মোফাখখার, একরামুল, সিনহা - এরপর কে?

ব্যাপকভাবে আলোচিত–সমালোচিত ‘ক্রসফায়ার’, ‘বন্দুক যুদ্ধ’ বা ‘আত্মরক্ষার্থে’ আইন–শৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিবর্ষণ ও মৃত্যুর অধিকাংশ ঘটনাই কারও কাছে বিশ্বাসযোগ্য হয়নি। এ ধরনের অনেক ঘটনার মধ্যে ব্যাপক প্রশ্নের মুখে পড়া অন্তত তিনটি আলোচিত ঘটনা আমরা বিবেচনায় নিতে পারি। তাঁরা হলেন প্রবীণ বামপন্থী নেতা মোফাখখারুল ইসলাম চৌধুরী, টেকনাফ পৌরসভার কাউন্সিলর একরামুল হক এবং সর্বশেষ সেনাবাহিনীর সাবেক মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান। মোফাখখার ও একরামুল হত্যার ঘটনায় বিচার হয়নি। মেজর সিনহার ঘটনায় পরিস্থিতির চাপে অন্তত একটি তদন্ত কমিটি হয়েছে।

মোফাখখার ছিলেন পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির (এমএল) একটি অংশের বয়োজ্যেষ্ঠ নেতা। তাঁকে হত্যার পর প্রতিবাদ হয়েছিল। ২০০৫ সালে ওই ক্রসফায়ারের ঘটনায় প্রথম বড় ধরনের প্রশ্নের মুখে পড়ে র‌্যাব, যথারীতি তা ধামাচাপা পড়ে যায়।

একরামুল সরকারি দলের স্থানীয় নেতা এবং জনপ্রতিনিধি ছিলেন। তাঁকে হত্যার ঘটনা আদ্যোপান্ত রেকর্ড হয়ে যায় মোবাইল ফোনে। কিন্তু দুই বছরেও সেই ঘটনার বিচার হয়নি।

আর মেজর সিনহাকে হত্যার পর সেখানকার পুলিশ যে গল্প সাজিয়েছে, তা প্রাথমিকভাবে ধোপে টেকেনি। এই হত্যার ঘটনায় সরকারের সব পক্ষই এখন অস্বস্তিতে, সম্মানজনক সমাধানের উপায় খোঁজা হচ্ছে।

সন্ত্রাসী বা খুনি, মাদক ব্যবসায়ী ও মানব পাচারকারী—এই তিনটি পরিচয় দিতে পারলেই ক্রসফায়ার বা বন্দুকযুদ্ধ যেন বৈধ, এমন একটি ধারণা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এসব পরিচয় দিয়ে অখ্যাত, কুখ্যাতদের যেমন হত্যা করা হচ্ছে, তেমনি বাদ পড়ছে না নিরীহ মানুষও। ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা বা ব্যবসায়িক বিরোধ মেটাতেও র‌্যাব–পুলিশকে ব্যবহার করা হচ্ছে। কাউকে ক্রসফায়ারে দেওয়া হচ্ছে, কাউকে ভয় দেখানো হচ্ছে ক্রসফায়ারে দেওয়ার। এরপর একেকটি মিথ্যা ও বানোয়াট গল্প সাজানো হচ্ছে, যা বিশ্বাস করার মতো মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন।

গোয়েবলস (জোসেফ গোয়েবলস ছিলেন অ্যাডলফ হিটলারের প্রধান সহযোগী) বলেছিলেন, মিথ্যা বারবার বলতে বলতে তা একসময় ‘সত্য’ হয়ে যায়। কিন্তু ক্রসফায়ার বা বন্দুকযুদ্ধের গল্পের বিশ্বাসযোগ্যতা দিন দিন কমছে। অমুক জঙ্গল, পাহাড় বা নদীর তীরে আসামিকে সঙ্গে নিয়ে অস্ত্র উদ্ধার কিংবা আসামিকে গ্রেপ্তার করতে যাওয়া হয়েছিল। এরপর আসামির সহযোগীরা র‌্যাব বা পুলিশের ওপর গুলিবর্ষণ করে। এ সময় আত্মরক্ষার্থে পুলিশ বা র‌্যাব পাল্টা গুলি ছোড়ে। এ সময় আসামির সহযোগী গুলিবিদ্ধ হন, তাঁকে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

র‌্যাবের ‘ক্রসফায়ারে’ কথিত চরমপন্থী বলে পরিচয় দেওয়া প্রবীণ বামপন্থী নেতা মোফাখখারুল ইসলাম চৌধুরী নিহত হওয়ার পর যে প্রশ্ন সামনে এসেছিল, তা হলো—তাঁর অপরাধ কী?

ওই হত্যার প্রতিবাদকারীদের একজন প্রবীণ বাম নেতা ও সাংসদ রাশেদ খান মেননের সঙ্গে মঙ্গলবার কথা বলি। তিনি বললেন, ধরে নিলাম, উনি ভুল রাজনীতি করেছেন। সে জন্য ওনাকে মেরে ফেলতে হবে? ওনার মতো অনেকেই তো ভুল রাজনীতি করে মূলধারার রাজনীতিতে এখন প্রতিষ্ঠিত।

ক্রসফায়ারের সময় একরামুল হক সংযুক্ত ছিলেন অন্য প্রান্তে থাকা স্ত্রী আয়েশা বেগমের মুঠোফোনের সঙ্গে। ২০১৮ সালের ২৬ মে হত্যাকাণ্ডটি ঘটার আগে-পরে র‌্যাব সদস্যদের আলাপচারিতা শোনা যায় ফোনে থেকে যাওয়া রেকর্ডে। ঘটনার পাঁচ দিন পর তাঁর স্ত্রী আয়েশা বেগম সংবাদ সম্মেলন করে অডিও রেকর্ড প্রকাশ করেছিলেন। তিনি উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ছিলেন, তিনবার কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন। হত্যার তথ্যপ্রমাণ থাকলেও বিচার পায়নি একরামুলের পরিবার।

অথচ সংবিধানের ২৭ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘আইনের চোখে সকল নাগরিক সমান এবং প্রত্যেকে আইনের সমান সুযোগ পাবেন।’ অনুচ্ছেদ ৩১ অনুসারে, আইন অনুযায়ী এমন ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে না, যাতে কোনো ব্যক্তির জীবন, স্বাধীনতা, দেহ, সুনাম বা সম্পত্তির হানি ঘটে।’ অনুচ্ছেদ ৩২ বলছে, জীবন ও ব্যক্তিস্বাধীনতা থেকে কোনো ব্যক্তিকে বঞ্চিত করা যাবে না। আর অনুচ্ছেদ ৩৫(৩) অনুযায়ী ফৌজদারি অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ আদালত বা ট্রাইব্যুনালে দ্রুত ও প্রকাশ্য বিচার লাভের অধিকারী হবেন।

লেখক ও গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদের ভাষায়, ‘ক্রসফায়ার যেন পার্ট অব দ্য লিগ্যাল সিস্টেম (আইনি প্রক্রিয়ার অংশ) হয়ে গেছে। এটা সংবিধান বা আইনের শাসন সমর্থন করে না। আইনের দর্শন হচ্ছে, অনেক অপরাধী ছাড়া পাক, কিন্তু একজন নিরপরাধী যেন শাস্তি না পায়। তা ছাড়া কারও ভুলের কারণে একটি জীবন চলে গেলে তা ফিরিয়ে দেওয়া যায় না।’

এ দেশেই কিন্তু বড় বড় সন্ত্রাসী বা খুনির বিচার হয়েছে আইন-আদালতের মাধ্যমে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা মামলা বা যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মতো বড় মামলাগুলো বাদ দিলেও আইন-আদালতের মাধ্যমে বিচার পাওয়ার নজির কিন্তু কম নেই। খুলনার কুখ্যাত সন্ত্রাসী এরশাদ শিকদার, চাঁদপুরের ক্রমিক খুনি রসু খাঁসহ বেশ কয়েকজনের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে, অনেকে ফাঁসির রশিতে ঝোলার অপেক্ষায় আছেন। গত বছরের ১২ জুলাই প্রথম আলোয় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১ হাজার ৭০৪ আসামি কারাগারে নির্জন প্রকোষ্ঠে চূড়ান্ত রায়ের অপেক্ষায় রয়েছেন।

বড় অপরাধীদের অনেকেই কিন্তু মাফ পান রাষ্ট্রপতির সাধারণ ক্ষমার সুযোগ নিয়ে। সাম্প্রতিক সময়ে এমন অনেক দৃষ্টান্ত তৈরি হয়েছে। ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি আসলাম ফকিরকে রাজনৈতিক বিবেচনায় ফাঁসির সাজা মওকুফ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি। ২০১৭ সালে তিনি মুক্তি পান, তিন বছর পর আবারও আরেকটি হত্যা মামলার প্রধান আসামি তিনি।

এর আগে ২০০৪ সালে চারদলীয় জোট সরকারের উপমন্ত্রী রুহুল কুদ্দুস তালুকদারের ভাতিজা সাব্বির আহম্মদ গামা খুন হন। ২০০৬ সালে ২১ জনকে ফাঁসির আদেশ দেন আদালত। ২০১০ সালে রাষ্ট্রপতি সবার ফাঁসির সাজা মওকুফ করেন। আবার লক্ষ্মীপুর জেলা বিএনপির তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল ইসলামের হত্যাকারী আওয়ামী লীগ নেতা আবু তাহেরের ছেলে বিপ্লবের সাজা মওকুফ করেছেন রাষ্ট্রপতি। এর আগে সুইডেন বিএনপির নেতা মহিউদ্দিন ঝিন্টুর ফাঁসি মওকুফ করে সমালোচনার মুখে পড়েছিল বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার। তার মানে হচ্ছে, বিচারিক প্রক্রিয়ায় ফাঁসি হলেও দল, প্রভাব বা পরিচয় দেখে মুক্তি দেওয়া হয়।

সাম্প্রতিক সময়ে দুর্ধর্ষ কয়েকজন আসামিকে প্রচলিত আইনে বিচারের মুখোমুখি করা হচ্ছে। যুবলীগ নেতা ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট, জি কে শামীম, মো. সাহেদ, আরিফ-সাবরিনা, শামীমা নূর পাপিয়া, সেলিম প্রধানের মতো প্রভাবশালী আসামিরা কিন্তু জেলে আছেন। আমিন হুদার মতো মাদকসম্রাট, রফিকুল আমীনের মতো বিত্তশালী প্রতারক, মাহবুবুল হক চিশতির মতো ব্যাংক ডাকাত, হল–মার্ক কেলেঙ্কারির হোতা আরিফ-জেসমিনের বিচার কিন্তু প্রচলিত আইনে হয়েছে বা হচ্ছে। তাঁদের বিচার যদি হতে পারে, তাহলে পাড়া-মহল্লার ছিঁচকে সন্ত্রাসী, খুনি বা মাদক কারবারিকে কেন বিচারের মুখোমুখি করা যাবে না। প্রতিটি উপজেলায় আদালত, থানা, আইনজীবী আছেন। তাই প্রত্যেককে বিচারের মুখোমুখি করার সুযোগ কিন্তু আছে। তবে বিচারপ্রক্রিয়ায় অনিয়ম-দুর্নীতি আছে এটা সত্য, কিন্তু বড় সত্য হচ্ছে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ। এটা বন্ধ করতে পারলে, বিচারপ্রক্রিয়ায় জড়িতদের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে পারলে বদলে যাবে অনেক কিছু, সুগম হবে ন্যায়বিচারের পথ।

মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে, তার প্রমাণ টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাসের সাম্প্রতিক ভিডিও বক্তব্য—যেখানে তিনি মাদক নির্মূলে টেকনাফে কোনো কোনো গাড়িতে গায়েবি অগ্নিসংযোগ, কোনো কোনো বাড়িতে গায়েবি হামলা ও অগ্নিসংযোগ করার প্রকাশ্য ঘোষণা দিয়েছেন। গত ২২ জুলাই ওসি প্রদীপের এই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। এর আগেও ফিল্মি স্টাইলে তাঁর ক্রসফায়ারের ঘোষণা, দেখে নেওয়ায় প্রকাশ্য হুমকির বিষয়গুলো নিয়ে সমালোচনা হয়েছে। তাঁকে আইনের মধ্যে থেকে দায়িত্ব পালন করতে হবে এবং বন্ধ করতে হবে মাদক ও মানব পাচার।

জোট সরকারের সময়ে ২০০২ সালে অপারেশন ক্লিন হার্ট দিয়ে শুরু হয়েছিল বিচারবহির্ভূত হত্যা। তখন হার্ট অ্যাটাকে মারা যাওয়ার গল্প শোনানো হতো। এরপর ‘ক্রসফায়ার’, ‘এনকাউন্টার’, ‘বন্দুকযুদ্ধ’, ‘আত্মরক্ষার্থে গুলি’—এসব তকমা দিয়ে চলছে বিনা বিচারে হত্যা। বিএনপির শাসনামলে র‌্যাবের জন্ম, এরপর ক্রসফায়ারের সূচনা। সেই র‌্যাব বিলুপ্তির আনুষ্ঠানিক দাবি জানিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

আর দিনবদলের নির্বাচনী ইশতেহারে আওয়ামী লীগ ঘোষণা করেছিল, ‘দল ক্ষমতায় গেলে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ করা হবে।’ কিন্তু ক্ষমতায় যাওয়ার পর ২০০৯ সালে প্রথম আট মাসে র‌্যাব ও পুলিশের হাতে ৬০ জনের মৃত্যু হয়েছিল, এরপর তা আর থামেনি। মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের হিসাবে ক্রসফায়ারে ২০১৬ সালে ১৭৭ জন, ২০১৭ সালে ১৪১ জন, ২০১৮ সালে ৪২১ জন এবং ২০১৯ সালে ৩৮৮ জন নিহত হয়েছে। এখন জাতীয় সংসদে পেঁয়াজের দাম বাড়ানোর জন্য দায়ী ব্যবসায়ী বা ধর্ষককে ক্রসফায়ারে দেওয়ার দাবি তোলেন সাংসদদের কেউ কেউ।

যদিও সাংসদ মেনন মনে করেন, এ ধরনের দাবি যৌক্তিক নয়। তাঁর মতে, এখন ক্রসফায়ার অভ্যস্ততার মধ্যে চলে এসেছে। পণ্যে ভেজাল দিলেও তাকে ক্রসফায়ারে দেওয়ার কথা বলা হয়। তাঁর প্রশ্ন, ২০০৪ সাল থেকে হাজার হাজার মানুষকে বিনা বিচারে মেরে ফেলা হলো। কিন্তু তাতে সন্ত্রাস, মাদক ব্যবসা বা মানব পাচার কি কমেছে। তা ছাড়া যারা মারা যাচ্ছে, তাদের বেশির ভাগই ছোটখাটো অপরাধে জড়িত, মাদক বহনকারী, দালাল বা এই জাতীয় অপরাধী। কিন্তু বড় অপরাধীরা সাধারণত ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকছে। এভাবে অপরাধ নির্মূল হবে না—এই অভিমত প্রবীণ এই রাজনীতিবিদের।

এখন পরিস্থিতি এমন যে ক্রসফায়ার ছাড়া যেন অপরাধ দমনের বিকল্প উপায় নেই। প্রকৃতপক্ষে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের যে সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে, তারই ধারাবাহিকতায় অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা রাশেদ খান হত্যার শিকার হলেন। সিনহার বদলে রাম, শ্যাম, যদু বা মধু যদি একইভাবে হত্যার শিকার হতেন, তাহলে ঘটনাটি আড়ালেই থেকে যেত।

ক্রসফায়ারের ঘটনায় উচ্চ আদালতে গিয়েও লাভ হচ্ছে না। ২০০৯ সালের ১৭ নভেম্বর ক্রসফায়ার নিয়ে সুয়োমোটো রুল জারি করেন হাইকোর্ট। ১৪ ডিসেম্বর শুনানি শুরুর কথা ছিল এ রুলের। তবে ওই দিন হাইকোর্ট বেঞ্চে সময় আবেদন নিয়ে হাজির হন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। ক্রসফায়ার বন্ধ রাখার মৌখিক নির্দেশ দিয়ে ওই সময় পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন হাইকোর্ট। বার্ষিক অবকাশ শেষে ২০১০ সালের ৩ জানুয়ারি উচ্চ আদালত খোলার পর দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। ভেঙে দেওয়া হয় বিচারপতি এ এফ এম আবদুর রহমান ও মো. ইমদাদুল হক আজাদের বেঞ্চ। এখন পর্যন্ত এ সুয়োমোটো রুলের শুনানি হয়নি। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে হাইকোর্টে আরও তিনটি রিট রয়েছে। এগুলো রাষ্ট্রপক্ষের হস্তক্ষেপে আর এগোয়নি।

তবে এভাবে সংবিধান ও আইন পদদলিত, মানবাধিকার লঙ্ঘন ও বিচারের পথ রুদ্ধ করে এবং ব্যক্তিবিশেষকে আইন হাতে তুলে নেওয়ার সুযোগ দিয়ে লাভটা কার হচ্ছে—এটি ভেবে দেখার এখনই সময়। রাষ্ট্র ও সরকারের কাজ অপরাধীর বিচার করা, বিচারবহির্ভূত যেকোনো কাজ বন্ধ করা এবং কেউ তা করতে চাইলে তার লাগাম টেনে ধরা। তা ছাড়া এ ধরনের বিচারের জন্য দ্রুত বিচার আইন তো আছেই। ৬০ দিনের মধ্যে সেই আইনে বিচার করার সুযোগ আছে। তাহলে এক দিনের মধ্যে ক্রসফায়ারে এমন বর্বরতা চালাতে হবে কেন?

শরিফুজ্জামান: সাংবাদিক।
[email protected]