ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রের ভূমিকা কতটা ইতিবাচক?

.
.

একুশ শতকের বয়স হলো ১৫। বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত (১৯৯৫) চতুর্থ বিশ্ব নারী সম্মেলনের পর ২০ বছর চলে যাচ্ছে। আরও পেছন ফিরে তাকালে বিশ্ব নারী বর্ষ (১৯৭৫)–এর বয়স হতে দেখছি ৪০। ‘নারীর প্রতি বৈষম্য দূরীকরণ’ সনদ জাতিসংঘ থেকে পাস হলো (১৯৭৯)। ‘নারীর অধিকার মানবাধিকার’ এই ধারাটিও যুক্ত হলো মানবাধিকার সনদে (১৯৯৩)।
এসব আন্তর্জাতিক-বিশ্ব নারী সম্মেলনগুলোতে নারীর সম-অধিকার-মানবাধিকার বিষয়ে আলোচনা-পর্যালোচনায় পুরুষ-পুরুষতন্ত্র-আইন-রাষ্ট্র-পরিবার-সমাজ-শিক্ষা-সংস্কৃতি এবং অর্থনীতি গুরুত্ব পায় সমভাবেই।
নারী-পুরুষের সম্পর্ক নিয়ে আলোচনায় ‘জেন্ডার’ সমতার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে বলা যায় লিঙ্গগত বিভেদ নয়, সমাজ-নির্মিত বিভেদই নারী-পুরুষের বৈষম্য-অসাম্য-নির্যাতন অব্যাহত রাখছে। যৌন নির্যাতনের ভয়াবহতা পুরুষকে বারবার আসামির কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে।
এ রকম একটা সংঘর্ষমূলক সময়ে সম্প্রতি পুরুষ সমাজের বিশ্ব প্রতিশ্রুতি ধ্বনিত হয়েছে: ‘নারীর পক্ষে পুরুষ’ (‘হি ফর শি’)। অর্থাৎ নারীকে পুরুষ যেমন যৌন নির্যাতন-অসম্মান করবেন না, তেমনি তাঁকে অধস্তনতা, বৈষম্য, অসাম্যের অবস্থানে ঠেলে দেবেন না। সম্মানজনক সম-অবস্থানে মানুষ হিসেবে নারী ও পুরুষ এক কাতারে দাঁড়িয়ে সামাজিক-সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক অনাচার-অবিচার-নির্যাতন রুখে দাঁড়াবেন। যেহেতু আর্থসামাজিক-রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে হাজার হাজার বছরের পুরুষতান্ত্রিকতা বজায় থাকছে, তাই নারীর পক্ষে পুরুষকে এই ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে হচ্ছে।
এই বিশ্ব প্রতিশ্রুতি বাংলাদেশসহ সব দেশেই আগ্রহ জাগিয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, ইতিবাচক অগ্রগতি ঘটবে নারী-পুরুষের ‘মানুষ’ পরিচয়ে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশে ইতিমধ্যেই নানা উদ্যোগ লক্ষ করা যাচ্ছে।
বিশ্ব ইতিহাস থেকে জানা যায়, নারীর পক্ষে এবং পাশে দাঁড়িয়ে পুরুষ যেমন লড়াই করেছেন, তেমনি পুরুষের পক্ষে ও পাশে দাঁড়িয়ে লড়াই করেছেন নারী। অন্যদিকে নারীর বহু সংগ্রামী-ইতিবাচক ভূমিকা ও অবদানের তথ্য ইতিহাসে উপেক্ষিত। রাতের সব তারাই যেমন দিনের আলোয় লুকিয়ে থাকে, তেমনি লুকিয়ে থাকে নারীর কীর্তি।
আমরা বিশ্বাস রাখতে চাই ‘মানুষ মানুষের জন্য’; ‘মানুষ মানুষের পক্ষে’। নারীও মানুষ, পুরুষও মানুষ। যখন আমরা নারীকে সব ক্ষেত্রে (ব্যক্তিপর্যায়ে, পরিবারে, সমাজে, প্রতিষ্ঠানে, রাষ্ট্রে ইত্যাদি) ‘মানুষ’ বলতে পারব, মানুষ হিসেবে মূল্যায়ন করতে পারব, তখনই ‘নারীর পক্ষে পুরুষ’-এর প্রতিশ্রুতি, তার কাজ গুরুত্ব পাবে।
ফরাসি ইউটোপীয়-সমাজতন্ত্রী শার্ল ফুরিয়ে, যিনি একজন পুরুষ (১৭৭২-১৮৩৭) প্রথম বলেছিলেন ‘নারীর মর্যাদা হচ্ছে সামাজিক ন্যায়বিচারের ব্যারোমিটার।’ নারীর দাসত্ব-শৃঙ্খলিত জীবনের শুরু কবে, সে বিষয়ে আঠারো শতকের সমাজতান্ত্রিক অগাস্ট বেবেল (১৮৪০-১৯১৩) (তিনিও একজন পুরুষ) জানিয়েছেন যে নারীরাই প্রথম মানুষ, যারা পুরুষের বশ্যতা ও দাসত্বের বন্ধন স্বীকার করেছিল, দাসপ্রথারও আগে দাসত্বের শৃঙ্খল পরেছে নারী। (August Bebel, Woman in the Past, Present and Future, Germany (1879).
এ রকম বহু পুরুষতাত্ত্বিক, কমিউনিস্ট, দার্শনিক, সাহিত্যিক নারীর পক্ষে তাত্ত্বিক ও বাস্তবিক লড়াই করেছেন। নারীর প্রতিবাদ, লড়াই, সংগ্রামকে সমর্থন জানিয়েই তাঁরা নারীর পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছেন।
ভিক্টোরীয় যুগের লেখক ও নারী ব্যক্তিত্ব হ্যারিয়েট মার্টিনিয়্যু (১৮০২-৭৬) বলেছিলেন, ‘বিগত ৫০ বছরে সমাজ পরিবর্তিত হয়েছে যথেষ্ট কিন্তু নারীর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি একেবারে বদলাল না।’ নারীকে শোষণ ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে তিনি লড়াই চালিয়ে গিয়েছিলেন। সেই সময় পুরুষ ব্যক্তিত্ব জন স্টুয়ার্ট মিল (১৮০৬-৭৩) তাঁর দ্য সাবজেকশন অব উইমেন (১৮৬৯) বইটিতে নারীর শোচনীয় অবস্থার কথা তুলে ধরে বলেছেন ‘আজকের দিনে বিয়েই হলো একমাত্র ক্ষেত্র, যেখানে আইনত দাসপ্রথা বজায় আছে।’
আমরা মিলিয়ে দেখতে পারি রামমোহন রায়ের (১৭৭২-১৮৩৩) বক্তব্য: ‘একজন নারী একাধারে রাঁধুনি, শয্যাসঙ্গিনী এবং বিশ্বস্ত গৃহরক্ষী মাত্র।’ ...‘সকলের স্ত্রী দাস্যবৃত্তি করে’। (রামমোহন রায় গ্রন্থাবলী, পৃ. ২০৫)।
পুরোনো সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থা তথা দাসত্বের শৃঙ্খল মোচনের লক্ষ্যে আঠারো শতকের আশির দশকে যে মহান ফরাসি বিপ্লব (১৭৮৯) শুরু হয়েছিল, সেই বিপ্লবী আন্দোলনে নারী ও শিশুর অংশগ্রহণ বাস্তবেই নতুন যুগের উন্মোচন ঘটিয়েছিল। সেই বিপ্লবী পরিস্থিতিতেও পুরুষ সমাজ দাবিনামা তৈরি করলেন ‘ডিক্লারেশন অব দ্য রাইটস অব ম্যান’ (১৭৮৯) (Declaration of the Rights of Man-1789)। প্রতিবাদে ঝলসে উঠলেন মেরি উলস্টোনক্রাফট (১৭৫৯-৯৭)। তিনি লিখলেন A vindication of the rights of man (1790) এবং A vindication of the rights of Woman (1792).
নারীর আন্দোলন, সংগ্রাম যখন উত্তুঙ্গ হয়ে উঠেছিল, তখন ১৮৩২ সালে ইংল্যান্ডে ‘পার্লামেন্টারি রিফর্ম অ্যাক্ট’-এ নারী ভোটাধিকার নিষিদ্ধ হয়েছিল। ১৮৫৭ সালে মেয়েদের কাজের দাবি নাকচ হয়ে গিয়েছিল। উদার জাতীয়তাবাদীদের বিধিব্যবস্থা ছিল এ রকম: ‘নারীরা বাইরের কাজে গেলে সাংসারিক জীবনে সংকট সৃষ্টি হয়। কাজেই ঘরেই মেয়েদের থাকা প্রয়োজন। ঘরকন্নাই মেয়েদের কাজ।’ দার্শনিক শোপেনহাওয়ার (Schopenhawer) বলেছিলেন: ‘সন্তানের জন্ম দিয়ে, সন্তান পালন করে ও স্বামীদের অধীনে থেকেই নারীরা তাদের জীবনের ঋণ পরিশোধ করবে। তাদের ইচ্ছামতো মত প্রকাশ করতে দেওয়া যায় না।’ পৃথিবীর সব দেশে এবং বাংলাদেশের সমাজে এই নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি এখনো চলমান রয়েছে।
কার্ল মার্ক্স (১৮১৮-৮৩) ও ফ্রেডারিক অ্যাঙ্গেলস (১৮২০-৯৫) বলেছিলেন, ‘শ্রমজীবী মানুষের মুক্তির সঙ্গেই নারীর মুক্তি জড়িত।’ সমাজতান্ত্রিক সোভিয়েত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত (১৯১৭) হওয়ার পরে এই তত্ত্বেরও সুফল ঘটেছে দেশে দেশে। কিন্তু তার পরও এবং এখনো এ নিয়ে তত্ত্বগত ও বাস্তবিক-সামাজিক-অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক তর্ক-বিতর্ক ঘটছে। ‘নারীর পক্ষে পুরুষ’-এর ভূমিকা সমাজতন্ত্র-পুঁজিবাদ-বিপ্লববাদ-নারীবাদ ইত্যাদি রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা ও মতবাদের ক্ষেত্রে যেমন সাফল্য এনেছে, তেমনি ব্যর্থতাও ঘটিয়েছে। মৌলবাদ কখনোই নারীর পক্ষে দাঁড়ায়নি; নারী প্রগতি ও নারীর মানবাধিকারের বিরুদ্ধে ফতোয়া দিয়ে চলেছে।
তবে সামাজিক-পারিবারিক-সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক ক্ষেত্র–গুলোতে ‘নারীর পক্ষে পুরুষ’-এর লেখনী, কণ্ঠস্বর, সংগ্রাম, ভূমিকা ও অবদান বিষয়ে জানার জন্য ১৯৭০-এর দশক থেকে আজ অবধি বাঙালি সমাজভিত্তিক, বাংলাদেশভিত্তিক অনুসন্ধান, গবেষণা, সাক্ষাৎকার ইত্যাদি বিষয়ে ছোট-বড় কিছু কাজ করতে গিয়ে দেখেছি এ ক্ষেত্রে অর্জনের ভান্ডার কম নয়। আবার বড় বড় সাফল্যের পাশাপাশি সমাজ-সংস্কৃতি-রাজনীতি ও মূল্যবোধের পশ্চাদপসরণও দেখা যাচ্ছে।

অঙ্কন: তুলি
অঙ্কন: তুলি

রামমোহন রায় (১৭৭৪-১৮৩৩) সারাজীবন সংগ্রাম করে সতীদাহ প্রথা বন্ধে পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। ১৮৩২ সালের ১২ জুলাই প্রিভি কাউন্সিলের রায়ে সতীদাহ বন্ধের আইন চূড়ান্তভাবে ঘোষিত হলো। কিন্তু এখনো ভারতের কোথাও কোথাও সতীদাহ হচ্ছে এবং সতী হয়ে গৌরববোধ করতে চাচ্ছে নারী নিজেও।
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ‘বাল্যবিবাহ’ বন্ধে সারাজীবন লড়াই করেছেন। ১৯২৯ সালে আইনত বাল্যবিবাহ নিষিদ্ধ হলো। কিন্তু বাংলাদেশে সম্প্রতি বাল্যবিবাহ বন্ধে ও মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৬ না ১৮ নিয়ে যে বিতর্ক চলছে, তাতে বলা যায় না যে পুরুষ একা সে জন্য দায়ী। মহিলাবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও সরকারপ্রধান নারী হয়েও যে কোমর বেঁধে ‘বাল্যবিবাহ’ রোধের বিপরীত অবস্থান নিয়েছেন, বাংলাদেশের পুরুষসমাজও তার প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছে।
উনিশ শতকে বাংলাদেশের নারীশিক্ষার পক্ষে বাঙালি পুরুষ বুদ্ধিজীবী-সমাজ সংস্কারক-সাহিত্যিকদের ব্যাপক ভূমিকা যদি না থাকত, তবে নারী জাগরণের দুয়ার খোলা সম্ভব হতো না। সে ক্ষেত্রে অবশ্য ব্রাহ্ম-হিন্দুধর্মাবলম্বীদের ভূমিকা অগ্রণী ছিল। মুসলিম নারী জাগরণের ক্ষেত্রেও তাঁদের ভূমিকা রুদ্ধদ্বার মুক্ত করার পথ তৈরি করেছিল। এ ক্ষেত্রেও দ্বন্দ্ব ও প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা যায় একশ্রেণির মুসলিম পুরুষ বুদ্ধিজীবীর মধ্যে।
দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ‘বিবাহ পদ্ধতি’ (১৮৬১) প্রবন্ধে লিখেছেন, ‘যে কন্যা মূল্যদ্বারা ক্রীত হয়, সে বিধি-সম্মত পত্নী নহে।...স্ত্রী-পুরুষের মরণান্ত পর্যন্ত পরস্পর কাহারও প্রতি কেহ ব্যভিচার করিবেক না, সংক্ষেপেতে তাঁহাদের এই পরম ধর্ম জানিবে।’ পণপ্রথার বিরুদ্ধে নারীর পক্ষে পরম পুরুষ দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই আদর্শ ঠাকুরবাড়ির সব পুরুষকে প্রভাবিত করেছিল। তা সত্ত্বেও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যখন তাঁর মেয়েদের বিয়েতে পণ দিতে বাধ্য হয়েছিলেন, তখন প্রশ্ন জাগে, কেন নারীর প্রতি পুরুষের সামাজিক এই অবমাননার বিরুদ্ধে রবীন্দ্রনাথ ব্যক্তিজীবনে রুখে দাঁড়ালেন না? অথচ ২২টি ছোটগল্পে তিনি পণপ্রথার বিরুদ্ধে লেখনী ধরেছিলেন।
১৯৪৭-১৯৭০ সময়কালে পূর্ব বাঙলায় চিন্তাচর্চাবিষয়ক গবেষণা গ্রন্থে (২০০৭) মোরশেদ শফিউল হাসান লিখেছেন যে, দু-একটি ব্যতিক্রম বাদে সে সময়ের প্রাবন্ধিকেরা (পুরুষ) পরিবার ও সমাজে নারীর অধিকার ও মর্যাদা বিষয়ে; নারীর অধস্তন অবস্থান সম্পর্কে পুরুষতন্ত্রী মনোভাব ও মূল্যবোধ প্রকাশ করেছেন। নারী লেখকদের ক্ষেত্রেও এর অন্যথা ঘটেনি।
যদিও কাজী নজরুল ইসলাম, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্, কাজী মোতাহার হোসেন, মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীন, আবুল ফজল, মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলী, মুহম্মদ এনামুল হক প্রমুখ বহু ব্যক্তিত্ব নারীর পক্ষে লিখেছেন, কথা বলেছেন, সংগ্রাম করেছেন।
একুশ শতকের চলতি দশকে আমরা দেখতে পাচ্ছি, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের এবং রাজধানীর কবি, সাহিত্যিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক পুরুষ ব্যক্তিত্ব নারীর পক্ষে লিখছেন, বলছেন, যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করছেন। সন্দেহ নেই, সামগ্রিক বিচারে এসব কর্মকাণ্ড নারীর সামাজিক অবস্থানকে সংহত করছে। কিন্তু যখন দেখি ঘরে-বাইরে নারী নির্যাতনের শিকার হচ্ছে এবং সমাজে অপরাধের পরিধি বাড়িয়ে চলেছে, তখন ভাবনার জগতে আঘাত লাগে।
শত বছর আগে রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন ‘অর্ধাঙ্গ’ ও ‘ভ্রাতা-ভগ্নী’ লেখা দুটিতে পরিবারে একান্ত আপনজন হিসেবে পুরুষের যে স্বার্থপরতা, বৈষম্য ও নির্যাতনের কথা লিখেছেন, আজও বাংলাদেশ সেসব থেকে মুক্ত হয়েছে বলা যাবে না। পুরুষ বিদ্যমান পারিবারিক আইনকে নারীর বিরুদ্ধে যথেচ্ছ ব্যবহার করছে, আইনে প্রদত্ত সীমিত অধিকার থেকে নারীকে বঞ্চিত রাখতেও সে দ্বিধা করছে না।
যখন বিপ্লবী প্রীতিলতা যুদ্ধক্ষেত্রে আত্মাহুতি দেওয়ার সময়েও প্রশ্ন রেখে যান ‘নারীর প্রতি বৈষম্য’ কেন পুরুষ নেতৃত্বে পরিচালিত বিপ্লবী দলের মধ্যেও বিরাজ করছে, তখন গভীর থেকে গভীরতর হয় এই প্রশ্ন যে ‘নারীর পক্ষে পুরুষ’-এর কার্যকর ভূমিকা কি একা পুরুষের পক্ষে পালন করা সম্ভব, নাকি সমাজ-পরিবার-রাষ্ট্র-প্রতিষ্ঠানের নারীর-পুরুষের তথা ‘মানুষের পক্ষে মানুষের’ সম্মিলিত প্রয়াস অধিক গুরুত্বপূর্ণ?
এসব সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও নারীর পক্ষে পুরুষের ইতিবাচক ভূমিকাকে স্বাগত জানাই।
মালেকা বেগম: নারী নেত্রী, অধ্যাপক, সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটি, ঢাকা।