নিরাপদ মাতৃত্ব: বর্তমান পরিস্থিতি ও করণীয়

>গত ২৪ জুন ২০১৮, প্রথম আলোর আয়োজনে ও ইউনিসেফের সহযোগিতায় ‘নিরাপদ মাতৃত্ব: বর্তমান পরিস্থিতি ও করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত আলোচকদের বক্তব্য সংক্ষিপ্ত আকারে এই ক্রোড়পত্রে ছাপা হলো।

 আলোচনায় সুপারিশ

*  মাতৃস্বাস্থ্য রক্ষায় সরকারি বাজেট বাড়াতে হবে। হাসপাতালে প্রয়োজনীয় সংখ্যক জনবল নিয়োগ দেওয়া উচিত

*  সব স্তরে মাতৃস্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়ন ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর তত্ত্বাবধান প্রক্রিয়া শক্তিশালী করতে হবে

*  হাসপাতালে ল্যাব সুবিধা ও ওষুধপত্র সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন

*  প্রশিক্ষিত মিডওয়াইফ সৃষ্টি ও তাঁদের সেবা প্রদানের সুযোগ করে দিতে হবে

*  বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সরকারি কর্মসূচির সমন্বয় সাধন করা প্রয়োজন

*  গর্ভবতী মায়ের রেজিস্ট্রেশন, গর্ভকালীন সেবা ও ভাতার ব্যবস্থা করতে হবে

*  যথাসময়ে হাসপাতালে উপস্থিত করতে গর্ভবতী মাকে বিনা মূল্যে অ্যাম্বুলেন্স–সেবা দিতে হবে

 আলোচনা

আব্দুল কাইয়ুম

প্রায় প্রতি মাসেই কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়ে গোলটেবিল বৈঠকে আলোচনা করে থাকি। এর প্রধান উদ্দেশ্য হলো মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি। নীতিনির্ধারকদের সামনে সুপারিশ ও প্রস্তাব নিয়ে আসা। আমাদের কাজের মধ্য দিয়ে সচেতনতা সৃষ্টি হলে নারী, শিশু ও মাতৃমৃত্যু কমবে।

এসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ইতিমধ্যে সাফল্য অর্জন করেছে। কিন্তু এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে আরও অনেক কিছু করণীয় রয়েছে। আলোচনায় এসব বিষয় আসবে। এখন আলোচনা করবেন এস এম শামসুজ্জামান।

এস এম শামসুজ্জামান
এস এম শামসুজ্জামান

এস এম শামসুজ্জামান
নিরাপদ মাতৃত্বের বিষয়টি অত্যন্ত জরুরি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ১৯৯৭ সালে বছরের একটি দিনকে নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস হিসেবে ঘোষণার কথা বলেন। সেই থেকে প্রতিবছর দিবসটি পালন করা হয়।
জাতীয় পর্যায় থেকে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত উৎসবমুখর পরিবেশে দিবসটি পালন করা হয়। এসব কর্মসূচির মধ্য দিয়ে যে সচেতনতা সৃষ্টি হচ্ছে তা নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিত করতে ভূমিকা রাখবে।
নিরাপদ মাতৃত্ব হলো মায়ের চাওয়া অনুযায়ী গর্ভধারণ, গর্ভকালীন সেবা, নিরাপদ প্রসব ও প্রসব-পরবর্তী সেবা নিশ্চিত হওয়া।প্রসবের ৪২ দিনের মধ্যে কোনো মায়ের মৃত্যু হলে সেটাকে মাতৃমৃত্যু বলা হয়।

বর্তমানে প্রতি লাখ জীবিত জন্মে মাতৃমৃত্যু সংখ্যা ২১৬। এ হিসাবে বিশ্বে প্রতিদিন প্রায় ৮০০ জন মা মারা যান। আমাদের দেশে প্রতিদিন মারা যান ১৫ জন মা।হাসপাতালে যোগাযোগ করতে না পারা, বাল্যবিবাহ, শিক্ষার অভাব, কুসংস্কার ইত্যাদি কারণে মায়েরা বেশি মারা যান। অনেক ক্ষেত্রে হাসপাতালে চিকিৎসকের সংকট ও যথাযথ প্রস্তুতির অভাবেও মায়েরা মারা যান।

বর্তমানে বাংলাদেশে প্রতি লাখ জীবিত জন্মে ১৭৬ জন মারা যান। ২০৩০ সালের মধ্যে এ সংখ্যা ৭০ বা তার নিচে নামিয়ে আনতে হবে। এ লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।

রক্তক্ষরণ অার খিঁচুনি, এ দুটো কারণে অর্ধেকের বেশি মা মারা যান। বাড়িতে প্রসবের জন্যই ৫৪ শতাংশ মা মারা যান। গর্ভপাতে ৭ শতাংশ ও অন্যান্য কারণে অবশিষ্ট মায়েদের মৃত্যু হয়।

২০১০ সালে রক্তক্ষরণে যত মায়ের মৃত্যু হতো, সেটা এখনো কমেনি। খিঁচুনিতে মৃত্যুর হার বেড়েছে।

প্রসবের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ৫৫ শতাংশ মা মারা যান। ৪৫ শতাংশ মা মারা যাচ্ছেন প্রসবের ৪২ দিনের মধ্যে। কারণগুলো চিহ্নিত হয়েছে, প্রয়োজন সঠিক পদক্ষেপ।

চারটি এন্টিনেটাল কেয়ার নিশ্চিত করতে হবে। এসব ক্ষেত্রে কাজও হচ্ছে। আশা করছি ভবিষ্যতে নিরাপদ মাতৃত্বের ক্ষেত্রে আরও সফলতা আসবে।

মোহাম্মদ শরীফ
মোহাম্মদ শরীফ

 মোহাম্মদ শরীফ
হাসপাতালে প্রসবের কোনো বিকল্প নেই। হাসপাতালে প্রসবের  মাধ্যমে শ্রীলঙ্কায় মাতৃমৃত্যুর হার কমেছে। গত ৯ বছরে বাংলাদেশে উপজেলা হেলথ কমপ্লেক্স, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য পরিবারকল্যাণ কেন্দ্র, কমিউনিটি ক্লিনিকে মাতৃমৃত্যু ঠেকাতে অনেক উদ্যোগ গৃহীত হয়েছে।
কমিউনিটি ক্লিনিক সরকারের একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। হাসপাতালে সব মায়ের প্রসব করানো কঠিন। ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্রগুলোর মাধ্যমে মাতৃসেবা বাড়ানো প্রয়োজন।

মাননীয় সাংসদ, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, মেম্বার ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য পরিবারকল্যাণ কেন্দ্রে কর্মরত ব্যক্তিবর্গ সবাইকে নিয়ে সভা করেছি। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এখন অনেক প্রসব হচ্ছে।

পরিবারকল্যাণ পরিদর্শক যাঁরা আছেন, তাঁরা ভালোভাবেই স্বাভাবিক প্রসব (নরমাল ডেলিভারি) করাতে পারবেন। কারণ, তাঁদের এ বিষয়ে ভালো প্রশিক্ষণ আছে। মিডওয়াইফ নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের দিয়ে সেবা দিতে পারি।

দেশে প্রায় ৩ হাজার ৭০০ ইউনিয়নে স্বাস্থ্য পরিবারকল্যাণ কেন্দ্র আছে। দেশের ৭৫০টি ইউনিয়নে কমিউনিটি ক্লিনিক ছাড়া আর কোনো স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র নেই। এসব জায়গার কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোকে আরও বেশি সেবামূলক করে তুলতে হবে। পরিকল্পনা করে এগোতে পারলে ভবিষ্যতে নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

মায়া ভেন্ডানেন্ট
মায়া ভেন্ডানেন্ট

মায়া ভেন্ডানেন্ট
কমিউনিটি পর্যায়ে নারীর সক্ষমতা বলতে ক্ষমতায়ন ও স্বাস্থ্যসেবা, বিশেষ করে মাতৃত্বকালীন সেবা নিশ্চিত করাকে বোঝায়। এ বিষয়ে অনেক কথা বলা হয়েছে। নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে কিছু প্রতিবন্ধকতা চিহ্নিত করা হয়েছে।

যথাযথ কর্মসূচির মাধ্যমে এসব প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে উঠতে হবে। একটির পরিবর্তে চারটি এন্টিনেটাল কেয়ার নিশ্চিত করা উচিত।

বাংলাদেশে আগের তুলনায় মাতৃত্বকালীন সেবার উন্নতি হয়েছে। কিন্তু এর চেয়ে অধিক প্রত্যাশা করা হয়। দেশের জন্য এটা ভালো লক্ষণ যে অনেকে প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ করা শুরু করেছেন।

সর্বশেষ পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, প্রতি চারজন নারীর মধ্যে তিনজন গর্ভকালীন সেবা অর্থাৎ এন্টিনেটাল কেয়ারের (এএনসির) আওতায় চলে এসেছেন। তবে এক-চতুর্থাংশ নারী এখনো চিকিৎসাসেবার আওতায় নেই। এটা নিয়ে কাজ করতে হবে। গর্ভবতী নারীর সঠিক সংখ্যা নির্ধারণ করে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।

১৫ বছর বা এর সমবয়সী মায়ের সংখ্যা বাড়ছে। তাদের মাতৃত্বকালীন ঝুঁকি অনেক বেশি। এ জন্য এএনসি সুবিধার আওতায় এনে আরও ভালো পরিচর্যা করা প্রয়োজন।

সচেতন ও শিক্ষিত নারীরা নিজ থেকেই মাতৃত্বকালীন সেবা গ্রহণ করছেন। এ জন্য নারীকে শিক্ষার মাধ্যমে সচেতন করতে হবে।

কমিউনিটিতে নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে হবে। অধিকাংশ গর্ভকালীন সেবা বেসরকারি খাতে পরিচালিত হচ্ছে। এ জন্য বেসরকারি খাতকে সঠিক বিধির আওতায় এনে নিয়ন্ত্রণ করা উচিত।

কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্যকর্মীর মাধ্যমে সঠিক তথ্য প্রচার করে গর্ভকালীন সেবার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা সম্ভব।

ক্লিনিকগুলোতে ছোট পরিসরে ল্যাব-সুবিধা প্রদান করে  প্রসব–পূর্ববতী সেবা (এএনসি) বাড়াতে হবে। সরকারের পাশাপাশি সচেতন ব্যক্তিদের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। নারীর ক্ষমতায়ন ঘটিয়ে এএনসি সুবিধার মাধ্যমে নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিত করতে হবে।

জাহেরা খাতুন
জাহেরা খাতুন

জাহেরা খাতুন
সুলতান মো. শামসুজ্জামান ও মোহাম্মদ শরীফের আলোচনায় নিরাপদ মাতৃত্বের অনেক বিষয় এসেছে। একজন মিডওয়াইফ নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিত করতে বড় ধরনের ভূমিকা রাখতে পারেন। আমাদের গ্রামে এখনো প্রায় ৬০ শতাংশ মায়ের বাড়িতে সন্তান প্রসব হয়। এ সময় মায়েরা ভীষণ ঝুঁকিতে থাকেন।

অনেককে একটি সন্তান জন্মের পর সারা জীবনের জন্য পঙ্গুত্ব বরণ করতে হয়। হাসপাতালে প্রসব এবং মিডওয়াইফের সেবা িনশ্চিত করতে হবে। এতে গর্ভবতী মায়েরা নিরাপদে সন্তান জন্ম দিতে পারবেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ, তিনি তিন হাজার মিডওয়াইফ নিয়োগের উদ্যোগ নিয়েছেন।

ইতিমধ্যেই ১ হাজার ৬০০ মিডওয়াইফ অ্যাডভান্স সার্টিফায়েড কোর্স সম্পন্ন করেছেন। ১ হাজার ২০০ মিডওয়াইফকে ডেপলয়েড করা হয়েছে। ৬০০ জনের নিয়োগ প্রক্রিয়াধীন। মিডওয়াইফ নিয়োগপ্রক্রিয়া দ্রুত শেষ হওয়া দরকার।

রক্তক্ষরণ ও খিঁচুনির ব্যাপারে কার্যকর ভূমিকা গ্রহণ করাতে পারলে মাতৃমৃত্যু আরও কমবে। গর্ভবতী মায়ের জন্য ২৪ ঘণ্টা সেবা দেওয়ার সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। দেশের সব জায়গায় মিডওয়াইফ নিয়োগ দেওয়ার বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।

রওশন আরা বেগম
রওশন আরা বেগম

রওশন আরা বেগম
অবসটেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনোলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশ (ওজিএসবি) একটি পেশাদার সংগঠন। আপনারা অনেকেই ওজিএসবির সঙ্গে কাজ করেন। আমরা মিলেমিশেই কাজ করব। দেশে আমাদের ৪০টা শাখায় কাজ হচ্ছে।
গর্ভবতী মা মনে করেন, যিনি কয়েকবার শরীর পরীক্ষা করেছেন, তিনিই প্রসব করাবেন। এ ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। প্রসবের জন্য দক্ষ মিডওয়াইফের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।

সচেতনতা সৃষ্টিতে গণমাধ্যমকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। প্রসবের সময় মিডওয়াইফের উপস্থিতি থাকা জরুরি।

আমি প্রায় ১৮টা জেলায় গিয়েছি। সেখানে নার্স ছাড়া মিডওয়াইফের কোনো পদ নেই। এসব হাসপাতালের পরিচালক ও দায়িত্বপ্রাপ্ত অন্য ব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। বিষয়টিকে তাঁরা ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছেন।

লেবার রুমে (প্রসবকক্ষ) চারজন মিডওয়াইফ নিশ্চিত করতে হবে। তাঁদের ভিন্ন কোনো কাজে লাগানো যাবে না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ডাক্তারদের চেয়ে মিডওয়াইফরা বেশি প্রসব করাচ্ছেন। মানিকগঞ্জের প্রতিটি প্রসব মিডওয়াইফের মাধ্যমে করানো হয়েছে। গর্ভবতী মায়েরাও স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন।

খিঁচুনি ও গর্ভকালীন রক্তক্ষরণ বন্ধের জন্য অনেক হাসপাতালে প্রয়োজনীয় উপকরণ সরবরাহ করা হয়। কিন্তু এগুলো সংরক্ষণের সুষ্ঠু ব্যবস্থা নেই। হাসপাতালের পরিচালকদের অনুরোধ করে রক্তক্ষরণ প্রতিরোধের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবু অনেক হাসপাতালে এ সমস্যা থেকে গেছে।

হাসপাতালে ওষুধ পাঠানো হচ্ছে কিন্তু তা সংরক্ষণ ও বিতরণের জন্য তত্ত্বাবধান করা হচ্ছে না। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে। খিঁচুনি থেকে মাকে বাঁচাতে হলে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির মাধ্যমে দ্রুত ম্যাগসালফ তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

যে মায়েরা বাসায় সন্তান প্রসব করছেন, তাঁদের প্রয়োজনীয় উপকরণ সরবরাহ করতে হবে, যেন জরুরি অবস্থায় দ্রুত প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন।

শামস এল আরেফিন
শামস এল আরেফিন

শামস এল আরেফিন
দুই দশকের বেশি সময় ধরে আমরা জানি, মাতৃমৃত্যুর প্রধান দুটো কারণ হলো রক্তক্ষরণ ও খিঁচুনি। যে তথ্যই দেখি না কেন, এটা কমেনি।
রক্তক্ষরণ ও খিঁচুনি বন্ধের জন্য তেমন কোনো পরিকল্পনা নেই। খিঁচুনি ও রক্তক্ষরণের ক্ষেত্রে বাসায়, হাসপাতালের আউটডোর ও ইনডোরে পরিকল্পিত পদক্ষেপ নেই।

শিশুস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে কারণ নির্ধারণ করে কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, প্রতিষেধক ভ্যাকসিন ইত্যাদি নিয়ে মাঠপর্যায় পর্যন্ত কাজ হয়েছে। মাতৃমৃত্যুর প্রধান কারণ রক্তক্ষরণ ও খিঁচুনি নিয়ে বিশেষ উদ্যোগ গৃহীত হয়নি। এ বিষয়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি।

উপজেলা, জেলা হাসপাতালে রক্তক্ষরণ ও খিঁচুনির সঠিক ব্যবস্থাপনা না থাকলে তা ঠিক করা দরকার। শুধু এ দুটো বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ নিতে পারলে নিরাপদ মাতৃত্ব অনেকটাই নিশ্চিত হবে।

মোসা. সাদিয়া আফরিন
মোসা. সাদিয়া আফরিন

মোসা. সাদিয়া আফরিন
আমার বাসা মোহাম্মদপুরে। আশপাশে কোনো সরকারি ক্লিনিক নেই। আমাদের সেবা নিতে যেতে হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে। কিন্তু গর্ভাবস্থায় দূরে যাওয়া সমস্যা। যাওয়ার প্রয়োজন হলেও অনেক সময় রাস্তার সমস্যার জন্য যেতে পারি না।
এমন জায়গায় হাসপাতাল থাকা উচিত যেন গর্ভবতী মায়েরা অল্প সময়ের মধ্যে হাসপাতালে গিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে পারেন।

গ্রামে সমস্যা আরও অনেক বেশি। সেখানে যোগাযোগ, হাসপাতাল, ডাক্তার, নার্স প্রায় সবকিছুরই সমস্যা রয়েছে।

গর্ভবতী মায়েরা যদি অল্প সময়ের মধ্যে গর্ভকালীন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে পারেন, তাহলে মায়েদের মাতৃত্ব অনেকটা নিরাপদ হবে ।

এ এস এম সায়েম
এ এস এম সায়েম

এ এস এম সায়েম
সাধারণত সচ্ছল পরিবারের মায়েদের হাসপাতালে  প্রসব হয়। ২০০১ সালে দরিদ্র ও ধনী মায়েদের তুলনা করে দেখা গেছে, দরিদ্র মায়েদের চেয়ে ১২ শতাংশ বেশি ধনী মায়েরা হাসপাতালে প্রসব করাচ্ছেন।

২০১০ সালে এ ব্যবধান ৭ শতাংশে এসেছিল। ২০১৬ সালে ৩ দশমিক ৪ শতাংশে নেমে এসেছে। এটা সরকারের জন্য এটা একটা বড় সাফল্য।

দরিদ্র মায়েদের জন্য সরকার কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। একটি হলো দরিদ্র মায়েরা বিনা খরচে অ্যাম্বুলেন্স সেবা ও গর্ভবতী ভাতা পাবেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরও গর্ভবতী মায়েদের সহযোগিতা করে থাকে। উপজেলা হাসপাতালেও গরিব মায়েদের সেবা প্রায় বিনা মূল্যে সেবা প্রদান করা হয়।

অনেকের ধারণা, বেসরকারি হাসপাতালে ভালো সেবা পাবেন। গুণগত সেবা প্রদান করে সরকারি হাসপাতালগুলোর প্রতি মানুষকে আস্থাশীল করতে হবে। আবার সেবার ব্যয় আগের থেকে বেড়েছে। এটি কীভাবে কমানো যায়, সে দিকটাও ভাবতে হবে।

মাতৃ স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে বেসরকারি সেবার মানের দিকে নজর দিতে হবে। দরিদ্র মা যেন সঠিক সেবা থেকে বঞ্চিত না হন। সরকার স্বাস্থ্য খাতকে গুরুত্ব দিয়েছে। অনেক ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানও কাজ করছে। ভবিষ্যতে এসব উদ্যোগের সুফল আমরা পাব।

রওশন আরা বেগম
রওশন আরা বেগম

রওশন আরা বেগম
ইউনিসেফ ও প্রথম আলোকে ধন্যবাদ। নিরাপদ মাতৃত্ব সম্পর্কে মোটামুটিভাবে সবাই জানে। কিন্তু নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে করণীয় সম্পর্কে অনেকেই অসচেতন।

সরকার ইতিমধ্যেই কয়েকটি পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে। কিছু উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠান (এনজিও) এই বিষয়ে প্রশংসনীয় কাজ করছে।

বর্তমানে গর্ভকালীন সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এনজিওকর্মীর মাধ্যমে গর্ভবতী মায়ের রেজিস্ট্রেশন এবং নিজস্ব কর্মীর মাধ্যমে ক্লিনিকে আনার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। গর্ভবতী মা নিয়মিত ক্লিনিকে উপস্থিত না হলে ওই পরিবারে ফোন করে জানানো হয়। এতে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে।

নিরাপদ মাতৃত্বের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো খিঁচুনি (একলামসিয়া) ও গর্ভ–পরবর্তী রক্তক্ষরণ (পিপিএইচ)। অদক্ষ ধাত্রীর মাধ্যমে বাসায় সন্তান প্রসব করানো হচ্ছে। সন্তান প্রসবের এ গতানুগতিক পদ্ধতি বন্ধ করা সত্যিই কঠিন।

বাসায় যথাযথ সাবধানতা অবলম্বনের দিকে নজর দিতে হবে। প্রসবের সময় মিডওয়াইফ বা প্রশিক্ষিত ধাত্রী রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।

সন্তান জন্মদানের পর একজন মায়ের তিন দিন পর্যন্ত রক্তক্ষরণ হয়। প্রত্যেক গর্ভবতী মায়ের জন্য ‘তিন দিনের পাহারা’ নামে একটি কার্যক্রম হাতে নিয়েছি এবং একটি ছোট কমিটি গঠন করা হয়েছে।

পরিবারের সদস্য, স্বেচ্ছাসেবী ও স্বাস্থ্যকর্মী—তিনজনকে নিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা প্রতিদিন গর্ভবতী মাকে বিভিন্ন পরামর্শ ও মানসিক সহযোগিতা দেন।

মফস্বলে এই ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করলে নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে আরও উন্নতি হবে।

আফসানা করিম
আফসানা করিম

আফসানা করিম
বিশ্বব্যাপী গর্ভবতী মায়ের প্রথম যোগাযোগ হয় একজন মিডওয়াইফের সঙ্গে। একজন মিডওয়াইফ গর্ভবতী মাকে পুরো গর্ভকালীন, বাচ্চা প্রসব ও প্রসব-পরবর্তী সময়ে সেবা নিশ্চিত করতে পারেন।

মিডওয়াইফ নবজাতককে প্রথম পৃথিবীর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়। নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিত করতে মিডওয়াইফের ভূমিকা অনস্বীকার্য।

ইন্টারন্যাশনাল কনফেডারেশন অব মিডওয়াইফের (আইসিএম) নীতি অনুযায়ী বাংলাদেশ সরকার মিডওয়াইফ তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। সৃষ্টি করা হয়েছে তিন হাজার সরকারি পদ। এটি সরকারের প্রশংসনীয় উদ্যোগ।

ইতিমধ্যেই ১৮৮৭ জন মিডওয়াইফ বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে সেবা প্রদান করছেন। মিডওয়াইফরা গর্ভবতী মাকে মানসিক ও প্রসব-পূর্ববর্তী ও পরবর্তী বিভিন্ন সেবা প্রদান করে থাকেন।

মাতৃসেবা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে পূর্বের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে হবে। মিডওয়াইফদের সঠিক নির্দেশনা প্রদান করতে হবে, যেন তাঁদের মাধ্যমে সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করা যায়।

মিডওয়াইফ পেশায় বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা প্রদান করে নারীদের আগ্রহী করে তুলতে হবে।

সবাই গুণগত সেবা প্রত্যাশা করে। এ জন্য মিডওয়াইফদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করে তুলতে হবে, যেন গুণগত সেবার বিষয়টি নিশ্চিত করা যায়।

সৈয়দ আবু জাফর মোহাম্মদ মুসা
সৈয়দ আবু জাফর মোহাম্মদ মুসা

সৈয়দ আবু জাফর মোহাম্মদ মুসা
সব সময় সেবা প্রদানে চিকিৎসকের দায়বদ্ধতার কথা বলা হয়। এখন পরিবারিক ও সামাজিক দায়বদ্ধতার কথাটি মাথায় রাখতে হবে।

মায়ের স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে পরিবারের পাশাপাশি সমাজের সচেতন মানুষকেও ভূমিকা পালন করতে হবে।

বাংলাদেশে জন্ম-মৃত্যু আইন-২০০৪ আরও শক্তিশালী করার জন্য মন্ত্রণালয় কাজ করছে।
দেশের ৩২টি জেলায় ম্যাটারন্যাল অ্যান্ড পেরিনেটাল ডেথ সার্ভিলেন্স অ্যান্ড রেসপন্স (এমপিডিএসআর) চালু রয়েছে। কিন্তু এর আইনগত ভিত্তি নেই। এমপিডিএসআর কার্যক্রম পরিচালনায় আইনগত ভিত্তি নিশ্চিত করতে হবে।

আনন্দের সংবাদ হলো, ইতিমধ্যেই কয়েকটি সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান মিলে জাতীয় পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। স্থানীয়ভাবে এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করা হচ্ছে।

মিডওয়াইফ তৈরির পাশাপাশি সেবাদানের সুযোগ দিতে হবে। বাংলাদেশে প্রতিবছর মিডওয়াইফ সৃষ্টি করা হচ্ছে।

সবাইকে সরকারি চাকরি দেওয়া সম্ভব নয়। মাতৃসেবার বড় অংশ প্রদান করছে বেসরকারি খাত, এ খাতে মিডওয়াইফ নিয়োগের আইনগত ভিত্তি নির্মাণ করতে হবে।

পরিবার পরিকল্পনার বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এ খাতে নিযুক্ত সব প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় পরিকল্পিত পরিবার গঠনে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সন্তানসম্ভবা মায়ের জন্য অ্যাম্বুলেন্স-সুবিধা বিনা মূল্যে প্রদান করা প্রয়োজন। এতে হাসপাতালে গর্ভবতী মায়ের উপস্থিতি বৃদ্ধি পাবে।

আবুল কালাম আজাদ
আবুল কালাম আজাদ

আবুল কালাম আজাদ
এ ধরনের একটি আয়োজন করার জন্য ইউনিসেফ ও প্রথম আলোকে ধন্যবাদ। ১৯৭৪ সালে প্রতি লাখে মাতৃমৃত্যুর হার ছিল ৫৭৪। বর্তমানে কমে দাঁড়িয়েছে ১৭৬ জনে।

বাংলাদেশে প্রতিবছর ৩০-৩২ লাখ মা গর্ভধারণ করেন। তাঁদের মধ্যে প্রতি হাজারে ১৫ জন মৃত্যুবরণ করেন। এটা মেনে নেওয়া যায় না।

তবে আগের তুলনায় মৃত্যুহার কমানো সম্ভব হয়েছে, এটিই আমাদের সাফল্য। নিয়োগের মাধ্যমে খালি পদ পূরণ করা হচ্ছে। তৈরি করা হচ্ছে দক্ষ মিডওয়াইফ।

প্রতিটি ইউনিয়ন ও বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানে একজন মিডওয়াইফ নিয়োগের পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।

মাঠপর্যায়ে প্রত্যেক গর্ভবতী মাকে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন ও তত্ত্বাবধান করা হচ্ছে।

মাতৃসেবা নিশ্চিত না হলে মাতৃমৃত্যুর হার কমানো সম্ভব নয়। এ জন্য প্রয়োজনীয়সংখ্যক স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ দিতে হবে।

পে ফর পারফরমেন্সের ওপর ভিত্তি করে স্বেচ্ছাসেবী স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এক বছরের মধ্যে প্রতিটি কমিউনিটি হাসপাতালে পাঁচজন করে স্বেচ্ছাসেবী নিয়োগ করা হবে। তাঁদের সাহায্যে গর্ভবতী মায়ের তত্ত্বাবধান করা সহজ হবে।

তুরস্কে গর্ভবতী মায়ের জন্য বিনা মূল্যে অ্যাম্বুলেন্স-সেবা প্রদান করা হয়। বাংলাদেশেও এ সুবিধা চালু করা হয়েছে।

খিঁচুনি (একলামসিয়া) ও গর্ভ–পরবর্তী রক্তক্ষরণ (পিপিএইচ)—এ দুই বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও নার্সিং অধিদপ্তরকে খিঁচুনি ও পিপিএইচ নিরসনে যৌথভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

গণমাধ্যমকে প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। অন্যথায়, এ সমস্যা সমধান করা সম্ভব নয়।

মো. হাবিবে মিল্লাত
মো. হাবিবে মিল্লাত

মো. হাবিবে মিল্লাত
আশির দশকে মাতৃমৃত্যুর হার তীব্র আকার ধারণ করেছিল। বর্তমানে এ অবস্থার উন্নতি হয়েছে। কিন্তু প্রসবের বিষয়টি অনেকটা ধাত্রীনির্ভর।

প্রতিবছর খিঁচুনি ও রক্তক্ষরণের কারণে অনেক মা মারা যাচ্ছেন। এর কারণ খুঁজে বের করতে হবে এবং উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

রাস্তাঘাট ও অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। মাতৃসেবায় আর্থিক সমস্যা নেই। সমস্যা সচেতনতায়। মায়ের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করা দরকার। গণমাধ্যমকে এ বিষয়ে এগিয়ে আসতে হবে।

গ্রামপর্যায়ে স্বাস্থ্যকর্মীদের মাধ্যমে সচেতনতা সৃষ্টি করা সম্ভব। কিন্তু চাহিদা অনুযায়ী মাতৃত্বকালীন জরুরি সেবা প্রদান করা সম্ভব নয়।

এ ধরনের সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে যথাযথ প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়নি। প্রয়োজনীয় মিডওয়াইফ তৈরি করা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। এ জন্য হাত গুটিয়ে বসে না থেকে মাতৃমৃত্যু প্রতিরোধের উপায় খুঁজে বের করতে হবে।

দেশে বাল্যবিবাহ নিয়ে আইন প্রণীত হয়েছে। বাল্যবিবাহের হার দেশে কমে এসেছে। বাল্যবিবাহের ফলে মাতৃমৃত্যুর ঝুঁকি থাকে। এটি পরোক্ষভাবে মাতৃমৃত্যু রোধে ভূমিকা পালন করছে।

বাংলাদেশ সরকার ও ইউএনএফপিএর সহায়তায় প্রতিটি মাতৃত্বকালীন মৃত্যুর কারণ ও উত্তরণের উপায় খুঁজে বের করা হবে।

কিছুদিনের মধ্যে মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় জাতীয়ভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

আমাদের এসডিজির লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে মাতৃমৃত্যুর হার ৭০-এ নামিয়ে আনা।

পরিকল্পিতভাবে কাজ করলে আমরা এটি অর্জন করতে পারব।

উপজেলা হাসপাতালগুলো প্রায় প্রতিটি ৫০ বেডের। অনেকে সেবা নিতে আসেন। কিন্তু চিকিৎসকেরা দক্ষ জনবলের অভাব ও অন্যান্য কারণে ঠিকমতো সেবা দিতে পারছেন না।

বাজেট বাড়াতে হবে এবং হাসপাতালে প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ করতে হবে। স্বাস্থ্য বিভাগকে সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে। গুণগত সেবা প্রদানে মনোযোগ দিতে হবে।

 উন্নয়নশীল দেশে বিভিন্ন সমস্যা থাকবে। এ জন্য বাজেটের সর্বোচ্চ ব্যবহারের জন্য পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করা উচিত। উপযুক্ত কর্মসূচি গ্রহণ, বাস্তবায়ন ও সঠিক তত্ত্বাবধান করলে মাতৃমৃত্যুর হার অনেকাংশে কমে যাবে।

 আব্দুল কাইয়ুম

আজকের আলোচনায়  কিছু পরামর্শ এসেছে। সরকারের সঙ্গে পরিবারের সদস্যদের ভূমিকাও  গুরুত্বপূর্ণ। মায়ের যেন কোনো সমস্যা না হয় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। মাকে সার্বিক সহযোগিতা দিতে হবে। আলোচনায় অংশগ্রহণের জন্য প্রথম আলোর পক্ষ থেকে সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।

 যাঁরা অংশ নিলেন

মো. হাবিবে মিল্লাত: মাননীয় সাংসদ, সভাপতি ইন্টারপার্লামেন্টারিয়ান ইউনিয়ন স্বাস্থ্যবিষয়ক কমিটি

আবুল কালাম আজাদ: মহাপরিচালক, ডাইরেক্টরেট জেনারেল অব হেলথ সার্ভিসেস, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

মোহাম্মদ শরীফ: পরিচালক, মা ও শিশুস্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর

এস এম শামসুজ্জামান: লাইন ডিরেক্টর, এমএনসিঅ্যান্ডএএইচ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

সৈয়দ আবু জাফর মোহাম্মদ মুসা: বিশেষজ্ঞ উপদেষ্টা, ইউএনএফপিএ

মায়া ভেন্ডানেন্ট: স্বাস্থ্য বিভাগ প্রধান, ইউনিসেফ

এ এস এম সায়েম: স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, ম্যাটারন্যাল অ্যান্ড অ্যাডলসেন্ট হেলথ, ইউনিসেফ 

শামস এল আরেফিন: সিনিয়র ডিরেক্টর, আইসিডিডিআরবি

জাহেরা খাতুন: পরিচালক, নার্সিং শিক্ষা, ডাইরেক্টরেট জেনারেল অব নার্সিং অ্যান্ড মিডওয়াইফারি

রওশন আরা বেগম: সাবেক সভাপতি, অবসটেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনোলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশ ওজিএসবি

আফসানা করিম: কর্মসূচি পরিচালক, স্ট্রেনদেনিং ন্যাশনাল মিডওয়াইফারি  প্রোগ্রাম, সেভ দ্য চিলড্রেন ইন বাংলাদেশ

রওশন আরা বেগম: সাবেক স্বাস্থ্য বিষেশজ্ঞ, এনএইচএসডিপি

মোসা. সাদিয়া আফরিন: গর্ভবতী মা, মোহাম্মদপুর ঢাকা, (সহযোগিতায় ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ)

 সঞ্চালক

আব্দুল কাইয়ুম: সহযোগী সম্পাদক, প্রথম আলো