জামিনে বেরিয়ে আসছেন অভিযুক্তরা

রাজনৈতিকভাবে ক্যাসিনোবিরোধী তৎপরতার নাম দেওয়া হয়েছিল শুদ্ধি অভিযান। কিন্তু আমরা বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ করলাম, ক্ষমতাসীন দল ও এর সহযোগী সংগঠনের ১২ নেতা আটক হওয়ার পর অভিযান কার্যত থেমে যায়। এরই মধ্যে ক্যাসিনো-কাণ্ডে আটক দুই অভিযুক্ত লোকমান হোসেন ভূঁইয়া ও শফিকুল আলমের জামিনে বেরিয়ে আসার খবরটি উদ্বেগজনক। বর্তমানে কারাগারে আছেন ১০ জন। তাঁদের মধ্যে ক্যাসিনো-কাণ্ডের ‘গুরু’ হিসেবে পরিচিত ইসমাইল হোসেন ওরফে সম্রাটের একটি মামলার সাজার মেয়াদ শেষ হয়েছে। তিনি অপর দুটি মামলায় কারাগারে আছেন। যদিও ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন পর্যায় থেকে তাঁর মুক্তির জন্য তদবির-প্রচারণাও চলছে। তাঁর মুক্তির দাবিতে ঢাকা শহরে পোস্টারও পড়েছে।

এই প্রেক্ষাপটে ক্যাসিনো-কাণ্ডের দুই অভিযুক্ত কারাগার থেকে জামিনে বেরিয়ে আসায় মামলার ন্যায়বিচার না পাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
পুলিশের একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেছেন, সব মামলার তদন্ত শেষ হয়নি। যদি তদন্ত শেষই না হয়ে থাকে, তাহলে তাঁরা কীভাবে জামিন পেলেন? ক্যাসিনো-কাণ্ডের মতো গুরুতর অপরাধ মামলার আসামি তদন্ত শেষ হওয়ার আগে কারাগার থেকে বেরিয়ে এসে যে মামলাকে নানাভাবে প্রভাবিত করার অপপ্রয়াস চালাবেন, সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। যেখানে হত্যাচেষ্টা মামলার আসামিরা মামলা আদালতে ওঠার আগেই ব্যক্তিগত বিমানে চড়ে দেশ ত্যাগ করতে পারেন, সেখানে কিছুই অসম্ভব নয়।

তদন্তের আগেই এভাবে গুরুতর অপরাধ মামলার অভিযুক্তরা একে একে জামিন নিয়ে বেরিয়ে এলে সরকারের বহুল আলোচিত শুদ্ধি অভিযানই কেবল প্রশ্নবিদ্ধ হবে না, অপরাধী চক্র আরও বেপরোয়া হয়ে উঠবে। সরকারি দলের লোকজন ও নীতিনির্ধারকেরা মুখে যতই বলুন, ‘আইন নিজস্ব গতিতে চলে’, কিন্তু বাস্তবে অনেক ক্ষেত্রেই তার প্রমাণ মেলে না। আমরা চাই, ক্যাসিনো-কাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত দ্রুত বিচারের ক্ষেত্রে আইন তার নিজস্ব পথে চলুক।