কর্মক্ষেত্রে নারীর প্রতি যৌন হয়রানি ও প্রতিকার

>
গত ২৮ জানুয়ারি প্রথম আলোর আয়োজনে এবং মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন ও সুইডিশ সিডার সহযোগিতায় ‘কর্মক্ষেত্রে নারীর প্রতি যৌন হয়রানি ও প্রতিকার’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
গত ২৮ জানুয়ারি প্রথম আলোর আয়োজনে এবং মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন ও সুইডিশ সিডার সহযোগিতায় ‘কর্মক্ষেত্রে নারীর প্রতি যৌন হয়রানি ও প্রতিকার’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
গত ২৮ জানুয়ারি প্রথম আলোর আয়োজনে এবং মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন ও সুইডিশ সিডার সহযোগিতায় ‘কর্মক্ষেত্রে নারীর প্রতি যৌন হয়রানি ও প্রতিকার’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ গোলটেবিলে উপস্থিত আলোচকদের বক্তব্য সংক্ষিপ্ত আকারে এই ক্রোড়পত্রে প্রকাশিত হলো।

আলোচনা

আব্দুল কাইয়ুম

যৌন হয়রানি নিয়ে অনেক দিন ধরে কাজ হচ্ছে। যৌন হয়রানি রোধে আইন আছে। উচ্চ আদালতের আদেশ আছে। তা সত্ত্বেও সমাজে যৌন হয়রানি বন্ধ হচ্ছে না। সম্প্রতি টাঙ্গাইলে চারজন মেয়ে তাদের এলাকায় বেড়াতে গিয়ে নির্যাতনের শিকার হয়েছে।

এ বিষয়ে আমাদের কাজ করে যেতে হবে। কেবল কর্মক্ষেত্র নয়, অন্য যেসব জায়গায় যৌন হয়রানি হয়, সেটাও সামনে আনতে হবে।

মো.মুজিবুল হক
মো.মুজিবুল হক

মো.মুজিবুল হক
এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি আলোচনা। আমি সংসদে এ বিষয়ে কথা বলেছি। নারীরা এখন এগিয়ে যাচ্ছেন। কর্মক্ষেত্রসহ সব জায়গায় তাঁদের নিরাপত্তা দিতে হবে। আজকের আলোচনায় ব্যবসায়ী নেতা আছেন, শ্রমিকপক্ষের প্রতিনিধি আছেন। সরকার, এনজিও ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি আছেন। সবাই যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে কাজ করলে নিশ্চয়ই এটা বন্ধ হবে।

আজকের আলোচনায় যেসব দিকনির্দেশনা আসবে, সেটা নিয়ে আমি সংসদে আলোচনা করব। সরকারকে এ বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলব। আইন পরিবর্তনের ক্ষেত্রেও আমাদের ভাবতে হবে।

শাহীন আনাম
শাহীন আনাম

শাহীন আনাম
আজকের আলোচনার বিষয়টি নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ। নারীকে তাঁর কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা দিতে হবে। তিনি যদি কর্মক্ষেত্রে নিরাপদ বোধ করতে পারেন, তাহলে বেশি কাজ করতে পারবেন। তাই কর্মক্ষেত্রে নারীর নিরাপত্তার বিষয়টি অত্যন্ত জরুরি।

শুধু পোশাকশিল্প নয়, দেশের যেকোনো কর্মক্ষেত্রে নারীরা কাজ করুন না কেন, সব ক্ষেত্রে তাঁদের নিরাপত্তা দিতে হবে। এমন একটা পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে যেন তাঁরা কোনোভাবেই যৌন হয়রানির শিকার না হন।

দেশে আজ প্রায় সব ধরনের পেশায় নারীরা কাজ করছেন। তাঁদের যদি আমরা নিরাপত্তা দিতে না পারি, এটা আমাদের জন্য লজ্জার।

বাড়ি, কর্মস্থল, পরিবহন, রাস্তাঘাট—কোথাও নারী নিরাপদ নন। সর্বত্র নারীর প্রতি একধরনের হয়রানি, সহিংসতা, নির্যাতন চলছেই। প্রায় তিন দশক ধরে নারীর জন্য কাজ করার পরও আজ আমরা হতাশ।

যত দিন পর্যন্ত সব ক্ষেত্রে নারীর সম্মান না বাড়বে, তত দিন এ সহিংসতা চলতেই থাকবে। নারী সংসারে, সমাজে, রাষ্ট্রে সমানভাবে অবদান রাখছেন। তাই তাঁরা যেন কোনো ধরনের হয়রানির শিকার না হন, সে জন্য সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

বনশ্রী মিত্র নিয়োগী
বনশ্রী মিত্র নিয়োগী

বনশ্রী মিত্র নিয়োগী
যৌন হয়রানির বিষয়ে আরও সচেতনতা প্রয়োজন। যৌন হয়রানির বিষয়টি আমরা প্রধানত বৈষম্যের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে চাই। আমরা একটি আদর্শ কর্মপরিবেশের কথা বলছি। এ ক্ষেত্রে যৌন হয়রানি ছাড়াও আরও কয়েকটি বিষয় বিবেচনা করতে হবে।

কর্মক্ষেত্রে আসতে দেরি হলে, কাজ কম করলে কী ধরনের আচরণ করা হচ্ছে, সহকর্মীরা কী ধরনের আচরণ করছেন—একটা আদর্শ কর্মক্ষেত্রের জন্য এসব বিষয়ও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা প্রয়োজন।

কর্মক্ষেত্রে বললেই পোশাকশিল্পের বিষয়টি চলে আসে। কিন্তু পোশাকশিল্প ছাড়াও আরও অনেক ধরনের কর্মক্ষেত্র রয়েছে। চা-শিল্প, চামড়াশিল্প, ব্যাংক, এনজিও, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি অফিস, আদালত, গণমাধ্যম, চিংড়িঘের, বাসাবাড়িসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীরা কাজ করছেন। কোথায় নারীরা কীভাবে আছেন, আমরা সবার তথ্য জানি না। এ ক্ষেত্রে তেমন তথ্যও নেই।

২০১১ সালে আইএলও চা-শিল্প, চিংড়িশিল্প, হাসপাতাল ও পোশাক কারখানার নারীদের কর্মক্ষেত্রের জরিপ করেছে। তাদের কাছে কিছু তথ্য আছে। আমরা ‘মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন’ ২২টি পোশাক কারখানার নারী শ্রমিকদের তথ্য নিয়েছি।

আমাদের তথ্যে এসেছে, নারী শ্রমিকেরা কথা বলতে ভয় পান। এমন আচরণ করা হচ্ছে, সেটা যে যৌন হয়রানি, এটা অনেকে জানেনও না। অনেক আবার জানার পরও বলেন না। কারণ, যদি এ জন্য তাঁর চাকরি চলে যায়? কেউ কেউ মনে করেন, পুরুষেরা এমন আচরণ করবেন, এটাই স্বাভাবিক।

কিছু কারখানায় যৌন হয়রানির জন্য অভিযোগ বাক্স আছে। কীভাবে অভিযোগ করতে হবে, কার কাছে করতে হবে, কবে অভিযোগের শুনানি হবে, দোষীর কী শাস্তি হবে—এমন বিষয়ে কোনো তথ্য নেই। কীভাবে যৌন হয়রানি হয়, আদালতের নির্দেশনায় সেটি বলা আছে। যৌন হয়রানির বিষয়ে সবাইকে আরও ব্যাপকভাবে সচেতন হতে হবে।

বিলকিস বেগম
বিলকিস বেগম

বিলকিস বেগম 
শারীরিক, মৌখিক, মানসিক—বিভিন্নভাবে একজন নারী যৌন হয়রানির শিকার হতে পারেন। প্রতিটি কারখানায় একটি করে নারী নিরাপত্তা কমিটি থাকা প্রয়োজন। তাহলে কারখানায় কর্মরত নারী শ্রমিকদের একটা শক্তি তৈরি হবে। তাঁরা তাঁদের সুবিধা-অসুবিধা ও অভিযোগ জানাতে পারবেন।

কারখানাগুলোতে স্যানিটারি ন্যাপকিনের ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন। দিবাযত্ন কেন্দ্র ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থাকা দরকার। প্রতিটি কারখানায় হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি থাকার সঙ্গে একটা শ্রমিক ইউনিয়নও থাকা জরুরি।

শ্রমিক ইউনিয়নের মাধ্যমে কমিটিগুলো এক জায়গায় বসে তাদের কারখানার নারীদের যৌন হয়রানি, নিরাপত্তা ও অন্যান্য সমস্যা নিয়ে আলোচনা করতে পারবেন। এভাবে অনেক সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।

ইসরাত জাহান
ইসরাত জাহান

ইসরাত জাহান
আমি অভিজ্ঞতায় দেখেছি, অধিকাংশ নারী শ্রমিক যৌন হয়রানির বিষয়টা বোঝেনই না। অনেকে মনে করেন, ধর্ষণই হচ্ছে যৌন হায়রানি। কিন্তু কর্মস্থলে একজন নারীর সঙ্গে কীভাবে কথা বলা হচ্ছে, কীভাবে তাকানো হচ্ছে, সেটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। একজন নারী শারীরিক ও মানসিকভাবেও যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন। অনেকে সেটা বুঝতে পারছেন না। অনেক সময় অনেকে তাঁদের মুঠোফোনে অশালীন খুদে বার্তা পাঠাচ্ছে, গায়ে হাত দিয়ে কথা বলছে, এটাকে অনেকে যৌন হয়রানি মনে করছেন না।

আইনের পাশাপাশি মানুষের মধ্যে সচেতনতা প্রয়োজন। ধর্ষকের বিষয়টি গণমাধ্যমে বেশি করে আনা প্রয়োজন। তাদের পরিবারকেও সামনে আনা দরকার। যেন তারা সমাজে চাপের মধ্যে থাকে।

কোনো নারী যখন কোনো যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করেন, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই নারীকে চুপ থাকতে বলা হয়। এতে অভিযুক্ত পুরুষ আরও প্রশ্রয় পায়। এসব বিষয় সবাইকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে।

তানিয়া হক
তানিয়া হক

তানিয়া হক
অধিকাংশ দরিদ্র নারীই পোশাক কারখানাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করেন। তাঁদের চাকরির অভিজ্ঞতা তেমন থাকে না। চাকরির তেমন নিরাপত্তা থাকে না। পারিবারিক অনেক চাপ থাকে। এমন বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে একজন নারীকে যখন কেউ যৌন হয়রানি করে, তখন তিনি উপায়হীন হয়ে পড়েন। তিনি চ্যালেঞ্জটা নিতে পারেন না।

অনেকে আবার যৌন হয়রানি ও মর্যাদাবোধ নিয়ে সচেতন নন। এ জন্য দেখা যায় নারী শ্রমিকেরা মজুরিসহ অনেক বিষয়ে কথা বললেও যৌন হয়রানি বা মর্যাদা নিয়ে তেমন কথা বলেন না।

প্রতিষ্ঠানের মালিকেরা প্রায় ক্ষেত্রেই বিষয়টি এড়িয়ে যান। তাঁরা এটিকে তেমন গুরুত্ব দেন না। তাঁদের ট্রেড ইউনিয়ন আছে। সেখানেও নারী হয়রানির শিকার হন। আমার নিজের গবেষণায় সেটা এসেছে।

এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় প্রয়োজন আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন। সবার মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি। ট্রেড ইউনিয়ন, যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি, নিরাপত্তা কমিটিসহ সব ধরনের কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধি রাখা জরুরি।

আবার শুধু প্রতিনিধি থাকলেই যে নারীরা অংশগ্রহণ করতে পারবেন, তা নয়। অনেক ক্ষেত্রে মিটিংয়ের সময়, স্থান ও যোগাযোগব্যবস্থার সমস্যার জন্য তাঁরা সভায় অংশগ্রহণ করতে পারেন না।

মালিকপক্ষ বিনা নোটিশে যে কাউকে চাকরি থেকে ছাঁটাই করে থাকে। তাই বলতে চাই, যৌন হয়রানিসহ নারীর নিরাপত্তার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে কার্যকর ভূমিকা নিতে হবে।

সিফাত-ই-নূর খানম
সিফাত-ই-নূর খানম

সিফাত-ই-নূর খানম
যৌন হয়রানি প্রতিরোধে আদালত ২০০৯ সালে একটি নির্দেশনা দিয়েছিলেন। এ ক্ষেত্রে প্রতিটি কর্মস্থল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অভিযোগ কমিটি গঠনের বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। অনেক প্রতিষ্ঠানে অভিযোগ কমিটি থাকলেও বাস্তবে এর কার্যক্রম দেখা যায় না।

কোনো নারী যৌন হয়রানির শিকার হলে প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা ছাড়া অভিযোগ কমিটির কাছে অভিযোগ করা সম্ভব হয় না। এটি আইনি অধিকার সুরক্ষার একটি বড় বাধা। এ ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয় কর্তৃক তদারক জরুরি। তাহলে প্রতিষ্ঠানে অভিযোগ কমিটির কার্যকারিতা থাকবে।

এ ছাড়া ট্রেড ইউনিয়নগুলোতে নারীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। সম্প্রতি হাইকোর্ট যৌন হয়রানি প্রতিরোধে নারীদের সুরক্ষার জন্য ডিভাইসের বিষয়ে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের নির্দেশনা প্রদান করেছেন।

এম রবিউল ইসলাম
এম রবিউল ইসলাম

এম রবিউল ইসলাম
মানবাধিকার কমিশনের একটি জরিপে দেখা গেছে, নারীদের ক্ষেত্রে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা সবচেয়ে বেশি হয়। এ জন্য কমিশন থেকে একটি কমিটি করা হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকারের চেয়ারম্যান নাছিমা বেগম এ কমিটির সভাপতি। তিনি মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে ছিলেন। নারীদের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন।

বাংলাদেশের নারীরা যথেষ্ট এগিয়েছেন। নারীর অনেক ক্ষমতায়ন হয়েছে। আমাদের কমিশনের চেয়ারম্যানও নারী। এত কিছুর পরও নারীর প্রতি যৌন হয়রানি ও সহিংসতা কমছে না।

কয়েকটি এনজিও সরকারের কাছে আইনের খসড়া জমা দিয়েছিল। সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিনিধিকে নিয়ে কমিশন আলোচনা করেছে। পরবর্তী সময়ে দেখা গেল, কর্মক্ষেত্রসহ অন্যান্য ক্ষেত্রেও নারীরা যৌন হয়রানির শিকার হন। এখন সবকিছু অন্তর্ভুক্ত করে যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে একটা পরিপূর্ণ আইন হয়, সে বিষয়ে কাজ চলছে। কাজ শেষ হলে এটা সরকারের কাছে যাবে।

ধর্ষণ নিয়েও আইন আছে। তারপরও ধর্ষণ কমছে না। আইনি প্রতিকার অবশ্যই দরকার আছে। কিন্তু আইন করে শাস্তি দিয়ে যৌন হয়রানি কমানো যাচ্ছে না। যারা এ অন্যায় করছে, তাদের নিয়ে একটা গবেষণা হওয়া প্রয়োজন। কী ধরনের মানসিকতা থেকে তারা এ ধরনের অপরাধ করছে, এ বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।

মমতাজ বেগম
মমতাজ বেগম

মমতাজ বেগম
আগের থেকে যৌন হয়রানি আরও বেড়েছে। বিষয়টির প্রতি সবার নজর দেওয়া দরকার। যারা যৌন হয়রানি করে, তাদের কঠিন শাস্তি দিতে হবে। এমন শাস্তি দিতে হবে, যেন অন্যরা এটা দেখে শিক্ষা পায়।

অনেকভাবে নারীর উন্নতি হচ্ছে। কিন্তু যৌন হয়রানির বিষয়ে পরিবর্তন আসছে না। শিশুরা পর্যন্ত যৌন হয়রানি থেকে রেহাই পাচ্ছে না।

শিপ্রা চৌধুরী
শিপ্রা চৌধুরী

শিপ্রা চৌধুরী
১৯১৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত আইএলও কর্মক্ষেত্রে নারী-পুরুষনির্বিশেষে শ্রমের মান, নিরাপত্তা ও সমঅধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। ২০১৯ সালের ২১ জুন জেনেভায় ১০৮তম অধিবেশনে বিশেষভাবে আইএলও কর্মক্ষেত্রে সহিংসতা ও হয়রানি নিরসনসংক্রান্ত কনভেনশন ১৯০ সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়।

আমরা জানি যে বাংলাদেশে বিপুলসংখ্যক নারী পোশাকশিল্পে কাজ করছে। আইএলও এ শিল্পে শ্রমিকদের জীবনমান ও কর্মক্ষেত্রে সমতা আনার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে। এমনই একটি পদক্ষেপ হলো বেটার ওয়ার্ক বাংলাদেশ প্রোগ্রাম, যা ২০১৪ সাল থেকে বাংলাদেশে কাজ করতে শুরু করে। বেটার ওয়ার্ক বাংলাদেশ এখন প্রায় ২৫০টি কারখানায় কাজ করছে।

আমরা সাধারণত দেখি, বিভিন্ন কারখানায় মেয়েদের কটূক্তি, শরীরের বিভিন্ন অংশে স্পর্শ করার মাধ্যমে যৌন হয়রানি করা হয়ে থাকে। অনেক সময় সুপারভাইজার বা ফ্লোর ম্যনেজার কর্মক্ষেত্রের বাইরে অন্য সম্পর্কের ইঙ্গিতও দেয়। নারীরা এ ধরনের আচরণের প্রতিবাদ করলে তখন তাকে চাকরি হারানোর হুমকি দেওয়া হয়। অনেক সময় অনেক ভুক্তভোগী এই ভয়ে এ ধরনের নিপীড়নের কথা প্রকাশ করেন না।

কারখানাকে সব ধরনের হয়রানিমুক্ত করতে সবার সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি আইএলও বেটার ওয়ার্ক বাংলাদেশের মাধ্যমে কারখানারগুলোতে অভিযোগব্যবস্থা কার্যকর করে তুলতে কাজ করছে । সেই সঙ্গে ক্ষমতার সমতা বিধানের জন্য পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নারী কর্মীদের ম্যানেজার বা সুপারভাইজার পদে উত্তরণের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আমরা কারখানার ব্যবস্থাপক ও শ্রমিকদের ভিন্ন ভিন্ন মডিউল ব্যবহার করে প্রশিক্ষণ দিই। একজন ব্যবস্থাপকের কী দায়িত্ব ও একজন শ্রমিকের কী করণীয়, এসব বিষয়ে তাঁদের সঙ্গে আমরা আলোচনা করি।

আমি মনে করি বাংলাদেশ আইএলও কনভেনশন ১৯০ অনুমোদন করলে যৌন হয়রানি প্রতিরোধের ভিত্তি আরও মজবুত হবে। আমাদের সবাইকে এই লক্ষ্যে একযোগে কাজ করতে হবে।

ফজলুল হক
ফজলুল হক

ফজলুল হক
যৌন হয়রানির ক্ষেত্রে প্রতিবাদের বিষয়টি আরও সামনে আনতে হবে। যৌন হয়রানি হলেই মালিকপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানানো অত্যন্ত জরুরি। এটা শুধু কারখানার ক্ষেত্রে নয়, যেখানেই নারীর প্রতি যৌন হয়রানি হোক, তার প্রতিবাদ করা জরুরি। তবে একটা বিষয় লক্ষ করছি, কর্মপরিবেশ, নারীর অধিকার, যৌন হয়রানি—এসব বিষয়ে একমাত্র পোশাক কারখানাকেই অনেক বেশি সামনে আনা হচ্ছে। নারী অধিকার বিষয় নিয়ে যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের এখন এটি ভাবার সময় এসেছে।

এ জন্য অন্য ক্ষেত্রগুলোতে নারীদের এ ধরনের সমস্যা অন্ধকারে থেকে যাচ্ছে। আমি প্রায় নিশ্চিত করে বলতে পারি, এখন পোশাকশিল্পের সামগ্রিক পরিবেশ যেকোনো শ্রমঘন খাত থেকে অনেক বেশি উন্নত। আমার নিজের বাড়ির নিরাপত্তা থেকে আমার কারখানার নিরাপত্তা অন্তত ১০ গুণ বেশি। আমার কারখানায় বের হওয়ার ১১টি পথ আছে।

আমার কারখানার কোনো একটি ঘটনা জানতে পারলেই আমি সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিই। কিন্তু আসল কথা হলো, এসব বিষয় মালিক পর্যন্ত পৌঁছাতে হবে। যৌন হয়রানি আজ একটা সর্বব্যাপী সমস্যা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, করপোরেট হাউস, অন্যান্য খাত—সব জায়গায় এ সমস্যা আছে। নারীরা যেন যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করতে পারেন, এমন একটা পরিবেশ তৈরি করা জরুরি।

রোকেয়া রফিক বেবী
রোকেয়া রফিক বেবী

রোকেয়া রফিক বেবী
যৌন বিষয়ে এখনো সমাজে কুসংস্কার আছে। বিষয়টি গোপন রাখার প্রবণতা বেশি। যৌন বিষয়গুলো একান্ত ব্যক্তিকেন্দ্রিক। কিন্তু যখন বিষয়টি কোনো কর্মক্ষেত্রে হয়, তখন আর তা ব্যক্তিকেন্দ্রিক থাকে না। কর্মক্ষেত্রে কোনো যৌন হয়রানি হলে কর্তৃপক্ষ কোনোভাবে এ দায় এড়াতে পারে না। যৌন হয়রানি প্রতিরোধে হয়তো অনেক প্রতিষ্ঠানের কিছু বিধিবিধান আছে। প্রতিষ্ঠানে সে বিধিবিধানগুলো মানা হচ্ছে কি না, সেটাও দেখতে হবে।

কেউ বলছেন যৌন হয়রানি বাড়ার জন্য মাদক একটা কারণ। তথ্যপ্রযুক্তির অবাধ ব্যবহারও কারণ। একজন নারীর বিভিন্ন সমস্যা বা দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে নারীর ওপর যৌন হয়রানির প্রবণতা অনেক বেশি। আমরা অনেক জায়গায় কাজ করতে গিয়ে দেখেছি, হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি কার্যকর নয়। তারা অনেক সময় যৌন হয়রানির বিষয়টি শুনতেও চায় না। পুরুষকেই তারা প্রতিপক্ষ মনে করে। এসব বিষয়ে সবার কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।

রুমানা রশীদ
রুমানা রশীদ

রুমানা রশীদ
২০০৯ সাল থেকে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি গঠন শুরু হয়েছে। আমি নিজেও কারখানায় যাই। যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি কার্যকর কি না, এটা দেখার জন্য ১৩টি কমিটি করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত আমরা ১ হাজার ৩৬৮টি কারখানা পরিদর্শন করেছি। এসব কারখানায় ৫৬৪টি কমিটি চালু আছে। ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ যদি কমিটির সঙ্গে যুক্ত থাকে, তাহলে কমিটিগুলো আরও বেশি কার্যকর হবে। এসব বিষয়ে আমাদের উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে।

মো. মতিউর রহমান
মো. মতিউর রহমান

মো. মতিউর রহমান
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় (এসডিজি) পরিচ্ছন্ন কর্মপরিবেশে, নারীর ক্ষমতায়ন ও দারিদ্র্য বিমোচনের কথা বলা আছে। আমরা এ লক্ষ্যে কাজ করছি। কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে আইন কতটুকু আছে।

এখানে শ্রম আইনের ৩৩২ ধারা আছে। আর উচ্চ আদালতের একটা রায় (ভার্ডিক্ট) আছে। আমরা শ্রম আদালতে মামলা করতে পারব, সরাসরি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারব না। আমি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চিঠি দিয়ে অনুরোধ করতে পারি। হয়রানির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সরাসরি আইন প্রয়োগের ব্যবস্থা থাকা জরুরি বলে মনে করি।

আমাদের এমন আইন আছে, যেটা মহিলা ও শিশুবিষয়ক অধিদপ্তর বাস্তবায়ন করে। কিন্তু তারা অনেক কিছু জানতে পারছে না।

ব্যবস্থাটা এমন হওয়া উচিত, যিনি কারখানা তদারক করছেন, তিনি আইন প্রয়োগ করতে পারছেন কি না, সেটা ঠিক করা। তা না হলে এ ধরনের অনেক আইন থাকলেও কোনো লাভ হবে না।

কারখানায় সিঁড়িতে, লিফটের সামনে ও অন্যান্য জায়গায় নিরাপত্তাসহ অনেক বিষয় লেখা আছে। কিন্তু যৌন হয়রানির বিষয়ে তেমন কিছু দেখা যায় না। এর অর্থ হলো এটাকে আমরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গুরুত্ব দিচ্ছি না।

কর্মক্ষেত্রের বাইরে বা রাস্তাঘাটে যদি কোনো শ্রমজীবী নারী যৌন হয়রানির শিকার হন, তাহলে শ্রম অধিদপ্তর সেটা দেখতে পারছে না। মালিকও এ ক্ষেত্রে দায় নেবেন না।

এ ক্ষেত্রে শিল্পাঞ্চল পুলিশের ভূমিকা নিতে হবে। আমাদের জনবল বাড়াতে হবে। সংশ্লিষ্ট সবাইকে তার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে হবে।

সোমা দত্ত
সোমা দত্ত

সোমা দত্ত
কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানির ঘটনা যে আছে বা ঘটে থাকে, এ বিষয়ে একটা রক্ষণশীল মনোভাব লক্ষ করা যায়। এমনকি সচেতনতা সৃষ্টির উদ্যোগকেও কখনো কখনো স্বাগত জানানো হয় না। প্রতিকার দাবির ক্ষেত্রেও দ্বিধা আছে। নারী শ্রমিকেরা ভাবেন, এসব প্রকাশিত হলে তাদের সম্মান আরও নষ্ট হবে। চাকরি হারানো কিংবা অবনতিও হতে পারে। বেতন ভাতা বা প্রমোশন বন্ধ হয়ে যেতে পারে। আবার মালিকপক্ষ মনে করেন, এতে প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে। হয়তো বায়ার চলে যাবে ইত্যাদি।

আমরা জানি, শ্রম আইন সংশোধনের কাজ চলছে। কর্ম‌ক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে, শ্রম আইনের ধারাগুলো আরও সুস্পষ্ট হওয়া প্রয়োজন। এটা তো শুধু বাংলাদেশের সমস্যা নয়। কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি একটি বৈশ্বিক বিষয়। জাতিসংঘ নারীর প্রতি যৌন হয়রানি প্রতিরোধে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। তার সদস্যরাষ্ট্রগুলোকেও এ নিয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছে। যৌন হয়রানি প্রতিরোধে উদার মানসিকতা নিয়ে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি।

আবুল হোসেন
আবুল হোসেন

আবুল হোসেন
পরিচ্ছন্ন কর্মপরিবেশের জন্য আইন, এসডিজির বাধ্যবাধকতাসহ অনেক বিষয় আলোচনায় এসেছে। সমাজে চলে আসা মানবিক ও নৈতিক মূল্যবোধে ধস নেমেছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সবখানে মূল্যবোধের অবক্ষয় দেখা যায়। আগে এমন ছিল না। আমরা মাদক, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ অনেক বিষয়ের কথা বলি। আসল কারণটা কী, সেটা খুঁজে বের করতে হবে।

আমরা তো বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন থাকতে পারব না। কর্মস্থলে সহকর্মীদের সঙ্গে আচরণের বিষয়ে একটি নির্দেশিকা থাকা প্রয়োজন। নারী কোনো যানবাহনে চড়লে সে পরিবহনের ছবি তুলে রাখতে পারেন। তাহলে তিনি কোন গাড়িতে কখন হয়রানির শিকার হয়েছেন, সেটা জানা সহজ হয়।

মামলা করে খুব বেশি সুবিধা পাওয়া যাবে না। এক গবেষণায় দেখা গেছে, সাজার হার মাত্র ৩ শতাংশ। আর এত লম্বা সময় লাগে যে এ মামলার ফল আপনি দেখে যেতে না-ও পারেন। এখন কয়েকটা হেল্পলাইন আছে। তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের হেল্পলাইন ৩৩৩। পুলিশ প্রশাসনের হেল্পলাইন ৯৯৯। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ১০৯।

মানুষ অনেক ক্ষেত্রে বুঝতে পারে না, সে কোন নম্বরে কল করবে। দুদক একটা করেছে ১০৬। প্রথম মাসে এখানে কল এসেছে প্রায় দেড় লাখ। পরের মাসে দুই থেকে তিন হাজার। মানুষ ঠিক বুঝে উঠতে পারছে না, কোন নম্বরে তারা কল করবে। আমরা ৯৯৯, ৩৩৩ ও ১০৯-এর সঙ্গে সমন্বয় করেছি। এখন একজন ভুক্তভোগী যেকোনো নম্বরে কল করলে তিনি তাঁর প্রয়োজনীয় সেবা পাবেন।

দুই বছর আগে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে একটা অত্যাধুনিক ডিভাইস করেছি। মুঠোফোনে ডিভাইসটি ডাউনলোড করে রাখতে হবে। এটা চাপ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দুর্ঘটনাস্থল, তাদের কথাবার্তা, ছবিসহ আমাদের কাছে চলে আসবে। এরপর নিকটতম পুলিশ স্টেশনে যাবে। পুলিশ ব্যবস্থা নেবে, না নিলে জেলা প্রশাসকের কাছে যাবে। এসব বিষয় মানুষকে সচেতন করতে হবে। জানাতে হবে।

মো. মুজিবুল হক

আজ আমরা কর্মস্থলে যৌন হয়রানি নিয়ে আলোচনা করছি। আমরা অনেক এগিয়েছি বলে এটা সম্ভব হচ্ছে। কিন্তু আমাদের আরও অনেক দূর যেতে হবে। এখন আমার এলাকায় গেলে, গ্রামে গেলে নারীরা প্রশ্ন করেন, তাঁদের রাস্তা হয়নি কেন? জানতে চান, আমরা কী করি? এখন নারীরা জানেন তাঁদের এসব জানার অধিকার আছে।

অভিযোগ রয়েছে, মুঠোফোনের মাধ্যমে ছেলেমেয়েদের অনেকে বিপথগামী হচ্ছে। কোনটি যৌন হয়রানি, কোনটি যৌন হয়রানি নয়—তা নিয়েও বিভ্রান্তি রয়েছে। এসব বিষয় স্পষ্ট হওয়া দরকার। তবে স্বাভাবিকভাবে ধরে নেওয়া যায়, একটা নির্দিষ্ট সীমার বাইরে গেলে সেটা যৌন হয়রানি হবে। শাস্তি প্রয়োগের পাশাপাশি সবখানে সচেতনতা বাড়াতে হবে। যৌন হয়রানি প্রতিরোধে দ্রুত বিচার করে শাস্তি দৃশ্যমান করতে হবে।

ফিরোজ চৌধুরী

কর্মক্ষেত্রে নারীর প্রতি যৌন হয়রানির প্রতিকার বিষয়ে আজ একটি অত্যন্ত ফলপ্রসূ আলোচনা হলো। আলোচনায় অনেক পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা এসেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে উদ্যোগ নেবে বলে আশা করি।

প্রথম আলোর পক্ষ থেকে সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।

 আলোচনায় সুপারিশ

* কিছু কারখানায় যৌন হয়রানির জন্য অভিযোগ বাক্স আছে। কিন্তু কীভাবে অভিযোগ করতে হবে, এর নির্দেশনা থাকা প্রয়োজন

* বাড়ি, কর্মস্থল, পরিবহন, রাস্তাঘাটসহ প্রায় সব ক্ষেত্রে নারীকে যৌন হয়রানির শিকার হতে হয়। যৌন হয়রানি রোধে পূর্ণাঙ্গ আইন প্রণয়ন জরুরি

*  পোশাক, চা, চামড়াসহ বিভিন্ন শিল্পে শ্রমজীবী নারীরা কাজ করছেন। কিন্তু তাঁরা কোথায় কীভাবে আছেন, এর সঠিক তথ্য থাকা প্রয়োজন

* আইনের পাশাপাশি মানুষের মধ্যে সচেতনতা দরকার

* পরিবার থেকেই নারীর প্রতি সম্মানের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে

* যৌন হয়রানি মোকাবিলায় প্রতিষ্ঠানের মালিকদের সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া জরুরি

* যৌন হয়রানি বন্ধে কমিটিকে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে

* যৌন হয়রানি হলে অবশ্যই কর্তৃপক্ষকে জানানো প্রয়োজন 

* শ্রমজীবী নারীর চাকরির নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে ভাবতে হবে

যাঁরা অংশ নিলেন

মো. মুজিবুল হক: চেয়ারম্যান, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি

আবুল হোসেন: প্রকল্প পরিচালক, নারী নির্যাতন প্রতিরোধকল্পে মাল্টিসেক্টরাল প্রকল্প, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়

শাহীন আনাম: নির্বাহী পরিচালক, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন

মো. মতিউর রহমান: উপমহাপরিদর্শক ও প্রকল্প পরিচালক, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর

ফজলুল হক: সাবেক সভাপতি, বিকেএমইএ ও বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশন

তানিয়া হক: অধ্যাপক,উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

এম রবিউল ইসলাম: উপপরিচালক, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন

রুমানা রশীদ: সদস্য, যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি, বিজিএমইএ

রোকেয়া রফিক বেবী: নির্বাহী পরিচালক, কর্মজীবী নারী

বনশ্রী মিত্র নিয়োগী: জেন্ডার অ্যাডভাইজার, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন

শিপ্রা চৌধুরী: প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা, আইএলও ঢাকা

সিফাত-ই-নূর খানম: আইনজীবী, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট)

মমতাজ বেগম: সভাপতি, আওয়াজ ফাউন্ডেশন

ইসরাত জাহান: প্রকল্প কর্মকর্তা, বাংলাদেশ লেবার ফাউন্ডেশন

সোমা দত্ত: কর্মসূচি ব্যবস্থাপক, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন

বিলকিস বেগম: সভাপতি, সম্মিলিত শ্রমিক ইউনিয়ন

সূচনা বক্তব্য

আব্দুল কাইয়ুম: সহযোগী সম্পাদক, প্রথম আলো

সঞ্চালনা

ফিরোজ চৌধুরী: সহকারী সম্পাদক, প্রথম আলো