কোটা নয়, মেধা চাই

একই দেশে জন্মগ্রহণ করে, একই পরিবেশের অক্সিজেন গ্রহণ করেও শুধু কোটার জোরে যখন অন্য একজন সরকারি চাকরি পান, তখন নিজেকে চরম অসহায় মনে হয়।
দাদা কিংবা নানা সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশ না নেওয়ায়, কিংবা বাবা পরিণত না থাকায়, স্বাধীনতাযুদ্ধে যাননি। তাই মুক্তিযুদ্ধের সনদ না থাকাই স্বাভাবিক। আর এই দায় যখন উত্তরসূরিদের ওপর বর্তায়, তখন মনে হয় সমান অধিকার নিয়ে জন্মাইনি, জন্মেছি বৈষম্য নিয়ে। তখন নিজের মেধার ওপর ক্ষোভ জন্মায়।
আমার মনে হয়, কোনো মুক্তিযোদ্ধা শুধু কোটা পাওয়ার আশায় যুদ্ধে অংশ নেননি, নিয়েছেন জাতিকে পরাধীনতার শিকল থেকে মুক্ত করতে, আরেকটি বৈষম্য জন্ম দিতে নয়। তাই শুধু কোটাব্যবস্থা দিয়ে তাঁদের যথাযথ সম্মান জানানো যায় না। এতে বৈষম্য সৃষ্টি করে তাঁদের অমর্যাদা করা হয়।
কোটাধারীরা যে শুধু কোটায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তা নয়, তাঁরা মেধা কোটাও পান। যেমন মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৩০ শতাংশের সঙ্গে কেউ যদি মোট নম্বরে মেধাতালিকায় থাকেন, তবে তিনি মেধা কোটার ৪৪ শতাংশে যাবেন। তার মানে দাঁড়ায়, মুক্তিযোদ্ধা কোটাধারীরা ৭৪ শতাংশ আসনের বিপরীতে, মহিলা কোটাধারীরা ৫৪ শতাংশ আসনের বিপরীতে, উপজাতি ৪৯ শতাংশ, প্রতিবন্ধী ৪৫ শতাংশ আসনের বিপরীতে লড়াই করেন (জেলা কোটার ১০ শতাংশ হিসাবের বাইরে রাখা হয়েছে)।
সুতরাং, একজন সাধারণ শিক্ষার্থীর পাতে থাকে ৪৪ শতাংশ আসন। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. আকবর আলি খান বলেছেন—এই কোটাব্যবস্থা অনির্দিষ্ট কালের জন্য চলতে পারে না।
তাই, সংবিধান অনুযায়ী সরকারের প্রতি অরণ্যে রোদন—সংবিধানের সব নাগরিকের সমান অধিকার ফিরিয়ে দিন।
তারিকুর রহমান
শিক্ষার্থী, ঢাকা।