অর্থ উদ্ধার ও সত্য জানতে আর কত অপেক্ষা?

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ চুরির পর থেকে এ পর্যন্ত যা ঘটেছে, তাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির খুব প্রমাণ মেলেনি। ২০১৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে জালিয়াতি করে সুইফট কোডের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ৮১০ কোটি টাকা ফিলিপাইন ও শ্রীলঙ্কায় পাঠানো হয়। চুরি হয়ে যাওয়া ৮১০ কোটি টাকার মধ্যে শ্রীলঙ্কা ও ফিলিপাইন থেকে ২৭৩ কোটি টাকা ফেরত আনা গেলেও বাকি ৫৩৭ কোটি টাকা উদ্ধারের বিষয়ে অগ্রগতি নেই। ফিলিপাইনের আরসিবিসি ব্যাংকের মাধ্যমে পাচার হওয়া এই অর্থ যে তারা ফেরত দেবে না, তা অনেকটা স্পষ্ট করেই বলে দিয়েছে। অন্যদিকে কার বা কাদের গাফিলতিতে এই ঘটনা ঘটল, সেটাও প্রকাশ করা হচ্ছে না।

শুরুতে চুরির ঘটনা গোপন রাখার কৌশল নেয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। এরপর এ নিয়ে গঠিত তদন্ত কমিটি সরকারের কাছে প্রতিবেদন দিলেও তা প্রকাশ করা হয়নি। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় করা মামলারও অগ্রগতি নেই। সিআইডি এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন এখনো দাখিল করতে পারেনি। গত ২৯ নভেম্বর প্রতিবেদন দাখিলের নির্ধারিত দিনে সিআইডি তা করতে ব্যর্থ হওয়ায় আদালত আগামী ১৬ জানুয়ারি পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন। এর পরের মাস ফেব্রুয়ারিতে রিজার্ভ চুরির ঘটনার দুই বছর পূর্তি হবে।

রয়টার্সের সূত্রে এবং পরে বাংলাদেশ ব্যাংকের তরফে রিজাল ব্যাংকের বিরুদ্ধে মামলা করার যে খবর পাওয়া গেছে, তা খুব আশাব্যঞ্জক কিছু নয়। খবর অনুয়ায়ী বাংলাদেশ ব্যাংক এখন ফিলিপাইনের রিজাল ব্যাংকের বিরুদ্ধে মামলায় নিউইয়র্ক ফেডারেল রিজার্ভ ও সুইফট কর্তৃপক্ষকে বাদী করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এই দুটি প্রতিষ্ঠান রাজি হবেই, এটা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না, আর রাজি হলেও আগামী বছর মার্চ-এপ্রিলে মামলা হবে, আর এই প্রক্রিয়া যে দীর্ঘ হবে, তাতে সন্দেহ নেই।

অর্থ উদ্ধার ও এই ঘটনার সত্য জানতে আমাদের আর কত অপেক্ষা করতে হবে?