তুরাগ নদে সাকাশ্বর সেতু

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার সাকাশ্বর এলাকায় তুরাগ নদে নির্মীয়মাণ সেতুর সংযোগ সড়ক না থাকায় এলাকাবাসী লোহার মই বেয়ে চলাচল করছে, যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

প্রথম আলোর খবর অনুযায়ী, গাজীপুর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এলজিইডি সাকাশ্বর এলাকার মানুষের যাতায়াতের সুবিধার জন্য ২০১৭ সালে ৪ কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যয়ে তুরাগ নদে সেতুটির নির্মাণকাজ শুরু করে। কিন্তু সেতুর পূর্ব পাশের এলাকা সিটি করপোরেশনের অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় সংযোগ সড়কের নির্মাণকাজ শেষ হতে বিলম্ব হচ্ছে। কোনো এলাকা সিটি করপোরেশনের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার উদ্দেশ্য সেখানকার বাসিন্দাদের সুযোগ–সুবিধা বাড়ানো। আর এখানে সিটি করপোরেশন এলাকায় অন্তর্ভুক্ত করার অজুহাতে সেতুর কাজ অহেতুক বিলম্বিত করা হচ্ছে। এটি উন্নয়নের উল্টো যাত্রা।

সংযোগ সড়কটি নির্মিত না হওয়ায় এবং সেতুর নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ায় স্থানীয় নারী-পুরুষ ও শিশুদের চলাচল করতে দারুণ অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে। সংযোগ সড়ক না থাকায় নির্মীয়মাণ সেতুতে উঠতে হচ্ছে লোহার মই বেয়ে। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যা হচ্ছে বিদ্যালয়ের ছোট ছোট শিক্ষার্থী ও বাজারফেরত মানুষকে। বই হাতে শিক্ষার্থীদের মই বেয়ে উঠতে হয়। আবার বাজারফেরত মানুষগুলোও ওঠানামা করেন ভারী থলে নিয়ে। আলো ঝলমলে ঢাকার অদূরে তুরাগ নদের ওপর নির্মীয়মাণ সেতুর এই দশা কেন? কেন দ্রুত কাজ শেষ করা গেল না?

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এই এলাকায় চলাচলের জন্য তেমন রাস্তা নেই। সেতুর কাজ শেষ হলে বাসিন্দারা সহজে নদী পার হতে পারতেন। এখন তাঁদের পার হতে হয় নৌকায়। আবার নৌকায় অনেক সময় মাঝি থাকেন না। একদিকে সংযোগ সড়কের অভাব, অন্যদিকে সেতু নির্মাণকাজে ধীরগতি—দুই আপদের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন এলাকাবাসী।

তাই স্থানীয় লোকজনের দাবি, অবিলম্বে সংযোগ সড়ক নির্মাণ ও সেতুর কাজ দ্রুত শেষ করা হোক। গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বলেছেন, লোহার মই পার হয়ে এলাকাবাসী চলাচল করছেন, সেই তথ্য নাকি তাঁর জানা নেই। উপযুক্ত জনপ্রতিনিধিই বটে!

গাজীপুরে এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবদুল বারেক জানিয়েছেন, সেতুর নির্মাণকাজ প্রায় শেষ হয়ে গেছে। বাকি একটি স্ল্যাব বসানো হলেই কাজ শিগগির শেষ হবে। তাঁর এই শিগগির কবে আসবে, সেটাই এলাকাবাসীর প্রশ্ন। যেখানে কয়েক হাজার মানুষের চলাচলের প্রশ্ন, সেখানকার উন্নয়নকাজ নিয়ে এই গাফিলতি মেনে নেওয়া যায় না।

অবিলম্বে সাকাশ্বর এলাকায় তুরাগ নদের ওপর নির্মীয়মাণ সেতু ও সংযোগ সড়কের কাজ শেষ করতে কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে, এটাই প্রত্যাশিত।