একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি

এসএসসির মেধাতালিকার ভিত্তিতে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে সরকারের নেওয়া সিদ্ধান্ত সঠিক হলেও এর বাস্তবায়নে যেসব সমস্যা দেখা দিয়েছে, দ্রুত তার প্রতিকার প্রয়োজন। এবার এসএসসিতে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১১ লাখ ৫৬ হাজার। অনলাইনে এই বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীর ভর্তি-প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা সহজ নয়। স্বীকার করি, পদ্ধতিটি ছিল নতুন। ফলে ভুলত্রুটি হওয়া অস্বাভাবিক নয়। তবে আগে থেকে যথেষ্ট প্রস্তুতি থাকলে শিক্ষার্থীদের বিড়ম্বনা ও হয়রানি অনেকটাই এড়ানো যেত।
ফল প্রকাশের পর দেখা গেছে, ভালো ফল করার পরও উল্লেখযোগ্য-সংখ্যক শিক্ষার্থী তাদের প্রার্থিত কলেজে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পায়নি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে শিক্ষার্থী যে কলেজের জন্য মনোনীত হয়েছে, সেই কলেজে তাদের বিষয় পড়ানোই হয় না। শিক্ষার্থী কিংবা কর্তৃপক্ষ—যার ভুলেই এটি হোক না কেন, দ্রুত সংশোধনের বিকল্প নেই।
মধ্যরাতের পর কলেজে ভর্তির ফল প্রকাশশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে যে প্রত্যেক শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পাবে। এ কথা ঠিক যে সব শিক্ষার্থী কাঙ্ক্ষিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ পাবে না। কেননা, উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে যথেষ্টসংখ্যক মানসম্পন্ন প্রতিষ্ঠান আমরা তৈরি করতে পারিনি। ভবিষ্যতে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকেই মানসম্পন্ন করার দিকে নজর দিতে হবে, সে ক্ষেত্রে গুটিকয়েক প্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীরা মরিয়া হয়ে উঠবে না।
এ ছাড়া ভর্তির জন্য নির্ধারিত ফির চেয়ে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বেশি অর্থ নিচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। একজন অভিভাবক উষ্মার সঙ্গেই বলেছেন, যে সিদ্ধান্ত সরকার বাস্তবায়ন করতে পারে না, সেই সিদ্ধান্ত নেয় কেন? আমরা আশা করব, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কথা চিন্তা করে সরকার অতিরিক্ত অর্থ আদায় বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
এ কথা সত্য যে, এবার তাড়াহুড়া করার কারণে উচ্চমাধ্যমিকে ভর্তির নির্ভুল তালিকা তৈরি করা যায়নি। ভবিষ্যতে কর্তৃপক্ষ সজাগ থাকলে শিক্ষার্থীদের বিড়ম্বনা ও হয়রানি যেমন কমবে, তেমনি ভর্তি–বাণিজ্যের পথও চিরতরে বন্ধ হয়ে যাবে।