গ্রামীণ পরিবেশ দূষণ

আজকাল গ্রামেও ঘটছে ব্যাপকভাবে পানিদূষণ, বায়ুদূষণ, ভূমিদূষণ, শব্দদূষণ। কৃষিকাজে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ও রাসায়নিক সার প্রয়োগে দূষণ ঘটছে। আবার কৃষিজমি, লোকালয়ে যত্রতত্র স্থাপিত ইটভাটার কালো ধোঁয়ায় পরিবেশদূষণ ঘটছে ব্যাপক মাত্রায়। আজকাল বিভিন্ন মাধ্যমের তথ্যে দেখা যাচ্ছে, ইটভাটার ধোঁয়ায় কার্বন ডাই-অক্সাইড, কার্বন মনোক্সাইড গ্যাস উৎপন্ন হয় এবং বায়ুতে তাপ বেড়ে যায়। অন্যদিকে ভাটার তাপে তপ্ত হয় সংশ্লিষ্ট এলাকা। এতে ফসল উৎপাদন ব্যাহত হয়। উৎপাদনও কমে যাচ্ছে। আবার গ্রামাঞ্চলে যানবাহন হিসেবে ভটভটি, নছিমন, কাঁকড়াজাতীয় বাহনের সংখ্যা বাড়ছে, যা শব্দদূষণ ঘটায় ব্যাপক হারে। ইটভাটার মাটি সংগ্রহের জন্য কৃষিজমির উপরিভাগ কেটে ফেলার জন্য উর্বরতা শক্তিসম্পন্ন মাটি চলে যাচ্ছে, যা পূরণ করতে দীর্ঘদিন বিপুল পরিমাণ রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার করতে হয়। এ ছাড়া শ্যালো মেশিনের সাহায্যে ভূগর্ভস্থ বালু তোলা হচ্ছে ব্যাপক হারে। এতে ভূমিকম্পে সংশ্লিষ্ট এলাকা দেবে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

আগে গ্রামাঞ্চলে প্রচুর গাছ, ঝোপজঙ্গল ও ছোট ছোট বন ছিল। কিন্তু সেগুলো হারিয়ে যেতে বসেছে। ভিনদেশি বৃক্ষ জায়গা দখল করে নিচ্ছে। কৃষিকাজে পানির চাহিদা মেটাতে ভূগর্ভস্থ পানি ব্যাপক হারে তোলা হচ্ছে। ফলে পানির স্তর নেমে যাচ্ছে দ্রুত।

এই তো গ্রামীণ পরিবেশের বর্তমান অবস্থা। গ্রামের নির্মল পরিবেশ বজায় রাখতে, বিশেষভাবে ইটভাটা স্থাপনে যথাযথ বিধি মেনে চলা কাম্য। এ ছাড়া অন্যান্য ক্ষেত্রে দূষণ-প্রক্রিয়া কমিয়ে আনতে আইনের যথাযথ প্রয়োগ, সচেতনতা বাড়ানো, বিকল্প পদ্ধতির উদ্ভাবন ও প্রয়োগসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ আরও ব্যাপক হোক, এটাই প্রত্যাশা।

কংকন সরকার

সুন্দরগঞ্জ, গাইবান্ধা।