গাঁজাও একটি ভয়ংকর মাদক!
মাদককে ‘না’: প্রথম আলো ট্রাস্ট মাদকবিরোধী আন্দোলনের উদ্যোগে ২৫ সেপ্টেম্বর বিকেল সাড়ে চারটায় পরামর্শ সহায়তা-৪২-এর আসরটি অনুষ্ঠিত হয় ধানমন্ডির ডব্লিউভিএ মিলনায়তনে। এ আয়োজনে মাদকাসক্ত ব্যক্তি ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। মনোরোগ চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞরা তাঁদের মাদকাসক্তি নিরাময়ের জন্য বিভিন্ন পরামর্শ দেন। পরামর্শ সহায়তা অনুষ্ঠানের আলোচিত বিষয়গুলো তুলে ধরা হলো

অনুষ্ঠানের শুরুতে আহমেদ হেলাল তিনটি পরামর্শের কথা বলেন। এক. মাদকাসক্ত সন্তান বা অন্য কাউকে লুকিয়ে না রাখা। সবার সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করা । দুই. বিশ্বাস রাখা এটি একটি নিরাময়যোগ্য রোগ। অবশ্যই এ রোগ থেকে মুক্তি আছে। তিন. হতাশ না হওয়া। ধৈর্য নিয়ে চিকিৎসা করা। তিনি আরও বলেন, চিকিৎসাবিজ্ঞান এখন অনেক এগিয়েছে। মাদকাসক্ত ব্যক্তিদের জন্য বিজ্ঞানভিত্তিক চিকিৎসা রয়েছে। সবশেষে বলব, আশাহত হবেন না। আপনাদের সন্তান, নিকটজন যিনিই হোন না কেন, তাঁকে উপযুক্ত চিকিৎসার আওতায় নিয়ে আসুন। সে সমাজের মূল স্রোতে ফিরে আসতে পারবে।
প্রশ্ন: আমার ছেলে মাদক গ্রহণ করে। কিন্তু এটা ধরতে অনেক সময় লেগেছে। মাদক গ্রহণের বিষয়টি কীভাবে দ্রুত বুঝব?
উত্তর: মাদক গ্রহণকারী সন্তানেরা স্বাভাবিক আচরণ করে না। তাদের আচরণে পরিবর্তন আসে। তারা মা-বাবার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে। খাওয়া-দাওয়াসহ সব ক্ষেত্রে অনিয়ম করে। চেহারায় পরিবর্তন আসে। অনেক নতুন বন্ধু হয়। এসবই মাদক গ্রহণের লক্ষণ। এগুলো দেখে বুঝতে হবে, সে মাদকের সঙ্গে জড়িয়েছে।
কেবল সে না, তার বন্ধুরাও মাদক গ্রহণ করে। আরও কিছু বিষয় লক্ষ রাখতে হবে। যেমন: সন্তান কোথায় যাছে, কখন যাচ্ছে, কার সঙ্গে যাচ্ছে, কার কাছে যাচ্ছে, কখন ফিরছে, কীভাবে ফিরছে, তার আচরণে কী কী পরিবর্তন লক্ষ করছেন? এসব দেখেও বুঝতে পারবেন সে মাদকাসক্ত কি না। এ রকম আচরণ দেখলেই আপনাদের সতর্ক হতে হবে। প্রথম দিকেই তাকে চিকিৎসার আওতায় আনার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করতে হবে।
প্রশ্ন: মাদক ব্যবসায়ীরা অর্থের লোভে সমাজকে ধ্বংস করছে। তারা মেধাবী তরুণদের মাদকে আসক্ত করছে। তাদের বিরুদ্ধে কেন কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয় না?
উত্তর: মাদক ব্যবসায়ীদের কর্মকাণ্ডে আমরা আতঙ্কিত। তারা তরুণ শিক্ষার্থীদের প্রথমে কৌশলে মাদকাসক্ত করে। তারপর শিক্ষার্থীদের কাছে মাদক বিক্রি করে। এভাবে তাদের নিঃস্ব করে। এরপর শিক্ষার্থীদের মাদক বিক্রির কাজে ব্যবহার করে। এরা সবাই স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। অসংখ্য মেধাবী ছেলেমেয়ে মাদক ব্যবসায়ীর এজেন্ট হিসেবে কাজ করে। এই শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া করে না। এরা এখন মাদক ব্যবসায়ী। সব শ্রেণীর মানুষকে এটি গভীরভাবে ভাবিয়ে তুলছে। প্রশাসনকে তাদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। যেকোনোভাবে সমাজকে মাদকমুক্ত করতে হবে। তা না হলে তরুণদের একটা অংশের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে হারিয়ে যাবে।
প্রশ্ন: আমার সন্তান পাঁচ বছর যাবৎ মাদক নেয়। চিকিৎসা করিয়েছি। সর্বোচ্চ দুই মাস ভালো থাকে। আবার মাদক নেয়। তাকে কীভাবে ভালো রাখব?
উত্তর: একজন মাদকাসক্ত ব্যক্তি চিকিৎসা করে। ভালো হয়। আবার মাদক নেয়। মাদক গ্রহণকারীর ক্ষেত্রে এমনটি হতে পারে। বিষয়টি সবাইকে মেনে নিতে হবে। এমনও দেখা গেছে, ১০-১২ বার ভালো হওয়ার পরও মাদক গ্রহণ করেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সে ভালো হয়েছে। প্রত্যেকের জন্য মাদকের চিকিৎসা ভিন্ন। কারও সেরে উঠতে দীর্ঘ সময় লাগে। কেউ দ্রুত ভালো হয়। অভিভাবকদের সব সময় ধৈর্যের সঙ্গে চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হবে।
কিছুদিন চিকিৎসাকেন্দ্রে থাকলেই মাদকাসক্ত রোগীর চিকিৎসা শেষ হয় না। হাসপাতাল ভবিষ্যতে ভালো থাকার জন্য প্রস্তুত করে দেয়। তাই একবার ভালো হলে সে ভালো হয়েছে, এমন ভাবার কোনো কারণ নেই। হাসপাতাল থেকে বের হওয়ার পর সব নিয়মকানুন মেনে চলার ওপর নির্ভর করে সে ভালো থাকবে, নাকি মাদকাসক্ত হবে। বিশেষ করে আপনার ছেলের যে বিষয়গুলো শুনলাম, এ ক্ষেত্রে তাকে দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসায় রাখতে হবে। কমপক্ষে ছয় মাস। এবং বাড়িতে এসে তাকে নিয়মকানুন মেনে চলতে হবে।
প্রশ্ন: আমার সন্তান মাদকাসক্ত। নিরাময়কেন্দ্রে ভালো থাকে। কিন্তু বাড়িতে এলে মাদক গ্রহণ করে কেন?
উত্তর: একজন মাদকাসক্ত রোগী চিকিৎসাকেন্দ্রে ভালো থাকে। প্রায় শতভাগ ক্ষেত্রে রোগী ভালো হয়ে বের হয়। কারণ, চিকিৎসাকেন্দ্রে মাদক গ্রহণের ন্যূনতম সুযোগ নেই। এখানে নিয়ম-শৃঙ্খলা মেনে চলতে হয়। সর্বক্ষণ পরামর্শ ও পরিচর্যার মধ্যে রাখা হয়। ওষুধপথ্য খাওয়ানো হয়। ফলে যেকোনো রোগী চিকিৎসাকেন্দ্রে ভালো থাকে। মাদকসক্ত রোগী আর দশজন সাধারণ রোগীর মতো না। তাই চিকিৎসাকেন্দ্র্র থেকে বের হলে সব সময় ভালো থাকার এক ভাগ নিশ্চয়তাও দেওয়া যায় না। কারণ, ভালো হওয়ার পরও সুযোগ পেলে যেকোনো সময় মাদক গ্রহণ করতে পারে। এ জন্য চিকিৎসাকেন্দ্রে যেভাবে ছিল, বাসায়ও অনেকটা সেভাবে কমপক্ষে দু-তিন বছর সাবধানে চলাফেরা করতে হবে। যেকোনোভাবে একবার যদি মাদক গ্রহণ করে ফেলে, তাহলে সে আগের অবস্থায় ফিরে যাবে। এ কারণে রোগী ও অভিভাবক দুজনকেই অত্যন্ত সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
প্রশ্ন: কোনো মাদকাসক্ত রোগী চিকিৎসাকেন্দ্র থেকে মাদকমুক্ত হলো। পরবর্তী সময়ে ভালো থাকার জন্য বাড়িতে আসার পর অভিভাবকের করণীয় কী?
উত্তর: চিকিৎসাকেন্দ্র্র বা হাসপাতাল মাদকাসক্ত রোগীকে সব সময় ভালো থাকার নিশ্চয়তা দিতে পারে না। রোগীকে ভালো থাকার জন্য প্রস্তুত করে দেয়। তাই নিরাময়কেন্দ্র থেকে বাড়িতে আসার পর অভিভাবককেই রোগীকে ভালো রাখার দায়িত্ব নিতে হবে। তাঁর দায়িত্বের মধ্যে রয়েছে, কমপক্ষে দেড়-দুই বছর রোগীকে কোনো প্রকার টাকাপয়সা না দেওয়া। অভিভাবক নিজেই রোগীর প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনে দেবেন।
মুঠোফোন ব্যবহার করতে দেওয়া যাবে না। পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গে মিশতে দেওয়া যাবে না। আগে যেখানে মাদক গ্রহণ করত, সেখানে যেতে না দেওয়া। মাদকজাতীয় কোনো ছবিও না দেখা। রোগীকে বিনোদনের মধ্যে রাখার চেষ্টা করা। সবারই তার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতে হবে। সে মাদকাক্ত ছিল, এটি বুঝতে না দেওয়া। তার সঙ্গে গল্প করা। তাকে সঙ্গে নিয়ে ঘুরতে যাওয়া। একা থাকতে না দেওয়া। কোনো না কোনো কাজের মধ্যে ব্যস্ত রাখতে চেষ্টা করা। কোনো মাদকাসক্ত রোগী নিরাময়কেন্দ্র থেকে বাড়িতে আসার পর অভিভাবককে এ কাজগুলো করতে হবে।
প্রশ্ন: একজন মাদকাসক্ত রোগী চিকিৎসাকেন্দ্র্র থেকে মাদকমুক্ত হয়ে বাড়িতে এল। বাড়ি আসার পর তার নিজের করণীয় কী?
উত্তর: আমরা একটা কথা বারবার বলি, চিকিৎসাকেন্দ্রে বা হাসপাতাল মাদকাসক্ত রোগীকে ভালো করে দিতে পারে। কিন্তু ভবিষ্যতে বা বাড়িতে আসার পর সব সময় ভালো থাকার নিশ্চয়তা দিতে পারে না। সব সময় ভালো থাকার দায়িত্ব নিতে হবে রোগীকে। রোগীকে তার আত্মনিয়ন্ত্রণ করতে হবে। রোগীর দায়িত্বশীল আচরণের ওপর নির্ভর করবে সে মাদকমুক্ত থাকবে, নাকি আবার মাদকাসক্ত হবে। মাদকাসক্ত রোগীকে ভালো থাকার জন্য প্রতিদিন নিজের সঙ্গে প্রতিজ্ঞা করতে হয়। প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে মাদক গ্রহণ না করার জন্য শপথ করতে হয়।
তাকে ভাবতে হবে, পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জীবন হচ্ছে মানুষের। এ জীবন মাদকের মতো তুচ্ছ বস্তু গ্রহণ করার জন্য নয়। কখনো তীব্র নেশা হলে সঙ্গে সঙ্গে গোসল করা যেতে পারে। ব্যায়াম করা যেতে পারে। কোনো ভালো বন্ধুকে ফোন করা যেতে পারে। মা-বাবার সঙ্গে কথা বলা যেতে পারে। আর নিয়মিতভাবে কোনো কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকার চেষ্টা করতে হবে। খেলাধুলার মধ্যে থাকতে হবে। গানবাজনা শুনতে হবে। ভালো মানুষদের জীবনী পড়তে হবে। সৃষ্টিশীল কাজের মধ্যে থাকতে হবে। ছোট ভাইবোন ও দরিদ্র ছাত্রছাত্রীদের পাড়ানো যেতে পারে। মা-বাবাসহ বড়দের কথা শুনতে হবে। সর্বোপরি ভালো থাকার জন্য সব সময় নিজের সঙ্গে প্রতিজ্ঞা করতে হবে।
প্রশ্ন: আমরা ১৫ থেকে ২০ জন বন্ধু একসঙ্গে গাঁজা খাই। অনেকে ছেড়ে দিয়েছে। এখনো কয়েকজন নিয়মিত ও অনিয়মিত গাঁজা খায়। কিন্তু সবাই গাঁজা ছেড়ে দিতে চাই। কীভাবে ছাড়তে পারি?
উত্তর: আপনারা যাঁরা গাঁজা ছেড়ে দিয়েছেন, তাঁদের অভিনন্দন। এখনো যাঁরা ছাড়েননি, কিন্তু ছাড়তে চাইছেন, তাঁদেরও অভিনন্দন। যাঁরা গাঁজা ছেড়ে দিয়েছেন, তাঁদের আরও সতর্ক হতে হবে। নেশার কাছাকাছি থাকলে নিজেকে ভালো রাখা কঠিন। গাঁজা সম্পর্কেও কারও কারও ভুল ধারণা আছে। অনেকে এটাকে হালকা নেশা মনে করেন। কিন্তু গাঁজাও একটি ভয়ংকর মাদক!
গাঁজার মধ্যে ৬০ ধরনের রাসায়নিক দ্রব্য আছে। গাঁজার ধোঁয়া ফুসফুস, রক্ত ও মাথার মধ্য দিয়ে কোষে ঢোকে। গাঁজার মধ্যে এমন একটি রাসায়নিক দ্রব্য আছে, যা খুবই ভয়ংকর ও বিপজ্জনক। এটাকে বলে টিএইচসি (টেট্রা হাইড্রো ক্যানাবিনওয়েড)। এটা একবার স্নায়ুকোষের মধ্যে ঢুকলে এক বছর থাকে এবং বিভিন্নভাবে শরীরের ক্ষতি করতে থাকে। এ কারণে মানসিক সমস্যা সৃষ্টি হয়। ঘুম হয় না। আচরণ ও যৌন সমস্যা দেখা দেয়। সন্দেহপ্রবণতা বাড়তে থাকে। স্ত্রীসহ সবার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে। গাঁজা সেবন স্বামী-স্ত্রীর ডিভোর্সের একটা বড় কারণ। এ জন্য গাঁজা থেকে সব সময় সতর্ক থাকতে হবে। গাঁজা একটি বিপজ্জনক মাদক। ঢাকা মেডিকেল কলেজ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রসহ বিভিন্ন জায়গায় গাঁজা সেবন থেকে মুক্ত থাকার চিকিৎসা আছে। দ্রুত কোনো চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
কয়েকজন মাদকমুক্ত তরুণের অভিজ্ঞতা
অনুষ্ঠানে অনেক মা-বাবা এসেছেন। আমাদের মা-বাবাও আপনাদের মতোই কষ্ট করেছেন। অনেক জায়গায় ঘুরেছেন। অনেক পরিবারে হয়তো এই সমস্যা আছে। আপনারা হতাশ হয়ে পড়বেন না। কেউ একবার চিকিৎসায় ভালো হয়। কারও ভালো হতে কয়েকবার চিকিৎসা লাগতে পারে। কিন্তু সে ভালো হবেই। আমাদের মা-বাবা চেষ্টা করে সফল হয়েছেন। আমরা এখন ভালো আছি। আগে আমাদের সবই ঘৃণা করত। কোথাও যেতে পারতাম না। আমরাও চেষ্টা করতাম এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে। কিন্তু পারতাম না। অবশেষে পেরেছি। অপনারাও পারবেন।
পুনর্বাসনের পর সেলফ হেলপ পদ্ধতি একটা ভালো পদ্ধতি। পুনর্বাসনের পর বার বার ডাক্তারদের সঙ্গে যোগাযোগ করা অনেক ক্ষেত্রে সম্ভব হয় না। সে ক্ষেত্রে নিজেরা নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে দীর্ঘ মেয়াদে ভালো থাকতে পারা যায়। বিদেশে ৭০ থেকে ৮০ বছর আগে এই পদ্ধতি শুরু হয়েছে। তবে রিহ্যাবের পর ভালো থাকার এটি একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় পদ্ধতি। এটাও চিকিৎসার অংশ। হাসপাতাল থেকে ছাড়ার পর চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে বলা হয়। সেলফ হেলপ পদ্ধতিতে একে অপরের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে অনেক কিছু জেনে নিতে পারি। তবে একটা বিষয়ে সতর্ক থাকতে হয়, তা হলো, দলে যদি একজন মাদকাসক্ত রোগী ঢুকে যায়, তাহলে সবারই সর্বনাশ হয়ে যেতে পারে।
গ্রন্থনা: আশফাকুজ্জামান
পরবর্তী অনুষ্ঠান
পরামর্শ সহায়তা-৪৩
তারিখ: ৩০ অক্টোবর, সময়: বিকেল সাড়ে ৪টা
স্থান: ডব্লিউ ভি এ মিলনায়তন বাড়ি: ২০, ধানমন্ডি ২৭, ঢাকা
যোগাযোগ: ০১৭১৬২৪২২১৫
প্রথম আলো মাদকবিরোধী আন্দোলন