আমাদের মহৎ অর্জনের একটি দিন আজ

আনিসুজ্জামান
আনিসুজ্জামান
>

জাতীয় অধ্যাপক ও শিক্ষাবিদ আনিসুজ্জামান। মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়ার জন্য তিনি প্রথমে চট্টগ্রাম থেকে আগরতলা যান, সেখান থেকে কলকাতায় গিয়ে মুক্তিযুদ্ধকালীন সরকারের কাজে যুক্ত হন। ইংরেজিতে লেখা বাংলাদেশের সংবিধানের বাংলা ভাষান্তরও করেন তিনি। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে প্রথম আলোর সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি দেশ ও সমাজ নিয়ে নিজের অনুভূতি ও আকাঙ্ক্ষার কথা জানিয়েছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সোহরাব হাসান

প্রথম আলো: আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ৪৯তম বিজয় দিবস উদ্‌যাপিত হতে যাচ্ছে আজ ১৬ ডিসেম্বর। আপনার অনুভূতি জানতে চাইছি। যে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে আপনারা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন, তা কতটা পূরণ হয়েছে?

আনিসুজ্জামান: বিজয় দিবস সামনে এলে আনন্দের অনুভূতি জাগে। আমাদের মহৎ অর্জনের একটি দিন। সেই সঙ্গে মনে হয় আমরা আমাদের অনেক লক্ষ্য অর্জন করতে পারিনি। ১৯৭১ সালে আমরা চেয়েছিলাম পাকিস্তানের নিপীড়ন থেকে মুক্ত হতে। এই প্রয়াসে আমরা সফল হই। সে সময়ে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার রাষ্ট্রপরিচালনায় তিনটি নীতি ঘোষণা করে—গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্র। পরে পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে এসে বঙ্গবন্ধু এর সঙ্গে যোগ করেন জাতীয়তাবাদ। বাংলাদেশের সংবিধানে রাষ্ট্রপরিচালনার মূলনীতি হিসেবে গৃহীত হয়। কিন্তু এর কোনোটি পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে পারিনি আমরা। আমাদের দেশে একাধিকবার সামরিক শাসন প্রবর্তিত হয়েছে। গণতন্ত্র যখন মুক্ত হয়েছে, তখনো গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো শক্ত ভিত্তির ওপর স্থাপিত হয়নি। ধর্মনিরপেক্ষতা বলতে কেউ সব ধর্মের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান বুঝেছেন, কেউ বুঝেছেন ধর্মের সঙ্গে রাষ্ট্রের সংযোগহীনতা। একে তো ধর্মনিরপেক্ষতা ধারণা সম্পর্কে এই অস্পষ্টতা, অন্যদিকে সাম্প্রদায়িক শক্তি নানা সময়ে নানাভাবে মাথাচাড়া দিয়ে
উঠেছে। তার ফলে আমরা ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ধর্মস্থান, বাড়িঘর আক্রান্ত হতে দেখি এবং তাদের অনেককেই শারীরিক লাঞ্ছনার শিকার হতে দেখি।

প্রথম আলো: কিন্তু বাহাত্তরের সংবিধান তো বাঙালি জাতিসত্তা ব্যতীত অন্য কোনো জাতিসত্তাকে স্বীকার করেনি। বাংলাদেশের সব নাগরিককে বাঙালি বলে অভিহিত করেছে।

আনিসুজ্জামান: বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর নৃতাত্ত্বিক সংখ্যালঘুদের বিষয়টি সামনে চলে আসে। ফলে কেবল বাঙালি জাতীয়তাবাদ বাংলাদেশের জন্য যথেষ্ট মনে হয় না। নৃতাত্ত্বিক সংখ্যালঘুদের সমানাধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে আমরা অগ্রসর হতে পারিনি। আর সমাজতন্ত্রের ধারণা আসলে পরিত্যক্ত হয়েছে। বিশেষ করে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর বিশ্বায়নে যে পরিবর্তন এসেছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে এখন আর কেউ সমাজতন্ত্রের কথা বলছে না। আমরা একটি কল্যাণমুখী রাষ্ট্র গড়ে তোলার কথাই ভাবছি। সেখানে ব্যক্তিগত সম্পত্তি আহরণ ও রক্ষা একটি বড় লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আমাদের সংবিধান থেকে ধর্মনিরপেক্ষতা বাদ দেওয়া হয়েছিল। এখন সেটি ফিরে এসেছে। কিন্তু একই সঙ্গে ইসলাম রাষ্ট্রধর্ম রয়ে গেছে। এসব বিবেচনা করে বলতে হবে, আমরা বাংলাদেশের ঘোষিত লক্ষ্য থেকে সরে এসেছি এবং সেই লক্ষ্য অর্জনের আন্তরিক কোনো চেষ্টা আর অবশিষ্ট নেই।

প্রথম আলো: রাষ্ট্রধর্মের বিরুদ্ধে তো আপনারা আদালতে রিট করেছিলেন?

আনিসুজ্জামান: আমরা রাষ্ট্রধর্ম প্রতিষ্ঠাকে বাংলাদেশের সংবিধানের মূল কাঠামোর সঙ্গে সাংঘর্ষিক বিবেচনা করে তখনই হাইকোর্ট বিভাগে একটি রিট আবেদন করেছিলাম। এই রিটের পক্ষভুক্ত ছিলাম বিচারপতি কামালউদ্দিন হোসেন, সুফিয়া কামাল, দেবেশ ভট্টাচার্য, কে এম সোবহান, কবীর চৌধুরী, শামসুর রাহমান, বদরুদ্দীন উমর, ব্যারিস্টার ইশতিয়াক আহমদ, ফয়েজ আহমদ ও আমি। দীর্ঘকাল পর তার শুনানি হয়। মাননীয় আদালত মনে করলেন, ওই রিট করার সংগত অধিকার আমাদের নেই। ফলে রিটটি খারিজ হয়ে যায়। আমরা অবশ্য এর বিপক্ষে আপিল করতে পারিনি।

প্রথম আলো: একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ছিল জাতিগত যুদ্ধ। পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে লড়াই করে আমরা জয়ী হলাম কিন্তু জাতিগঠনের কাজে সফল হলাম না কেন?

আনিসুজ্জামান: আমাদের জাতিসত্তা গঠনের একটা প্রচেষ্টা একাত্তরে হয়েছে। তবে মুক্তিযুদ্ধকালে আমরা যেমন ঐক্যবদ্ধ ছিলাম, মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের পরে আর কখনোই তেমন ঐক্যবদ্ধ থাকিনি। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে আমরা আবার ঐক্যবদ্ধ হতে পেরেছিলাম। কিন্তু তাও স্থায়ী হয়নি। আজকের বাংলাদেশ বিভক্ত জাতির দেশ। কোনো মৌলিক প্রশ্নে সমগ্র জনসাধারণের মধ্যে মতৈক্য খুঁজে পাব না। এটি দেশের জন্য ভালো হয়নি। মতপার্থক্য থাকবে, নানা রাজনৈতিক দল সক্রিয় থাকবে, কিন্তু মৌলিক কতগুলো বিষয়ে সব নাগরিকের মতৈক্য খুবই প্রয়োজন।

প্রথম আলো: বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম হাতিয়ার ছিল সংস্কৃতি। ভাষা ও সংস্কৃতির লড়াই থেকেই রাজনৈতিক সংগ্রাম পরিণতি পেয়েছে। কিন্তু স্বাধীনতার পর সেই সংস্কৃতির জাগরণ আর দেখলাম না।

অনিসুজ্জামান: পাকিস্তান আমলে সাংস্কৃতিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমাদের রাজনৈতিক চেতনা বিকশিত হয়েছিল। সংস্কৃতিকে আমাদের জীবন ও রাষ্ট্র গঠনের মূল উপাদান হিসেবে আমরা পেয়েছিলাম। কিন্তু স্বাধীন বাংলাদেশে বড় রকম কোনো সাংস্কৃতিক আন্দোলন ঘটেনি এবং আমাদের জীবনের মর্মমূলে সংস্কৃতি যে ভূমিকা পালন করতে পারত, সেটি হয়নি। নববর্ষ বা একুশে ফেব্রুয়ারিতে আমরা একধরনের সাংস্কৃতিক উচ্ছ্বাস দেখি, কিন্তু সেটা অবলম্বন করে জীবনধারণের কোনো প্রয়াস দেখি না। তাই সংস্কৃতি অনেকখানি আমাদের জীবনের বাইরে রয়ে গেল, মর্মে প্রবেশ করল না।

প্রথম আলো: সংস্কৃতির পর আসি শিক্ষা প্রসঙ্গে। শিক্ষার অধোগতি আমরা ঠেকাতে পারছি না কেন?

আনিসুজ্জামান: শিক্ষাক্ষেত্রে আমাদের একটা বড় সমস্যা একাধিক প্রণালির শিক্ষাব্যবস্থার উপস্থিতি। ইংরেজি মাধ্যম, বাংলা মাধ্যম, সাধারণ মাদ্রাসা ও কওমি মাদ্রাসার ধারা পাশাপাশি চলছে। ইংরেজি মাধ্যম ছাড়া সব ধারা রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় চলছে। একই রাষ্ট্র এত ভিন্ন ভিন্ন প্রণালির শিক্ষাব্যবস্থা কেন রেখেছে, তার সন্তোষজনক উত্তর নেই। অন্যদিকে স্বাধীনতালাভের পর শিক্ষার প্রতি মানুষের আগ্রহ বেড়েছে। অনেক স্কুল-কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ছাত্রের সংখ্যা বেড়েছে; ছাত্রীর সংখ্যাও সন্তোষজনক। এই বিপুল শিক্ষার্থীদের উপযুক্ত শিক্ষা দেওয়ার মতো শিক্ষক আমরা তৈরি করতে পারিনি। ফলে বিদ্যালয়ে নিচের দিকে শিক্ষাদানের কাজটা যথাযথ হয়ে উঠছে না। শুধু ভাষাশিক্ষার দিকটা লক্ষ করলে এর প্রমাণ পাওয়া যাবে। আমাদের ছাত্রছাত্রীরা না বাংলায়, না ইংরেজিতে প্রত্যাশিত পারদর্শিতা লাভ করছে। আবার ওপরের দিকে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় ও উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে, কিন্তু তার সবগুলোতে উপযুক্ত শিক্ষক নেই, পড়ালেখার অনুকূল পরিবেশ নেই। আমরা অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী পাচ্ছি, কিন্তু মেধা দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে। এটি শিক্ষাক্ষেত্রে আমাদের বড় রকম সংকট তৈরি করেছে।

প্রথম আলো: আমরা অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অনেক উন্নতি করেছি। আবার বৈষম্যও বেড়েছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে এটি কতটা সামঞ্জস্যপূর্ণ?

আনিসুজ্জামান: গত ৪৮ বছরে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উন্নতি বিস্ময়কর। কিন্তু উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে বৈষম্যও বাড়ছে। আমাদের লক্ষ্য হতে হবে সব মানুষকে দারিদ্র্যসীমার ওপর নিয়ে আসা এবং আর্থিক বৈষম্য কমিয়ে আনা।

প্রথম আলো: অর্থনৈতিক উন্নতি হলেও মানবিকতা তথা নীতি-মূল্যবোধের সূচকে পিছিয়ে থাকাকে কীভাবে দেখছেন?

আনিসুজ্জামান: আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা শিক্ষার্থীদের মধ্যে নৈতিক বা মানবিক মূল্যবোধ জাগাতে ব্যর্থ হয়েছে। তার ফলে সমাজে নানা রকম সংকট তৈরি হচ্ছে। একটি ঐক্যবদ্ধ উন্নত জাতি গড়তে হলে মানবিক মূল্যবোধ সবার মধ্যে থাকতে হবে।

প্রথম আলো: আমাদের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়ছে।

আনিসুজ্জামান: আমি আগেই বলেছি, আমাদের গণতন্ত্রের ভিত্তি দুর্বল। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো শক্ত ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত নয়। আর এ জন্য গণতন্ত্রের সুফল আমরা পাই না। অনেক সময় গণতন্ত্রের মূল্যবোধের অভাব প্রকট হতে দেখি। রাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গ নিজের মতো চললে আমরা গণতন্ত্রের সফলতা দেখতাম। আমাদের মধ্যে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের যথেষ্ট অভাব আছে। আমরা একবার বলছি, সুষ্ঠু গণতন্ত্রের জন্য শক্তিশালী বিরোধী দল দরকার, আবার পরক্ষণে রাষ্ট্রীয় জীবন থেকে বিরোধী দলকে নিশ্চিহ্ন করার হুমকি দিচ্ছি। এটি গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ হতে পারে না। জাতীয় সংসদ এখন পর্যন্ত আমাদের রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হলো না। এটি আক্ষেপের বিষয়।

প্রথম আলো: প্রতিটি গণতান্ত্রিক সমাজে বুদ্ধিজীবীদের একটি বিশিষ্ট ভূমিকা থাকে। কিন্তু আমাদের দেশে বুদ্ধিজীবীরা সে ধরনের কোনো ভূমিকা রাখতে পারছেন কি?

আনিসুজ্জামান: আমাদের বুদ্ধিজীবীরা অনেকাংশেই বিভক্ত। আমরা অনেক বুদ্ধিজীবীকেই কোনো না কোনো রাজনৈতিক দলের বক্তব্যকে আওড়াতে দেখি। রাজনৈতিক বিভাজনের ঊর্ধ্বে গিয়ে দেশের মঙ্গলের জন্য কাজ করতে বুদ্ধিজীবীরা পারছেন বলে মনে হয় না। তবে আশা করা যায়, এই অবস্থার পরিবর্তন হবে।

প্রথম আলো: দেশ রাজনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এর প্রতিকার কী?

আনিসুজ্জামান: সংকট আছে বলে মনে হয় না, তবে সমস্যা আছে। সমস্যাগুলো নানা ধরনের। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের কথাটি আগেই বলেছি। এই সমস্যাগুলোর সমাধান আমাদের করতে হবে এবং জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য নীতি ও কর্মসূচি নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে।

প্রথম আলো: আপনি নিশ্চয়ই স্বীকার করবেন যে দেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সংকুচিত হয়ে পড়েছে।

আনিসুজ্জামান: আমি মনে করি, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বাংলাদেশে আছে। তবে অনেক ক্ষেত্রে তার প্রয়োগে বাধা দেওয়া হয়। কোনো কোনো আইন মতপ্রকাশের অধিকার ক্ষুণ্ন করে বলেও আমি মনে করি।

প্রথম আলো: বিজয়ের ৪৮তম বার্ষিকীতে নতুন প্রজন্মের কাছে আপনারা কী রেখে যাচ্ছেন? তাদের জন্য আপনার কী পরামর্শ?

আনিসুজ্জামান: নতুন প্রজন্মের কাছে বলার তেমন কিছু নেই। কেননা আমাদের প্রজন্ম নিজের কাজে সম্পূর্ণ সফল হয়নি। আমি আশা করি, আমরা যা পারিনি, নতুন প্রজন্ম তা পারবে। তাদের মধ্যে দেশপ্রেমের আবেগ আছে। সেই আবেগকে তারা দেশসেবার কাজে লাগাবে বলে আমার প্রত্যাশা।

প্রথম আলো: দুই বছর পরই স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্‌যাপিত হতে যাচ্ছে। কী আশা করেন?

আনিসুজ্জামান: আমি আশা করি, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে আরও আনন্দের সঙ্গে দেশের অগ্রগতির কথা বলতে পারব।

প্রথম আলো: আপনি দীর্ঘদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন। আবার প্রয়োজনে রাষ্ট্রীয় দায়িত্বও পালন করেছেন। কোনটি আপনাকে বেশি তৃপ্তি দিয়েছে?

আনিসুজ্জামান: শিক্ষকতায় আমি আনন্দ পেয়েছি। এর বাইরে বলতে হয়, আমার কোনো কাজ যদি দেশের পক্ষে কল্যাণকর হয়ে থাকে, তাহলে সেটি আমার বাড়তি অর্জন।

প্রথম আলো: সারা বিশ্বেই দক্ষিণপন্থার জয়জয়কার। বাংলাদেশ এই প্রলয় থেকে কীভাবে নিজেকে রক্ষা করবে?

আনিসুজ্জামান: সারা বিশ্বে দক্ষিণপন্থার রাজনীতি জায়গা করে নিচ্ছে, এটি আশঙ্কার কথা। আমি আশা করব, আমাদের দেশ এই পথে অগ্রসর হবে না।

প্রথম আলো: সম্প্রতি ভারতে নাগরিক আইন সংশোধন করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে যেসব অমুসলিম সে দেশে গেছে, তারা নাগরিকত্ব পাবে। এটি দ্বিজাতিতত্ত্বের পুনর্বহালই বলা যায়। সাতচল্লিশে ভারত দ্বিজাতিতত্ত্ব অস্বীকার করে সবার জন্য রাষ্ট্র তৈরি করার কথা বলেছিল।

আনিসুজ্জামান: এই খবর আমাকে বিচলিত করে। ভারতের মতো দেশে যদি আজ ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতার উত্থান হয়, তাহলে সেটি হবে অত্যন্ত বেদনাদায়ক এক পরিণতি। এর প্রভাব বাংলাদেশেও পড়তে পারে। তবে বাংলাদেশের শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ কোনো চরমপন্থার দিকে অগ্রসর হবে না বলেই আমার বিশ্বাস।