যে গভর্নরের জন্য আইন বদলাতে হলো

মার্ক জোসেফ কার্নে ইতিহাসে স্থান পাবেন বিশেষ একটি কারণে। বিরল সৌভাগ্যের অধিকারী মার্ক কার্নে দুই বড় দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ছিলেন। কানাডায় জন্ম নেওয়া এই অর্থনীতিবিদ ২০০৮ থেকে ২০১৩ সালের জুন পর্যন্ত ব্যাংক অব কানাডার গভর্নর এবং ২০১৩ সালের জুলাই থেকে ২০২০–এর মার্চ পর্যন্ত ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের গভর্নর ছিলেন। যোগ্যতা ও দক্ষতার কারণে ভিনদেশের নাগরিক হয়েও তিনি আরেক দেশের গভর্নর হতে পেরেছিলেন।

২০০৮ সালে তিনি যখন কানাডার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর হন, তখন বিশ্ব নতুন এক অর্থনৈতিক মন্দায় ঢুকে গেছে। কিন্তু সেই মন্দা কানাডাকে গভীর খাদে ফেলে দেয়নি, আর কৃতিত্ব দেওয়া হয় মার্ক কার্নেকে। সংকট নিরসনে দক্ষতার কারণেই সারা বিশ্বকে অবাক করে দিয়ে তাঁকে ২০১৩ সালে ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের গভর্নর পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। তখন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ছিলেন ডেভিড ক্যামেরন আর অর্থমন্ত্রী জর্জ অসবর্ন। তখন কিন্তু কার্নে ব্রিটিশ নাগরিক ছিলেন না। তাই সব পত্রিকায় বড় বড় করে লেখা ছিল, ‘ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের ৩১৮ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম একজন বিদেশি গভর্নর’। নাগরিকত্বের দিক থেকে এখন তিনি অবশ্য একই সঙ্গে কানাডীয়, ব্রিটিশ ও আইরিশ।

২০০৮ সালের এক অর্থনৈতিক মন্দার সময়ে মাত্র ৪৩ বছর বয়সে ব্যাংক অব কানাডার হাল ধরেছিলেন মার্ক কার্নে। আর তার চেয়েও বড় এক অর্থনৈতিক মন্দার সময় ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের দায়িত্ব ছেড়ে দিলেন তিনি, গত মার্চে। মার্ক কার্নের বয়স মাত্র ৫৫ বছর। সুতরাং তাঁর বিদায় বয়সের কারণে নয়। ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের গভর্নরের মেয়াদ সর্বোচ্চ আট বছর। মার্ক কার্নে পাঁচ বছরের জন্য নিয়োগ পেয়েছিলেন, তবে বলা ছিল চাইলে তিনি আট বছরের পুরো মেয়াদ কাটাতে পারবেন। কিন্তু থাকলেন প্রায় সাত বছর, নিজেই পদটি ছেড়ে দিয়েছেন। তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে যুক্তরাজ্যের বের হওয়া বা ব্রেক্সিটের সমর্থক ছিলেন না। শেষ পর্যন্ত ব্রেক্সিট চূড়ান্ত হওয়ায় তিনি পদ ছেড়ে দেন।

মার্ক কার্নের অধ্যায় শেষ করি ছোট্ট একটি ঘটনা বলে। ব্রেক্সিট নিয়ে ভোটাভুটি শেষে ডেভিড ক্যামেরন পদ ছেড়ে দিলে থেরেসা মে ২০১৬ সালের জুলাই মাসে প্রধানমন্ত্রী হন। একই বছরের অক্টোবরে থেরেসা মে এক অনুষ্ঠানে ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের কিছু নীতির সমালোচনা করেন। এর জবাব দিয়েছিলেন মার্ক কার্নে। বলেছিলেন, ‘আমি আমার কাজটি কীভাবে করব তা আমাকে বলতে এসো না (ডোন্ট টেল মি হাউ টু ডু মাই জব)।’ তিনি আরও বলেছিলেন, ‘আমরা আমাদের নীতি নিয়ে কোনো রাজনৈতিক পক্ষ থেকে আসা নির্দেশ গ্রহণ করব না (উই আর নট গোয়িং টু টেক ইনস্ট্রাকশন অন আওয়ার পলিসিজ ফ্রম দ্য পলিটিক্যাল সাইড)।’ এ বক্তব্যের পরও মার্ক কার্নের কাজ করতে কোনো সমস্যা হয়নি। ২০১৪ সালে মার্ক কার্নে সামনের দিনগুলোতে সুদের হার কেমন হবে, তা নিয়ে কোনো ইঙ্গিত দিতে রাজি ছিলেন না। এর সমালোচনা করে ট্রেজারি কমিটির সদস্য, এমপি ম্যাকফাডেন কেন্দ্রীয় ব্যাংককে ‘অনির্ভরযোগ্য ছেলেবন্ধু’ (আনরিলায়াবল বয়ফ্রেন্ড) বলেছিলেন। সেই কথাটি এখনো বিখ্যাত হয়ে আছে। কিন্তু মার্ক কার্নে তাঁর জায়গা থেকে একটুও নড়েননি।

বাংলাদেশে আইন বদল

এত সব কথা বলার উদ্দেশ্য হচ্ছে বাংলাদেশে গভর্নর পদ নিয়ে একটি ব্যতিক্রমী ঘটনা ঘটেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির নতুন করে নিয়োগ পেয়েছেন। এ জন্য আইন বদলাতে হয়েছে। আইন বলছে, গভর্নরের বয়স হবে সর্বোচ্চ ৬৫ বছর। কেবল তাঁর জন্যই তা বদলে ৬৭ বছর করা হয়েছে।

মার্ক কার্নের মতো ফজলে কবিরও এক সংকটের সময় গভর্নর হয়েছিলেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে ২০১৬ সালের ১৫ মার্চ পদত্যাগে বাধ্য হন তৎকালীন গভর্নর আতিউর রহমান। দুজন সাবেক আমলার নাম থেকে বেছে নেওয়া হয়েছিল সাবেক অর্থসচিব ফজলে কবিরকে। আতিউর রহমানের পদত্যাগের এক ঘণ্টার মধ্যেই গণমাধ্যমকে নতুন গভর্নরের নাম বলে দেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। 

বাংলাদেশে মূলত এভাবেই গভর্নর পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। গভর্নরের নিয়োগ নিয়ে এখানে কোনো নীতিমালা নেই, গভর্নর হতে হলে কী কী যোগ্যতা থাকতে হবে, তা-ও কোথাও উল্লেখ নেই। আইনে বলা আছে, সরকার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর নিয়োগ দেবে। ফলে সরকার এভাবেই তার ইচ্ছা অনুযায়ী গভর্নর পদে নিয়োগ দেয়, আবার আইনও বদলায়।

ফজলে কবিরের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল চলতি বছরের ১৯ মার্চ। সেই মেয়াদ শেষ হওয়ার ৩৪ দিন আগে, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি তা আরও ৩ মাস ১৩ দিনের জন্য বাড়িয়ে দেওয়া হয়। অর্থাৎ ৬৫ বছর পর্যন্ত তিনি গভর্নর থাকবেন। সেই বয়সও হয়ে যায় ৩ জুলাই।
এরপর শুরু হয় বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার সংশোধনের কাজ। বিল আকারে তা পাস হয় ৯ জুলাই। এরপর প্রজ্ঞাপন জারি হলে ১৬ জুলাই নতুন করে গভর্নরের চেয়ারে বসেন ফজলে কবির। আইন সংশোধন করে কাউকে এভাবে গভর্নর পদে বসানো বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম।

কেন আইন বদল

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এখন দেশের বাইরে। লন্ডন যাওয়ার আগে তিনি প্রথম আলোকে বলেছিলেন, কোভিড-১৯ পরিস্থিতি মোকাবিলা ও অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে প্রায় এক লাখ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে। এগুলোর বেশির ভাগই বাস্তবায়িত হবে ব্যাংক খাতের মাধ্যমে। ফলে এই সময়ে নতুন কাউকে গভর্নর পদে নিয়োগ দেওয়ার ঝুঁকি নেওয়া ঠিক হবে না।

বিশ্বে এখন পর্যন্ত মন্দা মোকাবিলার সবচেয়ে যোগ্য ও পরীক্ষিত ব্যক্তি হলেন মার্ক কার্নে। গভীর এক অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যেই তিনি বিদায় নিয়েছেন। তাঁকে রাখার কোনো চেষ্টাই করেনি বরিস জনসন সরকার। কারণ, মার্ক কার্নের চলে যাওয়ার কথা এক বছর আগে থেকেই জানা ছিল। ফলে ২০১৯ সালের এপ্রিল থেকেই নতুন গভর্নর নিয়োগের উদ্যোগ নিয়ে নামও চূড়ান্ত করা হয়। ফলে এক দিনের জন্যও গভর্নরশূন্য থাকেনি ব্যাংক অব ইংল্যান্ড।

এমন নয় যে একদিন খুব সুন্দর সকালে উঠে জানা গেল বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নরের পদ খালি। আইন অনুযায়ী ফজলে কবির এই পদে থাকতে পারবেন না তা সবারই জানা ছিল। তারপরও কোনো উদ্যোগ ছিল না। এর ফলাফল হচ্ছে এক ব্যক্তির জন্য আইন বদল।

এর আগে দেশে ২০০৪ সালে বিচারপতিদের বয়সসীমা ৬৫ থেকে বাড়িয়ে ৬৭ বছর করা হয়েছিল। তখন প্রধান বিচারপতি ছিলেন বিচারপতি কে এম হাসান। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে করা হয়েছে বলে তখনই এ নিয়ে তীব্র আপত্তি তুলেছিল আওয়ামী লীগ। ফলে ২০০৬ সালে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হিসেবে কে এম হাসানের নিয়োগ পাওয়ার কথা থাকলেও আপত্তি তোলা হয়। এর পরিণতি সবারই জানা। সন্তানের বিয়ে উপলক্ষে একজন সেনাপ্রধানের মেয়াদ কয়েক মাস বাড়ানোও ছিল আরেকটি খারাপ উদাহরণ।

সুন্দর সহাবস্থান

সাবেক অর্থমন্ত্রী এ এম এ মুহিত এবং সাবেক গভর্নর আতিউর রহমানের মধ্যকার সম্পর্ক যে খুব ভালো ছিল তা বলা যাবে না। একের পর এক আর্থিক কেলেঙ্কারির সময় তা আরও প্রকট হয়েছিল। আর রিজার্ভ চুরির তথ্য না জানানো ও ব্যর্থতার মধ্য দিয়ে তা চূড়ান্ত রূপ পায়। ফলে গভর্নর বদল।

অবশ্য রাজনৈতিক সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মধ্যে মধুর সম্পর্ক খুব একটা দেখাও যায় না। কেননা, রাজনৈতিক সরকার তাৎক্ষণিক সাফল্যের আশায় অনেক সিদ্ধান্ত নিতে চায়, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাজ তা প্রতিহত করে। অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে সবকিছু বিচার করেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের। কখনো কখনো এ নিয়ে সংঘাত বেশি দৃশ্যমান হয়েও পরে। যেমন ট্রাম্প ও ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের মধ্যে বিরোধ তো আন্তর্জাতিক সংবাদ। তুরস্কের এরদোয়ান তাঁর দেশের গভর্নরকে জোরপূর্বক বিদায় করে দিয়েছেন। ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তে এসব ঝামেলায় না গিয়ে নিজের রাজনৈতিক বন্ধুকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর নিয়োগ দিয়েছেন। 

বিশ্বের সেরা গভর্নর হিসেবে খ্যাতি পাওয়া রঘুরাম রাজনের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদির বিরোধের কথা সবাই জানেন। রঘুরাম রাজনের বিদায়ে রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার (আরবিআই) গভর্নর হয়েছিলেন উর্জিত প্যাটেল। নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে টিকতে না পেরে তিনিও পদ ছেড়ে দেন। এর আগে ২০১৯ সালের জুনে ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর ভিরাল আচার্য মেয়াদ শেষের আগেই পদত্যাগ করেন। তিনি নরেন্দ্র মোদির প্রতি স্পষ্ট অভিযোগ তুলে বলেছিলেন, সরকার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয়। অবশ্য রঘুরাম রাজন ও ভিরাল আচার্যের জন্য পদ ছেড়ে দেওয়া সহজ ছিল। দুজনেই যুক্তরাষ্ট্রে তাঁদের শিক্ষকতার পেশায় ফিরে গেছেন।

তবে ফজলে কবির তাঁর পুরোটা সময় সুন্দর এক সহাবস্থানের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। সরকারের কোনো সিদ্ধান্তেই তিনি আপত্তি জানাননি। সাবেক এবং বর্তমান দুই অর্থমন্ত্রীর সঙ্গেই তাঁর সুন্দর সম্পর্ক। সরকার চেয়েছে খেলাপি ঋণের সংজ্ঞা বদল করতে হবে, ঋণখেলাপিদের বিশেষ সুবিধা দিতে হবে, ব্যাংক পরিচালকদের জন্য আইন বদলাতে হবে, নতুন ব্যাংক দিতে হবে, কিংবা সুদহার নয় ও ছয় করতে হবে—কোনো প্রশ্ন তোলেননি তিনি। এসবই করা হয়েছে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে, প্রভাবশালীদের চাপে।

সরকারের নির্দেশ ছিল ব্যাংকঋণ ও আমানতের সুদহার নয়-ছয় শতাংশে নির্ধারণ করতে হবে। যদিও সুদের হার বাংলাদেশ ব্যাংক ঠিক করে দেবে না, এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল সেই ১৯৯০ সালে। সেটি ছিল সংস্কারের একটি বড় পদক্ষেপ। সারা বিশ্বই সুদহার বাজারব্যবস্থার ওপরে ছেড়ে দিয়েছে। তবে এই সুদহারকে পরোক্ষভাবে প্রভাবিত করার কিছু অস্ত্র সব কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হাতেই থাকে। এ কারণেই মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক দ্য ফেড যখন নীতিনির্ধারণী সুদহারে পরিবর্তন আনে, তা সারা বিশ্বের সুদহারকে বদলে দেয়।

অথচ সরকার চেয়েছে বলে সুদহার নির্দিষ্ট করে দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। নির্ধারণ করে দিলেও সব ঋণের সুদহার একটি কখনো হয় না। যেমন কুটির, অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (সিএমএসএমই) এবং ভোক্তা ঋণ। এসব ঋণের প্রক্রিয়াগত খরচ বেশি। এ কারণেই ৯ শতাংশ সুদে কোনো ব্যাংক সিএমএসএমই ও ভোক্তা ঋণও দিচ্ছে না। সুদহার নির্ধারণ করে দিলে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প যে ব্যাংক থেকে উধাও হয়ে যায়, তার উদাহরণও আছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আপত্তি সত্ত্বেও কেনিয়ার সরকার আইন পাস করে এভাবে সুদহার নির্ধারণ করে দিয়েছিল। ফলাফল হচ্ছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ঋণ পায়নি। এতে অর্থনীতিতে সংকট বেড়েছে। একই সমস্যায় আছে বাংলাদেশও।

বিশ্বের সব কেন্দ্রীয় ব্যাংকই নীতিনির্ধারণী সব সিদ্ধান্ত নিজেরাই চূড়ান্ত করে। কিন্তু ফজলে কবিরের সময় এসব সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়াও পাল্টে গেছে। কিছু নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে পাঁচ তারকা হোটেলে বসে, ব্যাংকমালিকদের সঙ্গে নিয়ে, তাঁদের আগ্রহে এবং সরকারের নির্দেশে। বাংলাদেশ ব্যাংকের কাজ ছিল শুধু আলোচনার নোট ঠিকঠাক নেওয়া এবং সে অনুযায়ী নির্দেশ জারি করা। এ রকম অংশগ্রহণমূলক সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া যেকোনো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ইতিহাসেই বিরল। এটি একটি খারাপ নজির হয়েই থাকবে।

‘মর্নিং সোওজ দ্য ডে’ বলে একটা কথা আছে। ফজলে কবির নতুন করে দায়িত্ব নিয়ে প্রথম দিনই যে নথিটি স্বাক্ষর করেছেন, সেটি বহুল আলোচিত ন্যাশনাল ব্যাংকের একজন পরিচালক নিয়োগ নিয়ে। আর সেই পরিচালক হলেন তাঁরই একসময়ের সহকর্মী, বিতর্কিত সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী। ন্যাশনাল ব্যাংক আলোচিত সিকদার গ্রুপের মালিকানাধীন। রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী এই গ্রুপের দুই সদস্য আরেক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে গুলি করে হত্যাচেষ্টার দায়ে পলাতক। নথিটি গভর্নরের অপেক্ষায় ছিল। চেয়ারে বসেই তিনি তার অনুমোদন দিয়েছেন।

শওকত হোসেন প্রথম আলোর বিশেষ বার্তা সম্পাদক