ভোলায় জেলেদের বিক্ষোভ

বৃহস্পতিবার প্রথম আলোর খবর অনুযায়ী, পূর্ব ইলিশা ইউনিয়নের জেলেরা সরকারি চাল না পেয়ে গত মঙ্গলবার মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, ইউপি চেয়ারম্যান হাসনাইন আহমেদ মিয়া চাল বিতরণে অনিয়ম ও দুর্নীতি করছেন। ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে পাঁচ শতাধিক জেলে পরিবার রয়েছে। এর মধ্যে ২৪০ জনের জেলে কার্ড আছে। চাল পেয়েছেন মাত্র ১০০ জন। আবার যাঁরা চাল পেয়েছেন, তাঁদের নির্ধারিত ২০ কেজির কম দেওয়া হয়েছে।

৯ অক্টোবর মধ্যরাত থেকে দেশের সব নদ-নদী ও বঙ্গোপসাগরে ইলিশ ধরার ওপর ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে। এই ২২ দিন ইলিশ ধরার পাশাপাশি সংরক্ষণ, বিপণন, পরিবহন আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। নিষেধাজ্ঞাকালে জেলেদের পুনর্বাসনে বরিশাল বিভাগের ৩ লাখ জেলেকে ২০ কেজি করে চাল দেওয়ার কথা সরকারের। কিন্তু সেই চাল তাঁরা ঠিকভাবে পাচ্ছেন না। এটা খুবই দুঃখজনক।

ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধি ও সংরক্ষণের জন্যই এ সময় ইলিশ মাছ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু একটা কথা মনে রাখতে হবে, এ সময় জেলেদের মধ্যে ঠিকভাবে চাল বিতরণ না করা হলে বা তাঁদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না করলে তাঁদের না খেয়ে মরতে হবে, সেটি কোনোভাবে কাম্য হতে পারে না।

উল্লেখ্য, জেলেদের জন্য সরকার যে চাল বরাদ্দ করে, তা যথেষ্ট নয়। যতজন জেলের জন্য চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়, প্রকৃত জেলের সংখ্যা থাকে তার চেয়ে অনেক বেশি। আবার বরাদ্দকৃত চালও ঠিকভাবে বিতরণ হয় না। চাল বিতরণের দায়িত্বে থাকা ইউপি চেয়ারম্যানরা বিতরণের আগেই চাল বিক্রি করে দেন বা পরিমাণে কম দেন। অনেক সময় দেখা যায়, জেলে হিসেবে নিবন্ধিত হওয়া জেলেরাও চাল পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। আবার নিবন্ধন নেই, এমন জেলেরা চাল পাচ্ছেন। এমনও হয়েছে যে চাল দেওয়া হচ্ছে দেরি করে। ফলে অনেক জেলে ও তাঁদের পরিবার-পরিজনকে অর্ধাহারে-অনাহারে থাকতে হয়। তখন বাধ্য হয়ে তাঁরা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশ মাছ ধরতে যান। এভাবে মাছ ধরতে গিয়ে অনেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ধরা পড়েন। তখন আবার তাঁদের জেল-জরিমানা গুনতে হয়।

এ ব্যাপারে আমরা সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। জেলেদের মধ্যে চাল বিতরণে যাঁরা অনিয়ম করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রকৃত জেলেদের জেলে তালিকায় নিবন্ধন করতে হবে। মোটকথা, জেলেদের মধ্যে চাল বিতরণে অনিয়ম-দুর্নীতি কঠোর হাতে বন্ধ করতে হবে।