প্রিয় চরিত্র

কোলাজ: আমিনুল ইসলাম
আজ প্রয়াত হয়েছেন কিংবদন্তি অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। লেখক হিসেবেও তিনি ছিলেন স্বনামখ্যাত। তিন শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। তাঁর অভিনয়ে মূর্ত হয়েছে অজস্র চরিত্র। এর মধ্যে কোন চরিত্রগুলো তাঁর বেশি প্রিয়, এ লেখায় তিনি লিখেছিলেন সে কথা। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘গদ্যসংগ্রহ ১’ থেকে লেখাটি পুনর্মুদ্রণ করা হলো।

অনেক সময় অনেক দর্শক–অনুরাগী, এমনকি চিত্রসাংবাদিকও আমায় এমন অনেক প্রশ্ন করেন, যার উত্তর আমার জানা নেই। যেমন আমার মতে আমার কোন অভিনয়টা শ্রেষ্ঠ। পঁচিশ বছরের ওপর অভিনয় করছি—এক শরও বেশি ছবিতে অভিনয় করেছি।

এর মধ্যে কোনটা শ্রেষ্ঠ, তা সত্যিই আমার ধারণার বাইরে। দর্শকদের মতামত চাওয়াই বোধ হয় এ ক্ষেত্রে ভালো। কিন্তু সেখানেও ঐকমত্য বোধ হয় হবে না। একেকজনের কাছে একেকটা অভিনয় বেশি প্রিয়, বেশি মনে রাখার মতো। আমার নিজের কাছে, যত ছবি করেছি, সবই সমান লেগেছে, এ কথাটা বললে মিথ্যা হবে। তবে খাঁটি পেশাদার হওয়ার চেষ্টায় যখন যে ছবিতে অভিনয় করেছি, সেটা সব সময়ই মন দিয়ে করার চেষ্টা করেছি। আমার অভিনেতাজীবনের একেবারে গোড়ার দিকে যখন সত্যজিৎ রায়ের ছবির পরে অন্যান্য সাধারণ মাপের পরিচালকের ছবিতেও কাজ করতে শুরু করি, তখন প্রথম প্রথম একটু মানসিক অস্বস্তি হতো এই সব ছবির অশৈল্পিক শর্তগুলোকে মন থেকে মেনে নিতে। এর একটা প্রতিক্রিয়া হয়তো দু-এক সময় কাজের মধ্যেও থেকে যেত। সে রকম একটা ছবি সত্যজিৎ রায় দেখে আমাকে বলেন যে অমুক দৃশ্যটিতে আমার অভিনয়টাকে যে আমি সিরিয়াসলি নিইনি, সেটা বোঝা যাচ্ছে। ওই ছবির গল্প, সিচুয়েশন যত অবাস্তবই হোক না কেন, অভিনেতা হিসেবে আমার উচিত ওই সিচুয়েশনকে অন্তত তখনকার মতো বিশ্বাস করে বিশ্বাসযোগ্য অভিনয় করা। সত্যজিৎ রায়ের এই উপদেশ আমি আজও ভুলে যাইনি।

‘ঝিন্দের বন্দী’ চলচ্চিত্রে তাঁর চরিত্রের নাম ছিল ময়ূরবাহন
ছবি: সংগৃহীত

তবে অনেক সময়ই অনেক চরিত্র অনেক ছবি বেশি করে মন কেড়ে নিয়েছে। সেসব ছবিতে অভিনয় করে যে বেশি আনন্দ পেয়েছি, তা বলাই বাহুল্য। এই সব অভিনয় কেন বেশি আকর্ষণ করেছে, এর কারণ খুঁজলে প্রথমেই মনে হয়, যে চরিত্রটিতে অভিনয় করেছি, সেই চরিত্রটাই প্রাথমিকভাবে নিশ্চয়ই আকৃষ্ট করেছে। তার ওপর সমগ্র চিত্রনাট্য, পরিচালকের মুনশিয়ানা, এসবও যদি সে ক্ষেত্রে উপস্থিত থেকে থাকে, তাহলে তো ভালো লাগবেই। সত্যজিৎ রায়ের ছবিতে সব সময়ই চিত্রনাট্য এত সুন্দর হয়—সংলাপ এত মানুষের মুখের কথার মতো হয়—চরিত্রের এত ভালো জীবনানুগ বিশ্লেষণ থাকে যে সেখানে অভিনয় করতে অনেক উৎসাহ বোধ হয়। চরিত্র সব সময়ই অভিনেতাকে আকর্ষণ করে—এ কথা শোনার পর অনেকেই আমায় প্রশ্ন করেন, কোন ধরনের চরিত্রে অভিনয় করতে আমার বেশি ভালো লাগে। এ প্রশ্নের সাফ সাফ জবাব আমার জানা নেই। যেসব চরিত্রের মধ্য দিয়ে আমাদের দেশ–কাল–সমাজের কোনো একক সত্য পরিচয় বোঝানো যায়, সেই সব চরিত্রই বোধ হয় আমাকে বেশি আকর্ষণ করে। আরও সোজা কথায় বলতে গেলে বলতে পারি, যেসব চরিত্র সত্যি সত্যিই মানুষের মতো বিশ্বাসযোগ্য—তেমন চরিত্রই বোধ হয় আমায় বেশি আকর্ষণ করে।

কোনো চরিত্রের দুরন্ত দাপট হয়তো ভালো লাগে, কোনো চরিত্রের–বা নিঃশব্দ বেদনা। ‘অভিযান’-এর নরসিংও আমার ভালো লেগেছিল। আবার ‘কাপুরুষ’-এর চরিত্রের মধ্যে বাঙালি মধ্যবিত্তের ভীরুতা–দ্বন্দ্ব আমার সত্য বলে মনে হয়েছিল। আবার গঙ্গাচরণকে ভালো লাগার কারণ হলো যে ইতিহাসের একটি বিশেষ সময়ে অনেক মানুষের সে প্রতিনিধিস্থানীয়। আমাদের দেশে শিল্প–সাহিত্যে, চলচ্চিত্রে তো বটেই, সাহিত্যেও ব্যক্তিগত বা পারিবারিক সংকটেরই প্রাধান্য। সেখানে ‘অশনি সংকেত’-এর কাহিনির মধ্যে সমস্ত সমাজকে বিড়ম্বিত করেছিল এমন একটি ঘটনা মন্বন্তর, যা নাকি ভারতবর্ষের বুকে কত দিনের অভিশাপের মতো চেপে রয়েছে—তেমন একটা সামাজিক দুর্বিপাকের ছবি রয়েছে। স্বভাবতই এই কাহিনির নায়ক চরিত্র তাই একটা সামাজিক অবস্থার অত্যন্ত জীবন্ত প্রতিচ্ছবি।

কোন কোন অভিনয় মনকে বেশি টেনেছিল, তার তালিকা করতে এখানে বসিনি। তার সময়–সুযোগও এখন নেই। কত সব ছবির কথা মনে পড়ে—হয়তো স্মৃতিকথা লেখার বয়স এলে—সময় হলে সেসব লেখার অবকাশ পাব। তবু একটা ছবির কথা উল্লেখ না করলে বোধ হয় পাঠকেরা আমাকে ক্ষমা করবেন না—সেটা হলো ‘সংসার সীমান্তে’। আমার ভীষণ প্রিয় এই ছবির অভিনয়।

একটা কথা বলা এখানে অপ্রাসঙ্গিক হবে না যে এই রকম চরিত্রের দ্বারা আকৃষ্ট হয়ে যখন অভিনয় করার জন্য প্রস্তুত হই, তখন পঞ্চাশের মন্বন্তর বা দুর্ভিক্ষ ইত্যাদি নিয়ে শুধু যে বইটই পড়ি, তথ্য সংগ্রহ করি, তা–ই নয়, এই ধরনের চরিত্র কেমন করে হাঁটে, কেমন করে বসে—তার কথার আঞ্চলিকতা কেমন, এই সব খুঁটিনাটিও আমি বোঝার সঙ্গে সঙ্গে তার শারীরিকতাও আমি বোঝার চেষ্টা করি। তপন সিংহ যখন আমাকে ‘ঝিন্দের বন্দী’ ছবির ময়ূরবাহনের চরিত্রে নির্বাচন করেন, তখনো এই চরিত্রটিকে মনে মনে কল্পনা করার সঙ্গে সঙ্গে চরিত্রটির কিছু কিছু শারীরিক পটুতাও আমাকে অর্জন করার চেষ্টা করতে হয়েছিল। যেমন অশ্বচালনা।

ময়ূরবাহন চরিত্র কেন ভালো লেগেছিল, প্রশ্নটা নিজেকে করলে অবশ্য অভিনয়ের চরিত্র ভালো লাগার আরও একটা কারণ আবিষ্কার করতে পারি। সে কারণটা আগে যা বলেছি, খানিকটা তার বিপরীতই বলা যায়। অর্থাৎ এ ক্ষেত্রে চরিত্রের আকর্ষণটা বাস্তবের প্রতিচ্ছবি বলে নয়—কল্পনার রূপে রঙে রসে তৈরি বলেই হয়তো এই চরিত্র টেনেছিল। সত্যি কথা বলতে কি, বাস্তবের আকর্ষণের সঙ্গে সঙ্গে রোমান্সের রূপকথার কল্পকাহিনির আকর্ষণও তো আমার মধ্যে আছে। ‘রামায়ণ’ ও ‘মহাভারত’–এর চরিত্রে অভিনয় করতে কি কারও ভালো লাগে না? নিশ্চয়ই লাগবে—অবশ্য যদি তা সুলিখিত সুপ্রযোজিত হয়। সেই রকমই ময়ূরবাহন আমার কল্পনাকে উদ্দীপ্ত করেছিল। নায়কের থেকেও বেশি আকর্ষণীয় রোমান্টিক মনে হয়েছিল এই খলনায়কের ভূমিকা। তপন সিংহের মতো দক্ষ সংবেদনশীল পরিচালক-চিত্রনাট্যকার এই ভিলেনকে ঐতিহাসিক চরিত্রের মতোই বিশ্বাসযোগ্য করে তুলেছিলেন। আমার মতো অপেক্ষাকৃত নতুন অভিনেতাকে দিয়ে যে ওই চরিত্র করিয়েছিলেন, সেটা তাঁর কৃতিত্বের পরিচায়ক।

‘অভিযান’ ছবিতে
ছবি: সংগৃহীত

অভিনয়ের ক্ষেত্রে চরিত্রের শারীরিক ও মানসিক গঠন, দুই–ই বোঝায়। অভিনয়ের জন্য চরিত্রের মানসিকতা বোঝার চেষ্টার সঙ্গে তার শারীরিক আচার–ব্যবহারকে কল্পনা করার চেষ্টা আমি অল্পবিস্তর অনেক চরিত্রের ক্ষেত্রেই করেছি। তবে একটা কথা পরিষ্কার বলা ভালো যে আমাদের বাংলা ছবিতে যারা নায়কের ভূমিকায় অভিনয় করি, তাদের কতকগুলো লাগাম থেকেই যায়। খুব অসুন্দর বা পঙ্গু–কানা–খোঁড়া কুৎসিত নায়ককে দেখতে বোধ হয় এখনো আমাদের দর্শকেরা অভ্যস্ত নন। কিছুদিন আগে তারাশঙ্করের অসামান্য গল্প ‘অগ্রদানী’র চিত্ররূপে আমি পূর্ণ চক্রবর্তীর অভিনয় করেছিলাম। সেই অভিনয় দেখে একজন সমালোচক প্রশ্ন তুলেছিলেন যে ওই চরিত্রে সৌমিত্রকে অত কুশ্রী দেখানোর কী দরকার ছিল! না দেখালেও অভিনয়ের কোনো হানি হতো না। কিন্তু ‘অগ্রদানী’র মতো ক্ল্যাসিক গল্পে পূর্ণ চক্রবর্তীর যে বর্ণনা আছে, সত্যি কথা বলতে কি, সেটা কুৎসিত এবং উদ্ভট একটা চেহারাই মনে করিয়ে দেয়। আমার চেহারার সঙ্গে তার মিলও নেই। কিন্তু ওই গল্পের রস ফুটিয়ে তুলতে হলে পূর্ণ চক্রবর্তীর চেহারা যতটা সম্ভব গ্রোটেস্ক করার দরকার ছিল না। না হলেই বরং দর্শক তার অদ্ভুত জীবনের বিড়ম্বনার সঙ্গে সহানুভূতিশীল হতে পারত।

তপন সিংহ যখন আমাকে ‘ঝিন্দের বন্দী’ ছবির ময়ূরবাহনের চরিত্রে নির্বাচন করেন তখনো চরিত্রটিকে মনে মনে কল্পনা করার সঙ্গে সঙ্গে চরিত্রটির কিছু কিছু শারীরিক পটুতাও আমাকে অর্জন করার চেষ্টা করতে হয়েছিল। যেমন অশ্বচালনা। ময়ূরবাহন চরিত্র কেন ভালো লেগেছিল, প্রশ্নটা নিজেকে করলে অবশ্য অভিনয়ের চরিত্র ভালো লাগার আরও একটা কারণ আবিষ্কার করতে পারি। সে কারণটা আগে যা বলেছি, খানিকটা তার বিপরীতই বলা যায়। অর্থাৎ এ ক্ষেত্রে চরিত্রের আকর্ষণটা বাস্তবের প্রতিচ্ছবি বলে নয়, কল্পনার রূপে রঙে রসে তৈরি বলেই হয়তো এই চরিত্র টেনেছিল। সত্যি কথা বলতে কি, বাস্তবের আকর্ষণের সঙ্গে সঙ্গে রোমান্সের রূপকথার কল্পকাহিনির আকর্ষণও তো আমার মধ্যে আছে।

যেসব চরিত্রে রূপসজ্জার খুব বেশি সাহায্য নিতে হয়, অর্থাৎ চেহারা যেখানে খুব বদলে যেতে পারে, কুরূপ বা বুড়োটে লাগতে পারে, সেসব চরিত্রের দর্শক আনুকূল্য পাওয়ার অসুবিধে একটা থাকেই। তার ওপর সঠিক রূপসজ্জার মালমসলা, সাজসরঞ্জাম পাওয়াও এখানে খুব শক্ত। ‘ফাদার’ বলে একটা ছবিতে অভিনয় করেছিলাম দিলীপ মুখার্জীর পরিচালনায়। চরিত্রটি হলো ষাট বছরের বৃদ্ধ মিশনারি—খুব ভালোই বাংলা বলে, বাংলার মফস্বল শহরের জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোত জড়িয়ে গেছে। ন্যায়–অন্যায়ের যুদ্ধে অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে গিয়ে খতম হয়ে যায়। চরিত্রটা ভালো লেগেছিল। আমি এ রকম আধা বাঙালি হয়ে যাওয়া মিশনারি দেখেছি। খুব খেটে করেছিলাম। আর তিন-ঘণ্টা ধরে নিতে হতো খুব কষ্টকর এক মেকআপ। কিন্তু কেন জানি না ছবিটা ভালো বলেই হয়তো আশানুরূপ সংবেদন সেই অভিনয়ের জন্য পাইনি।

‘বাঘিনী’ ছবিতে
ছবি: সংগৃহীত

মৃণাল সেনের সঙ্গে আমি তিনটে ছবি করেছিলাম। তার কোনোটাতেই মেকআপ ছিল না। কিন্তু এর মধ্যে ‘আকাশকুসুম’ ছবিটায় অভিনয় করার জন্য আমায় অন্য একধরনের ভাবনার মধ্যে যেতে হয়েছিল। এই চরিত্রের মধ্যে এমন একধরনের স্বপ্ন ও বাস্তবের এক্সট্রোভার্ট ও ইন্ট্রোভার্ট মনোবৃত্তির দ্বন্দ্ব ছিল, যা আমায় খুব আকর্ষণ করেছিল। এই ছবিটা বাস্তবিকই সত্যিকারের আধুনিক ছবি। আধুনিককালের যুবকের উচ্চাশা উদ্যোগের সঙ্গে সঙ্গে নিম্নমধ্যবিত্ত অবস্থানের গ্লানিকে উত্তীর্ণ হওয়ার বাসনা থেকে জাত অলীক স্বপ্ন ও মিথ্যাচার এই চরিত্রটাকে অত্যন্ত মনোগ্রাহী করে তুলেছিল।

এই চরিত্র যখন একটা বহুতল বাড়ির ছাদে উঠে বন্ধুকে বলে, ‘শালা, এই কলকাতাটাকেই কিনে ফেলব’—তখন তার মানসিকতাকে ব্যক্ত করতে শারীরিক অভিব্যক্তি কী রকম হবে, এটা বোঝার চেষ্টা করেছি। আমার যে দুটো বিপরীত জিনিসের দিকে আকর্ষণ—অর্থাৎ মোহহীন বাস্তব আর বর্ণময় রোমান্টিকতা—এই দুটোই ওই চরিত্রের মধ্যে আমি খুঁজে পেয়েছিলাম। ‘আকাশকুসুম’ আজও আমার স্মৃতিতে উজ্জ্বল।

এই রকম মমতার সঙ্গে জড়িত আর একটি অভিনয় আমার স্মৃতির মধ্যে রয়ে গেছে, সেটা ‘বাঘিনী’ ছবির চিরঞ্জীবের অভিনয়। চিরঞ্জীবের একটা রাজনৈতিক অতীত ছিল—অবক্ষয়ের বর্তমান আছে। এমন সব চরিত্র আমাদের তখনকার যুবা বয়সে আমরা কাছ থেকে দেখেছি। একটু যে রবিনহুডের ছায়া চরিত্রাঙ্কনকে মোহময় করে তোলেনি, তা নয়—তবু সেটুকুর মধ্যে একটু সত্যতা আছে বৈকি। বিজয় বসুর নিষ্ঠাবান পরিচালনায় এই ছবির অভিনয়ও আমাকে আনন্দ দিয়েছিল।

‘আকাশকুসুম’ ছবিতে
ছবি: সংগৃহীত

কোন কোন অভিনয় মনকে বেশি টেনেছিল, তার তালিকা করতে এখানে বসিনি। তার সময়–সুযোগও এখন নেই। কত সব ছবির কথা মনে পড়ে—হয়তো স্মৃতিকথা লেখার বয়স এলে—সময় হলে সেসব লেখার অবকাশ পাব। তবু একটা ছবির কথা উল্লেখ না করলে বোধ হয় পাঠকেরা আমাকে ক্ষমা করবেন না—সেটা হলো ‘সংসার সীমান্তে’।

আমার ভীষণ প্রিয় এই ছবির অভিনয়। অসাধারণ লেখকের অসামান্য গল্প—সুগ্রন্থিত চিত্রনাট্য—এবং সর্বোপরি অতীব দক্ষ চিত্রনির্মাতার প্রয়োগনিপুণতার সমন্বয় হয়েছিল এই ছবিতে। ছোটবেলা থেকে প্রেমেন্দ্র মিত্রর ওই গল্প ভালো লাগে। অভিনয় করার সময় এত ডুবে গিয়েছিলাম যে যেদিন শুটিং শেষ হলো, সেদিন ভীষণ মন খারাপ হয়ে গিয়েছিল। অবশ্য এ রকম আমার অনেকবারই হয়েছে। যেমন সাম্প্রতিককালে ‘কোনি’র ক্ষিতীশ সিংহের অভিনয় শেষ হতেও খুব বেদনা বোধ হয়েছিল। এই সব ছবি নিয়ে খুব কথা বলতে ইচ্ছে করে, লিখতে ইচ্ছে করে। পারলে একদিন লিখব। তত দিন কোনটা আমার শ্রেষ্ঠ অভিনয়—কোন ধরনের চরিত্র আমার বেশি পছন্দ—এসব ছেলেমানুষি প্রশ্নের সম্মুখীন হতে থাকি, আর ভাবি The best is yet to be.

অন্যআলো ডটকমে লেখা পাঠানোর ঠিকানা: [email protected]