কর্মজীবী নারীদের জন্য হোস্টেল

দেশে কর্মক্ষেত্রে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও এগিয়ে আসছেন। অনেক নারীকে কর্মের প্রয়োজনে গ্রাম ছেড়ে শহরমুখী হতে হয়। কিন্তু এই নারীদের সবচেয়ে বড় সমস্যা যেটা তা হচ্ছে নিরাপদ আবাসনের কোনো ব্যবস্থা না থাকা। কিন্তু তাঁদের এ সমস্যা সমাধানে সরকারিভাবে তেমন কোনো উদ্যোগ নেই। এটা খুবই হতাশাজনক।

রোববার প্রথম আলোর খবরে প্রকাশ, ময়মনসিংহ জেলা শহর বিভাগীয় শহর ও সিটি করপোরেশনে উন্নীত হওয়ার পর থেকে শহরে
অনেক সরকারি-বেসরকারি অফিস স্থাপিত হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মজীবী মানুষের সংখ্যাও বেড়েছে। তাঁদের মধ্যে নারী কর্মীও আছেন অনেক। অথচ তাঁদের জন্য শহরে কোনো সরকারি কর্মজীবী হোস্টেল নেই। তাই তাঁদের নানা ভোগান্তি পোহাতে হয়। একা কোনো নারীকে কেউ বাসা ভাড়া দিতে চান না। অনেক নারী ভাড়া বাসায় মেস করে থাকেন। কিন্তু সেখানেও রয়েছে নানা সমস্যা, মেসমালিকদের ইচ্ছানুযায়ী তাঁদের চলতে হয়। একটু এদিক-ওদিক হলে নানা কটু কথা শুনতে হয়। এ ছাড়া নিরাপত্তার অভাবও রয়েছে।

এ চিত্র শুধু ময়মনসিংহ শহরে নয়, সারা দেশে একই পরিস্থিতি বিদ্যমান। শহরে চাকরি করতে এসে তাঁরা নানা হেনস্তার মুখে পড়ছেন। সরকার যদি এগিয়ে না আসে তাহলে কর্মজীবী নারীদের এই সমস্যার সমাধান কোনো দিনই হবে না।

সরকারের মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে সারা দেশে আটটি কর্মজীবী মহিলা হোস্টেল রয়েছে, যা প্রয়োজনের তুলনায় একেবারেই কম। এসব হোস্টেলে মাত্র ২ হাজার ১৩৪ জন নারীর আবাসন নিশ্চিত করা গেছে। অথচ শহরাঞ্চলে কর্মজীবী নারীর সংখ্যা প্রায় ৫০ লাখ। তাঁদের তাহলে কী হবে?

কর্মজীবী নারীদের নিরাপত্তা দিতে হলে তাঁদের নিরাপদ বাসস্থানের কথা আগে ভাবতে হবে, তা না হলে তাঁরা কর্মবিমুখ হয়ে পড়বেন, সরকারকে এ বিষয়টি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভেবে দেখতে হবে। দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় হোস্টেল নির্মাণের উদ্যোগ নিতে হবে। এ ছাড়া বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনকারী পোশাক রপ্তানিকারকদের নতুন হোস্টেল নির্মাণের বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। বড় বড় শিক্ষা ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানকেও উদ্বুদ্ধ করতে হবে, যাতে তারা ছাত্রী ও কর্মজীবী নারীদের শিক্ষাকালীন ও কর্মকালীন থাকার ব্যবস্থা করে।