—গুণ, সুরুচি, সরসতা এবং বিষয়গত বিন্যাসের ক্ষেত্রে নাটকীয় সংবেদনা। তাঁর আরাধ্য বিষয় হলো জীবন, বিশেষত নিম্নবর্গের জীবন এবং সেই জীবনের বিপুল রহস্য, বিস্তৃত দেশকাল, এই জন্মভূমির বৈচিত্র্যময় নিসর্গ ও প্রাণের সমারোহ। এসবের সঙ্গেই রয়েছে তাঁর শিল্পীসত্তার এক গভীর ও অন্তর্ময় মমতার সম্পর্ক। এ কারণেই রফিকুন নবীর চিত্রতল এত বেশি উজ্জ্বল, সজীব ও প্রাণবন্ত, যা দর্শকচিত্তকে ভরে দেয় এক গভীর প্রশান্তিতে।
রফিকুন নবী বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় শিল্পীদের একজন। কার্টুনিস্ট হিসেবে তাঁর খ্যাতিকে বলা যায় চূড়াস্পর্শী। কার্টুনে তাঁর যে হাস্যরস, সূক্ষ্ম ব্যঙ্গ-কৌতুকময়তা, সমাজসচেতনতা ও বুদ্ধির দীপ্তি সহজেই অনুভব করা যায়, তা তাঁর চিত্রধারাকেও করে তুলেছে অবিরামভাবে আকর্ষণীয় আর জননন্দিত। চিত্রশিল্পে জলরং, কাঠখোদাই, রেখাচিত্র (চারকোল), তেলরং, অ্যাক্রিলিক ইত্যাদি মাধ্যমে এ শিল্পীর দক্ষতা অসাধারণ। এর বাইরে প্রচ্ছদ ও অলংকরণেও অসামান্য কুশলী তিনি। লেখালেখিতেও সমান দক্ষ। এককথায় রফিকুন নবী বাংলাদেশের শিল্পজগতে বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী হিসেবে অনন্য।
দুই
রফিকুন নবীর শিল্পবৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা করলে কতগুলো দিক স্পষ্ট হবে। প্রথমত, ক্ষুদ্রাকৃতির পরিবর্তে বৃহদাকৃতির কাজের দিকেই তাঁর ঝোঁক। দ্বিতীয়ত, তাঁর ছবির যে দিকটি দর্শককে সবচেয়ে বেশি মুগ্ধ করে তা হলো, রেখাঙ্কনে (ড্রয়িং) তাঁর অসামান্য নৈপুণ্য। এ ক্ষেত্রে তিনি শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনেরই যোগ্য উত্তরসূরি। এই পারদর্শিতা তাঁর সব মাধ্যমের চিত্রেই অনবদ্যভাবে পরিস্ফুট।
তৃতীয়ত, জলরংচিত্রে ছাত্রজীবন থেকেই তিনি অর্জন করেছেন মুনশিয়ানা। এ ধরনের ছবির একান্ত দাবি, বিষয়বস্তুগত বাস্তবতা; দ্রুততার সঙ্গে চিত্র সম্পন্ন করার তাগিদ। সে কারণে মনের তীক্ষ্ণ সতর্কতামূলক অভিনিবেশ জরুরি; দরকার প্রত্যুৎপন্নমতিত্ব; পরীক্ষা-নিরীক্ষার সুযোগ এখানে খুবই সীমিত। এ মাধ্যমের অনিবার্য বৈশিষ্ট্য হিসেবে স্বচ্ছতা রাখার ওপর আরোপ করতে হয় গুরুত্ব। এই যে আঁকার আগেই পরিকল্পনা গ্রহণ এবং সে অনুযায়ী তা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন—এটিই হয়ে পড়ে রনবীর শিল্পী–স্বভাবের অনিবার্য অংশ। ফলে সব মাধ্যমের কাজেই দেখা যায়, পূর্বনির্ধারিত পরিকল্পনা নিয়েই তিনি সৃষ্টিকর্মে নিয়োজিত হন এবং তা পরিপূর্ণরূপে বাস্তবায়নে তৎপর হন; আকস্মিকতাকে আহ্বান করেন না।
তিন
তাঁর ছবিতে লক্ষণীয়, শিল্পীসুলভ আবেগের সঙ্গে স্বভাবসুলভ বৈদগ্ধ্যের সুসমন্বয়। একই সঙ্গে সমাজসচেতন দৃষ্টিভঙ্গি; বঞ্চনাকাতর জীবনের প্রতি সহমর্মিতামূলক মনোভঙ্গির সঙ্গে সৌন্দর্যবোধের সুসামঞ্জস্য। এসব সমন্বয় ও সামঞ্জস্য সূত্রেই তাঁর চিত্রতলে সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে রেখা ও রং ব্যবহারে সংযম ও পরিমিতিবোধ। বাস্তবধর্মী চিত্র রচনাই যেহেতু শিল্পীর মূল বৈশিষ্ট্য, তাই বাস্তবতার নিরিখেই তাঁর ছবিতে লক্ষণীয় হয়ে ওঠে রঙের বিচিত্র সমাবেশ। ফলে রং কখনো স্বাভাবিকরূপে, কখনো পরিশীলিত ও পরিমার্জিতরূপে চিত্রতলে প্রযুক্ত হয়। আর রঙের এই বৈচিত্র্যের মধ্যেই নিহিত থাকে তাদের অন্তর্গত ঐক্য ও লঘুভার সামঞ্জস্যচেতনা।
তাঁর চিত্রকর্মের রং যেমন অতি সূক্ষ্ম, স্বচ্ছ ও স্পন্দিত; তেমনি সংবেদনশীল ও সৌন্দর্যদীপ্ত। তাঁর ছবিতে কালো রঙের ব্যবহার প্রায়ই সৃষ্টি করে এক বিশেষ মাত্রা। এই কালো যে সব সময় আঁধার বা জালের পরিপূরক রং হিসেবেই ব্যবহৃত হয়, তা না; কখনো কখনো তা হয়ে ওঠে বর্ণবিন্যাসেরই এক সৌন্দর্যময় নির্ধারক।
সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ হলো, রফিকুন নবীর বিরচন-কৌশলগত (কম্পোজিশন) দক্ষতার বিষয়টি। চিত্রতলের কতটা পরিসরকে তিনি শূন্য রাখবেন, কতটা পরিসর জুড়ে থাকবে রূপকল্প (ইমেজ) ও মোটিফ, ভরাট পরিসরের সঙ্গে শূন্য পরিসরের সমন্বয় ঘটবে কীভাবে, কোন বস্তুকে চিত্রতলের কোথায় স্থাপন করলে তা দৃষ্টিনন্দন হবে, চিত্রতলে আলো উৎসারিত হবে কোথা থেকে, যথেষ্ট আলো–বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রক্ষিত হবে কীভাবে—এসব ব্যাপারে শিল্পী সব সময়ই অগ্রসর হন সুপরিকল্পনার মাধ্যমে। এ ক্ষেত্রে তাঁর বিরচন-কৌশলটি হয়ে ওঠে অনেক সরল, সরস, উদার ও স্বচ্ছন্দময়। এই সহজ ও সংক্ষিপ্ততার গুণটি তিনি প্রথমত পেয়েছেন জয়নুল আবেদিনের কাছ থেকে। এ ছাড়া তাঁর নিজের কার্টুন সৃষ্টির নিয়মিত অভ্যাসের প্রভাবেও বিরচন-কৌশলে এসেছে সারল্য। এরূপ দক্ষতা-গুণের আরেকটি অনিবার্য দিক হলো, নাটকীয়তা সৃষ্টি। বিষয়ের একঘেয়েমি দূর করার জন্য তিনি নাট্যিক সংবেদনার আশ্রয় নেন। আর সেটি করেন আলোছায়ার মধ্য দিয়ে, অবয়বের বিশিষ্ট কোনো ভঙ্গি সৃষ্টি কিংবা চিত্রতলে কোনো একটি রূপকল্প বিন্যাসের মাধ্যমে।
চার
রফিকুন নবীর আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো, আধুনিকতাকে স্পর্শ করেও তা কাহিনি বয়ানে পরাঙ্মুখ নয়। তাঁর চিত্রকর্মে একটি গল্প বা আখ্যান থাকে। সে অনুযায়ী বিষয়ের আগমন ঘটে। চিত্রকলার এই আখ্যানধর্মিতাকে সাধারণভাবে আধুনিকতার বিরোধী বলে কারও কারও কাছে মনে হলেও তাঁর ছবির কাহিনিময়তাই অন্য গুণে হয়ে ওঠে আধুনিক।
পাঁচ
রফিকুন নবী লোকশিল্পের মোটিফকে তাঁর ছবিতে সরাসরি ব্যবহার করেন না, কিন্তু লোক–ঐতিহ্যের উপাদানকে, রেখার ডৌলকে একান্ত স্বকীয়তায় চিত্রের উপজীব্য করে তোলেন অতি স্বচ্ছন্দে। এ ছাড়া একে সামঞ্জস্যপূর্ণ করে তোলেন সমকালীন চিত্রধারার সঙ্গে। বিষয় আহরণের ক্ষেত্রে এভাবে দেশমাতৃকার স্বরূপ সন্ধান এবং জীবন সম্পর্কে সদর্থক দৃষ্টিভঙ্গি—এ দুয়ের কারণেই তাঁর ছবি সর্বদা উজ্জ্বল, সদর্থক ও আনন্দঘন। কখনো তা জীবনবিরোধী উপাদান বা অস্বাস্থ্যকর রুগ্ণ বিষয় (মরবিডিটি) দ্বারা আক্রান্ত হয় না। অর্থাৎ স্পষ্টতই সমাজ ও জীবনের কুৎসিত বিষয়গুলো তিনি পরিহার করেন। সুন্দরই তাঁর একমাত্র আরাধ্য। এই আরাধনায় চিত্রতলে রং ব্যবহারে, বিরচন-কৌশলে একধরনের কোমল, কমনীয়, শান্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয়। এভাবে তাঁর চিত্র জীবনের আশাবাদকেই বিপুলভাবে ব্যক্ত করে। রাজনৈতিক বোধ ও বিশ্বাসের জগৎ তাঁর যতই স্বচ্ছ, দৃঢ় ও শোষণবিরোধী হোক না কেন, চিত্রতলকে তা কখনো করে তোলে না উগ্রগন্ধী, নেতিবাচক বা নৈরাশ্যময় ভাবনাপুষ্ট। সব সময় তাঁর ছবি থাকে মাটির গন্ধে ভরপুর। এতে ছড়িয়ে থাকে দেশমাতৃকার প্রতি দায়বোধ। বাংলাদেশের নিসর্গ, সমুদ্র ও আকাশ, নদ-নদী-খাল-বিল-হাওর, এখানকার পাখি ও জীবজন্তু, শ্রমজীবী ও উদ্বাস্তু মানুষ সব সময়ই তাঁর চিত্রতলকে সমৃদ্ধ করে। দেশপ্রেমের গভীর স্পর্শেই তাঁর চিত্রজগৎ সবচেয়ে বেশি নন্দিত। বাল্যকাল থেকে নাগরিক জীবনের সঙ্গে নিবিড়ভাবে সংলগ্ন থেকেও এ শিল্পীর চিত্রমালা যে গ্রামীণ জীবনপরিবেশ নিয়ে এতটা উচ্চকিত, তার মূলেও রয়েছে গভীর দেশাত্মবোধ। বাল্য, কৈশোর ও যৌবনের সাঁওতাল-অধ্যুষিত বরেন্দ্রভূমি এবং পুরোনো ঢাকার জীবনধারার প্রতি শিল্পী নস্টালজিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার কারণে তাঁর চিত্রতলে এ দুই অঞ্চল বিপুলভাবে বর্তমান। দেশানুরাগের কারণেই, নাগরিক জীবনে আকণ্ঠ নিমজ্জিত থেকেও তাঁর দৃষ্টিসীমায় সব সময় জাগ্রত থাকে সমগ্র বাংলাদেশের ছবি।
ছয়
রফিকুন নবী সেই প্রতিভাবান শিল্পীদের একজন, যাঁরা বিরামহীনভাবে শিল্পচর্চায় নিয়োজিত থেকে প্রতিনিয়ত নিজেকে অতিক্রম করতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। নিজ কাজের ধারায়ই আনেন পরিবর্তন। ছাত্রজীবনের একাডেমিক রীতির বাঁধাধরা শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হয়ে একসময় স্বকীয় একটা ধারা প্রতিষ্ঠা করেন। আবার সেই ধারার মধ্যেই নিজের স্টাইলের রূপান্তর সাধন করেন। রফিকুন নবীর শিল্পানুশীলনে প্রধান একটি পরিবর্তন সূচিত হয় গ্রিসে কাঠখোদাই চিত্র নিয়ে উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণের ফলে। এটি শুধু কাঠখোদাই চিত্রের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না, অন্য মাধ্যমের কাজেও তার প্রভাব পড়ে। স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ তাঁকে নিরীক্ষাপ্রবণ করে তোলে। তিনি এথেন্স স্কুল থেকে উন্নত টেকনিকটি গ্রহণ করলেও চিত্রতলের বিষয় নির্বাচনে স্বদেশকেই প্রাধান্য দেন। দ্বিতীয়ত, ছাপচিত্রে উজ্জ্বল রং ব্যবহারের সূত্রে এর প্রভাব জলরং ও তেলরঙের চিত্রে অনিবার্য হয়ে পড়ে। তাঁর ষাটের দশকের চিত্রে ধূসর রঙের যে প্রাধান্য ছিল, সেটি বিবেচনা করলেই পরিবর্তনরেখা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। তৃতীয়ত, রেখার ব্যবহার। ছাপচিত্রে সূক্ষ্ম ও স্থূল বা কোমল ও দৃঢ় রেখার ব্যবহারে যে অভ্যস্ততা সৃষ্টি হয়, তা তাঁর অন্য মাধ্যমের কাজেও নিয়ে আসে নতুন মাত্রা। চিত্রতলের কোনো শূন্য পরিসরে এক-দুটি স্বাধীন রেখার ভিন্নতর ব্যবহার তাঁর জলচিত্র বা তেলচিত্রকে প্রায়ই নতুনভাবে অর্থবহ করে তোলে। চতুর্থত, কাঠখোদাই চিত্রে একাধিক কাঠখণ্ডের ব্যবহার, প্রেসের রং ব্যবহার ও সুলভ কাগজে ছাপ নেওয়ার মাধ্যমে স্বকীয় চিন্তা-পরিকল্পনায় নিজস্ব টেকনিক উদ্ভাবন রনবীর চিত্রশৈলীকে দেয় নতুনত্বের ব্যঞ্জনা। পঞ্চমত, মুক্তভাবে কাজ করার প্রবণতায় চিত্রতলে রং ও পরিসরের বিভাজন তাঁর ছবিতে নিয়ে আসে স্বচ্ছন্দগতি। পরিবর্তিত হয় বিরচনের কৌশল; দর্শকের চোখ কোথায় নিবদ্ধ রাখা হবে, তা বিবেচনার ক্ষেত্রেও আসে পরিবর্তন। ষষ্ঠত, পরিবর্তন আসে বাস্তবসম্মত রূপাবয়বের সঙ্গে জ্যামিতিক আকারের সমন্বয় সাধনের ক্ষেত্রে, যা তাঁর চিত্রমালার একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। এর সঙ্গে নকশাধর্মিতা যুক্ত হয়ে তাঁর ছবিকে করে তোলে মনোগ্রাহী ও সার্থক।
৮০তম জন্মবার্ষিকে এই মহান শিল্পীর প্রতি আমাদের প্রণতি জানাই।
রফিকুন নবী
(রনবী নামে পরিচিত)
জন্ম: ২৮ নভেম্বর ১৯৪৩, চাঁপাইনবাবগঞ্জ।
শৈশব–কৈশোর: পুরান ঢাকায়।
পড়াশোনা: ১৯৫৯ সালে তখনকার ‘ইস্ট পাকিস্তান কলেজ অব আর্ট’–এ (বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ) ভর্তি হন এবং ১৯৬৪ সালে স্নাতক ডিগ্রি নেন। পরে উচ্চশিক্ষার্থে গ্রিস সরকারের বৃত্তি নিয়ে এথেন্সের স্কুল অব ফাইন আর্টসে পড়তে যান ১৯৭৩ সালে।
কর্মজীবন: ১৯৬৪ সালে চারুকলায় শিক্ষক হিসেবে যোগদান; ২০১০ সালে অবসর গ্রহণ; ইমেরিটাস অধ্যাপক হন ২০২৩ সালে।
একক প্রদর্শনী: ১৭টি।
সৃষ্ট কার্টুন চরিত্র: টোকাই।
উল্লেখযোগ্য সম্মাননা: একুশে পদক, অগ্রণী ব্যাংক শ্রেষ্ঠ শিশুসাহিত্যিক পুরস্কার।