সামাজিক নিরাপত্তা ভাতা প্রদান: ডিজিটাল পদ্ধতির ব্যবহার

গত ১২ মার্চ ২০২০ প্রথম আলোর আয়োজনে এবং ইউএসএআইডি ও ওয়াল্র্ড ভিশনের সহযোগিতায় ‘সামাজিক নিরাপত্তা ভাতা প্রদান: ডিজিটাল পদ্ধতির ব্যবহার’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। আলোচকদের বক্তব্য সংক্ষিপ্ত আকারে এই ক্রোড়পত্রে ছাপা হলো।

আলোচনা

আব্দুল কাইয়ুম

আজকের আলোচনার বিষয়টি দেশের মানুষের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষভাবে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী, নারী ও স্কুলে বৃত্তি পাওয়া ছেলেমেয়েদের জন্য।

আমাদের দেশে মেয়েদের দুস্থ বা বয়স্কদের ভাতা পাওয়া অনেকটা অনিশ্চিত ছিল। কারণ, তাঁদের কাছে দ্রুত পৌঁছানোর কোনো ব্যবস্থা ছিল না। এখন ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেম আসার ফলে এটাতে অনেক অগ্রগতি হয়েছে।

এটা নিশ্চয়ই একটা সুসংবাদ যে আমাদের দেশে আমরা ডিজিটাল সিস্টেমে গিয়েছি এবং এটা সুন্দরভাবে কাজ করছে। প্রতিনিয়ত অনেক মানুষ এ সেবার আওতায় আসছে। ওয়ার্ল্ড ভিশন নবযাত্রা প্রকল্পের মাধ্যমে এসব নিয়ে কাজ করেছে। সেখানে কিছু অভিজ্ঞতাও হয়েছে। সেই অভিজ্ঞতার আলোকে আজকে আলোচনা।

রাকেশ কাটাল

আমরা নবযাত্রা প্রকল্প নিয়ে কাজ করছি। ইউএসএআইডি এ প্রকল্পে অর্থায়ন করছে। ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি এবং উইনরক ইন্টারন্যাশনালও এ প্রকল্পের সাথে যুক্ত আছে।

অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার ওপর আমরা জোর দিচ্ছি। আমি যত দূর জানি প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সচ্ছলতা দিন দিন বেড়ে চলেছে। বিশেষ করে, মোবাইল ও বিভিন্ন ডিজিটাল পদ্ধতি এর অন্যতম।

আমরা দেখেছি, আধুনিকায়ন সামাজিক সুরক্ষার উপাদান ও সেবাগুলোর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করে। টাকায় ভাতা প্রদান অনেক রকম উদ্বেগ ও সমস্যার সৃষ্টি করে। লেনদেনের এ আধুনিকায়নের ফলে এসব সমস্যা অনেকটা চলে গেছে এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত হয়েছে।

ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ সরকারের জাতীয় সামাজিক সুরক্ষা কৌশলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে একত্র হয়ে কাজ করছে। বিশেষ করে, লেনদেনের পদ্ধতি আধুনিকায়নের লক্ষ্যে।

ওয়ার্ল্ড ভিশনের এ প্রকল্পটি ২০১৫ সাল থেকে ৪৬ হাজার অতিদরিদ্র নারীর কাছে পৌঁছেছে। দুভাবে আমরা তাঁদের কাছে পৌঁছাই। একটি হলো মা ও শিশুপুষ্টি ভাতা। অন্যটি দারিদ্র্য বিমোচনে অতি দরিদ্র পরিবারসমূহের জন্য ভাতা।

সিদ্দিকুর রহমান চৌধুরী

ডিএফআইডি বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে যেখানে সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়সহ আরও ছয়টি মন্ত্রণালয় যুক্ত আছে।ি

ডএফআইডির এ প্রকল্পে জিটুপি সেবা িছল না এবং এ টাকাটা যাচ্ছে ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম থেকে একটা বিশেষ কর্মসূচিতে। এ জন্য জিটুপি সিস্টেমটা আমরা ডিজাইন করেছি কতগুলো অসুবিধা দূর করার জন্য।

পূর্বে প্রচলিত পদ্ধতিগুলোতে টাকা সরাসরি সুবিধাভোগীর কাছে যেত না; এটা যেত ব্যাংকের মাধ্যমে। ব্যাংক সেটা বিভিন্ন শাখার মাধ্যমে বিতরণ করত। নির্ধারিত দিনে টাকাটা দেওয়া হতো। এতে অনেক সময় লাগত।

এখন প্রযুক্তির সাহায্যে এটা খুব সহজে করা যায়। সরকার থেকে কোনো মধ্যস্বত্ব ছাড়া সরাসরি পেমেন্ট করা সম্ভব। এ জন্য যেটা প্রাথমিক কাজ, সেটা তাঁরা করেছেন। সব সুবিধাভোগীর তথ্য এমআইএসে (ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম) নিয়ে আসা হয়েছে।

এখানে আরও কিছু বিষয় আছে। সেটা হলো এই নতুন জিটুপি চালু করার জন্য সরকারের যে পেমেন্ট পদ্ধতি, ওটাতে কোনো পরিবর্তন আনা
হয়নি। প্রতিটি কর্মসূচিতে বিল উত্তোলক কর্মকর্তা থাকেন।

তিনি বিল করে টাকা তোলেন। আগে তুলতেন ম্যানুয়ালি, এখন এটা ইলেকট্রনিক্যালি। এখন সরকারের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় ইতিমধ্যে আরও অনেক উন্নতি হয়েছে।

কাজল চ্যাটার্জি

‘স্বপ্ন’ প্রকল্পটি ইউএনডিপির সহযোগিতায় স্থানীয় সরকার বিভাগ বাস্তবায়ন করে। এই প্রকল্পে আরও দুটি বেসরকারি খাতের অংশীদারিত্ব আছে। একটি হলো ম্যারিকো ইন্টারন্যাশনাল, অন্যটি বাংলাদেশ স্টিল রি-রোলিং মিলস (বিএসআরএম)। তারাও আমাদের নিয়মিত আর্থিক সহায়তা দিয়ে থাকে। আমি দুটো দিক থেকে বলব। শুধু ডিজিটাল পেমেন্টের দিক থেকে বললে ভুল হবে। কারণ, আলোচনায় বিভিন্ন সমস্যার কথা এসেছে। সঠিকভাবে সুবিধাভোগী চিহ্নিত করতে পারা একটা বড় চ্যালেঞ্জ। অনেক প্রকল্পই সঠিকভাবে সুবিধাভোগী চিহ্নিত করতে পারেনি। স্বপ্ন প্রকল্পে আমরা এ পর্যন্ত প্রায় ১০ হাজার সুবিধাভোগীর কাছে পৌঁছাতে পেরেছি।

এ ক্ষেত্রে আমাদের সঠিক সুবিধাভোগী চিহ্নিত করার হার ৯৬ শতাংশ। বলা হয় যে ইউনিয়ন পরিষদ সঠিকভাবে সুবিধাভোগী নির্বাচন করতে দেয় না। আমাদের এই প্রকল্পে ইউনিয়ন পরিষদ ও পারিবারিক বিরোধ নিরসনে নারী ও শিশু কল্যাণ বিষয়ক স্থায়ী কমিটি মিলেই সুবিধাভোগী নির্বাচন করে।

আমরা প্রথমে পেমেন্ট করতাম ব্যাংকের মাধ্যমে। তখন দেখেছি একজন সুবিধাভোগীকে কমবেশি ১০ কিলোমিটার হাঁটতে হতো ব্যাংকের কাছে পৌঁছাতে। তারপর ডিজিটাল পেমেন্ট পদ্ধতি।

এখন পর্যন্ত বিকাশের কাভারেজ সব থেকে ভালো। আজকে পেমেন্ট অর্ডার করলে সেটা ১৪–১৫ ঘণ্টার মধ্যে সুবিধাভোগীর কাছে পৌঁছে যায়।

 টুম্পা দেবনাথ

আমি যখন গর্ভবতী ছিলাম তখন নবযাত্রা প্রকল্পের একজন মাঠকর্মী বাড়িতে পরিদর্শন করতে আসেন। তারপর তিনি সবকিছু যাচাই–বাছাই করে আমাকে নির্বাচন করেন।

এরপর আমাকে একটা বিকাশ নিবন্ধিত সিম দেওয়া হয়। তার পরের মাস থেকে আমার নিজের বিকাশ অ্যাকাউন্টে প্রতি মাসে ২,২৪০ টাকা করে আসতে থাকে। আমি নিয়মিত টাকা পেয়েছি।

সেই টাকা দিয়ে আমার স্বাস্থ্যের জন্য পুষ্টিকর খাবার কিনতে পেরেছি। কোনো সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পেরেছি।

পরবর্তী সময়ে শিশু যেন সম্পূর্ণ পুষ্টি ঠিকঠাকভাবে পায়, সে জন্য পুষ্টিকর খাবার চালিয়ে যাই।

বর্তমান অবস্থায় ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে টাকা তোলা খুব কষ্টকর। কিন্তু সিমে টাকা এলে সেটা তোলা অনেক সহজ। ইউনিয়ন পরিষদে অনেক সময় চেয়ারম্যান সাহেব বাড়িতে থাকেন না। তখন ফিরে আসতে হয়।

কিন্তু বিকাশের মাধ্যমে সিমে টাকা এলে সেটা তোলা অনেক সহজ। টাকা এলে আমাকে মেসেজের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হয়। বিকাশ অ্যাকাউন্টে একটা গোপন পিন থাকে। তাই এ টাকা অন্য কেউ তুলে নেওয়ার সুযোগ নেই।

ভবতোষ কুমার মণ্ডল

আমাদের বেশ কিছু ভাতা কার্যক্রম সামাজিক সুরক্ষা খাতের আওতাধীন। মাতৃত্ব ভাতার জন্য মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তার দপ্তর থেকে একটি ভাতা প্রদানের সুযোগ আছে। হাসপাতাল থেকে ডিএসএফের (ডিমান্ড সাইড ফাইন্যান্সিং) একটা সুযোগ-সুবিধা আছে। সে ক্ষেত্রে একজন নারী প্রায় তিন হাজার টাকা পেতে পারেন।

আমাদের স্বপ্ন কর্মী বাংলাদেশের সব জেলায় না থাকলেও আমার ইউনিয়নের এই প্রকল্পটি চলমান ছিল। ব্যাংকের মাধ্যমে আমরা সরাসরি টাকা বিতরণ করতাম।

আমরা বর্তমানে এটাকে সনাতন পদ্ধতি বলছি। কিন্তু সে সময় এটাই ছিল আধুনিক পদ্ধতি। মাতৃত্ব ভাতার জন্য আমাদের যে টাকাটি প্রদান করা হয়, সেটি হয়তো আগে ছিল ৫০০ টাকা, বর্তমানে ৮০০ টাকা।

ভাতা প্রদানের সময়ও বেড়েছে। আগে দুই বছর ধরে দেওয়া হতো। এখন এক বছর বাড়িয়ে সেটা তিন বছর করা হয়েছে। টাকাটা দেরিতে পাওয়ার একটা সমস্যা রয়েছে। যদি নগদ টাকা প্রতি মাসে পাওয়ার প্রক্রিয়া থাকত, তাহলে কিন্তু একটা সাধারণ পরিবারের অনেক সুবিধা হতো।

যখন নবযাত্রা প্রকল্প শুরু হলো, তখন থেকে দ্রুত টাকা পৌঁছে যাচ্ছে সুবিধাভোগীদের কাছে। সেটা সনাতন পদ্ধতির চাইতে অনেক বেশি সুবিধাজনক।

মাসিং নেওয়ার

আমি দু্ই দিক থেকে কথা বলব। একটা হলো আমরা নবযাত্রা প্রকল্পে ডিজিটাল আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে বিকাশের সঙ্গে কাজ করেছি। এ ক্ষেত্রে কিছু চ্যালেঞ্জ ছিল। যেমন কেওয়াইসি (নো ইয়োর ক্লায়েন্ট- ভোক্তার বিভিন্ন তথ্য নেওয়ার ফরম) ফরমে সুবিধাভোগীর তথ্যগুলো যুক্ত করতে হয়। সেগুলো যদি সঠিকভাবে না দেওয়া হয়, তবে সঠিক সময়ে তাঁর ব্যাংক হিসাব খোলা যায় না। এ ছাড়া সার্ভারের সমস্যার কারণে অনেক ব্যাংক হিসাব সচল ছিল না (ফ্রোজেন অ্যাকাউন্ট)। যেটা আসলে দ্রুত নিবন্ধন ও সচল করা যাচ্ছিল না।

পাশাপাশি জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর, সিম নম্বর ও নামের বানান ভুলের কারণে অনেক সমস্যায় পড়তে হয়েছে। ফলে সঠিক সময়ে টাকা দেওয়া সম্ভব হয়নি। এ ছাড়া আরেকটা চ্যালেঞ্জের কথা এসেছে। সেটা হলো, প্রতারণার মাধ্যমে সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে পিন নম্বর নিয়ে, তা ব্যবহার করে টাকা নিয়ে নেওয়া হয়েছে, পরে িবকাশের সাহায্য িনয়ে ওই টাকা আবার ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এখানে আমি একজন উন্নয়নকর্মী হিসেবে গর্ববোধ করি। কেননা, বাংলাদেশ সরকার ডিজিটাল পদ্ধতিতে টাকা স্থানান্তরের (মানি ট্রান্সফার) ব্যাপারে ২০১৫ সালে ‘জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশল’ এ নির্দেশনা দিয়ে দিয়েছে। সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমে কারা সুবিধা পাচ্ছেন, তার একটি জাতীয় ডাটাবেজ থাকা জরুরী।

শেখ মো. মনিরুল ইসলাম

যেকোনো সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের এমআইএস (ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম) যদি হয়ে যায়, যে কেউ এ সুবিধা পাবে। কোন মাধ্যমে সে এই টাকাটা পেতে চায়?

এ ক্ষেত্রে যদি বিকাশকে পছন্দ করে, তাহলে বিকাশ প্রত্যেকের জন্য একটা আলাদা কেওয়াইসি (নো ইয়োর ক্লায়েন্ট) সৃষ্টি করে ব্যাংক হিসাব খোলে। এই ব্যাংক হিসাব খোলার সঙ্গে সঙ্গেই ভোক্তা তাঁর একটা পিন (পার্সোনাল আইডেনটিফিকেশন নম্বর) ঠিক করে।

প্রকল্পের উপকারভোগী টুম্পা দেবনাথ যেমনটি বলেছেন যে পিন নম্বর গোপনীয় ব্যাপার, সেটা কাউকে দেওয়ার কথা না। ডিজিটাল সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য আমরা গণমাধ্যমে প্রচারণা চালাই।

আমাদের প্ল্যাটফর্ম থেকে এ পর্যন্ত কোনো অসুবিধা হয়নি। বিকাশ প্রতিদিন সাত লাখ লেনদেন করে থাকে। সুতরাং লেনদেনের প্ল্যাটফর্মটির কয়েক স্তরের নিরাপত্তা রয়েছে।

প্রতারণার ঘটনাগুলো মূলত সুবিধাভোগীদের আবেগের সুযোগ নিয়ে করা হয়। ভাতা নিয়ে কেউ যেন মুঠোফোনে প্রতারণা করতে না পারে, সে জন্য প্রান্তিক নারী ও জনগোষ্ঠীর মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। আমরা ইতিমধ্যে টেলিভিশন বিজ্ঞাপনে কী করা যাবে ও কী করা যাবে না, তা প্রচার করছি।

জাকি হায়দার

আমাদের প্রধান কাজগুলো হচ্ছে বিভিন্ন রকম প্রযুক্তি ব্যবহার করে উন্নয়নমূলক খাতের জন্য নানা রকম সমাধান তৈরি করা। আমাদের প্রতিষ্ঠানের কাজ িসকিউরিটি এরিয়াতে নয়, আমাদের কাজ মূলত বিভিন্ন রকমের তথ্য বিশ্লেষণ করা। যেন আমরা ওই একই সেবাটা আরও ভালোভাবে দিতে পারি।

বেশ কিছুদিন ধরে আমরা এটুআইয়ের বিল পেমেন্ট–সংক্রান্ত একটা প্রকল্প নিয়ে কাজ করছি। সেখানেও আমরা বিল পেমেন্ট–সংশ্লিষ্ট নিরাপত্তাজনিত সমস্যা দেখেছি।

কিছু ভালো উদাহরণ আছে। যেমন ইনস্যুরেন্স সিকিউরিটি দেওয়া। প্রতারণামূলক ঘটনা যদি একদমই ঠেকানো না যায়, সে ক্ষেত্রে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে নিরাপদ রাখার জন্য ইনস্যুরেন্স ব্যবস্থা থাকা দরকার। এ ধরনের পদ্ধতি অন্যান্য দেশে কাজ করেছে। কিন্তু বাংলাদেশে এখনো এ ধরনের পদ্ধতি কাউকে কাজে লাগাতে শুনিনি।

অনেক সময় ভাতাপ্রাপ্ত নারীরা প্রতারণার শিকার হয়ে থাকেন। ভাতাপ্রাপ্ত নারীদের বিমা বা পিন নম্বর সুরক্ষায় সচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন। সে জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।

মোহাম্মদ আমিনুল হক চৌধুরী

২০২৪ সালের মধ্যে বাংলাদেশ কীভাবে মধ্যম আয়ের দেশ হতে পারে, সে জন্য ইউএসএআইডি বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে। ইউএসএআইডির অর্থায়নে বাংলাদেশে (অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। গত বছর একটা জরিপ হয়েছে। সেখানে এটুআই বলছে যে ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ সরকার ১ দশমিক ৩ শতাংশ জিডিপি সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রমের জন্য খরচ করেছে। সেটা ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বেড়ে হয়েছে ২ দশমিক ৩ শতাংশ জিডিপির সমান।

সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে জনগণকে সেবা দেওয়া হচ্ছে। আধুনিকায়নের মাধ্যমে এই সামাজিক নিরাপত্তা প্রদানে অনেক প্রতিবন্ধকতা আছে। সেই প্রতিবন্ধকতাগুলো অনেক ক্ষেত্রেই দূর করা সম্ভব।

জরিপে একটি বিষয় এসেছে। একজন সুবিধাভোগী প্রথাগত পদ্ধতিতে টাকা তুলতে তাঁর ভাতার ১৪ শতাংশই খরচ হয় যাতায়াত ও ভাতা তুলতে গিয়ে। যদি মোবাইল লেনদেনের মাধ্যমে অথবা অন্য কোনো ডিজিটাল পদ্ধতির মাধ্যমে এই সেবা দেওয়া যায়, তাহলে এসব খরচ কমানো সম্ভব হবে। আধুনিকায়নের মাধ্যমে তাদের সময় ও অন্যান্য ব্যয় কমানো যাবে। ইউএসএআইডির যেসব অংশীদার প্রকল্প আছে, সেসব প্রকল্পে আমরা ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেম চালু করতে উৎসাহ দিই।

মো. মনিরুল ইসলাম

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে যেকোনো উন্নয়নসংক্রান্ত বিষয়ের সঙ্গে এসডিজি সম্পৃক্ত। জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশল প্রণয়নের সঙ্গে আমি সরাসরি যুক্ত ছিলাম।

পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় প্রেজেন্টেশন দিতে গিয়ে আমি বলি যে আমাদের সংবিধান খুব স্মার্ট। ১৯৭২ সালে যখন আমাদের সংবিধান গৃহীত হয়, তখনই ১৫–এর ঘ এ সামাজিক নিরাপত্তার (সোশ্যাল সিকিউরিটি) সংজ্ঞা দেওয়া হয়।

প্রতিটি দেশের সামাজিক নিরাপত্তা কৌশলে, সে দেশের অবস্থায় সামাজিক নিরাপত্তার একটি সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

আমাদের সংবিধানে এর সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। সংবিধানে ১৫ এ উল্লেখ আছে ‘রাষ্ট্রের অন্যতম মৌলিক দায়িত্ব হইবে পরিকল্পিত অর্থনৈতিক বিকাশের মাধ্যমে উৎপাদনশক্তির ক্রমবৃদ্ধিসাধন এবং জনগণের জীবনযাত্রার বস্তুগত ও সংস্কৃতিগত মানের দৃঢ় উন্নতিসাধন’।

সরকার পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে ও এসডিজি লক্ষ্য অর্জনে অঙ্গীকারবদ্ধ। দারিদ্র্য দূরীকরণে অন্যতম হাতিয়ার হচ্ছে সামাজিক সুরক্ষা ভাতা। সেই ভাতা এখন অল্প সময়ে মানুষের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে।

এই সরকার যখন প্রথমবার (১৯৯৬-২০০১) ক্ষমতায় ছিল, তখনই ১৯৯৭ সালে প্রথম বাংলাদেশে ১০০ টাকা করে বয়স্ক ভাতা চালু করা হয়। এই সরকারই এর পরের বছর বিধবা ভাতা চালু করে।

মো. খলিলুর রহমান

১৯৭২ সালের সংবিধানে প্রথম জনগণের পুষ্টি স্তর উন্নয়নকে রাষ্ট্রের প্রাথমিক কর্তব্য বলে নির্ধারণ করা হয়েছিল। তারপর ১৯৭৪ সালে অপুষ্টিকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে মোকাবিলা করার জন্য জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান তৈরি করা হয়।

অপুষ্টি দূরীকরণ একটি বহু খাতভিত্তিক কর্মসূচি। এটা মোকাবিলা করার জন্য তৈরি করা হয় ন্যাশনাল নিউট্রিশন কাউন্সিল। আমরা যদি একটা মানুষের পুষ্টি নিশ্চিত ও উন্নত বাংলাদেশ গড়তে চাই, তাহলে জীবনচক্রের দুটো জায়গা নির্দেশ করতে হবে।

আমরা বলি, প্রথম এক হাজার দিন (ফার্স্ট গোল্ডেন থাউজেন্ড ডেজ)। যেটা একজন মায়ের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর থেকে দুই বছর সময় পর্যন্ত চলবে। ওই সময় পর্যন্ত যদি পুষ্টির ব্যবস্থা করা যায়, তবে শিশু ও মায়ের পুষ্টি নিশ্চিত করা যাবে।

কোনো কারণে এ সময়ে পুষ্টি নিশ্চিত করা না গেলে আমরা আরেকটা সময় পাব। সেটা হলো কৈশোরকাল অর্থাৎ ১০ থেকে ১৯ বছর বয়স পর্যন্ত। এ দুটো সময়ে পুষ্টি নিশ্চিত করতে পারলে আমরা অপুষ্টিহীন প্রজন্ম পাব।

দরিদ্র ও অন্তঃসত্ত্বা নারীরা পুষ্টিবিষয়ক সহায়তা পেলে তাদের পরবর্তী প্রজন্মের স্বাস্থ্য ও শিক্ষা নিশ্চিত হয়। দেখা গেছে, যেসব মা পুষ্টি পরামর্শ ও সহায়তা পান, তাঁদের পেছনে এক টাকা বিনিয়োগের বিপরীতে পরবর্তী সময়ে ২০গুণ বেশি সুফল পাওয়া যায়।

সৈয়দ মো. নূরুল বাসির

কল্যাণধর্মী রাষ্ট্রে দরিদ্র জনসাধারণের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা ভাতা প্রদান রাষ্ট্রের একটি আবশ্যকীয় কর্মসূচি। বাংলাদেশ এর ব্যতিক্রম নয়। সামাজিক নিরাপত্তা ভাতা প্রদান কর্মসূচির পরিধি দিন দিন বৃদ্ধি পাবে।

এই কর্মসূচির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, যাঁদের জন্য কর্মসূচি তাঁদের কাছে যথাযথভাবে সুবিধা পৌঁছানোর ক্ষেত্রে আমরা কতিপয় সমস্যা মোকাবিলা করেছি।

যথাযথভাবে সুবিধা না পৌঁছানো, সুবিধাভোগী নির্বাচনে সমস্যা ও পুনরায় তদারকি কর্মসূচি অনেক কম ছিল। আধুনিকায়ন ও ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভাতা পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যমে আমরা এই সমস্যা থেকে উত্তরণ ঘটাতে পেরেছি।

সুবিধাভোগী নির্বাচনের ক্ষেত্রে সরকারি কর্মকর্তা ছাড়াও আমরা জনপ্রতিনিধিদের ওপর অনেকাংশে নির্ভর করি। এ ছাড়া সারা দেশে আমরা আধুনিকায়নের মাধ্যমে এ সুবিধা পৌঁছে দিতে পারছি না।

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় মাত্র পাঁচটি বিভাগে ১৮টি জেলার ৫১টি উপজেলায় জিটুপিতে ভাতা পরিশোধ করছে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নবনিযুক্ত সচিব আরো তিন মাস সময় বেঁধে দিয়েছেন। তিন মাসে হয়তো পারব না। তবে আমরা আশা করছি এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হবে। এই বছরের মধ্যে আমরা এটা পুরোটাই কাভার করতে সক্ষম হতে পারি।

সরকারের যেসব উদ্যোগ সরাসরি জনগণের কাছে পৌঁছায়, তা সমাজে অল্প সময়েই প্রভাব ফেলতে পারে।

ফ্রেড উইটিভিন

একটি তথ্যবহুল আলোচনা হচ্ছে, যেখানে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দিক এসেছে। সরকারের উচ্চপর্যায়ের নীতিনির্ধারক, ইউএসআইডি, অর্থনৈতিক সেবা দাতা ও এনজিও, আমরা সবাই সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিকে অগ্রাধিকার দিয়ে আলোচনা করছি।

আমরা সবাই একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনের জন্য কাজ করছি। সেটা হলো পেমেন্ট পদ্ধতির আধুনিকায়নের মাধ্যমে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির দক্ষতা ও কার্যকারিতা বৃদ্ধি করা। আধুনিক পেমেন্ট পদ্ধতিকে সকলের কাছে পৌঁছানোর জন্য আমরা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ করছি। এর ফলে দরিদ্রদের; বিশেষ করে নারী ও যুবকদের দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তি জোরদার হবে।

সঠিক সময়ে অসচ্ছল পরিবারের কাছে ভাতা পৌঁছানো সামাজিক সুরক্ষার বিষয়টিকে শক্তিশালী করে। এটি বাংলাদেশে দারিদ্র্য কমাতে, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধিতে ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জীবনমান উন্নত করতে সহায়তা করবে।

ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ জাতীয় সামাজিক সুরক্ষা ও নিরাপত্তা কৌশল অনুযায়ী বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কাজ করতে অঙ্গীকারবদ্ধ। গত বছর বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে বন্যা হয়েছিল। জরুরি ত্রাণ–পরবর্তী সময়ে ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির অধীনে আধুনিক পদ্ধতিতে নগদ ভাতা প্রদান করেছে। এ ক্ষেত্রে আমাদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

শামসুল আলম

বাংলাদেশের সংবিধানে সামাজিক নিরাপত্তার কথা বলা হয়েছে। সংবিধানে পাঁচটি মৌলিক অধিকারের নিশ্চয়তা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এই নিরাপত্তার কথা বলে পরবর্তী সময়ে বলা হয়েছে যে দেশ পরিকল্পিতভাবে এগোবে এবং সেখানে সামাজিক নিরাপত্তার অধিকার থাকবে।

চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের যুগে সবকিছুই ডিজিটাল হচ্ছে। সামাজিক সুরক্ষার ভাতা কর্মসূচিতে আগে ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা যেত। এতে অনেক বেশি সময় লাগত।

সুবিধাভোগীরা নানা অসুবিধায় পড়তেন। এখন মুঠোফোনের মাধ্যমে খুব সহজে ও দ্রুত টাকা পৌঁছে দেওয়া যাচ্ছে।

তবে মুঠোফোনে টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রে সেবা খরচ কমানোর বিষয়ে নজর দেওয়া উচিত।

১৯৯৬ সালে আওয়ামী সরকার যখন ক্ষমতায় আসে, তখন প্রথম বারের মতো বিধবা ভাতা চালু করা হয়।

এখন খুব কম হতদরিদ্র পরিবার আছে, যারা সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির বাইরে আছে। কোনো না কোনো কর্মসূচিতে তারা সংযুক্ত আছে। ২০২৫ সালের মধ্যে সব দরিদ্র মানুষ আমাদের সামাজিক নিরাপত্তা কৌশলের মধ্যে চলে আসবে।

বড় রকমের সমস্যা ছিল সুবিধাভোগী নির্ধারণ। আমরা জানি দরিদ্র নয় এমন ২৭ শতাংশ পরিবার ভাতা ভোগ করত।

আবার যাঁদের পাওয়া উচিত তাঁরা এই সামাজিক নিরাপত্তার বাইরে ছিল। এই সমস্যা মোকাবিলা করার জন্য আমরা প্রথম সামাজিক নিরাপত্তা কৌশলে দুটি বিষয় স্পষ্টভাবে উল্লেখ করি।

একটি হলো আমাদের একটি কেন্দ্রীয় তথ্যভান্ডার থাকবে। সেখানে সব দরিদ্রের তথ্য থাকবে। কেন্দ্রীয় তথ্যভান্ডার থাকলে উপকারভোগী নির্বাচনের সমস্যাটা দূর করা যাবে। অন্যটি হলো সব পেমেন্ট জিটুপিতে (গভর্নমেন্ট টু পারসন) যাবে।

ফিরোজ চৌধুরী

২০০৯ সালে যখন ডিজিটাল বাংলাদেশ কার্যক্রম শুরু হয়, তখন সেটা ছিল স্বপ্নের মতো। এখন প্রায় সবক্ষেত্রেই এটা বাস্তব হয়ে উঠছে। এর মধ্যে ডিজিটাল লেনদেন একটা বড় ধরনের অগ্রগতি। বিশেষ করে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মানোন্নয়নে এটা দারুণ ভূমিকা রাখছে।

ডিজিটাল পদ্ধতির মাধ্যমে জিটুপি লেনদেনের ফলে মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য নেই বললেই চলে। সামনে আসছে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব। সে ক্ষেত্রে ডিজিটাল লেনদেন বড় ধরনের ভূমিকা রাখবে।

আলোচনায় অংশগ্রহণের জন্য সবাইকে প্রথম আলোর পক্ষ থেকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।

যাঁরা অংশ নিলেন

ড. শামসুল আলম: সদস্য (সিনিয়র সচিব), সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ, পরিকল্পনা কমিশন

সৈয়দ মো. নূরুল বাসির: পরিচালক (প্রতিষ্ঠান), সমাজসেবা অধিদপ্তর

মো. মনিরুল ইসলাম: উপসচিব, গভর্নেন্স ইনোভেশন ইউনিট, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়

মো. খলিলুর রহমান: পরিচালক, জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান (আইপিএইচএন)

ফ্রেড উইটিভিন: ন্যাশনাল ডিরেক্টর, ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ

মোহাম্মদ আমিনুল হক চৌধুরী: ডিজিটাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাডভাইজর, ইউএসএআইডি

সিদ্দিকুর রহমান চৌধুরী: টিম লিডার, স্ট্রেনদেনিং পাবলিক ফাইন্যান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট ফর সোশ্যাল প্রোটেকশন প্রকল্প, ডিএফআইডি

কাজল চ্যাটার্জি: জাতীয় প্রকল্প ব্যবস্থাপক, স্বপ্ন, স্থানীয় সরকার বিভাগ ও ইউএনডিপি

মাসিং নেওয়ার: সিনিয়র প্রোগ্রাম অ্যান্ড পলিসি অফিসার, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি

রাকেশ কাটাল: চিফ অব পার্টি, নবযাত্রা প্রকল্প, ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ

শেখ মো. মনিরুল ইসলাম: চিফ এক্সটারনাল অ্যান্ড করপোরেট অফিসার, বিকাশ

ভবতোষ কুমার মণ্ডল: চেয়ারম্যান, বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়ন, শ্যামনগর, সাতক্ষীরা

জাকি হায়দার: িডরেক্টর অব ইনোভেশন, এমপাওয়ার সোশ্যাল এন্টারপ্রাইজ

টুম্পা দেবনাথ: নবযাত্রা প্রকল্পের উপকারভোগী, বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়ন, শ্যামনগর, সাতক্ষীরা

সূচনা বক্তব্য

আব্দুল কাইয়ুম: সহযোগী সম্পাদক, প্রথম আলো

সঞ্চালক

ফিরোজ চৌধুরী : সহকারী সম্পাদক, প্রথম আলো

আলোচনায় সুপারিশ

  • সকল উপকারভোগীর তথ্যসমৃদ্ধ একটি একীভূত কেন্দ্রীয় তথ্যভান্ডার প্রণয়ন করা প্রয়োজন
  • বিভিন্ন সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের আওতায় কারা ভাতা পাচ্ছেন, তা নির্ধারণ করা জরুরি
  • সুবিধাভোগীর কাছে ভাতা সঠিক সময়ে পৌঁছানো নিশ্চিত করতে হবে
  • মুঠোফোনে টাকা পাঠানোর সেবা খরচ কমানো প্রয়োজন
  • ভাতা প্রদানের পদ্ধতি সম্পূর্ণ আধুনিক করে সুবিধাভোগীর সময় ও খরচের পরিমাণ কমিয়ে আনতে হবে
  • সঠিক সময়ে সঠিক সুবিধাভোগীর কাছে ভাতা পৌঁছানো নিশ্চিত করতে সরকারি, বেসরকারি ও অন্যান্য সেবা সংস্থাসমূহের সমন্বয় প্রয়োজন
  • ভাতা নিয়ে যেন মুঠোফোনে প্রতারণা করতে না পারে, সে জন্য প্রান্তিক নারী ও জনগোষ্ঠীর মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন