আজ থেকে পশুর হাটে কেনাবেচা

দেশব্যাপী কোভিড-১৯ মহামারি ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষাপটে এবারের ঈদুল আজহার সময় সংক্রমণ এড়ানোর লক্ষ্যে কোরবানির পশু কেনাবেচায় অনলাইন প্রযুক্তি ব্যবহারের আহ্বান জানানো হয়েছে। কিন্তু এই যুক্তিসংগত আহ্বানে যথেষ্ট সাড়া মেলেনি। সশরীরে পশু কেনাবেচার আয়োজনও ঈদের বেশ আগেই শুরু হয়েছে বলে পত্রপত্রিকায় খবর বেরিয়েছে। ২৬ জুলাই প্রথম আলোয় প্রকাশিত এক সচিত্র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ইজারা দেওয়া অস্থায়ী হাটগুলোতে কোরবানির পশু কেনাবেচার প্রস্তুতি শুরু করা হয়েছে আরও এক সপ্তাহ আগেই। কিন্তু ইজারার শর্তে বলা হয়েছে, নির্ধারিত স্থানগুলোতে কোরবানির পশুর হাট বসানো যাবে ঈদুল আজহার পাঁচ দিন আগে আর হাট বসার দুদিন আগে থেকে প্রস্তুতিমূলক কাজ শুরু করা যাবে। অর্থাৎ ইজারার শর্ত ভঙ্গ করা হয়েছে, কিন্তু তা প্রতিকারের উদ্যোগ তেমন চোখে পড়েনি। 

এদিকে আজ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোরবানির পশুর হাটগুলোতে কেনাবেচা শুরু হচ্ছে। কিন্তু করোনা সংক্রমণের ধারা সারা দেশেই অব্যাহত আছে। এ পরিস্থিতিতে সংক্রমণ এড়ানোর জন্য ক্রেতা, বিক্রেতা, পশুর হাটগুলোর ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট লোকজনসহ সবাইকে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে; সামষ্টিক দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। 

সংক্রমণ এড়ানোর স্বার্থে কোরবানির পশুর হাটগুলোতে সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং বাধ্যতামূলকভাবে সবার মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। পশু বিক্রির কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিরা যেহেতু দীর্ঘ সময় হাটে অবস্থান করবেন এবং সম্ভাব্য ক্রেতা হিসেবে প্রচুর লোকের সংস্পর্শে যাবেন, তাই তাঁরা মাস্কের পাশাপাশি পিপিই ও হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহার করলে সংক্রমণের ঝুঁকি কম হবে। দর-কষাকষি, বিক্রির রসিদ ও টাকা আদান-প্রদানের সময় শারীরিক দূরত্ব রক্ষার কথা মনে রাখতে হবে। একই স্থানে একসঙ্গে অনেক মানুষের ভিড় করা চলবে না। এসব বিষয় নিশ্চিত করার প্রথম দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের লোকজনের, যাঁরা পশুর হাটগুলো ব্যবস্থাপনা ও নজরদারির কাজে নিয়োজিত থাকবেন। মুখে মাস্ক ছাড়া একজন ব্যক্তিও যেন কোনো পশুর হাটে ঢুকতে না পারেন, তা নিশ্চিত করতে হবে।

দ্বিতীয়ত, যাঁরা কোরবানির পশু কেনাবেচার জন্য সশরীরে হাটে যাবেন, তাঁদের প্রত্যেককে মনে রাখতে হবে, কোভিড-১৯ সংক্রমণ থেকে নিজেকে ও নিজের পরিবারকে রক্ষা করার দায়িত্ব প্রধানত নিজেকেই নিতে হবে। নিজের ও স্বজনদের জীবনের ঝুঁকি এড়ানোর চেষ্টার মধ্য দিয়ে অন্যদের ঝুঁকিও এড়ানো সম্ভব হবে। সবার সতর্কতা ও স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মেনে চলাই ঈদুল আজহার সময়ে সংক্রমণ বৃদ্ধির বাড়তি ঝুঁকি এড়ানোর উপায়।