নারী ও শিশুবান্ধব নগর সেবা এবং সুশাসন

>

গত ৭ জুলাই ২০১৯, প্রথম আলোর আয়োজনে এবং পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ ও ইউনিসেফের সহযোগিতায় ‘নারী ও শিশুবান্ধব নগর সেবা এবং সুশাসন’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত আলোচকদের বক্তব্য সংক্ষিপ্ত আকারে এই ক্রোড়পত্রে ছাপা হলো।

সঞ্চালক

আব্দুল কাইয়ুম: সহযোগী সম্পাদক, প্রথম আলো

আলোচনায় সুপারিশ

■ নারী ও শিশুবান্ধব নগর সেবা নিশ্চিত করতে হবে 

■ গণপরিবহনে নারী ও শিশুরা যেন নিরাপদে চলাচল করতে পারে সে ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।

■ নারী ও শিশুর সুযোগ–সুবিধা নিশ্চিত হয় এমনভাবে নগর পরিকল্পনা করা প্রয়োজন

■ নগর পরিকল্পনায় অনেক বেশি পাবলিক স্পেসের ব্যবস্থা থাকা দরকার

■ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে পর্যাপ্ত ডে-কেয়ার সেন্টার প্রয়োজন

■ নারী ও শিশুবান্ধব নগর পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সরকারি ও বেসরকারি খাতের সমন্বয় জরুরি

■ সব ধরনের পরিকল্পনায় প্রতিবন্ধীদের বিষয়টি বিবেচনায় রাখতে হবে

■ বেশি টাকা খরচ করে নির্দিষ্ট কিছুসংখ্যক মানুষের জন্য পার্ক না করে, স্বল্প টাকায় সবার জন্য উন্মুক্ত পার্ক করতে হবে 

আলোচনা 

আব্দুল কাইয়ুম

নগর ব্যবস্থাপনা ও সুশাসন বর্তমানে আমাদের চিন্তার একটি বড় বিষয়। বিশেষ করে নারী ও শিশুর জন্য এটি খুবই জরুরি। এ জন্য আমাদের কী সমস্যা রয়েছে, তা সমাধানের জন্য করণীয় কী, এসব নিয়েই আজকের আলোচনা।

 এ বিষয়ে শুরুেতই আলোচনা করবেন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলম।

মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম
মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম

মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম

নগরে এমন পরিবেশ তৈরি করতে হবে, যেখানে মা ও শিশু নিরাপদ ও সুস্থ পরিবেশে বেড়ে ওঠে। নারী ও শিশুরা যদি সম্মানের সঙ্গে নগরে থাকতে না পারে, তাহলে সমাজ স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে না। নগর যদি নারী ও শিশুবান্ধব না হয়, তবে নগরায়ণের মূল ভিত্তি সঠিকভাবে রচিত হয় না।

শুধু উঁচু ভবন করলেই নগরায়ণ বাস্তবমুখী হবে না। নগরে পর্যাপ্ত সুবিধা পেলে পরবর্তী প্রজন্ম ভালো থাকতে পারবে। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত শিশুকে সুস্থ রাখার জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নগরে থাকতে হবে।

গাজীপুরে ইউনিসেফের সহায়তায় আমরা ১২টি ওয়ার্ডে নারী ও শিশুর সুস্থতা নিয়ে কাজ করছি। আমরা ১০০টি ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপন করেছি। সেখানে শিশুরা সকাল থেকে অফিসের শেষ সময় পর্যন্ত স্বাধীনভাবে বেড়ে উঠতে পারে। পাশাপাশি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে থেকে ঝরে পড়া গরিব শিক্ষার্থীদের শিক্ষার ব্যবস্থাও আমরা করেছি।

বর্তমানে নগরের জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো পরিকল্পনা নেই। সঠিক নগরায়ণের জন্য আমাদের পরিকল্পনা করতে হবে। গাজীপুর সিটি করপোরেশনে এমন অনেক রাস্তা আছে, যার অনেক জায়গায় কোনো ফুটপাত নেই। কিন্তু, এসব জায়গাও নগর হয়েছে। 

এখন আমাদের করণীয় হলো ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা ও জেলা পরিষদের সঙ্গে সমন্বিতভাবে একটি মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করা। এ মাস্টারপ্ল্যানে নারী ও শিশুদের সুরক্ষার বিষয়টি বিস্তারিতভাবে থাকবে। এ জন্য আমাদের দাতা সংস্থাগুলোর সঙ্গে একত্রে কাজ করতে হবে।

হোসেন জিল্লুর রহমান
হোসেন জিল্লুর রহমান

হোসেন জিল্লুর রহমান

বর্তমানে বাংলাদেশে অনেক উন্নয়ন হচ্ছে। এর ফলে নগরেরও বিকাশ ঘটছে। কিন্তু, নগরের জীবনমান তৈরির বিষয়টি মুখ্য হলেও তা কম গুরুত্ব পাচ্ছে।

নারীবান্ধব নগর তৈরির পাশাপাশি কিশোরীদের বিষয়টি আলাদাভাবে দেখতে হবে। কারণ, কিশোরীদের এমন অনেক ধরনের প্রয়োজন থাকে, যা অন্যদের তুলনায় সম্পূর্ণ আলাদা।

নারী ও শিশুর স্বাস্থ্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। বর্তমানে দেশে স্বাস্থ্যব্যবস্থায় ঘাটতি রয়েছে। এর অন্যতম কারণ হলো, নগর সম্প্রসারণের সঙ্গে তাল মিলিয়ে স্বাস্থ্যব্যবস্থা উন্নত হতে পারেনি।

নগরে দরিদ্রদের স্বাস্থ্যব্যবস্থার প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ, ধনীরা রাষ্ট্রের স্বাস্থ্যব্যবস্থার সুবিধা সহজেই গ্রহণ করতে পারে, কিন্তু দরিদ্ররা সে সুবিধা কখনোই পায় না।

নগরে নারী ও শিশুরা সমস্যায় পড়লে প্রতিকার চাওয়ার সুযোগ থাকা জরুরি। কিন্তু তারা সমস্যায় পড়লে প্রতিকার না পাওয়ার অভিযোগই বেশি। নিরাপদ নগর গড়তে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। সুশাসন নিশ্চিত করতে সরকারের পাশাপাশি নাগরিকদেরও আচরণের ক্ষেত্রে দায়িত্ববোধের পরিচয় দিতে হবে।

আশেকুর রহমান
আশেকুর রহমান

আশেকুর রহমান

বর্তমানে নগরের অবস্থা খুব একটা সুবিধার নয়। আমাদের নগরগুলো নারী ও শিশুবান্ধব নয়। এ নগর সবার জন্য নয়। এ নগর সবলের জন্য। আমাদের নগর বৈষম্যমূলক ও বিভক্ত। নগরে যে শ্রেণিবৈষম্য ও বিভক্তি আছে, তা বহুতল ভবনের ছাদে উঠলেই বোঝা যায়।

ঢাকা শহরে বসবাসকারীদের মধ্যে অর্থনৈতিক ও সামাজিক বৈষম্য অনেকটা দৃশ্যমান। ঢাকা শহরের প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষ বস্তি বা বস্তির মতো এলাকায় বাস করে।

উঁচু ভবনের পাশেই অনেক বস্তিঘর চোখে পড়ে। এসব বস্তিবাসীর সংখ্যা কত, এর সঠিক পরিসংখ্যানও নেই। তবে আশার কথা হলো, বর্তমান সরকার সামাজিক নিরাপত্তা খাতে অনেক ব্যয় করছে। 

বর্তমান বাজেটের ১৫ শতাংশই ব্যয় হবে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে। কিন্তু এ ব্যয় সুষমভাবে বন্টন হয় না। আমরা দেখি গ্রামের চেয়ে শহরে দারিদ্র্য বেশি। 

সামাজিক নিরাপত্তা খাতের ৮৫ শতাংশ ব্যয় হয় গ্রামে। আর বাকি ১৫ শতাংশ ব্যয় হয় শহরের জন্য। এটি সামঞ্জস্যপূর্ণ বণ্টন–ব্যবস্থা নয়। আমাদের এ থেকে উত্তরণ ঘটাতে হবে। এ জন্য কিছু নীতি সংস্কারের পাশাপাশি আমাদের মানসিকতাও পরিবর্তন করতে হবে।

মো. সোহেল রানা
মো. সোহেল রানা

মো. সোহেল রানা

ইউএন হ্যাবিট্যাট বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আমরা বিভিন্ন শহর ও পৌরসভায় প্রযুক্তিগত ও পরামর্শমূলক সেবা দিয়ে থাকি। একটি নগরীতে নারী ও শিশুর জন্য আলাদা উন্মুক্ত স্থান খুব জরুরি।

আমরা ব্যক্তিস্বার্থে ইমারত বা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছি। যেসব উন্মুক্ত স্থান বা খেলার মাঠ আছে, সেখানে কি নারী ও শিশুর প্রবেশের অবাধ সুযোগ আছে? টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় নারী ও শিশুর উন্মুক্ত স্থানে হাঁটাচলা, খেলাধুলা, সময় কাটানোর একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করা আছে। আমরা ছয় বছর আগে ঢাকায় এ বিষয়টি নিয়ে প্রথম কাজ শুরু করি। এখন কাজ করছি ‘শিশুবান্ধব নগর’ নিয়ে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে, শহরে প্রতিটি মানুষের জন্য ৯ বর্গমিটার সবুজ জায়গার প্রয়োজন। জাতিসংঘ থেকেও বলা হচ্ছে, একটি টেকসই শহরের জন্য ৫০ শতাংশ পাবলিক স্পেস থাকতে হবে। আমি সম্প্রতি একটি সমীক্ষায় দেখলাম, ঢাকা শহরে মাত্র ১২ শতাংশ পাবলিক স্পেস আছে। 

আমি বলছি না যে ৫০ শতাংশ পাবলিক স্পেস দিলেই ঢাকা একটি টেকসই শহরে পরিণত হবে। তবে এটা সত্যি যে পাবলিক স্পেস দিয়ে অনেক সমস্যার সমাধান করা যায়। 

রায়ের বাজার ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডে ২ লাখ ৫০ হাজার মানুষের বাস। কিন্তু এখানে মাঠ মাত্র একটি। আমরা ব্যক্তিগত স্বার্থে ইমারত, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণ করছি। ফলে খালি জায়গা থাকছে না। 

শহর বিশেষজ্ঞ ও জনপ্রতিনিধিদের এগুলো নিয়ে ভাবতে হবে। নগর-পরিকল্পনায় কত শতাংশ মানুষ সম্পৃক্ত, আমরা এখান থেকে কোথায় যেতে চাই, এসব বিষয় নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে।

ইশরাত ইসলাম
ইশরাত ইসলাম

ইশরাত ইসলাম

এখনো আমাদের সমাজে উন্নত ডে-কেয়ার সুবিধা নেই। বহুদিন যাবৎ বলে যাচ্ছি, আমাদের ডে-কেয়ার সেন্টার দরকার। যেখানে নারীরা তাঁদের সন্তানকে নিরাপদে রেখে কর্মক্ষেত্রে যাবেন।

আইনে সুস্পষ্টভাবে বলা আছে যে একটা প্রতিষ্ঠানে কতজন নারী কর্মকর্তা–কর্মচারী থাকলে একটা ডে-কেয়ার সেন্টার দরকার। খুঁজে দেখলে এমন প্রতিষ্ঠান পাওয়া যাবে না, যারা এ আইন মানে।

ডে-কেয়ার সেন্টার যে শুধু উচ্চবিত্তের জন্য প্রয়োজন, তা নয়। আমাদের পোশাক কারখানার কর্মীদের একটা বিরাট অংশ নারী এবং অধিকাংশের সন্তান আছে। এই সন্তানেরা আমাদের মানবসম্পদ। তাদের সঠিক পরিচর্যা ও শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করা জরুরি।

১৮ বছরের একজন প্রাপ্তবয়স্ক মেয়ে যদি পড়াশোনায় ভালো হয়, তবে ছেলেদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে সে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারে। এ ক্ষেত্রে পরিবার, আশপাশের মানুষের সঙ্গে একরকম যুদ্ধ করে সে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। 

আর একজন পোশাককর্মীর ক্ষেত্রেও কিন্তু পরিবারের সঙ্গে একরকম যুদ্ধ করে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিতে হয়। আসলে নিজের জীবন সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে নারীদের কতখানি স্বাধীনতা আছে, সেটাও এখন প্রশ্নবিদ্ধ। 

যে মেয়েটি সুশিক্ষিত, সে আমাদের সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে মাতৃত্বকালীন ছুটি পান। কিন্তু বেসরকারি চাকরির ক্ষেত্রে আইনে যে মাতৃত্বকালীন ছুটির কথা বলা আছে, আমরা কি নিশ্চিত হয়ে বলতে পারি, নারীরা সে ছুটি পান?

মেয়েদের ক্ষেত্রে আরও দেখেছি, চাকরিতে যোগদানের পর তঁার যদি সন্তান হয়, তখন একটা বড় প্রশ্ন আসে, তিনি আর চাকরি করতে পারবেন কি না? তখন নিরাপত্তার প্রশ্ন আসে, তিনি তঁার সন্তানকে নিরাপদে রেখে কর্মস্থলে যেতে পারবেন কি না। এ ক্ষেত্রে শিশুটিকে আমরা অনেক সময় গৃহকর্মীর তত্ত্বাবধানে রেখে যাই। 

এটা আসলে কতখানি নিরাপদ বা শিশুটির বেড়ে ওঠার জন্য কতটা উপযোগী? বিদ্যমান যে ডে-কেয়ার সুবিধা, তা এখনো খুবই অপ্রতুল। 

শিক্ষার ক্ষেত্রেও বড় ধরনের বৈষম্য দেখতে পাই। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত বিনা মূল্যে শিক্ষার ব্যবস্থা থাকার পরেও কর্মক্ষেত্রে অনেক শিশুশ্রমিককে কাজ করতে দেখা যায়। কর্মক্ষেত্রে যেসব শিশু আছে, তারা যেন শিক্ষা থেকে বঞ্চিত না হয় সে জন্য সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে এসব শিশুর জন্য উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন

প্রতিটি মানুষের জন্য পর্যাপ্ত খোলা জায়গা প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে একজন পরিকল্পনাবিদ হিসেবে বলব, অবশ্যই আমাদের কিছু মানদণ্ড 

থাকতে হবে। হয়তো মানদণ্ডগুলো উন্নত বিশ্বের মতো হবে না, কিন্তু ক্ষমতা অনুযায়ী আমাদের ব্যবস্থা করতে হবে।

আমার কাছে মনে হয়, ঢাকা শহরে যত জমি আছে, খোলা জায়গা আছে, সেটাকে যদি আমরা পরিকল্পনার আওতায় নিয়ে আসি, তাহলে অবশ্যই আমরা এই শহরকে এখনো বাসযোগ্য করে গড়ে

 তুলতে পারব।

মো. মাহবুবুল আলম সিদ্দিকী
মো. মাহবুবুল আলম সিদ্দিকী

মো. মাহবুবুল আলম সিদ্দিকী

নগরসেবা ও দ্রুত নগরায়ণ অনেক বড় একটি চ্যালেঞ্জ। পরিসংখ্যান বলছে, শহরে জনসংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। ২০১৫ সালের একটি পরিসংখ্যানমতে, ৫ কোটি ৫০ লাখ মানুষ শহরে বাস করত এবং ২০২৯ সাল নাগাদ এর সংখ্যা বেড়ে ৮ কোটি ১ লাখে দাঁড়াবে।

অর্থনৈতিক সুযোগ-সুবিধার অভাব ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রচুর মানুষ শহরের দিকে চলে আসছে। সরকারি-বেসরকারিভাবে তাদের অনেক সুবিধাদি দেওয়া হচ্ছে।

অস্বীকার করার সুযোগ নেই যে এ ক্ষেত্রে সমন্বয় বড় একটি চ্যালেঞ্জ। সরকার এটা নিয়ে ভাবছে। দেখা যায় যে বাজেট ও প্রযুক্তিগত বিষয়ের মধ্যে সমন্বয় করা গেলে হয়তো এটার সমাধান করা যাবে। 

আমরা পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ও এসডিজি নিয়ে কথা বলছি। 

বলা হচ্ছে, এই নগরায়ণের বিষয়টি অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় নিয়ে আসা হবে। আর বাস্তবায়নের পথগুলোও চিহ্নিত করা হচ্ছে। সব
সংস্থা মিলে একত্রে কাজ করা গেলে এগুলো বাস্তবায়ন সম্ভব।

আনোয়ারুল হক
আনোয়ারুল হক

আনোয়ারুল হক

আমার মনে হয়, প্রতিটি উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো যথাযথ সমন্বয়। নগরায়ণের বিষয়টিও এর বাইরে নয়। প্রথমেই নীতি নিয়ে কথা বলতে চাই।

নগর হতে হবে নারী-শিশুবান্ধব। আবার যারা গ্রাম থেকে শহরে আসছে, তারা তো উন্নয়নের আশাতেই আসছে। তাদের সমস্যা যদি গ্রামেই সমাধান করা যায়, তাহলে শহরের ওপর চাপ পড়ে না।

অভিবাসনের কারণের মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনও একটি কারণ। আমরা সবাই জানি যে ২০৫০ সালের পর বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষই শহর অঞ্চলে বসবাস করবে। সে হিসাবে অভিবাসন তো তাদের অধিকার।

একটা ভালো জায়গায় থাকতে সবাই চায়। ভালো চাকরি চায়, ছেলেমেয়েদের মানুষ করতে চায়। এই অধিকারের জায়গাটা দেখতে হবে। আমরা আশা করব যে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় এই বিষয়ে স্পষ্ট আলোচনা থাকবে।

দ্বিতীয়ত, নারীর প্রতি সহিংসতার বিষয়ে বড় ঘটনার ক্ষেত্রে অনেক সংবাদ হলেও অনেক নীরব ঘটনা ঘটে, যা নিয়ে তেমন আলোচনা হয় না। 

আপনি দেখবেন, শহুরে প্রান্তিক পর্যায়ে নারীরা সারাক্ষণ চাপের মধ্যে থাকে। যেসব নারী পোশাকশিল্পে কাজ করে, তাদের অনেককেই বিরতিহীনভাবে দাঁড়িয়ে কাজ করতে হয়। এদিকে শিশুযত্নের তেমন কোনো ব্যবস্থা না থাকায় কর্মস্থলেও শিশুদের নিয়ে চিন্তিত থাকতে হয়। এই মানসিক চাপ ও স্বাস্থ্যের বিষয়টি নিয়ে নগর-পরিকল্পনার ক্ষেত্রে ভাবা উচিত।

তৃতীয়ত, নারী ও শিশুদের মধ্যে যারা শারীরিকভাবে সমস্যাযুক্ত, তাদের বিষয়টি আরও গুরুত্বপূর্ণ। 

দেখা যায় যে পরিকল্পনার মধ্যে এদের বিষয়টি একেবারেই থাকে না। ঢাকা শহরের কয়টা রাস্তায় হুইলচেয়ার চলার আলাদা লেন আছে কিংবা কয়টা ভবনে তারা উঠতে পারবে? 

এই বৈঠক থেকে আমরা আশা করব, যেন অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় এই বিষয়গুলোর বাস্তবায়ন হয়।

উমামা জিল্লুর
উমামা জিল্লুর

উমামা জিল্লুর

অনেক ক্ষেত্রে নারী ও শিশুর প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়। তাই প্রথমে আমাদের মনোযোগ দিতে হবে কেন নারী ও শিশুর প্রতি এমন আচরণ করা হচ্ছে। নারী ও শিশুর প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণই অধিকাংশ সমস্যার প্রধান কারণ।

আমরা কেন এই সমস্যার সমাধান না করে অন্যান্য বিষয়ের দিকে যাচ্ছি। পার্ক, পাবলিক স্পেস প্রভৃতি বিষয় নিয়ে আলোচনার আগে এই বিষয়টিই গুরুত্বপূর্ণ।

বাইরের দেশ কীভাবে এই প্রাতিষ্ঠানিক বিষয়গুলো নিয়ে পরিকল্পনা করছে, সেটা আমরা বিবেচনা করছি। কিন্তু তারা কীভাবে লিঙ্গবৈষম্যসহ অন্যান্য সমস্যা সমস্যা নিয়ে কাজ করছে, সেটা দেখছি না।

এই সমস্যাগুলো সমাধানের একটা ভালো উপায় হলো আরও বেশি করে পাঠ্যক্রমে এগুলো অন্তর্ভুক্ত করা। বিশেষ করে যৌনস্বাস্থ্য, লিঙ্গবৈষম্যসহ প্রভৃতি বিষয় ব্যাপকভাবে পাঠক্রমে নিয়ে আসা।

পাবলিক স্পেস তৈরি করলেও যদি আমরা শিশু-কিশোরদের সেখানে খেলতে যেতে উৎসাহিত না করি, তাহলে এটা আর কার্যকর হবে না। 

এখনো রাজধানীর ধানমন্ডিসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখলে দেখবেন, নারীদের কোনো গ্রুপ একজোট হয়ে ফুটবল বা ব্যাডমিন্টন খেলছে, এমন দৃশ্য চোখে পড়ে না । 

বর্তমানে দেশে যেসব পাবলিক স্পেস আছে, সেগুলোও মূলত পাবলিক স্পেস না। আগে এসব জায়গায় চাঁদা দিয়ে খেলা যেত, এখন সেটাও পারা যায় না। আমার মনে হয়, এখন যে জায়গা আছে, সেগুলো প্রবেশযোগ্য করা গেলে অল্প সময়ের জন্য হলেও সমাধান পাওয়া যাবে।

আর নারীর ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক উন্নয়নের কথাও এসেছে। নারীর অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন নারীর ক্ষমতায়ন। নারীর ক্ষমতায়ন না হলে তার অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব না।

সারওয়ার জাহান
সারওয়ার জাহান

সারওয়ার জাহান

প্রথমে আমি শিশুবান্ধব শহর নিয়ে বলতে চাই। এখানে শিশুবান্ধব বলতে একটি শহরে শিশুর অধিকার, সুযোগ-সুবিধা প্রভৃতি নিশ্চিত হচ্ছে কি না সেটা বোঝায়।

আমরা দেখতে পাই, পাবলিক পলিসিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে শিশুদের অধিকার বা অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা থাকে না।

শিশুরা আমাদের ভবিষ্যৎ। তারা কারও সম্পত্তি না। আমরা হয়তো মনে করতে পারি, তারা মা-বাবার সম্পত্তি৷ এটাও ঠিক না। তারা মূলত রাষ্ট্রেরই অংশ।

একসময় তারা যখন বড় হবে, তখন রাষ্ট্রের কর্ণধার হবে। উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। তারা যেহেতু রাষ্ট্রের অংশ, সেহেতু রাষ্ট্রের উচিত তাদের নিয়ে ভাবা। আর এটা বিভিন্ন নীতিতে প্রতিফলিত হওয়া উচিত।

নগর বা শহর শিশুবান্ধব করার ক্ষেত্রে জনগণের ক্ষমতায়ন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। একটি শহরকে কেন্দ্রীয় পরিকল্পনার মাধ্যমে উন্নত করা যাবে না। কারণ, সিদ্ধান্ত প্রণয়নে যদি শহরের মানুষের অংশগ্রহণ না থাকে, তবে সেখানে তাদের প্রয়োজন প্রতিফলিত হবে না। দুঃখজনক হলো, বাংলাদেশে আঞ্চলিক পর্যায়ে কোনো ক্ষমতা নেই। সব ক্ষেত্রে কেন্দ্রের ওপর নির্ভরশীল থাকতে হয়। 

একই অবস্থা নারীবান্ধব শহরের ক্ষেত্রেও। কোনো শহর নারী ও শিশুবান্ধব কি না, এ প্রশ্ন করার পাশাপাশি আমাদের শহরগুলো নাগরিকবান্ধব কি না, এটিও একটি বড় প্রশ্ন। 

নারীবান্ধব শহরের কথা বলতে গেলে বলতে হয়, নারীদের সম-অধিকারের কথা। শহরে নারীরা অর্থনৈতিক, সামাজিক কিংবা রাজনৈতিক সুযোগগুলো ঠিকমতো ভোগ করছে কি না তা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা জানি, তারা সেটা পাচ্ছে না। পাচ্ছে না কেন? কারণ, কোনো জেন্ডার সেনসেটিভ পরিকল্পনা আমাদের নেই। 

ঢাকা মহানগরের পরিকল্পনাও আমরা দেখতে পাই—নারীদের যেসব সংবেদনশীল ব্যাপার আছে, সেগুলোর একেবারেই উল্লেখ থাকে না। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পরিবহনব্যবস্থা—সব ক্ষেত্রেই এই কথা প্রযোজ্য। কাজেই সব প্রতিষ্ঠানকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে হবে। তবেই কেবল নারী ও শিশুবান্ধব শহর প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে।

হাসিনা বেগম
হাসিনা বেগম

হাসিনা বেগম

নারী ও শিশুবান্ধব নগর সেবার ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয়ে আমাদের দৃষ্টি দিতে হবে। ইতিমধ্যেই আমরা স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নিরাপত্তা প্রভৃতি নিয়ে কথা বলেছি। আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা কতটুকু, সেটা নিয়ে কথা বলা দরকার। এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে যে সমন্বয়ের অভাব, সেটা নিয়েও কথা বলা দরকার।

সরকারি, বেসরকারি এবং এনজিওর সেবা প্রদানকারীদের মধ্যে বড় ধরনের সমন্বয়ের অভাব আছে। এসব সংস্থার মধ্যে সমন্বয় করা জরুরি।

ডে-কেয়ার সেন্টারের ব্যাপারে বলতে চাই, অনেক পোশাক কারখানাতেই ডে-কেয়ার সেন্টার আছে। 

আবার যেগুলো আছে তা কতখানি মানসম্মত? কিন্তু পোশাকশিল্পের বাইরে অন্যান্য খাতেও নারীদের উপস্থিতি আছে। কিন্তু সেখানে ডে–কেয়ার সেন্টার নেই।

সরকারি অফিসের কথাই ধরা যাক। কয়টা সরকারি অফিসে ডে-কেয়ার সেন্টার আছে? এর বাইরে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের অবস্থা আরও খারাপ। এ খাতে কর্মরত মায়েদের শিশুদের দেখাশোনার জন্য সিটি করপোরেশনের ভূমিকা থাকা জরুরি।

নজরুল ইসলাম
নজরুল ইসলাম

নজরুল ইসলাম

শিশুরা বড় অসহায়। সেদিন নাতিকে ধানমন্ডি লেকের পাড়ে নিয়ে গেলাম। কিছুক্ষণ হাঁটার পর সে কোলে উঠতে চায়। সেখানে কোথাও পা ফেলার জায়গাটুকু নেই। সব জায়গা বড়দের জন্য।

আমার মেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করে। প্রতিদিন সকালে তাকে রাস্তা পার করে দেওয়ার জন্য নিজে যাই। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষককে ধানমন্ডি ২৭ নম্বর রাস্তাটা পার করে দিতে হয়। কোনো গাড়িই থামে না।

এখানে প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তাজুড়ে পথচারী পারাপারের কোনো ব্যবস্থা নেই৷ প্রায় কোথাও কোনো স্পিড লিমিটের চিহ্ন নেই। পরিবহনের ক্ষেত্রে সুশাসনে বিশাল সমস্যা। এর সমাধান হওয়া জরুরি।

আমাদের নগর বা শহর পরিকল্পনার মধ্যে কোথাও নারী ও শিশু কিংবা মানুষ মুখ্য বিষয় নয়। পরিকল্পনায় পরিবহন, পানি, অবকাঠামো প্রভৃতি বিষয় যদি মুখ্য হয়, তাহলে তো সমস্যা হবেই।

নগর সেবার কথা বলতে গেলে প্রথমেই আসে পানি, পয়োনিষ্কাশন, বিদ্যুৎ, জ্বালানি, বর্জ্য অপসারণ, পরিবহন, বিনোদন—এসব বিষয়ের পর আসে নিরাপত্তা। এগুলো ঠিকমতো হচ্ছে কি না তা দেখতে হবে।

এখন শ্রেণির কথা বললে আসে ধনী ও দরিদ্রের কথা। মধ্যবিত্তের কোনো জায়গা নেই। এরা এখন প্রায় গণনারই বাইরে। হয় গরিব হতে হবে, নইলে ধনী হতে হবে।

এখন নগরসেবার কথা আসছে। সেবা কাকে দেবেন? ধনী নারীকে, নাকি গরিব নারীকে? নাকি মধ্যবিত্ত নারীকে? শিশুর ক্ষেত্রেও একই প্রশ্ন।

যাঁরা সমাজবিজ্ঞানী আছেন, তাঁরা এসব বিষয় নিয়ে বিস্তারিত বিশ্লেষণ করবেন। শ্রেণি, লিঙ্গ, বয়স কিংবা পেশাগত দিক থেকে কার কী অবস্থা?

যাঁরা সেবা দেবেন, তাঁদের অবশ্যই বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে। কাকে কী সেবা দেবেন, সেটা ঠিক করতে হবে। 

শিশুদের খেলাধুলার মধ্যে রাখতে হবে, যাতে তারা ক্লান্ত হলে মোবাইল বা এই ধরনের কোনো বিষয়ে অাসক্ত হবে না। 

কোটি টাকা খরচ করে পার্ক তৈরি করা হয়। সুপার পার্ক করার দরকার নেই। সাধারণ পার্ক করেন। সর্বোচ্চসংখ্যক শিশুর জন্য করেন। সর্বোচ্চসংখ্যক নারীর জন্য করেন।

শামসুল আলম
শামসুল আলম

শামসুল আলম

আমরা সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ গণমাধ্যমের দ্বারস্থ হচ্ছি। এতে আপনারা বুঝতে পারবেন এই বিষয়ে কতটা গুরুত্ব দিচ্ছি। কারণ, সামনেই অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা করতে যাচ্ছি।

এ পরিকল্পনা হবে এসডিজি বাস্তবায়নে দ্বিতীয় পরিকল্পনা। এ ছাড়া এটি হবে ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত দেশ গড়ার লক্ষ্যমাত্রার প্রথম পরিকল্পনা।

এখানে আপনারা নগরের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পরিবহন, নিরাপত্তাসহ প্রভৃতি নিয়ে কথা বলেছেন। এগুলোর কোনোটি নিয়েই দ্বিমত পোষণ করার কোনো সুযোগ নেই।

নগরে দারিদ্র্য বাড়ছে, গ্রামাঞ্চলে কমে আসছে। এগুলো সবই ঠিক। নাগরিকদের সক্ষমতা বৃদ্ধির ওপর নজর দিতে হবে। 

এখন সারা দেশে শিশু ধর্ষণ ও হত্যার পরিমাণ বৃদ্ধির খবর পাওয়া যাচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে নারী নির্যাতন ও হত্যা হচ্ছে। এই সমস্যার সমাধান কীভাবে করা যায়, সেটা নিয়ে ভাবতে হবে।

আমার মনে হয়, মাদ্রাসাশিক্ষায় ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি পার্থিব শিক্ষাকে যুক্ত করার মধ্য দিয়ে বাস্তবমুখী ও জীবনমুখী করা দরকার।

খোলা জায়গার কথা এসেছে। নদী-খালগুলো উদ্ধার করে পাড়গুলো ঠিক করেন। ওখানে নৌকা চলাচলের ব্যবস্থা হবে, যেমনটা হাতিরঝিলে হয়েছে। এতে সুন্দর চলাচলও হবে, যানজটও কমবে।

আমাদের কিছু সরকারি বা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আর্লি চাইল্ডহুড ডেভেলপমেন্ট বিষয়ে কোর্স আছে? শিশুদের মানসিক বিকাশের জন্য এটা খুব জরুরি।

 পাড়ায় পাড়ায় বিউটি পারলার হলেও ডে-কেয়ার সেন্টার হয়নি কেন? কারণ, যথাযথ প্রশিক্ষণ নেই৷ যার-তার হাতে শিশুকে দেওয়া যায় না। তাই আর্লি চাইল্ডহুড ডেভেলপমেন্টের ওপর যথাযথ প্রশিক্ষণ প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে। 

কেবল প্রশিক্ষণ প্রদানের ব্যবস্থা করলেই হবে না। সঙ্গে সঙ্গে এটাও নিশ্চিত করতে হবে যেন প্রশিক্ষিত জনবল এসব ডে–কেয়ার সেন্টার কাজ করার সুযোগ পায়। 

উদ্যোক্তাদের ডে–কেয়ার সেন্টার প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসতে হবে। এ জন্য তাদের সহজ শর্তে মূলধন জোগান দেওয়ার ব্যবস্থাও করতে হবে। 

যাঁরা অংশ নিলেন 

মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম: মেয়র, গাজীপুর সিটি করপোরেশন

শামসুল আলম: সদস্য (সিনিয়র সচিব), সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ, পরিকল্পনা কমিশন (জিইডি)

নজরুল ইসলাম: চেয়ারম্যান, সেন্টার ফর আরবান স্টাডিজ (সিইউএস) ও সাবেক চেয়ারম্যান, ইউজিসি 

হোসেন জিল্লুর রহমান: নির্বাহী চেয়ারম্যান, পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) 

সারওয়ার জাহান: পরিচালক, পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট

ইশরাত ইসলাম: অধ্যাপক, ডিপার্টমেন্ট অব আরবান অ্যান্ড রিজিওনাল প্ল্যানিং, বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)

আনোয়ারুল হক: সামাজিক উন্নয়ন উপদেষ্টা (ডিএফআইডি) 

আশেকুর রহমান: হেড অব প্রোভার্টি অ্যান্ড আরবানাইজেশন, ইউএনডিপি

হাসিনা বেগম: সোশ্যাল পলিসি স্পেশালিস্ট, ইউনিসেফ

মো. সোহেল রানা: সিনিয়র প্রোগ্রাম কো–অর্ডিনেটর, নগর পরিকল্পনা ও ডিজাইন ব্রাঞ্চ, ইউএন হ্যাবিট্যাট

মো. মাহবুবুল আলম সিদ্দিকী: সিনিয়র সহকারী প্রধান, সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ, পরিকল্পনা কমিশন

উমামা জিল্লুর: গবেষণা সহযোগী ও আরবান প্রোভার্টি স্টাডি কো–অর্ডিনেটর, পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি)

আব্দুল কাইয়ুম

আলোচনায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এসেছে। এখান থেকেই নগরকে নারী ও শিশুবান্ধব করার উদ্যোগ নিতে হবে। 

নগরকে নারী ও শিশুবান্ধব করার জন্য কর্তৃপক্ষের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে সবাইকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। 

আলোচনায় অংশগ্রহণের জন্য প্রথম আলোর পক্ষ থেকে সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।