যৌতুক নেওয়া ও দেওয়া

যৌতুকের দাবিতে মেজর স্বামী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর ওপর নির্যাতন করেছেন। আগে গ্রামের নিরক্ষর, গরিব মানুষের মধ্যেই এই প্রবণতা বেশি ছিল। প্রত্যাশার শ্রেণিভেদ না থাকলে শিক্ষিত-অশিক্ষিত ব্যক্তিদের প্রভেদটাও হয়তো থাকত না। জানি না, একজন সেনা কর্মকর্তা যৌতুক নিয়ে ভবিষ্যতের জন্য কী কী পরিকল্পনা করেছিলেন।
কিছু শিক্ষিত তরুণের মধ্যেও যৌতুকের প্রতি বিশেষ ঝোঁক দেখা যায়। ছাত্রাবস্থায় অনেকে এ রকম পরিকল্পনাও করেন যে যৌতুক হিসেবে যা পাবেন, সেটা দিয়েই নিজের কর্মসংস্থানের একটা ব্যবস্থা করে ফেলবেন। সুতরাং, কর্ম বা ক্যারিয়ার নিয়ে তাঁর ভবিষ্যতের চিন্তা নেই। গুরুজনেরাও তেমন পরামর্শ দিয়ে থাকেন। যৌতুক সমস্যার মূলটা কোথায় এবং কীভাবে তা সমূলে উৎপাটন করা যায়, তা বের করা যথেষ্ট কঠিন। কারণ, যৌতুকের ব্যাপারে মেয়ে ও মেয়ের মা-বাবার আগ্রহও কম নয়। মেয়ের জন্মের সঙ্গে সঙ্গেই অনেকে নতুন ব্যাংক হিসাব খোলেন, জমি কেনেন, গাছ লাগান অথবা কিছু গরু কিনে রাখেন।
এমনও পরিবার আছে, যেখানে যৌতুকের প্রস্তুতি হিসেবে বিয়ের বেশ আগেই আত্মীয়স্বজনকে সতর্কসংকেত জানিয়ে দেওয়া হয়। জানানো হয়, কে গাড়ি দেবে, কে গয়না, কে দেবে টাকা। আত্মীয়স্বজনও সানন্দে মাস খানেক আগে থেকেই প্রস্তুতি নিতে থাকে। এখন আবার আরেকটা জটিলতা দেখা দিয়েছে, কোনটা শুধুই উপহার আর কোনটা যৌতুক, তা বোঝা কঠিন হয়ে পড়েছে। ছেলেপক্ষ যদি বারবার বলে, ‘না না, আমাদের কিছুই চাই না,’ তবু বিয়ের কিছুদিন পর ছেলের বাড়িতে গেলে দেখা যায়, ঘরভর্তি মেয়ের বাড়ির উপহার (নাকি যৌতুক)! এমনটি আসলে কেন হচ্ছে? যৌতুক নিশ্চয় স্বেচ্ছায় দেওয়া উপহার নয়!
লেখক: ছাত্র, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।