ফিলিস্তিনিদের সেপ্টেম্বর: চলমান নিষ্ঠুর প্রহসন

‘প্রজন্মের পর প্রজন্ম চলে গেলেও জেরুজালেমে ফিরব’ পোস্টার হাতে ফিলিস্তিনি শিশুরা, কাঠের প্রতীকী চাবিতে লেখা ‘ফেরা’।
‘প্রজন্মের পর প্রজন্ম চলে গেলেও জেরুজালেমে ফিরব’ পোস্টার হাতে ফিলিস্তিনি শিশুরা, কাঠের প্রতীকী চাবিতে লেখা ‘ফেরা’।

ইতিহাস ফিলিস্তিনিদের নিষ্ঠুরতা, নির্মমতা ও প্রহসন উপহার দিতেই পছন্দ করে। সাত দশকের বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনিরা প্রজন্মের পর প্রজন্ম এসব উপহারই পেয়ে আসছে। চলতি সেপ্টেম্বর মাসে এ রকম একাধিক উপহারের দুঃসহ স্মৃতি শুধু ফিলিস্তিনিদেরই নয়, গোটা বিশ্বের শান্তিকামী মানুষের মনের দুয়ারে কড়া নাড়ছে। পাশাপাশি নতুন দুঃসহ উপহারও যোগ হচ্ছে হতভাগ্য ফিলিস্তিনিদের ক্ষত-বিক্ষত-রক্তাক্ত ইতিহাসে।

এক.
প্রথমেই পিছু ফিরে দেখা যাক তিন যুগ আগের সেপ্টেম্বর মাসকে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী প্রতিবেশী লেবাননে অভিযান চালানো শুরু করেছে তারও চার মাস আগে (জুন ৬, ১৯৮২)। ইয়াসির আরাফাতের নেতৃত্বাধীন প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনের (পিএলও) গেরিলারা ও সিরিয়ার সেনাবাহিনী যৌথভাবে তিন মাস লড়াই করে ইসরায়েলে বাহিনীর কাছে কার্যত পরাজয় স্বীকার করে নেয়। তত দিনে দেশটির রাজধানী বৈরুতসহ সিরীয় সীমান্ত পর্যন্ত বিশাল এলাকা ইসরায়েলি বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে। পিএলও-প্রধান ইয়াসির আরাফাত বৈরুত থেকে সংস্থাটির সদর দপ্তর ও পিএলও গেরিলাদের সরিয়ে নিতে বাধ্য হন। কিন্তু ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী অ্যারিয়েল শ্যারনের ক্ষোভ মেটেনি। আরাফাতকে হত্যা করা গেল না! সেপ্টেম্বর মাসে তিনি ঘোষণা করলেন, বৈরুতের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকণ্ঠে সাবরা ও শাতিলা নামক দুটি ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তু শিবিরে হাজারখানেক ‘সন্ত্রাসী’ লুকিয়ে আছে, যাদের ধরতে হবে। এরপরই ইসরায়েলি সেনারা শিবির দুটি কার্যত অবরুদ্ধ করে ফেলে।

এদিকে তার আগে যুদ্ধবিধ্বস্ত লেবাননে ২৩ আগস্ট নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন বছির জেমায়েল। তিনি ছিলেন ডানপন্থী ফ্যালাঞ্জ খ্রিষ্টান দল কাতায়েব পার্টির প্রধান। ইসরায়েলের সঙ্গে তাঁর সখ্য ছিল। ইসরায়েলও নিজেদের পছন্দসই লোককে লেবাননের রাষ্ট্র ক্ষমতায় দেখতে চাইছিল। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী মেনশাম বেগিন তাঁকে ইসরায়েলের সঙ্গে একটি চুক্তি করতে এবং সে দেশে অবস্থানরত সন্দেহভাজন পিএলও সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চাপ দেন। কিন্তু জেমায়েল তাতে সম্মত হননি। তত দিনে আন্তর্জাতিক তত্ত্বাবধানে ফিলিস্তিনি গেরিলারা লেবানন ছেড়ে চলে গেছে। ১১ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী দলও বৈরুত ত্যাগ করে। আর ১৪ তারিখে এক বোমা বিস্ফোরণে নিজ কার্যালয়ে জেমায়েল নিহত হন। এর পেছনে ইসরায়েলের কোনো হাত ছিল কি না, তা আজও প্রশ্নবিদ্ধ। যদিও সিরীয় গোয়েন্দা বাহিনীর এক লেবাননি এজেন্ট পরবর্তী সময়ে বিস্ফোরণের দায়ভার স্বীকার করেছিল। তবে জেমায়েলের অনুগত ফ্যালাঞ্জরা অত্যন্ত ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। তারা এ জন্য লুকিয়ে থাকা পিএলও গেরিলাদের দায়ী করে।

এরপর ১৬ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় সশস্ত্র ফ্যালাঞ্জরা সাবরা ও শাতিলা উদ্বাস্তু শিবিরে প্রবেশ করে। শিবির দুটো তখন ইসরায়েলি বাহিনীর প্রহরাধীন। এর মধ্যেই ফ্যালাঞ্জরা নির্বিচারে দুই দিন ধরে শিবিরগুলোয় হত্যাকাণ্ড ও ধর্ষণ চালায়। আর পুরোটাই সংগঠিত হয় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে। এতে হাজারখানেক ফিলিস্তিনি নারী-পুরুষ ও শিশু নিহত হয়, যদিও প্রকৃত সংখ্যা নিয়ে মতভেদ আছে। ১৮ সেপ্টেম্বর এই নারকীয় হত্যাযজ্ঞ-ধর্ষণের ঘটনা প্রকাশ পেলে দুনিয়াজুড়ে নিন্দা ও বিক্ষোভের ঝড় ওঠে। খোদ ইসরায়েলের রাজপথে প্রায় তিন লাখ মানুষ নেমে আসে এর প্রতিবাদ জানাতে। তারা নিজ দেশের সেনাবাহিনীকে ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী শ্যারনকে অভিযুক্ত করে চোখের সামনে এই হত্যাকাণ্ড ও বর্বরতা সংগঠিত হতে দেওয়ায়। প্রবল জনমতের চাপে ইসরায়েল সরকার কাহান কমিশন গঠন করে। ১৯৮৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে কমিশনের প্রতিবেদনে শ্যারনকে ‘ব্যক্তিগতভাবে দায়ী’ করা হয়। তবে প্রধানমন্ত্রী মেনশাম বেগিন শ্যারনকে অপসারণ করতে সম্মত না হওয়ায় শান্তিবাদী ইসরায়েলিরা জেরুজালেমে বেগিনের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ করে। শেষ পর্যন্ত শ্যারন পদত্যাগ করেন। তবে এটাও একাধারে বিস্ময়কর ও হতাশাজনক যে এই শ্যারনই আবার ২০০১-০৫ সময়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন।

দুই.
সাবরা-শাতিলা হত্যাযজ্ঞের এক যুগ পেরিয়ে এসে পিএলও-প্রধান ইয়াসির আরাফাত বিশ্বদরবারে অনেক বেশি স্বীকৃতি আদায় করে নিয়েছেন। আর বিশ্ব প্রত্যক্ষ করেছে, ফিলিস্তিনিদের প্রথম ইন্তিফাদা, ১৯৮৭ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত যা চলে। অধিকৃত পশ্চিম তীর ও গাজায় হাজার হাজার ফিলিস্তিনি যুবক-কিশোর, এমনকি শিশু ও বয়স্করা স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাস্তায় নেমে আসে। তারা অহিংস প্রতিবাদ-প্রতিরোধ-বিক্ষোভের মাধ্যমে সারা দুনিয়ার নজর কেড়ে নেয়। ইসরায়েল নির্মমভাবে ইন্তিফাদা দমনের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়; বরং রক্তপাত ও প্রাণহানি বেড়ে চলে। প্রথম ইন্তিফাদা প্রকারান্তরে ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলিদের মধ্যে একটি শান্তিচুক্তি করতে নেপথ্যে ভূমিকা রাখে। নরওয়ের মধ্যস্থতায় ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সক্রিয়তায় অবশেষে ১৯৯৩ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর ওয়াশিংটন ডিসিতে স্বাক্ষরিত হয় ডিক্লারেশন অব প্রিন্সিপালস (ডিওপি), যা কিনা অসলো চুক্তি বা প্রথম অসলো চুক্তি হিসেবে পরিচিত। (প্রথম অসলো চুক্তির সীমাবদ্ধতা কমাতে ১৯৯৫ সালে মিসরের তাবায় দ্বিতীয় অসলো চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়)। নরওয়ের ভূমিকার স্বীকৃতি হিসেবে দেশটির রাজধানীর নামে এই চুক্তির পরিচিতি ঘটানো হয়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের উপস্থিতিতে হোয়াইট হাউসের সবুজ চত্বরে পিএলওর পক্ষে সংস্থাটির নির্বাহী সদস্য মাহমুদ আব্বাস (বর্তমানে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট) ও ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শিমন পেরেজ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। ইয়াসির আরাফাত ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী আইজ্যাক রবিন তা প্রত্যক্ষ করে পরস্পর করমর্দন করেন, যা মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাসের অন্যতম তাৎপর্যময় ছবি হয়ে ওঠে।

২০১৪ সালের পরে সর্বোচ্চ মারাত্মক বোমাবর্ষণ হয় এ মাসে। বিধ্বস্ত ভবনের পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন এক ফিলিস্তিনি নারী। ছবি: রয়টার্স
২০১৪ সালের পরে সর্বোচ্চ মারাত্মক বোমাবর্ষণ হয় এ মাসে। বিধ্বস্ত ভবনের পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন এক ফিলিস্তিনি নারী। ছবি: রয়টার্স

অসলো চুক্তির মাধ্যমে পিএলও তথা ফিলিস্তিনিরা রাষ্ট্র হিসেবে ইসরায়েলের বৈধতা ও অস্তিত্ব স্বীকার করে নেয়। ইসরায়েলও পিএলওকে ফিলিস্তিনি জনগণের বৈধ প্রতিনিধি হিসেবে মনে নেয়। এর আওতায় ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে অধিকৃত পশ্চিম তীর ও গাজা থেকে পর্যায়ক্রমে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার করে নিতে এবং এসব এলাকায় অন্তর্বর্তীকালীন ফিলিস্তিনি প্রশাসন গঠনে সম্মত হয়। অসলো চুক্তির ফলে পরের বছর (১৯৯৪) আরাফাত, রবিন ও পেরেজ শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান।

অসলো চুক্তি দুই পক্ষকেই কিছু ছাড় দিয়ে একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের দিকে অগ্রসর হওয়ার ভিত্তি তৈরি করে দিয়েছিল। সেই চুক্তির সিকি শতাব্দী পূর্ণ হচ্ছে আজ। কিন্তু এর ফলাফল দুই পক্ষের কাছেই হতাশাজনক ও বহুলাংশে ব্যর্থ। চুক্তি স্বাক্ষরের পর থেকেই উগ্র ইসরায়েলিরা এর বিরোধিতা করে এসেছে। এর জের ধরে ১৯৯৫ সালের ৪ নভেম্বর আইজ্যাক রবিন চরম ডানপন্থী দল এইয়ালের সঙ্গে সম্পৃক্ত ২০ বছর বয়সী এক ছাত্রের গুলিতে নিহত হন। এতে করে গোটা ইসরায়েলে অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়ে। রবিনের বিরুদ্ধে ইসরায়েলিদের অভিযোগ ছিল যে তিনি ফিলিস্তিনিদের দিকের ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়েছেন। সেই সময়ে ফিলিস্তিনিদের দ্বারা নিয়মিত ছুরিকাহত হওয়ার ঘটনা ইসরায়েলি জনমনে আতঙ্ক তৈরি করেছিল। প্রথম বছর মোটামুটি শান্তভাবে পার হলেও তারপর থেকে অস্থিরতা-উদ্বেগ নতুনভাবে ফিরে আসে। ইসরায়েল অভিযোগ করতে থাকে যে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ তথা পিএলও অধিকৃত ভূখণ্ডের ফিলিস্তিনিদের ‘সন্ত্রাসী’ তৎপরতা রোধ করতে ব্যর্থ হয়েছে।

আরাফাতের জন্য সবচেয়ে বড় সমস্যা ছিল সব ফিলিস্তিনির কাছে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা সমান না থাকা। গাজায় হামাসের প্রভাব তখন ধীরে ধীরে বাড়ছে। আবার ইসরায়েল সেনা প্রত্যাহার করলেও পশ্চিম তীরে ইহুদি বসতি স্থাপন অব্যাহত রাখে। সেখানকার মাত্র অর্ধেক এলাকা বিচ্ছিন্নভাবে ফিলিস্তিনি প্রশাসনের কাছে স্থানান্তর করে। আবার পশ্চিম তীর ও গাজার মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী একটি অবাধ করিডর বা প্যাসেজ দেওয়ার ক্ষেত্রেও ইসরায়েল কোনো আগ্রহ দেখায়নি ‘নিরাপত্তাজনিত অজুহাতে’।

তুলনামূলকভাবে ইসরায়েল এই চুক্তি থেকে অধিকতর সুবিধা তুলে নিতে সক্ষম হয়েছিল। বিশেষত, বিদেশি কোম্পানিগুলো আরব দেশগুলোর সম্ভাব্য বর্জনের ভীতি কাটিয়ে ইসরায়েলে শাখা খুলতে থাকে। এটি অর্থনৈতিকভাবে ইসরায়েলকে এগিয়ে দেয়। ইসরায়েল জর্ডানের সঙ্গে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর করে। অন্য আরব দেশগুলোর সঙ্গেও সম্পর্ক উন্নয়নের পথ তৈরি হয়। সে তুলনায় ফিলিস্তিনিদের স্বাধিকার ও স্বাধীনতার বিষয়টি একেবারে ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। ফলে অসলো চুক্তি ফিলিস্তিনিদের জন্য একধরনের প্রহসনে রূপ নেয়। চুক্তির ২৫ বছর পর তা আরেকবার স্পষ্ট হলো।

তিন.
এ বছর ১০ সেপ্টেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফিলিস্তিনিদের জন্য নতুন একটি ‘উপহার’ ঘোষণা করেন। এই তারিখে স্টেট ডিপার্টমেন্ট (যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়) ওয়াশিংটনে ফিলিস্তিন মিশন বন্ধ ঘোষণা করে। কারণ হিসেবে সরকারি বিবৃতিতে বলা হয় যে পিএলও কার্যালয় ‘ইসরায়েলের সঙ্গে সরাসরি ও অর্থবহ সমঝোতা এগিয়ে নিতে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেনি’। ফিলিস্তিনি মিশন বন্ধের ঘোষণাটি গত কয়েক মাসে কয়েকটি পদক্ষেপের ধারাবাহিতাতেই এসেছে।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেন। আর এ বছর ১৪ মে আনুষ্ঠানিকভাবে তেল আবিব থেকে জেরুজালেমে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস স্থানান্তর করা হয়। এই ঘটনা ফিলিস্তিনিদের ক্ষুব্ধ ও মর্মাহত করে। এরপর ২৪ আগস্ট ট্রাম্প প্রশাসন ফিলিস্তিনের জন্য কংগ্রেস কর্তৃক অনুমোদিত সহায়তা থেকে ২০ কোটি ডলার কমানোর ঘোষণা দেন। ট্রাম্প ৩১ আগস্ট ফিলিস্তিন শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের প্রতিষ্ঠান ইউএনআরডব্লিউএতে যুক্তরাষ্ট্রের বাজেট পুরোটাই বাতিল করে দেন। ৯ সেপ্টেম্বর পূর্ব জেরুজালেমের ছয়টি হাসপাতালের জন্য প্রদেয় আড়াই কোটি ডলার স্থগিত করা হয়। এসব পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে একতরফা সমর্থন দিয়ে যাওয়ার ধারাবাহিক প্রবণতাকেই জোরদার করল।

চার.
কয়েক দিন আগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘দুর্বলের পতন হয়, তারা মারা পড়ে আর ইতিহাস থেকে মুছে যায়। অন্যদিকে শক্তিমানরা, ভালো বা মন্দ যা-ই হোক না কেন, টিকে থাকে। এই শক্তিমানরাই সম্মানিত হয়, শক্তিমানদের সঙ্গেই জোট বাঁধতে হয় আর শেষ পর্যন্ত শক্তিমানদের সঙ্গেই শান্তি প্রতিষ্ঠা হয়।’ নেতানিয়াহুর এই উদ্ধৃতি তুলে ধরে ইসরায়েলের সবচেয়ে পুরোনো দৈনিক পত্রিকা হারেৎসের সম্পাদকীয়তে (১২ সেপ্টেম্বর) মন্তব্য করা হয়েছে, ‘ইসরায়েলকে উপহারে ভাসানোর পাশাপাশি ওয়াশিংটন ফিলিস্তিনদের ওপর যেসব বিপর্যয় চাপিয়ে দিচ্ছে, তাতে এটা প্রমাণিত হয় যে ট্রাম্পের আমেরিকা শক্তিমানকে পুরস্কৃত করে আর দুর্বলকে পিষে মারে। যুক্তরাষ্ট্র সদ্যই ওয়াশিংটনে প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন (পিএলও) মিশন বন্ধ করে দেওয়ার কথা জানিয়েছে। ফিলিস্তিনি কূটনীতিকে দুর্বলতা গণ্য করা হচ্ছে আর সহিংস লড়াইকে মর্যাদার সাথে গণ্য করা হচ্ছে।’

আসজাদুল কিবরিয়া: সাংবাদিক
[email protected]